ISSN 1563-8685




সম্পাদকীয়

শরতের আকাশে এমন হঠাৎ করে কালো মেঘ ঘনিয়ে আসবে বোঝা যায়নি। ভাবতে কষ্ট হচ্ছে যে 'রুমিদি', দময়ন্তী বসু সিং, আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন।

পাঠকদের সঙ্গে তাঁর প্রত্যক্ষ যোগ ছিল কম, বরং নিতান্ত কদাচিৎ। অনেক বছর ধরে, ঠিক মনে নেই, বছর আঠেরো বা তার বেশিও হতে পারে, তাঁর সঙ্গে পরবাস-এর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। খুব সহজেই কাউকে আপন করে নিতে পারতেন, কাজেই পরবাস-এর সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হতে বেশি সময় লাগেনি। তিনি ছিলেন যাকে বলে 'বাবা-অন্ত প্রাণ', কাজেই পরবাসের বুদ্ধদেব বসু বিভাগ, এবং বু.ব.-র সূত্রে অনুবাদ বিভাগ ও অন্যান্য নানা বিষয়ে তাঁর পরামর্শ ও সাহায্য পরবাসকে সমৃদ্ধ করেছে। বিশেষ করে বু.ব.-র ব্যাপারে সবকিছু নিয়ে খোলাখুলিভাবে আমাদের সঙ্গে তিনি আলোচনা করতেন সেইজন্যে আমরা অনুপ্রাণিত এবং গর্বিত বোধ করতাম। আগামী নভেম্বরেও বু.ব.-র ১১০-তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে এমন পরিকল্পনা করছিলেন, যেখানে পরবাস-এর একটি বিশেষ ভূমিকা থাকার কথা ছিল। কথা হচ্ছিল এবারের বইমেলাতে একসঙ্গে 'স্টল' দেবার ব্যাপারেও। অনেক কিছু মনে পড়ছে--পরবাসের 'বুকস্টোর্স'-এর পিছনে তাগিদ ছিল রুমিদির 'বিকল্প'-র বইগুলির প্রচার। বিকল্প আর্ট শপ-এর কাজের সঙ্গেও জড়িত থাকার সুযোগ হয়েছিল।

প্রাণোচ্ছল, সবসময়ে নানা পরিকল্পনাতে মন যেন টগবগ করছে, ভাঁড়ারে অজস্র গল্প ও স্মৃতি, যা সামান্য প্ররোচনাতেই শোনার সৌভাগ্য হয়। সৌভাগ্য বলা হলো, কারণ তার বেশিরভাগের স্থান-কাল-পাত্র আমাদের কাছে আকর্ষণীয় ও আদরণীয়। অনেকবার বলা সত্ত্বেও তাঁকে দিয়ে বড়ো কিছু লেখাতে পারিনি; কিন্তু সম্প্রতি জানলাম পরবাসের জন্যে নাকি এবারে সত্যিই তাঁর স্মৃতিকথা লিখবেন, এমনকী তার প্রথম পর্ব হয়ে গেছে--সেটা দেখার সুযোগ হলো না।

রুমিদির বন্ধু ও পরিচিতের সংখ্যা অনেক--আহ্বান জানাই পরবাস-এর পাতায় রুমিদির স্মৃতি ও তাঁর কাজের বর্ণনা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিতে।


শাম্ভবী ঘোষ ও সাবর্ণি চক্রবর্তীর দু'টি নতুন উপন্যাস, এবং রঞ্জন রায়ের একটি স্মৃতিকাহিনি ধারাবাহিকভাবে শুরু হলো। ধারাবাহিকগুলি আরো ঘন ঘন প্রকাশ করার ইচ্ছে আছে। 'বিজয়িনী' শিরোনামে ছ'টি ছবি ও কবিতার এক গ্যালারি রইল এক নতুন জিনিস হিসেবে। এছাড়া গল্প-কবিতা-প্রবন্ধ-সমালোচনা-ভ্রমণকাহিনি ইত্যাদি তো রয়েইছে এই শারদ-সংখ্যায়।

সবাইকে শারদীয়ার আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই।



(পরবাস-৭২, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮)