মৃৎশিল্পী
তাল হয়ে জমা মাটি, মাখা মাটি, মাটি, আঙুলের ফাঁকে ফাঁকে,
সে কি গড়ে? কাকে গড়ে?
এখন দুপুর শেষ। এখন ওবাড়ির ঝুঁকে পড়া
বাতাবি লেবুর গাছে, ঝিরিঝিরি হাওয়া।
মরা রোদে মাখোমাখো
উঠোনের একফালি, কোণে শ্যাওলার আভা,
চোখের পাশে ঝুঁকে পড়া চুলের এলোমেলো সাদা দাগ।
সে কি এখনো বোঝেনি-
যে যায়, সে আসলে কখনো ছিলই না,
তাই যায়?
গেঁটেবাতের আঙুল বড় কষ্টে নড়েচড়ে
মাটি ঘাঁটে,
আর পুতুলে পুতুলে নিখুঁত ফুটে উঠতে থাকে
দুজন মানুষের অলীকযাপন।
যাকে তুমি সম্পর্ক ভাবো
যে জানলায় আকাশ দ্যাখো,
মেঘে উছল, নীল, ঝকঝকে,
তার কাচ সরালেই দেখবে হু হু করে মরুভূমির হাওয়া
যে ছবিতে এত আলো, হাসি
সে ছবি তোলা হয়ে যাওয়ামাত্র
ছেলেটি তার পরবর্তী মিথ্যা কথাটি বলে বসবে মেয়েটিকে
সে কথায় ভরসার একবিন্দুও কমতি নেই,
শুনতে শুনতে
মেয়েটি আনমনে লিখে রাখবে ভ্রান্তিবিলাসকাব্য।
অনামী
হাত বাড়ালেই যে ধরে নেয়,
সামাল টানে, খেয়াল রাখে,
সেই মানুষের সঙ্গে কথায়
উলুকঝুলুক আগুন থাকে
যার বুকেতে ফল্গুধারা
নিরুদ্দেশে যাচ্ছে চলে
রুক্ষ জমিন নিঝুম পড়ে
দিনবদলে, দলবদলে
যেই না মেয়ে হাত ধরেছে
সেই নদীতে এমন ঢেউ
মেয়েই শুধু ভাসান স্রোতে
টের পায় না অন্য কেউ
হাত বাড়ালেই সে ধরে নেয়।
আগলে রাখে। আগলে রাখে।
না লেখা সব গোপন চিঠি,
ও বোকা মেয়ে, পাঠাও তাকে!
(পরবাস-৮০, ১২ অক্টোবর, ২০২০)