পরবাসে
ইন্দ্রাণীর

লেখা





বৃষ্টিভোরের পাখি
(সূচিপত্র)

ওই মাঠের ওপার থেকে যে ঘূর্ণিধুলো উঠে আসে,
তা মনে করিয়ে দেয় তোমার কথা
তোমার আমার ফড়িং দেখতে যাওয়ার স্বপ্নের কথা, আমার দু'বেণী আর
তোমার অলীক চোখ দেখি এই ফাল্গুনের ভোরবেলায়

অসুখ চারিয়ে যায়, তুই এই দেশে কেন নেই এসময়?
আমার বন্ধু নেই, কেউ নেই
কি অপূর্ণতা নিয়ে বেঁচে আছি এ বসন্তে
মনে হয় তোর সাথে বেড়াতে যাই
নিয়ে যাবি? তোমার সাথে প্রবাস দেখব
হরিয়াল পাখি হয়ে উড়ে যাব এ-রাস্তা থেকে ওই অ্যাভিনিউয়ে
তোর দেশে কোন গাছে ফুল হয় কখন কখন? পাখিরা কখন গান গায়
কি অঙ্ক করিস তুই খাতার পাতায়? সিঁড়িভাঙ্গা শিখিয়ে দিবি আমায়?

খাতার শেষ পাতায় তুমি বসন্তদিন আঁকো বন্ধু
যে কবিতা তুমি আমায় পাঠাও প্রতিবার আর আমি
মোহাবিষ্ট হয়ে তোকে খুঁজি এই গাছেদের ভিড়ে
এত গাছ তবু চিনতে পারি না
তুই কি অমলতাস? হলুদ ফুল হয়ে ভালোবাসা ঝরাস প্রতিবার
নাকি ওই রক্তিম শিমুল যা আলো করে রেখেছে আমাদের মাঠের রাস্তা আর রেল কোয়াটার্স।

আমার বন্ধু নেই, মাঝে মাঝে মনে হয় হারিয়ে ফেলছি সব
একবার আমায় নিয়ে যাবি? ফড়িং ধরব—না ধরব না ওদের
ঘাসফুলের মধ্যে একবার ফড়িং ধরায় মা বলেছিল অমন করে না
ফড়িং ধরলে মা থাকে না
সঙ্গে সঙ্গে উড়িয়ে দিই ওকে
সেই যে ঘাসের ফুল যাকে হাওয়ায় নুয়ে পড়া দেখতে দেখতে
আমি উন্মাদ প্রেম ভুলে গেছি, ভুলে গেছি চুম্বন
ওই ফুলের গুচ্ছ উড়ো চুলে তুই সাজিয়ে দিবি আমায়

ইচ্ছে করে না কিছু লিখি
খুব নিরুৎসাহ হয়ে পড়ি জীবন থেকে
ঘুমের ঘোরে এক অবাধ্য মেয়ে আমায় বলে, কিতকিত খেলবি না?
দু-বেণীতে দু'রঙের ফিতে বেঁধে সে বলে চল জয়চণ্ডী মেলা দেখে আসি
সেখানে আমার সাথে যায় এক উজ্জ্বল কিশোর
অবিকল তোমার মতন যার চুল, হাসি, চোখের পাতাও

কোথায় হারিয়ে যাই? কোন দেশে গেলে পরে হাওয়ায় হাওয়ায় কোনও শব্দ আসে না
কোথায় ঘুমোতে পারি এতটুকু খুব ঘুম পেলে
কোন পরিসরে কেউ বলবে না—এসব আনন্দ, প্রেম
এসব তোমার নয় অন্য কারুর
ভালোবাসা কোনখানে আমায় বুকের মধ্যে ডেকে নেবে বরফের নীচে
কখন ঘুমোবো আমি বহুযুগ দীর্ঘ সময়



(পরবাস-৬০, অগস্ট ২০১৫)