Subscribe to Magazines



পরবাসে সুনন্দন চক্রবর্তীর
আরো লেখা



ISSN 1563-8685




বাঙাল পুনশ্চ মাসাইমারা


কিলিমাঞ্জারোর সামনে হাতির দঙ্গল

বাঙালরা, আপনারা জানেন হয়তো, আনপ্রেডিক্টেবল। পাশের বাড়ির মেসোমশাই যখন বলেন ‘মাইয়াটারে আবার যদি কলেজ থিক্যা বাড়ি আইবার পথে আইসক্রিম খাওনের তরে লইয়া গেসস্, দাও দিয়া হাইল্যা ফেলামু’, গোছের হাঁক পাড়েন বাঙাল তখন সুমধুর হাস্য করে। সেই আবার পরের দিন বাজারে মাছওয়ালা যদি বলে, ‘কত্তা, আপনের পরীক্ষায় তো সাক্ষাৎ সীতাদেবীও ফ্যাল পড়ত’, ধুন্ধুমার বাধিয়ে বসে, বাজার কমিটি আধবেলা বাজার বন্ধ রাখতে ‘বাইদ্য’ হয়। অস্যার্থ সরাসরি কনফ্রনট্রেশন বীরধর্ম কিন্তু বাঙালের আঁতে ঘা দিয়ে কথা বলতে নেই।

আপনি যদি বার দুয়েক মাসাইমারা, সেরেঙ্গেটি ঘুরে আসেন তখন আর পাঁচটা লোকের মতো লুঙ্গি ফতুয়া পরে বেরিয়ে পড়া আপনাকে আর মানায় না। তাই রকে আড্ডা মারতে গেছিলাম মাসাইদের মতো একটা লাল চৌখুপি ছাপা চাদর কাঁধের ওপর থেকে ত্যারছা করে পরে। হিংসুটেগুলোর সহ্য হবে কেন। বলে, ‘আফ্রিকা-র জঙ্গল-টঙ্গলে কি এখনও একটু কম জামাকাপড় পরার চল রয়েছে? মানিয়ে যায় কিন্তু, যেমন শিশুরা মাতৃক্রোড়ে’। কেমন ঠেস দিয়ে কথা, দেখলেন?

ধাঁ করে মাথায় রক্ত চড়ে গেল। লকার থেকে মা-র বালাজোড়া বের করে সোজা চলে গেলাম রামকৃষ্ণ স্যাকরার কাছে। বাড়ি ফিরেই ফোন করলাম জোশে-কে। জোশে আমাদের গতবারের সারথি। বলেছিল ওকে ফোন করে নিলে এজেন্সি ফেরতা হয়ে যেতে হবে না। খরচ অনেক কম হবে। আর এখন তো নাইরোবি আমি প্রায় বিজয়গড়ের মতোই ভালো করে চিনি। হুঁ হুঁ বাবা, এই নিয়ে দুই দুই বার। কাজেই জোশের সঙ্গে কথা শেষ করে সাঙ্গোপাঙ্গ জুটিয়ে বেরিয়ে পড়লাম।

বিমান যাত্রা প্রায় ঘটনাহীন, খালি দীপঙ্কর লু থেকে ফেরার সময় প্লেন একটা বাজে বাঁক নেয়। ফলে আইল-এ বসা এক পৃথুলা কেনিয়ান মহিলার কোলে দীপঙ্কর ল্যান্ড করে। চোখে ছানি পড়ার পর থেকে একটু আবছা দেখি শুধু তা নয়, যাকে বলে রিফ্লেক্স, তা-ও একটু ঢিলে হয়ে গেছে। ফলে যতক্ষণে আমি ‘টিচ ইওরসেলফ সোয়াহিলি’ হাতড়ে উপযুক্ত শব্দগুলো খুজে পাচ্ছি দীপঙ্কর উঠে দাঁড়িয়ে জবরদস্ত ইংরেজিতে ব্যাপারটা মিটিয়ে ফেলল। মহিলা একটু হাত তুলে সহাস্যে ক্ষমা করে দিলেন। আফ্রিকার সহনশীলতা তো ঐতিহাসিক সত্য।

ভাইরাস নামক কিছু উড়ো খবর এদেশে এসে পৌঁছলেও স্বাভাবিকভাবেই সেগুলোকে আমরা তেমন পাত্তা দিইনি। এরোব্রিজের মুখে সুদীর্ঘ একজন হলিউড সিনেমার আততায়ীর স্টাইলে একটা হাত পিছনে আড়াল করে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বাইরে পা দেয়া মাত্র আচমকা একটা পিস্তলের মত জিনিস কানপট্টিতে তাক করলেন। পিলে চমকে গেল। পরে বুঝলাম গায়ের তাপমাত্রা দেখে নেওয়ার অতি নিরীহ এক ব্যবস্থামাত্র। অতঃপর খুব মসৃণভাবে ইমিগ্রেশন, কাস্টমস পেরিয়ে বাইরে এসে দাঁড়াতেই বুক জুড়িয়ে গেল— জোশে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে। সাধারণত জনে জনে কেনিয়ান সিমকার্ড নেবার দেরিটা সহ্য হতে চায় না। এবার ইউরোপিয়ানদের একটা বড়ো দল ফেরার জন্যে এসেছে। তাদের এজেন্সি বিদায় সম্বর্ধনা দেওয়ার জন্যে নিয়ে এসেছে কেনিয়ান এক তাসা পার্টি। নেচে গেয়ে ড্রাম বাজিয়ে তারা ফাটিয়ে দিচ্ছে। কোথা দিয়ে সময় চলে গেল টেরই পেলাম না। নিশুত রাতে যখন হোটেলে ঢুকলাম তাদের রেস্তোঁরা বন্ধ হয়ে গেছে।

রাত্তিরে হাবিজাবি শুকনো খাবার খেয়ে শুয়েছিল সবাই। সামনে কয়েক ঘন্টার মোটর যাত্রা। হামলে পড়ে খেলাম সবাই। তারপর জোশে আর তার বন্ধুর গাড়ি করে আমরা বেরিয়ে পড়লাম। যে তিন হতভাগ্য এই প্রথম এসেছে তাদের প্রত্যেকটা মাইলস্টোনের ধারাবিবরণী দিতে দিতে, পথে একবার থেমে পৌঁছে গেলাম মান্যাটা ক্যাম্পের কাছে। এবারে ঝকঝকে আলো আছে। সুজন প্রস্তাব দিল আলো থাকতে থাকতে মাসাই গ্রাম ঘুরে নেওয়া যাক। তিন চারটে বা আরও বেশি মাসাই গ্রাম আছে ওই চত্বরে।


মাসাই কিশোরেরা
গাড়ি এগোতেই ঝলমলে গয়না আর উজ্জ্বল মাসাই চাদর পরিহিত অগ্রদূতেরা ঘিরে ধরে তাদের গ্রামে যাওয়ার জন্যে ঝুলোঝুলি করতে থাকল। সারা পৃথিবী জুড়েই আদিম জনগোষ্ঠীগুলোকে সভ্যতা কোণঠাসা করে ফেলেছে। এরাও তার ব্যাতিক্রম নয়। একদা পরাক্রান্ত শিকারি মাসাইরা তাদের প্রথাগত শিকার আর পশুচারণ ক্ষেত্র হারিয়ে অত্যন্ত দীন জীবনযাপনে এখন বাধ্য। ট্যুরিস্টদের তামাশা দেখিয়ে রোজগার মনে হয় এখন এদের অন্যতম প্রধান আয়। তবে গোষ্ঠীবদ্ধতার কিছু রেশ রয়ে গেছে।

অর্থমূল্য ঠিক হয়ে যাওয়ার পর আমরা সাদর আমন্ত্রণ পেলাম গ্রামের ভেতরে ঢোকার এবং যথেচ্ছ ছবি তোলার। ওঁরা গাইলেন, নাচলেন, কাঠে কাঠে ঘষে আগুন জ্বালানো দেখালেন, আমরা ছবি তুললাম। তারপর মোড়লরা ঠিক করে দিল একেকজন ভ্রমণার্থী কোন কোন বাড়িতে যাবে। সেখানে বাড়ির মালিক আমাদের মাসাই জীবনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেবে এবং তারপর হাজির করা হবে মাসাই চাদর, পুঁতির গয়না, কাঠ কুঁদে তৈরি মুখোশ অথবা মূর্তি। আশা করা হয় কিছু একটা অন্তত কেনা হবে। এটা সম্পূর্ণ ওই পরিবারের রোজগার। যাতে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সব পরিবার-ই এই সুযোগ পায় সেজন্য মোড়লেরা পালা করে একেক বাড়িতে পর্যটকদের পাঠায়। প্রায় ন্যাশনাল জিয়োগ্রাফিকে দেখা উজ্জ্বল, বলিষ্ঠ, সুঠাম মাসাইদের আমরা ছবি নিলাম বটে কিন্তু ওঁদের জীবনে ঠিক কতখানি ম্লানতা আছে ওই অল্প পরিচয়ে তা আমাদের অজানা থেকে গেল।


কাঠে কাঠে ঘষে আগুন জ্বালানো

মান্যাটা ক্যাম্পটা মাসাইমারা রিজার্ভ-এর বাইরে। আমাদের এবার পরিকল্পনা বাকি দু-রাত বনের ভিতরের এক ক্যাম্পে থাকার। সকালে এক দফা ঘোরাঘুরি করে দুপুরে সেখানে যাব আমরা। আরম্ভ হল দুর্দান্ত। সুন্দর আলোয় শুয়ে আছে তিনটে চিতা। ল্যাজ আছড়াচ্ছে, হাই তুলছে, একটু হাঁটাহাঁটি করছে আর মাঝে মাঝে খুবই অবজ্ঞার সঙ্গে তাকাচ্ছে যে গাড়িগুলো তাদের ঘিরে ধরেছে তাদের দিকে। চতুর্দিকে চাপা হর্ষধ্বনি আর ক্যামেরার শাটার পড়ার শব্দ। তারপর আমাদের গাড়ি দুটো রওয়ানা হল কিকরোক লজ-এর উদ্দেশ্যে। সবচেয়ে পুরোনো লজ মাসাই-এর। বিশাল এলাকা নিয়ে লজ। প্রচুর বিরাট বিরাট গাছে লাফালাফি করছে নানা বী ইটার আর ফ্লাইক্যাচারেরা। সামনের আর পিছনের দুটো বিরাট মাঠের একেক পাশে সারি সারি চমৎকার সব কটেজ। লজের পিছনের মাঠ পেরিয়ে নিজস্ব হিপো পুল। অভ্যাগতদের জন্যে গোলাকার মাথা ছাওয়া বসার জায়গা করা আছে তার পাড়ে। এক ছোট্ট হাওয়াই আড্ডা আছে খানিকটা দূরে, মাসাই-এর প্রায় কেন্দ্রস্থলে। সিংহ-রা সেখানে মাঝে মাঝে হাওয়া খেতে আসে। আর বনের মাঝখানের লজগুলোতেও অনেকে নাইরোবি থেকে সিধা উড়ে চলে আসেন। এইসব লজগুলো তৈরি হয়েছিল যখন পৃথিবীতে মানুষ ছিল কম আর জায়গা ছিল বেশি। বলাই বাহুল্য এখানে খাওয়ার আয়োজন সুপার মডেলদেরও ডায়েটের কথা ভুলিয়ে দেবে।


সিংহের মরি
এখান থেকে যে দু-দিন আমরা বনের আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়ালাম সে একেবারে ‘অমিয় ছানিয়া’ মুহূর্ত সব। সবচেয়ে বেশি আপ্লুত সুচিত্রাদি— দীর্ঘদিন কলেজের ছেলেমেয়েদের জুলজি পড়িয়েছেন, এখন হাত থেকে বাইনাকুলার আর নামছেই না, ক্ষুদ্রতম পাখিটিও তাঁর নজর এড়াচ্ছে না। লম্বা লম্বা লেনসওয়ালারাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন ক্ষণে ক্ষণে। আর এই ফেব্রুয়ারিতে মাসাই-এ ভিড়ও অনেক কম। শিকার পাহারা দেওয়া সিংহ, চিতাবাঘের দল, ল্যাগবেগে জিরাফ, জেব্রা, উটপাখির দঙ্গল, হাতি, বেবুন, শেয়াল এসব তো আছেই এবার বাড়তি পাওনা হল দুই শিং-ওয়ালা কৃষ্ণবর্ণ গন্ডার। বেশিদিন আর হয়তো দেখাও যাবে না দু-পেয়েদের জ্বালায়। আরেকটা হাটারি থেকে তুলে আনা দৃশ্য দেখলাম। চিতারা তিন ভাই ঘুরে ঘুরে দেখছিল ক্যামেরাওয়ালাদের। তারপর বেশ কিছুটা দূরে ঘুরে বেড়ানো একদল গ্রান্টস গেজেলের দিকে তাদের নজর পড়ল। সঙ্গে সঙ্গে তাদের চালচলন হয়ে এল নিঃসাড়। অল্প অল্প করে ঘাসের মধ্যে দিয়ে তারা এগোতে থাকল সে দিকে, তারপর আচম্বিতে জ্যা-মুক্ত তীরের মত ছুট দিল হরিণদের দিকে। মাঝখানে ছিল তিনটে উটপাখি। তারাও দিল দে ছুট। ফলে হরিণেরা বিপদ আন্দাজ করে লাগাল ছুট। তারপর সেই বিস্তীর্ণ প্রান্তরে সে কী রেস, সে কী রেস। উটপাখিরা ক্যাবলা ক্যাবলা দেখতে হলে কী হবে, দৌড় তাদের দেখার মত। হরিণরা তো আগে ছিলই, উটপাখিদের পর্যন্ত ধারে কাছে আসতে না পেরে বিশ্রীভাবে থার্ড হওয়া চিতারা লজ্জায় মাথা নীচু করে কোথায় মিলিয়ে গেল। জড়ো হওয়া গাড়িগুলো থেকে ভেসে আসা অট্টহাস্য তাদের দুয়ো দিয়ে তাড়িয়ে নিয়ে গেল।

দুই সিং গণ্ডার

আর মাসাই ছেড়ে বেরোবার মুহূর্তে গাছের ডালে দিবানিদ্রা দেওয়া এক লেপার্ডের দেখা মেলার পর আমাদের আর চাওয়ার কিছু ছিল না। কিন্তু মাসাই এবার আমাদের আহ্লাদ দেবে বলে ঠিক করেছে। তাই এবার দেখলাম আরও দুটি চিতার লজ্জাজনক পশ্চাদপসরণ। তাঁরাও একটু জিরিয়ে নিচ্ছিলেন। এমন সময় কানে এল বেবুনের ডাক। ওঁরা উঠলেন, বারে বারে পিছন পানে দেখলেন এবং দ্রুত পলায়ন করলেন। হাসতে হাসতেই আমরা চলে এলাম নাইবাসা। এবারে লেক প্রায় ফাঁকা। রয়েছে কেবল মেছো ঈগলের দল, পায়েড কিংফিশার আর দু-চারটে পেলিক্যান। নৌকাবিহারে গিয়ে সাক্ষাৎ পাওয়া গেল এক জায়ান্ট কিংফিশারের। পরের দিন সকালবেলা আমরা গেলাম এলিমেনটাইটা লেকের ধারে। সেখানে রয়েছে ঝাঁক ঝাঁক ফ্লেমিংগো। বিকেলে আবার নৌকা করে ঈগলদের মাছ ধরার ছবি তোলা হল। আজ সন্ধেবেলা পানভোজন একটু গুরুভার হল। দলের অর্ধেক কাল বাড়ির দিকে রওনা হবে আর দীপঙ্কর, অভিজিৎ, সুচিত্রাদি আর আমি যাব আম্বোসেলি।


অলস চিতা

বেশ অনেকটা রাস্তা। বিকেল হয়ে গেল আমাদের আস্তানায় পৌঁছতে। এই ইমপালা সাফারি লজও সুবিশাল। এখানেও ভিতরে প্রচুর গাছ আর তাতে গিজগিজ করছে বায়া উইভার জাতীয় পাখির ঝাঁক। সন্ধের মুখে সুইমিং পুলের খোঁজে হাঁটতে বেরিয়ে ঘোরা হল অনেকখানি। অবশেষে সেটাও পাওয়া গেল আর পড়ে আসা আলোয় প্রথমবারের মত দেখলাম কিলিমাঞ্জারো। ওই পুলের জলে পা ডুবিয়ে বসে হাতের পানীয়তে আলতো করে চুমুক দিতে দিতে মেঘে ঘেরা কিলিমাঞ্জারোর চূড়ার দিকে তাকিয়ে দেখবেন একবার মনে হবে টমটমে করে স্বর্গে যাচ্ছেন। দীপঙ্কর তো তাই বলল।


দীপঙ্করের সমরসজ্জা

পরদিন দুরুদুরু বক্ষে গিয়ে ঢুকলাম আম্বোসেলি। এবং কিমাশ্চর্য যা দেখার জন্যে শুনেছি লোকে দিনের পর দিন অপেক্ষা করে থাকে সহজেই দেখতে পেলাম সেই বিখ্যাত দৃশ্য— পশ্চাৎপটে কিলিমাঞ্জারো রেখে মিছিল করে আসছে হাতির দল।

আমাদের শেষ গন্তব্য ৎসাবো ইস্ট। কত গল্প শুনেছি মোম্বাসা থেকে নাইরোবি রেললাইন পাতার সময় ৎসাবো-র বিভিষীকা সেই দুই সিংহ-এর গল্প। ‘ডার্কনেস অ্যাট নুন’ সিনেমাটা বোধহয় বার চারেক দেখেছি। কালো কেশরের সিংহ তো আমরা দেখবই। দেখব দু-রকমের ধনেশ আর মাটি মেখে লাল হয়ে যাওয়া হাতির দল, গোশক আর ডিকডিক, ওয়াটার বাক আর জিরাফ কিন্তু সব থেকে ভালো লাগল আমাদের এখানের নির্জনতা, নদীর ধারে পিকনিক আর এই বনের একটা বুনো বুনো ভাব যেটা ট্যুরিস্ট আধিক্যের ফলে মাসাই থেকে খানিক লোপ পেয়েছে।

এখন মনে হচ্ছে মোম্বাসা আর ৎসাবো (ইস্ট এবং ওয়েস্ট) দেখার জন্যে আসতে হবে আবার। আওয়াজ দিয়েছিল যে হারামজাদা, সঙ্গে করে সেটাকেও নিয়ে আসব তখন।


ৎসাবো-র সিংহ দম্পতি



(পরবাস-৮০, ১২ অক্টোবর, ২০২০)