ISSN 1563-8685




তিনটি কবিতা

১. ছেঁড়া তার

এভাবেই ক্রমশঃ নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ে মানুষ...

ভোরের বাতাসে শৈশবের ধারাপাত
দ্বিপ্রহরের এক ঝলক রোদ
বালকের দেখা ঘাট ঝুঁকে পড়ে নদীগর্ভে
শূন্য হয় সময়ের ঘর
একে একে সরে যায় আসবাব

অনবরত স্রোতের টানে ফুরিয়ে এলে কথা
পড়ে থাকে
তার ছেঁড়া একতারার মিথ্যে খোলস
রৌদ্র-ছায়ায় খেলতে খেলতে
এক সময় হারিয়ে যায় নিজেরই ছায়া

গোপন নির্জনতায় মানুষ তখন ভীষণ একা...

২. সীমাবদ্ধতায়

বহুকাল তুলির মুখে ওঠেনি রঙ
কথার ফাঁকে কথা
নিজেকে নিয়ে ভাঙচুর কোন এক অরণ্যের ভিতর

নীল জলের হাতছানি এলে
এখন ভারি হয় বুকের বাতাস
দেখিনি দিনের আলোয় ভেজা ঘর
ক্ষয়ে যাওয়া ঘাটের পাশে দাঁড়ালে
শিথিল হয়ে আসে হাতের মুঠো

রাতে ক্লান্ত পা টেনে ঘরে ফেরার আগে
শুনি দূর জলাশয়ের সংকেত
নিজস্ব চারণভূমির কথা
তবু নির্বিষ সময়ের জলছবি হয়ে
বাধ্য সরীসৃপ পুরনো ফটকে আবার ...

৩. ছুটির ঘন্টা

এক সময় এই ঘন্টার জন্য উন্মুখ থাকতো শ্রবণ...

কফির টেবিলে, হাজিরা খাতায়
অফিসের পথে, এমন কি ঘুমের মধ্যে আজ
অনবরত ভেসে আসে সেই শব্দ তরঙ্গ ...

পাতা ঝরার বেলায়
আবরণহীন বৃক্ষ ডালপালা ছড়িয়ে
আছে অপেক্ষায়
বাতাস ফেরে অন্যপথে
পাখিরা আসে না সন্ধ্যায়

একদা স্কুল বালক এখন কেঁপে ওঠে
                    ছুটির ঘন্টায় ...


(পরবাস-৫৪, জুন ২০১৩)