প্রত্যয়
আমার একচিলতে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে
নীচে যখন দেখি, তুমি হেঁটে রাস্তা পার হও,
অনেকটা বাদলা হাওয়া এলোমেলো উড়ে আসে
তুমি রাস্তা পার হও, তোমার মুখ দেখা যায় না ...
অথচ তোমার নীলরঙ শার্টে আমি প্রত্যয় দেখি ...
তোমার দোলায়িত দুটো হাত,
...আমায় এক মেঘ তৃষ্ণা দিয়ে যায়।
টবে পাতা ঘাঁটি, শুকনো পাতা সরিয়ে দিই
মাটি কুড়োই ...জল দিই...জল দিই,
হঠাৎ আর তোমায় দেখি না...
অস্থির সময়, কালচে মেঘের ফাঁকে,
বড় স্তব্ধ নিঃশ্বাস একটুকরো নীল খোঁজে
তবুও একথা জানি,
যখন শেষ ট্রেন হুইসেলের রেশ রেখে যাবে,
তুমি বাদলা হাওয়ায় কয়েককুচি নীল পাঠাবে ঠিক
আমি যে তোমার দেওয়া তৃষ্ণা তুলে মাখি
... নীল প্রত্যয়ে বাঁচি।
নার্সিসিজম
যাওয়ার কথাই মনে আসছে আজ কিছুদিন
প্রভাতী সূর্য, পাখিদের গান, শিশিরে স্নান
উদ্যাপনের কথাই বলে, গায় আবাহনী সুর
গোধূলি চিত্রপটে পুঞ্জিত মেঘেরাই
বলে যায়, তাহাদের কথা।
এইসব নিতান্ত আয়োজন... শুরুর কথা বলে, বহনের কথা বলে, বলে প্রেমের কথা
তবুও, আজ কিছুদিন যাবৎ, মনে তো আসছেই,
চলে যাওয়ার কথা, ...দিগন্তের ওপারে... ওই পারে...
পালকের মতো মনে হয় নিজেকে,
পালকের মতো ভেসে যাওয়াও খুব সহজ এবং নীরবেই
অথচ দূর বেশী নয়, বড় অকিঞ্চিৎকর এই যাওয়া...
অথচ পালক--মুক্তি পাওয়া আমার হল না,
যেতেই হবে!...সঞ্চয়পাত্রও হলো না পরিপূর্ণ, অতএব...
দুই মুঠি মাটিতে পুঁতেই রেখে যাব,
চুপি চুপি রেখে যাব অলিখিত যত দিকনির্ণয়...বাঁশুরি মধুর
পালক মুক্তি বোধহয় প্রয়োজনহীন
... যাওয়ার কথাই তো আসছে মনে এযাবৎ।
(পরবাস-৬৮, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭)