একমুঠো কবিতা
।। ১ ।।
বন্দুকের শব্দে রাত ফুরোয় কি?
আরে, ফুরোয় সেই চড়াইটির ডাকে
যে চড়াই খুঁটে খায়
রাতের আঁধার সব
ক্রমে ক্রমে।
।। ২ ।।
আশ্বিনের মাঠের গন্ধ
কোনোভাবে নাকে এসে লাগলে
আমি দেখতে পাই আমার বাবাকে
দোকানের ভাঁজভাঙা
গামোছার সুবাসে
আমি খুঁজে পাই আমার মা'কে
আমি নিজেকে
আমার সন্তানের জন্য
কোথায় রেখে যাবো
কোথায়!!
।। ৩ ।।
সবকটি আয়নাতেই
আমি তোমার মুখ দেখি।
কোত্থাও একটি আয়না
খুঁজে পেলাম না,
যাতে দেখতে পারবো
আমার মুখটি
একবারের জন্যে হলেও।
।। ৪ ।।
আমার চোখের জল
মাটিতে পড়ে পড়ে পাথর হয়েছে
এ ধুলো ভেজাতে পারে না ঠিক,
কিন্তু অস্ত্র হতে পারবে।
।। মর্মান্তিক ।।
ওকে আমি চলে যেতে দেখেছিলাম
শেষবেলায়
মাঠের প্রান্তে।
মাথায় ঝাঁপি
কাঁধে ভারী দুটি ধানের আঁটির
ঝনার ঝনার শব্দ।
তার পেছন পেছন চলে গেল
অঘ্রাণের সোনালী রোদ
খড়ের ঘরটি, বাঁশ বনের
কাঁচা পথটি,
আর পাখিগুলি।
চলে যাচ্ছিল সে— আর চলেই গেল।
কে জানে
সে আর
এ জন্মে
ফিরে আসবে কিনা?
(পরবাস-৫৫, অক্টোবর, ২০১৩)