পিঙ্কিকে শেষ দেখা গিয়েছিল গতকাল দুপুরে, মানকুণ্ডু ষ্টেশনে। প্ল্যাটফর্মের বেঞ্চিতে বসে মোবাইলে কার সঙ্গে যেন কথা বলছিল। নিতাই পাগলা লাঞ্চ-এ এক কাপ চা ও একখানা টিফিন কেক ছাড়া কিছু খায় না। রোজানা দুপুর দেড়টায় নিতাই কেষ্টর চায়ের স্টলের সামনে এসে দাঁড়ায়। কোনো কথা বলে না; চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে, যতক্ষণ না কেষ্ট ওকে নজর করে। খদ্দের সামলে ফাঁক পেলে কেষ্ট কেক আর চা এগিয়ে দেয়। ঘটনাচক্রে নিতাইয়ের দ্বিপ্রাহরিক ভোজের নির্ধারিত স্থান ওই বেঞ্চিটি। গতকালও সে তার প্রাপ্য নিয়ে বেঞ্চিটির দিকে এগিয়ে যায়।
নিতাই বেঞ্চির দখল নেবার চেষ্টা করলে প্রথমে পিঙ্কি তার দিকে কড়া চোখে তাকায়। কিন্তু নিতাইয়ের নাছোড়বান্দা ভাব দেখে অবশেষে বেঞ্চি ছেড়ে উঠে পড়ে। তাছাড়া নিতাইয়ের টিফিন কেকের দশ শতাংশের ভাগীদার ন্যাড়া নামের কুকুরটিও কিঞ্চিৎ আপত্তি জানিয়েছিল। হাঁটতে হাঁটতে এবং মোবাইলে কথা বলতে বলতে পিঙ্কি প্ল্যাটফর্মের ন্যাজের দিকে চলে যায়। এই পর্যন্ত কেষ্ট খেয়াল করেছে। তারপর পিঙ্কিকে আর কেউ দেখেনি। প্ল্যাটফর্ম যেখানে ঢালু হয়ে শেষ হয়েছে সেখান থেকে একটি সুঁড়িপথ ঝোপঝাড় পেরিয়ে কলা বাগানের দিকে চলে গেছে। পুলিশ আতিপাতি করে খুঁজেও সেদিকে কিছু পায়নি। মেয়েটা যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে।
নন্দু আমায় আগেই সাবধান করেছিল, বলেছিল, ‘আমার কথা শোন বোধি, ছেড়ে দে, এ মেয়েকে তুই সামলাতে পারবি না।’
আমি কাঁচুমাচু মুখ করে বলেছিলাম, ‘বলছিস? তোর সত্যি মনে হয় পারব না?’
নন্দু জোর দিয়ে বলেছিল, ‘কিছু মনে করিস না, পিঙ্কি ঠিক তোর টাইপ নয়।’
পিঙ্কি ঠিক কার টাইপ জানতে বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়নি। বাসুদার দোকানে সাইকেলের পাঙ্কচার সারানোর সময় দেখলাম পিঙ্কি একটা মোটরবাইকের পিছনে বসে দিল্লী রোডের দিকে চলে গেল। সামনের ছেলেটা বেশ হিরো টাইপের। হাত কাটা টি-শার্ট, চোখে গগলস, পিঙ্কির সঙ্গে বেশ মানিয়েছে। পিঙ্কি ছেলেটাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে পিঠে গাল ঠেকিয়ে বসে আছে। বাসুদা কাজ করতে করতে মুখ তুলে বলল, ‘তারা, ব্রহ্মময়ী, রক্ষা কর মা।’ হাতের স্প্যানারটা তুলে কপালে ঠেকাল। কে কাকে রক্ষা করবে বুঝলুম না। শুধু বুঝলুম, দিল্লী রোড বহু দূর। সাইকেলে চেপে সেখান অব্দি যাওয়া যায় না।
নন্দু বলেছিল, ‘এই ভালো হল। তুই একটা পুজো চড়িয়ে দে।’
পুজো মানে কলকাতায় গিয়ে খাওয়া দাওয়া, ফুর্তি-ফার্তা, মোচ্ছব। এসব প্রায় মাস খানেক আগেকার কথা। পিঙ্কির সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে বলতে নেই, আমারও বেশ ফুরফুরে লেগেছিল। দেখা করার জন্য শ্যাম-মাস্টারের গলির মুখে হাপিত্যেশ করে দাঁড়িয়ে থাকার চাপ নেই। ব্ল্যাকে টিকিট কেটে অন্ধকার সিনেমা হলে ফার্স্ট ডে ফার্স্ট শো দেখার তাপ নেই। সন্ধেবেলা পিঙ্কির গানের ক্লাস থেকে ফেরার সময় গলির আড়ালে ইন্টুবিন্টু পাপ নেই। একদম ফাঁকা লাগেনি বললে মিথ্যে বলা হবে। তবে কী, ব্যাপারটা সয়ে যাচ্ছিল। ঠিক তখনই খবর এল – পিঙ্কিকে পাওয়া যাচ্ছে না। নন্দুই দিল খবরটা। ততক্ষণে চব্বিশ ঘন্টা পার হয়ে গেছে। পিঙ্কির বাড়ি থেকে পুলিশে খবর দিয়েছে। পুলিশ পিঙ্কির হদিশ করতে না পেরে তার বন্ধু বান্ধবদের কাছে খোঁজ খবর নিতে শুরু করেছে। নন্দু বলল, ‘তোর কাছেও আসবে। তখনই বলেছিলাম যাসনি, মেয়েটা সুবিধের নয়।’
আমি ভয় পেয়ে বললাম, ‘আমার কাছে আসবে কেন? আমি কী করেছি?’
নন্দু রেগে গেল, ‘কদিন আগেও একসঙ্গে গঙ্গার ধারে বসে খোসা ছাড়িয়ে কুটুস কুটুস করে বাদামভাজা খেতিস। এখন ঠ্যালা সামলা।’
সন্ধে বেলাই বাড়িতে পুলিশ এল। পিঙ্কির দাদাই সঙ্গে করে নিয়ে এল। পিঙ্কির দাদার চেহারা দুর্গা ঠাকুরের অসুরের মত, হাতে পায়ে গুলি ওঠা। পিঙ্কিদের ফ্যামিলির সবাই দারুণ রূপবান, রূপবতী। এমন কী পিঙ্কির বৌদিও অসামান্যা সুন্দরী। গায়ের রঙ দুধে আলতায়, দেবী প্রতিমার মতন টানা টানা চোখ। তাও নাকি বিয়ের সময় পণ-টন নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল, পিঙ্কি বলেছিল। রাস্তায় মুখোমুখি পড়ে যেতে একবার বৌদির সঙ্গে আলতো করে আলাপও করিয়ে দিয়েছিল।
পিঙ্কির দাদা ভাঁটার মত চোখ তুলে জিজ্ঞেস করল, ‘পিঙ্কির কোনো খবর জান?’
‘আমি কী করে জানব?’
‘সবাই বলছে পিঙ্কির সঙ্গে তোমার ভাবসাব ছিল।’
আমি তুতলিয়ে বললাম, ‘ছিল... কিন্তু এখন আর নেই।’
‘ছিল... নেই... ইয়ার্কি হচ্ছে? দেব এক থাবড়া?’ পিঙ্কির দাদা থাবড়া দেবার জন্য হাত তুলতে দেখলাম, কব্জির কাছে একটা ব্যান্ড-এড লাগানো। সদ্য কাটা দাগটা পুরোপুরি ঢাকা পড়েনি। ব্যান্ড-এডের প্রান্তরেখা বরাবর রক্তবিন্দু ফুটে আছে।
‘বিশ্বাস করুন, গত এক মাস পিঙ্কির সঙ্গে আমার কোনও যোগাযোগ নেই।’
এইসব কথাবার্তার মধ্যেই মা এসে পড়ল। এতক্ষণ কোথায় ছিল কে জানে? এসেই পুলিস দেখে হাঁউমাঁউ করে কেঁদে উঠল, ‘বোধি তুই কী করেছিস? বাড়িতে পুলিস কেন?’
‘আঃ মা, থামো। আমি কিছু করিনি।’
পুলিশের ইউনিফর্ম পরা ভদ্রলোক এতক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়েছিলেন। এবার এগিয়ে এসে বললেন, ‘করেছ কি করনি আমরা ঠিক জেনে যাব। এখন ক’দিন এদিক ওদিক কোথাও যেও না। আর আমার ফোন নম্বরটা নোট কর। পিঙ্কির ফোন এলে আমায় সঙ্গে সঙ্গে জানাবে।’
ওরা চলে যেতে মার নাটক শুরু হল, ‘আমার গা ছুঁয়ে বল তুই কোনো অপকর্ম করিসনি। বাবার ছবিতে হাত দিয়ে বল...।’
‘আর কী কী ছুঁতে হবে একবারে বলে ফেল... রাতদিন সিরিয়াল দেখে দেখে তোমার মাথাটা গেছে।’
মা খানিক ফোঁস ফোঁস করে কেঁদে থামল বটে, কিন্তু মাঝে মাঝে আমার দিকে সন্দেহের দৃষ্টি নিক্ষেপ করতে থাকল। আমারও মেজাজটা খিঁচড়ে গিয়েছিল। চুপ করে রইলাম। এমন সময় বৃষ্টি এল। বর্ষা যাই যাই করেও যাচ্ছে না। মা রান্নাঘর থেকে চেঁচিয়ে বলল, ‘বোধি জানলাগুলো দিয়ে দে।’
মা রাত্তিরে খিচুড়ি আর বেগুনভাজা বানাচ্ছে। অন্যদিন হলে খুশি হয়ে উঠতাম। রান্নাঘরে গিয়ে মায়ের পাশে দাঁড়াতাম। দু-চারটে হাবিজাবি কথা বলতাম। আজ মনের ভার নামছে না। মেয়েটা গেল কোথায়? কিছু বিপদ আপদ হল কিনা, কে জানে? পিঙ্কি কোনোদিনই আগু-পিছু ভেবে কাজ করার মেয়ে নয়। দুম করে এসে বলত, ‘চলো, আজ গাদিয়াড়া যাই, যাবে?’ যেন গাদিয়াড়া আর ঘড়ির-মোড় মোটামুটি একই দূরত্বে। আমি মিন মিন করে বলতাম, ‘তার চে বরং ব্যান্ডেল চার্চ যাই, কিম্বা... ।’
‘ধ্যুত, ব্যান্ডেল চার্চে খুব ভিড় হয়। তোমাকে চিনে গেছি। মোল্লার দৌড় ওই মসজিদ পর্যন্তই।’
‘মসজিদ কোথায়? চার্চ তো... ।’
অর্ধেক শুনেই পিঙ্কি চলে যেত রাগে গস গস করতে করতে। বৃষ্টি হয়ে গরম কমেছে একটু। ঘরের মধ্যে গুমোট। ফ্যানের হাওয়া গায়ে লাগছে না। রাতে শোবার সময় মাথার কাছের জানলাটা খুলে দিলাম, এক পাটি। মোবাইলটা মাথার বালিশের পাশে রেখে শুলাম। যদি ফোন আসে পিঙ্কির। অবশ্য সে আমায় ফোন করা ছেড়ে দিয়েছে অনেক দিন। ইদানীং আমার ফোন ধরতও না।
মোটরবাইকের ছেলেটা মেড়ো, নাম রণবীর। পয়সাওলা ঘরের ছেলে। ওর বাবার লক্ষ্মীগঞ্জ বাজারে কাপড়ের দোকান আছে। নন্দুই খবরগুলো যোগাড় করে দিয়েছিল। পুলিস কি রণবীরের বাড়ি গিয়েছিল, খোঁজ নিতে?
দুশ্চিন্তার মধ্যেই আবছা ঘুম এসেছিল। হঠাৎ ছিঁড়ে গেল। জানলার পাল্লায় টোকা দিয়ে কেউ ডাকছে, ‘এই বোধি... বোধিসত্ব... ঘুমোলে নাকি? উফ্, কী কুম্ভকর্ণর ঘুম রে বাবা! এই বোধি... ওঠো না!’
ধড়মড় করে বিছানায় উঠে বসলাম। মনে হল পিঙ্কির গলা, জানলার বাইরে কি পিঙ্কি দাঁড়িয়ে আছে? আমি চোখ কচলালাম। সদ্য ঘুম ভাঙা চোখে জল কাটছে। বাইরে আবার বৃষ্টি এসেছে। আধো অন্ধকারে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে না। পিঙ্কিই হবে, বলল, ‘মন দিয়ে শোনো। তোমায় একটা কথা বলার ছিল।’
আমি উৎসুক হলাম, ‘কী?’
‘আমি চলে যাচ্ছি। তোমাদের সবাইকে ছেড়ে। বরাবরের মতন।’ পিঙ্কির গলা অন্যরকম শোনাল। কেমন ভিজে ভিজে, বৃষ্টির পরে মাটি থেকে উঠে আসা গন্ধের মতন।
আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ‘কোথায় যাচ্ছ? সবাই তোমায় খুঁজছে। পুলিস এসেছিল সন্ধেবেলা...।’
হাসির আওয়াজ পেলাম। বলল, ‘কোথায় যাচ্ছি? ছাড় সে কথা। পুলিশকে বোলো আমাদের বাগানে শিউলি গাছের গোড়াটা একবার খুঁড়ে দেখতে।’
আতঙ্কে আমার হাত পা ছেড়ে এল। গলা দিয়ে ঘড়ঘড় করে যে আওয়াজটা বেরোল সেটাকে কোনোমতেই ‘পিঙ্কি’ বলে শনাক্ত করা যায় না। অথচ আমি ওকেই ডাকছিলাম। বলতে যাচ্ছিলাম, ‘যেও না।’
পিঙ্কি বলল, ‘আচ্ছা, এবার যাই। কথাটা মনে রেখো।’
পিঙ্কি চলে যাচ্ছে... দূরে... কোকোনাট নার্সারীর দিকে... পিঙ্কিই তো? বৃষ্টির মধ্যেও ওর নীল সালোয়ার, সাদা কামিজ একটুও ভিজছে না। আর কোনদিন কি ওকে দেখতে পাব?
ভোর ভোর গিয়ে নন্দুকে জাগালাম। সারারাত দু-চোখের পাতা এক করতে পারিনি। নন্দু সব শুনে দোনামোনা করছিল। আমার অবস্থা দেখে রাজি হল। বলল, ‘পুলিশকে কী বলবি? তারা তো আর ভূত-টুত মানবে না।’
বললাম, ‘বলব, উড়ো ফোন পেয়েছি। ল্যান্ডলাইনে।’
গতকাল সন্ধেবেলা যে পুলিস ভদ্রলোক এসেছিলেন তাঁর নাম সন্দীপ মিত্র। তাঁকে ফোন করে জানিয়েছিলাম। থানায় পৌঁছে দেখলাম তিনি বাসি মুখে হাজির। চোখ পাকিয়ে বললেন, ‘শোনো হে ছোকরা, আষাঢ়ে গপ্পো ফাঁদছ না তো? কাল রাতের দিকে কিন্তু পিঙ্কির মোবাইল ট্রেস করা গেছে, আসানসোলে। তাতে অবশ্য কিছু প্রমাণ হয় না।’
‘স্যার, একবার পিঙ্কিদের বাগানে গিয়ে নিজে চোখে দেখলেই ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। আমার ধারণা পিঙ্কির বাড়ির লোকেরাই ওকে মেরে...।’
‘বাড়ির লোকেরা মারবে কেন?’ সন্দীপ মিত্র আমার দিকে কটমট করে তাকালেন।
‘আজকাল পিঙ্কি যে ছেলেটার সঙ্গে ঘুরছিল সে মারোয়াড়ী। পিঙ্কির ফ্যামিলি খুব কনজারভেটিভ, জাত পাতের বিচার আছে।’
সন্দীপ মিত্র, ‘হুঁ...।’ বলে খানিকক্ষণ গম্ভীর হয়ে বসে রইলেন। তারপর গা ঝাড়া দিয়ে উঠে বললেন, ‘চলো, দেখে আসা যাক।’
পিঙ্কিদের বাগানটা বাড়ির পিছন দিকে, উঠোন পেরিয়ে। পাঁচিল ঘেরা এক চিলতে মাটিতে জুঁই, মালতী, নয়নতারার ঝোপ। একটেরে শিউলি গাছের নিচটা ফুলে ফুলে ছেয়ে আছে। সন্দীপ মিত্র তার ওপরে দাঁড়াতেই ভারি জুতো গেঁথে গেল। নরম মাটি, সদ্য খোঁড়া হয়েছে। তাঁর হাতের ইশারায় দু-জন লেবার ক্লাসের লোক মাটি কোপানো শুরু করল। জর্দা রঙের বোঁটায় লেগে থাকা সাদা শিউলি ফুলগুলো কোদালের আঘাতে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হতে লাগল। পিঙ্কির মা গত হয়েছেন বহুদিন, বাবা বাতের ব্যথায় পঙ্গু, বিছানা ছেড়ে উঠতে পারেন না। হপ্তাখানেক আগে বৌদি বাপের বাড়ি গেছে, বাচ্চা হতে। দাদা একটু ব্যাগড়া দিতে গিয়েছিল। সন্দীপ মিত্র তার দুদিকে দুজন কনস্টেবল দাঁড় করিয়ে রেখেছেন। দু-হাত খুঁড়তেই চটের থলে জড়ানো লাশটা উঠে এল। তার সঙ্গে ঝলকে ঝলকে তীব্র দুর্গন্ধ।
ঠিক তখনই সদর দরজায় বেল বাজল। এত সকালে কে এল? কাজের লোক-টোক হবে। নন্দু দরজা খুলে দিতে গেল। নাকে কাপড় চেপে একজন ছুরি দিয়ে চটের থলেটা কাটছে। একটা মেয়ের পচা-গলা দেহ ভেসে উঠছে ধীরে ধীরে। ফর্সা রঙ, অপূর্ব মুখশ্রী... কাদামাটি তার রূপ ঢাকতে পারছে না। এই দৃশ্য চোখে দেখা যায় না। মুখ ফিরিয়ে নিতে নিতে দেখলাম লাশটা পিঙ্কির নয়... পিঙ্কির বৌদির।
উঠোনের দরজাতে ততক্ষণে পিঙ্কি এসে দাঁড়িয়েছে। দু-রাত বাইরে কাটিয়ে সবে ফিরেছে। গায়ে আনকোরা নতুন শাড়ি, কপাল জুড়ে দগ দগ করছে অহংকারী সিঁদুর। উঃ, কী লাল! আমার চোখ পুড়ে যাচ্ছে।
আমার দুই দিকে দুই বীভৎস দৃশ্য। আমি কোনদিকে মুখ ফেরাই?
(পরবাস-৬৭, জুন ২০১৭)