ISSN 1563-8685




দু'টি কবিতা

কবি

কমণ্ডলু থেকে বেরিয়ে আসছে কবিতার পবিত্র শব্দাবলী
অথচ তাকে আজকাল ধারণ করছে না কেউ সেভাবে—
মহাদেবের মত যিনি জটাজুট ছড়িয়ে স্থিতধী দাঁড়াতেন
তিনি এখন সমুদ্রস্নানে রয়েছেন, প্রলোভনের নগ্ন মাৎসর্য
তাঁকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে অবিরাম—বুকের হাড়
পুড়িয়েও অবিচল থাকার সঙ্কল্প ভেঙে যাচ্ছে বারবার,
হারিয়ে যাচ্ছে নিষ্পাপ শব্দেরা ভুল উচ্চারণে—যেভাবে
হারিয়ে যায় কিছু মেয়ে শহরের ভুল ঠিকানায় প্রতিদিন—

পুরোহিত হওয়ার কথা ছিল যাঁর তিনি আজ মন্ত্রের বদলে
শব্দ দিয়ে তৈরি করছেন শুধু ইস্তাহারের বিকৃত মালা—

অথচ এভাবেই কাটাতে হবে দীর্ঘস্থায়ী এ জীবন …


বিশল্যকরণী

একটি শব্দকে ব্যবহার করবার আগে নিজেকে
চেনা প্রয়োজন সেই শব্দের পরিচিত প্রেক্ষাপটে,
জানা দরকার অক্ষরের দিকবদলের সঙ্গে সঙ্গে
তোমার চরিত্রের কোন পরিবর্তন হচ্ছে কিনা—
পৃথিবীতে সবকিছু একভাবে ছিল না কোনদিন
গন্তব্যের মানচিত্রও বদলে যায় প্রতিনিয়ত …

শব্দকে ব্যবহার করার আগে তাই জেনে নিতে হবে
তার ব্যূৎপত্তি এবং অন্তর্নিহিত সমাসের বিন্যাস
ক্রিয়াপদে তার অর্থ বদলে যাচ্ছে কিনা—
একটি শব্দের পোশাকী পরিচয়ের নেপথ্যে
ভিন্নতর গূঢ় ইশারা থাকা সম্ভব, থাকতে
পারে সম্পূর্ণ বিপরীতার্থক ব্যঞ্জনাও

শব্দ শেষপর্যন্ত ব্রহ্ম হবে কিনা কবি জানে না
তবুও শব্দই কবিতার শেষ বিশল্যকরণী
এবং অনুচ্চারিত মন্ত্র …


(পরবাস-৫২, অক্টোবর, ২০১২)