Parabaas Moviestore




Parabaas Musicstore




Subscribe to Magazines






পরবাসে সন্দীপ মিত্রের
লেখা


ISSN 1563-8685




তিনটি কবিতা

ফেরারী তস্কর

ধান্য-গন্ধ বাহক এই আল-দরদী হাওয়া,
পায়ের তলায় সবুজ দু-ফাঁক বিভেদকামী পথ
মাটির ঘরেও অনল-প্রচার বারান্দা-বিপ্লব
দেখতে দেখতে হারতে হারতে কোণঠাসা এক ষাঁড়
শিঙের গুঁতো ধুলোর ছুতো জগন্নাথের রথ
দেখতে গিয়ে গাভির প্রেমে জুড়ে দাঁড়ালো পথ।

তবে সেদিন ছিল মেলা, রাংতা মোড়া
তাবিজ পোড়া ফকিরবাবার জল
আঁজলা ভরে পান করেছে ফেরারী-তস্কর
স্বেচ্ছাচারে সেই গিলেছে বিষবৃক্ষের ফল ।


যে ছেলেটাকে চিনতাম

আমরা যে ছেলেটাকে চিনতাম
সে ছিল টেরর
যদিও পাড়ার ওঝা বুড়ির ঝরঝরে লাশ
একাই উঠিয়ে কাঁধে হেঁটেছিল শ্মশানের দিকে
তাকে চিনতো ডোমের বউ, তাকে চিনতো চেলাকাঠ।
তবুও পুলিশের খাতা, প্রশাসনের পাতা
জাল, তাকে ছুটিয়ে নিয়ে বেড়াতো
শেলটার থেকে শেলটারে।

আমরা যে ছেলেটাকে চিনতাম, তার বালিশের
তলায় শুয়ে থাকতো হিম-লৌহ মৃত্যু
আর বুকের তলায় উস্কে উঠতো একটা স্বপ্ন
কিসের যেন ফুল ফোটানো আলো।

যে ছেলেটাকে আমরা চিনতাম
তাকে তো চেনাই যায় না আর
তার মাথায় এখন অনেক পালক
আগুনের বদলে চোখ দিয়ে ঝরে পড়ে
আশ্বাস প্রতিশ্রুতির স্নেহধন্য ভাষা
অনর্গল বিদেশী পুঁজির আশা।

আমরা যে ছেলেটাকে চিনতাম,
বদলে গেছে খুব।


মধ্যিখানে আমি

আমার একদিকে প্রতিস্পর্ধী পাথর
আর একদিকে ফসল-বিদ্ধ হাওয়া
আমার এক হাতে খাট-পালঙ্ক
আর এক হাতে চামুণ্ডা-সুখ নরমুণ্ড
আমার এক চোখে হরিণ-ভীরু আকুতি
আর এক চোখে নাশকতা যুদ্ধ-মাদল
আমার এক পায়ে জীবিকা-সিক্ত আশ্বাস
আর এক পায়ে রাত-দাপানো সর্বনাশ
আমার এক দিকে ফুল শিশু নারী
আর একদিকে শ্মশান খাদ গণিকার হাসি।



(পরবাস-৬৬, মার্চ ২০১৭)