ISSN 1563-8685




বুড়োবুড়ির ঘোরাঘুরি

রাহুল মজুমদার


ত্রিযুগীনারায়ণ

বেলা ৩.১০

রুদ্রপ্রয়াগ। মন্দাকিনী আর অলকানন্দার সঙ্গমকে ছুটতে ছুটতেই পেন্নাম ঠোকা গেল। আজ লম্বা পাড়ি। সেই সকাল ৯টায় ধনৌলটি থেকে দৌড় আরম্ভ হয়েছে।

বেলা ৩.৩০

তিলওয়াড়া। তিলের বড়া!

বেলা ৩.৪৫

শান্তিপুর। এই মরেচে। শেষমেশ নদীয়ায় এসে পড়লুম নাকি!

বেলা ৩.৪৮

অগস্ত্যমুনি। এঁর নাকি আর হদিস পাওয়া যায়নি! দিব্যি এখানে লুকিয়ে বসে আছেন।

বিকেল ৪টে

চন্দ্রাপুরী। এই পুরীর উদ্দেশ্যেই সকাল থেকে এত দৌড়ঝাঁপ।

বিকেল ৪.১১

হাঁ করে আছি। মন্দাকিনী এখানে বাঁক নিয়েছে যেন 'খাপখোলা বাঁকা তলোয়ার'। দিকচক্রবালে আকাশছোঁয়া কেদার শৃঙ্গ।

রাত ৮.১০

মন্দাকিনীর কলতান শুনতে শুনতে কম্বলের তলায় সটান দু জনে।

২২ অক্টোবর

সকাল ৯টা

ব্রেকফাস্টান্তে ভরাপেটে গাড়ির পেটে সেঁধোনো গেল।

সকাল ৯.১০

স্যয়ালসোর। চন্দ্রাপুরীর যমজ ভাই।

সকাল ৯.২০

ভীরী। ভীড়ই নেই।

সকাল ৯.৩০

কুণ্ড। কুণ্ড দূরের কথা একটা ডোবাও চোখে পড়ল না। শুধু মন্দাকিনীর দুরন্ত ছুট। একটা পাকা পুল পেয়ে গাড়ি স্যাট করে পাড় বদল করে নিয়েছে।

সকাল ৯.৩৩

একটু চড়েইচৌখাম্বা নিশানা করে ছুট লাগালো গাড়ি। চৌখাম্বার কাছে হেরে গিয়ে মন্দাকিনী ক্রমশঃ নিচে নামতে লাগল।

সকাল ৯.৪৫

গুপ্তকাশী। এই ঠান্ডায় কাশি কী করে গুপ্ত রাখা যায়, মহাদেবই বলতে পারবেন।

সকাল ৯.৫০

নারায়ণকোটী। শিবের দুয়ার পেরিয়ে কেমন নারায়ণের কুঠীর আঙিনায় এসে পড়লুম।

সকাল ১০টা

খুমের। খুনের ভয়ে গাড়ি উড়ে বেরিয়ে গেল।

সকাল ১০.১৫

ফাটা। নিঃসেন্দহে আমাদের কপাল ফাটা। জানতুম না এখান থেকে উড়ে যাওয়া যায় কেদারনাথে। জানলে-----

সকাল ১০.৪০

সেরসি। সেরেচে। এখেন থেকেও দেখি কেদারে ওড়ার ব্যবস্থা!

সকাল ১০.৪৫

রামপুর। অযোধ্যা এমন পাহাড়ঘেরা নাকি!

সকাল ১০.৫০

সীতাপুর। ঠাকরুণ ঠিক হাজির কর্তার গা ঘেঁষে। এবার গাড়ি হঠাৎ গোঁত্তা মেরে বামপন্থী হয়ে চড়চড়ানো চড়াই পথে উঠে চলল।

সকাল ১০.৫২

মাথাকাটা গণেশের মন্দিরের দূর-দর্শন হলো। গণেশের মাথা কাটা আর হাতির মাথা জোড়া নাকি ওখেনেই ঘটেছিল।

সকাল ১১.২১

ঘননীল আকাশ ক্রমশঃ বাড়তে বাড়তে জানান দিল পাহাড়ের মাথা আগতপ্রায়।

সকাল ১১.৩১

ত্রিযুগীনারায়ণ। এখানেই শিব-পার্বতীর বিয়েতে সাক্ষী ছিলেন নারায়ণ। সেই বিয়ের যজ্ঞের কুণ্ডের আগুন এখনও জ্বলছে মন্দিরে।

দুপুর ১২.২২

পুজো দিতে গিয়ে বুড়োবুড়ির পুনর্বিবাহ হয়ে গেল। পুণ্যের একশেষ।

দুপুর ১২.৪৫

এবার ফেরার পালা।

দুপুর ১.০৪

বড় রাস্তায় নেমে গাড়ি বামপন্থী।

বেলা ১.৩০

সোনপ্রয়াগ। এখান থেকে গৌরীকুণ্ড হয়ে কেদারের হাঁটাপথ।

বেলা ১.৩৫

ফের সীতাপুর।

বেলা ১.৪৫

রামের হেঁসেলে মধ্যাহ্নভোজ।

বেলা ২.১০

ঢেকুর তুলে নামতির পথে।

বেলা ২.২৫

বঢ়াসু। আগে বঢ়ো।

বেলা ৪টে

আবার মন্দাকিনীর কোল ঘেঁষে। চন্দ্রাপুরীতে। বাকি সময়টা মন্দাকিনীর গান শোনা আর তাকে আজকের গপ্পো শোনানো।


চন্দ্রাপুরী


(ক্রমশ)



(পরবাস-৮৩, ১০ জুলাই, ২০২১)