|| ১ ||
এক রাত্রি ঢেকে রেখেছে নাগরিক যাপন
এক রাত্রি ঢেকে রেখেছে সহস্র রাত্রির কান্না
নিষ্প্রদীপ শহর জুড়ে অন্ধ গলি শুধু
কোথায় যাবেন? যান না...
|| ২ ||
ভুলে থাকা বড় বাঙ্ময়, ভুল-এ থাকা বড় বেদনার
আহত সময় কাঁপে ঝংকারে, যতবার দুঃসাহসে রাত্রি পারাপার।
|| ৩ ||
অন্ধকারে পথ চলা। অন্ধকারের অনেক চেনাশুনো
সীমা মানে না কংক্রীটের পথ, সীমা মানে না পলকা টিনের ঘর,
অন্ধকারে মুখ লুকিয়ে, মৃত্যু হাঁটে ‘চরৈবেতি’ জেনে
শ্বাপদ নিশাচর।
|| ৪ ||
অন্তঃসারশূন্য, এই তো অস্তিত্বের মূল কথা।
রাত্রির নিথর ছায়ায়
আনখশির ক্লান্ত পাখি
কিংবা ক্ষুধার্ত বাঘ, সকলেই
শেষ অবধি
একা, একাকী।
|| ৫ ||
গাছে ধাক্কা খেয়ে খেয়ে, অরণ্যে শুধুই আর্ত হাহাকার।
এত বিষণ্ণ এ অক্ষরগুলো, মৃত্যুও ছোঁবে না একে আর...
|| ৬ ||
এক রাত্রি ঢেকে রেখেছে নিসর্গ চরাচর
ঢেকে রেখেছে মন্দ্ররবের বৃষ্টিবিলাস,
এ কোন সহজ জ্যোৎস্না নয় যা ছিন্নভিন্ন করে যায়
খণ্ডিত আকাশ —
|| ৭ ||
জঙ্গলের আপন ঘোরে, মায়াতরী সতত স্বাধীন।
রক্তে অশ্রুর নোনা স্বাদ। এভাবেই মিটে চলে ঋণ।
|| ৮ ||
রাত্রিলীলা ঘন হলে, আকাশের কোল থেকে
ঝরে পড়ে এক একটা তারা। পূর্বাভাস
ছিল না যদিও, তবু,
এ বড় অলীক ক্ষণ, রুদ্ধঃশ্বাস।
|| ৯ ||
এক একটি ক্ষণ জুড়ে, মৌরসীপাট্টা গেড়ে বসে থাকে
ব্যর্থতার জ্বালা
আদিম মানবসভ্যতা, চিনেছিল এরকম হাতে কলমের
অরণ্য পাঠশালা
|| ১০ ||
আদিম না হলেই ভাল। আদি মধ্য অন্ত পার হয়ে
মৃত্যু সাগ্রহে দাঁড়ায় অন্ধ ধরাতলে
কে বলে চেয়ে দেখার সাহস নেই, কে বলে মলিন তার সাজ,
কে বলে!
|| ১১ ||
নিষ্ঠুর, তবু বেঁচে থাকা।
নিষ্ঠুর, তবু অনন্ত পথ বেয়ে পথে,
ভ্রান্ত শব্দশরীরের উষ্ণতা একত্রিত করে
কোনমতে।
(পরবাস-৬৩, ৩০ জুন, ২০১৬)