Subscribe to Magazines



পরবাসে
সুদীপ সরকারর

আরো লেখা


ISSN 1563-8685




প্রতীক্ষা

“সারাদিন গড়িয়ে কাটালে। মেয়েটাকে একটু দেখতে বললাম, সেটাও করলে না। নিজে জীবনে কিছু করতে পারো নি, মেয়েরও কিছু হবে না।” উষ্মা ঝরিয়ে বলল রঞ্জনা, “কাজের কাজ না করে, উনি সাহিত্যচর্চা করছেন, কুঁজোর আবার চিৎ হয়ে শোবার সখ।”

এইসব তীব্র শ্লেষাত্মক বাক্যবাণ আজকাল আমাকে আর বিদ্ধ করে না। বারো তেরো বছরের দাম্পত্য জীবন পে্রিয়ে আসা সব পুরুষমানুষই বোধহয় এরকম স্থিতধী হয়ে ওঠে। স্ত্রীর নিরন্তর অভিযোগ, সর্বত্র ত্রুটি অন্বেষণ আর সময় বিশেষে নিরীহ স্বামীটির ওপর আস্ফালন, সব সংসারেই এক চিত্র। আমি তাই কানে গুঁজেছি তুলো আর পিঠে বেঁধেছি কুলো। গোবেচারা সেজে বললাম, “আরে বাবা, গুনগুন-কে অঙ্ক করতে দিয়েছি তো।”

রঞ্জনা কিছুটা আশ্বস্ত হোল বোধ হয়, গজগজ করতে করতে অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। অঙ্ক করতে দেওয়ার সুবিধে হোল, গুনগুন অঙ্ক করতে করতে আমার আরও গোটা কয়েক পাতা পড়া হয়ে যাবে। মহাভারতের নারী চরিত্রদের নিয়ে লেখা নৃসিংহ ভাদুড়ীর একটা ক্লাসিক পড়ছিলাম। মনোনিবেশ করতে না পারলে পড়তে সময় বেশি লাগে। এদিকে গুনগুন ইউনিটারি মেথডের অঙ্ক শিখবে বলে রেখেছে। মাধ্যমিকে অঙ্কে একশোতে একশো পেয়েছিলাম বটে কিন্তু এখন দেখছি অনেক কিছুই আমার স্মৃতি থেকে লুপ্তপ্রায়। এইচসিএফ এলসিএম বা এলজেব্রার কারিকুরি কেমন যেন সব অপরিচিত মনে হয় আজকাল। সমস্যা অন্য জায়গাতেও। ভূগোল পড়াতে গিয়ে দেখলাম এসচুয়ারি, পোলডার, গর্জ, কন্টুর কী নেই? প্রায় কুড়ি বাইশ পাতা জুড়ে এইসব ফিচারস নিয়ে আলোচনা দেখে ঘাবড়ে গেলাম। বললাম, “গুনগুন, নিজে একবার পড়ে দেখে নাও, না বুঝলে বুঝিয়ে দেব।” ক্লাস সিক্সের গুনগুন নিজেই অনেক কিছু পড়ে নেয়, আমাকে খুব একটা বিরক্ত করে না, তবে ওই এসচুয়ারি বা পোলডার যে আমার সিলেবাসের বাইরের জিনিস সেটা বোধ করি ও বুঝে নিয়েছে। রঞ্জনাকে দেখিয়ে দেখিয়ে মাঝেসাঝে কোন ছুটির দিনে কেমিস্ট্রি বা ফিজিক্স পড়াতে বসি মেয়েকে। গুনগুন অঙ্ক শেষ করে কেমিস্ট্রি নিয়ে বসেছে। গলা হাঁকিয়ে বললাম, “বইটা দে, পড়া ধরব, কেমন পারিস দেখি।” বইটা নিয়ে এদিক ওদিক পাতা উল্টে জিজ্ঞেস করলাম, “হোয়াট আর দা ডিফারেন্সেস বিটুইন এলিমেন্টস এন্ড কম্পাউন্ডস?”

অফিসেও আজকাল খুব চাপ। আগে সারাদিনে খানতিনেক ফাইল নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতেই দিন কাবার হয়ে যেত। আজকাল সারাদিন একটার পর একটা কাজ করতে করতে দম ফেলার সময় পাই না। হ্যাঁ, কলম পিষে প্রায় পনেরোটা বছর কাটিয়ে ফেলার পর সরকারি দফতরের পাল্টে যাওয়া ভাবগতিক আরও বেশি করে চোখে পড়ে এখন। দীপকদা আমাদের সেকশান অফিসার, অবসর নেবেন সামনের মাসে। ইদানীং খুব উৎফুল্ল থাকেন। জিজ্ঞেস করলে বলে, “আমার তো ছুটি হয়ে এল, আবার কী; সরকারি অফিসের অলিগলি ঘুরছি চল্লিশ বছর, এবার তোরা বুঝে নে।” ছোট ডিবে থেকে এক চিমটি জোয়ান মুখে চালান করে বলেন, “আক্ষেপ এই যে তোরা কিছু কাজকম্ম শিখলি না। দু লাইন নোট লিখলেই ভাবিস কাজ শেষ। সেক্রেটারিয়েট ম্যানুয়ালটাই তো আজকালকার ছেলেপিলেরা খুলে দেখল না।”

দীপকদা চলে গেলে আমাদের অবস্থা খানিকটা ওই নাবিকহীন জাহাজের মত হবে। কাজের ব্যাপারে কোন পরামর্শ লাগলে আমরা ওই দীপকদারই শরণাপন্ন হই। সময় থেমে থাকে না, মানুষ বড় থেকে বুড়ো হয় তারপর একদিন অবসর। ডেপুটি সেক্রেটারি মলয় দত্ত সাহেব নিজে যেমন কাজের মানুষ, তেমনই কাজ জানা লোকের কদর করতেও জানেন। দীপকদাকে উনিও খুব সম্মানের চোখে দেখেন। অল্পবিস্তর লেখালেখি করার বাতিক আছে বলে আমাকেও কিছুটা স্নেহ করেন; সাহিত্যবোধ সম্পন্ন সমঝদার মানুষ বলেই হয়ত।

বাবার খুব ইচ্ছে ছিল একটা ছেলে অন্তত ভালো কিছু করুক। দাদা সে আশা পূর্ণ করেছে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছে, গবেষণার কাজকর্মও কিছু করে শুনেছি। মা বর্ধমানের বাড়িতেই থাকেন দাদা বৌদি আর আমার একমাত্র ভাইপো, সদ্য কলেজে ঢোকা নীল-এর সাথে। অঙ্কে একশোতে একশো পেয়েছিলাম মাধ্যমিকে, ক্লার্কশিপ পরীক্ষাতেও একশোটা অঙ্কের মধ্যে চুরানব্বইটা ঠিক করেছিলাম, অন্য পরীক্ষা আর দিতে হয় নি। সেই থেকেই কলম নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু। আমার লেখালেখি নিয়ে কারুর কোন উৎসাহ নেই আমার মা ছাড়া। মা একমাত্র আমার লেখাজোকার কিছুটা কদর করে, কিছু লিখলেই মাকে না পড়ানো পর্যন্ত আমার শান্তি নেই। ছোটখাটো কিছু পত্রপত্রিকায় দু-চার পিস প্রকাশিত হয় মাঝে মধ্যে, তবে কোন নামী পত্রিকা সেসব ছুঁয়েও দেখে নি। অনেক প্রতীক্ষা করে করে শেষ পর্যন্ত হাল ছেড়ে দিয়েছি। আজকাল আর কোথাও লেখা পাঠাই না। রঞ্জনা বোধহয় ঠিকই বলে, “যত সব ট্র্যাশ, ওসব কে পড়বে? এসব ছেড়ে, একটু বাড়তি মন যদি সংসারে দিতে তো কাজের কাজ হত।”

চাকরি পাওয়ার পর থেকেই কোলকাতায় দু-কামরার সরকারি আবাসনের ফ্ল্যাটে আমাদের তিনজনের নিউক্লিয়ার সংসার। চার দেওয়ালের খাঁচায় নিজেকে খাপ খাইয়ে নিয়েছি আস্তে আস্তে। দু-তিন মাস অন্তর বর্ধমানের বাড়িতে যাই, একটা দিন কাটিয়ে আসি সবার সাথে। রঞ্জনা মেয়েকে নিয়ে খুব একটা নড়তে চায় না। কোলকাতা ছেড়ে মফস্বলে থাকার ব্যাপারে রঞ্জনার ভাবনাচিন্তা পরিষ্কার। একদিন দুদিন ঘুরতে গেলে ঠিক আছে, কিন্তু পাকাপাকি ভাবে নৈব নৈব চ। এতদিনেও একটা নিজস্ব টুবিএচকে ফ্ল্যাট বুক করে উঠতে পারিনি কোলকাতায়, নিদেনপক্ষে শহরতলিতে, দমদম, বেলঘরিয়া বা গড়িয়ার দিকে কোথাও। পে-কমিশন হোল, ধাপে ধাপে মাইনেও বেড়েছে অনেকটাই তবুও জুতসুই দামে পাচ্ছি কই! রঞ্জনাকে বুঝিয়েছি, “অবসরের পরে এই শহরে আর কি? দেশের বাড়িতে কত জায়গা, স্কোয়ার ফুট বা কভারড এরিয়ার হিসেব করতে হয় না। অগুন্তি ঘরদোর ফাঁকা পড়ে রয়েছে। ফিরে যেতে অসুবিধা কোথায়?” রঞ্জনার এক কথা, “যেতে হয় তুমি যেও, গ্রামে থাকার কথা আমি ভাবতেও পারি না। এই তো সুলেখার হাজব্যান্ড কী সুন্দর একটা ফ্ল্যাট বুক করেছে রাজারহাটে। চেনা পরিচিত বন্ধুবান্ধব সব কোলকাতায় আর তুমি ফিরতে চাইছ কোথায়, না বর্ধমান।”

অবাক লাগে বদলে যাওয়া রঞ্জনাকে দেখে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি নিয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশান করার সময় ওর সাথে আমার আলাপ। ও তখন বটানি সেকেন্ড ইয়ার। আলাপ থেকে ঘনিষ্ঠতা থেকে একসাথে থাকার সিদ্ধান্ত। বাবা-মা কারুরই আপত্তি ছিল না, চাকরি পাওয়ার পরে পরেই শুভপরিণয়। সেই থেকে বর্ধমান ছেড়ে কোলকাতায়। এখন ওর কাছে বর্ধমান নেহাতই গ্রামীণ জেলা। কিন্তু আমার শিকড় এখনও প্রোথিত রয়েছে সেই মাটিতেই, সেই মাটির ঘ্রাণ এখনও পাই মাঝে মাঝে, এক পশলা বৃষ্টি হলে বা সন্ধ্যে বেলার শঙ্খধ্বনির সুরে। গতকাল দাদা ফোন করেছিল, বাড়ি যেতে হবে, কী দরকার আছে বলল। রঞ্জনা বলল, “দাদা জমির ব্যাপারে আলোচনা করতেই ডেকেছে। তুমি কিন্তু টাকা নিয়ে জমি ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব থেকে নড়বে না।” বিষয়আশয় নিয়ে কথা প্রসঙ্গে খুব আড়ষ্ট লাগে, বললাম, “আবার শুরু করলে? দাদা ডেকেছে, অন্য দরকারও থাকতে পারে, আগে যাই তো।” রঞ্জনা মুখ ঝামটা দিল, “আরে কী খারাপ বললাম? তুমি সেই আটপৌরে মানসিকতা থেকে বেরোতে পারলে না।” রঞ্জনা ঠিক বলে, আমি নিজের ছাপোষা গণ্ডির মধ্যেই বিন্দাস আছি। জমি নিয়ে রঞ্জনা অনেক সাজেসান দিয়েছে কিন্তু সে সব আমি নিজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছি। দুর্গাপুর এক্সপ্রে্সওয়ের কাছেই একটা কাঠা দশেক জমি আছে মায়ের নামে। দাদার প্রস্তাব, ওই জমিতে একটা বাংলো প্যাটার্নের বাড়ি তৈরি করে দু-ভাই একসাথে থাকি। মায়ের ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স যা আছে তার সাথে কিছু বাড়তি জুড়লেই হয়ে যাবে। মায়েরও ইচ্ছে দুভাই এক সাথে থাকি। এখনকার গ্রামের বাড়িটা বাগানবাড়ির মত থেকে গেল, বছরকার দিনে আত্মীয় বন্ধুবান্ধব মিলে গেট টুগেদার করা যাবে। রঞ্জনা যদিও টাকা নিয়ে জমি ছেড়ে দেওয়ার যুক্তিতে অনড়। চটপট ছোট ব্যাগটা গুছিয়ে নিলাম, যত্ন করে ভরে নিলাম সদ্য লেখাগুলির পাণ্ডুলিপির কপি, মায়ের জন্য।

প্রায় তিন মাস পর এসেছি বাড়িতে। সারাদিন সবার সাথে অনেক গল্প-আড্ডা হোল। এক ফাঁকে মায়ের টেবিলে লেখাগুলো যত্ন করে রেখে দিয়েছি। মা ঠিক সময় করে পড়বে জানি। বিকেলের দিকে বারান্দায় বসলাম দাদার সাথে। প্রশস্ত বারান্দা থেকে সামনের বাগান দেখা যায়। বাবার লাগানো আম জাম কাঁঠালের গাছগুলো কী সুন্দর ছায়াময় একটা পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। ঈশান কোণের ফলসা গাছটায় উঠে ছোটবেলায় কত ফলসা পেড়ে খেতাম মনে পড়ল। আমাদের বাড়ি ছাড়া আর কোনদিন কোথাও ফলসা গাছ দেখিনি। বছর খানেক আগে গাছটায় বাজ পড়েছিল, ক্ষতি হলেও জীবনীশক্তি দিয়ে আবার বেঁচে উঠেছে। আগের মত ফলসা আর হয় না এখন। গাছেরও তো বয়েস বাড়ে, গাছের অবসর হয় কি না কে জানে! গাছে গাছে অজস্র পাখির ঝাঁক নিজেদের মধ্যে কিচিরমিচির রব তুলে শেষবেলার বোঝাপড়া সেরে নিচ্ছে।

সারাদিনে দাদা একবারও বলে নি কেন আসতে বলেছে। জিজ্ঞেস করলাম “দরকার আছে বলেছিলি?” দাদা মোটা ফ্রেমের চশমাটা খুলে ফতুয়ার খুঁট দিয়ে মুছতে মুছতে বলল, “হ্যাঁ, একটা ভালো খবর আছে বুঝলি? ফোনে বললে ঠিক জমত না, তাই বললাম চলে আসতে। তুই যে লেখাগুলো মাকে পড়ার জন্য দিস, তার মধ্যে কিছু কিছু আমিও পড়ে দেখেছি। খানকতক রজতকে দিয়েছিলাম। রজত সাংস্কৃতিক জগতের মানুষ, কিছু লিটেরারি কাগজ সম্পাদনা করে, আকাশবাণীর সাথেও নিবিড় যোগাযোগ আছে। একটা এফেম চ্যানেলে স্বরচিত ছোটগল্প পাঠের প্রতিযোগিতায় তোর লেখা একটি গল্প রজত দিয়েছিল। খুব আনন্দের কথা, তোর লেখা সিলেক্টেড হয়েছে। ওয়ার্ল্ড স্টোরি টেলিং ডে-তে তোকে তোর লেখা পড়ে শোনাতে হবে এফেম রেডিও-তে। আমি তো জাস্ট ভাবতে পারছি না। মা কিন্তু তোর লেখার খুব গুণগ্রাহী, এবারে স্বীকৃতি পেল তোর প্রতিভা।”

দাদার চোখে দেখলাম একফোঁটা মুক্তো। কী বলব বুঝে উঠতে পারছিলাম না, বোকার মত বললাম, “এই ওয়ার্ল্ড স্টোরি টেলিং ডে-টা আবার কবে? এই রকম কোন দিন সেলিব্রেট করা হয় তাই তো জানতাম না।” নীল আর বৌদি কখন এসে আমাদের পিছনে দাঁড়িয়েছে খেয়াল করিনি, নীল বলল, “১৯৯১ সালে প্রথম সুইডেনে ওয়ার্ল্ড স্টোরি টেলিং ডে অবজারভ করা হয়েছিল, অন দা ইকুইনক্স ডে। তারপর থেকে বিভিন্ন দেশেই মার্চের ২০ তারিখ ওয়ার্ল্ড স্টোরি টেলিং ডে হিসেবে সেলিব্রেট হয়ে আসছে। এটা কিন্তু ব্যাপক এচিভমেন্ট কাকু, জাস্ট ফাটাফাটি।” একটা অন্য রকমের অনুভূতি হচ্ছিল, যেটা কোনদিন কল্পনাও করিনি সেরকম কিছু হলে যা হয়। আমার হাবিজাবি লেখাগুলো অযত্নে একটা ধুলোজমা টু-ফোল্ড ফাইল বন্দি হয়ে পড়ে আছে আলমারির মাথায়। প্রাথমিক ঘোর কাটিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, “কোন গল্পটা দিয়েছিলি রজতদাকে? মানে কোনটা সিলিক্টেড হয়েছে?” দাদা বলল, “প্রতীক্ষা। তোর প্রতীক্ষার অবসান বোধহয়। তুই নেক্সট উইকে একবার রজতের সাথে কথা বলে নিস, একদিন এফেম অফিসে যেতে হবে মহড়ার জন্য।”

আজ রজতদার সাথে আকাশবাণীতে এফেমের অফিসে যোগাযোগ করলাম। দু-তিন বার করে লেখাটা পড়তে হোল। কোথায় কী ভাবে মনোগ্রাহী করে পড়তে হবে ওরা ভালো করে বুঝিয়ে দিয়েছে। আরও একদিন আসতে হবে মহড়ার জন্য। প্রতি মাসের প্রথম রবিবার ওরা এই গল্প পাঠের আসর কন্টিনিউ করবে। আমাকেও সুযোগ দিচ্ছে নিজের লেখা গল্প পড়ে শোনাবার।

রাতে রঞ্জনাকে বললাম, “এবার তাহলে রেডিও তরঙ্গের মধ্যে দিয়ে ছড়িয়ে পড়ব আমার ট্র্যাশ গল্পগুলো নিয়ে, কি বলো? তুমি কি সময় পাবে শোনার?” রঞ্জনা আমার হাতটা নিজের হাতে নিয়ে বলল, “এ যে আমার কত গর্ব কী বলব! জানো, সুলেখা, অনন্যা, রুমেলি সব্বাইকে বলেছি। ওরা সবাই অবাক। সবাই শুনবে বলেছে,” রঞ্জনার গলায় আবেগ, আমাকে অবাক করে বলল, “সামনের সপ্তাহে চলো বাড়ি থেকে ঘুরে আসি। অনেকদিন সবার সাথে দেখা হয় নি।” বাড়ি আমাকে যেতেই হত, মা দাদার ঋণ যে আমার শোধ হবার নয়।




(পরবাস-৮০, ১২ অক্টোবর, ২০২০)