• Parabaas
    Parabaas : পরবাস : বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • পরবাস | সংখ্যা ৪৫ | এপ্রিল ২০১০ | কবিতা
    Share
  • কলকাতা : সুবীর বোস





    শীতের সফেদ সুতোয় জড়িয়ে যাচ্ছে কলকাতা
    বৈপরীত্যের তিনতলায় দাঁড়িয়ে আমি খোলা চোখে দেখছি
    কুয়াশার খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে চাইছে
    বিমানবন্দরের সুবিশাল রানওয়ে,
    ছাপা অক্ষরের রোদ্দুরে গা সেঁকে নিচ্ছেন আনমনা অধ্যাপক ।

    তার পর
    গলির টিউবওয়েলের বাঁকানো কোমর দেখে মনে হলো,
    কলকাতাকে আমি অন্য কোনও নামে ডাকতে পারব না ।






    বিড়ির ধোঁয়াতে ঢেকে গেছে গুরুপদদার চায়ের দোকান
    বহুতল থেকে দশ ফুট দূরে
    &ত্রঢযধ;&ত্রঢযধ;&ত্রঢযধ;&ত্রঢযধ;&ত্রঢযধ; একে একে জমা হয় পোড়া বিড়ির ধ্বংসাবশেষ,
    &ত্রঢযধ;&ত্রঢযধ;&ত্রঢযধ;&ত্রঢযধ;&ত্রঢযধ; ফেলে দেওয়া ভাঁড়ের রাঙানো দেহ
    গুরুপদদা ফিসফিসিয়ে বলে,
    `খানিক চুপ থাকো হে ঈশ্বর, আমি বসে থাকি বাঁধের উপর' ।

    বহুতলের প্রহরীদের ক্ষিধে-তেষ্টা `আয়লা' নাম পেয়ে যায় ।





    অফিস পাড়ার এত ভিড়েও আমার খুব একা লাগে
    ফুটপাথের যে ভিখারিটা
    রোজ যাতায়াতের পথে হাত পেতে ভিক্ষা চায় -
    দেখেছি সে কখনও অন্যমনস্ক হয় না

    শ্রীলাকে বলেছি,
    `মেঘদূতের হাতে রোজ একটা কয়েন তুলে দিও' ।





    সন্ধ্যায় চরিত্রদূষণ অথচ ভগবানকে দেখ
    শঙ্খে ঠোঁট রাখা ভক্তের জিজ্ঞাসা বুঝে নিয়ে
    কেমন `তত: কিম্‌' হয়ে আছেন !
    শীতের কাঁপুনি থেমে গেলে খুব টের পাই
    সারাদিন খালি কাদা ঘেঁটে গেছি প্রাণপণ
    শঙ্খ রয়ে গেছে অন্য কারও ঠোঁটে ।





    মাঝরাতে বুকে সাইকেল শব্দ, বুঝি জ্বর এল, ধুম জ্বর
    মাঠঘাঁট, যা কিছু আমার ছিল,
    হয়ত হারিয়ে গেছে বহুতলের বিকল্প করিডরে
    এখন জটলা পার হয়ে গিয়ে তাই
    প্রতি রাতে বন্ধ দু-চোখের নাগালে বয়ে যায় এক কল্পিত নদী
    যার পার ঘেঁষে চোখ খোলে সারি সারি জবা গাছ
    জীবিকার প্রয়োজনে

    কলকাতা, যদি পারো
    অন্য পারে রেখো শাল-পিয়ালের অনুভূতি
    খেটে খাওয়া শ্রমিকের মতো ।

    (পরবাস - ৪৫, এপ্রিল, ২০১০)

  • এই লেখাটি পুরোনো ফরম্যাটে দেখুন
  • মন্তব্য জমা দিন / Make a comment
  • (?)
  • মন্তব্য পড়ুন / Read comments