ঘাটটা পুরোনো। জায়গায় জায়গায় শ্যাওলা,
ফাটা,
ফেলে দেওয়া কার্টন, ছেঁড়া জুতো।
ওরা দুজন দাঁড়িয়ে ছিল স্বল্পালোকিত সিঁড়িতে।
লঞ্চ আসবে। শেষ লঞ্চ।
ভিড় বললে ভুল, কিছু লোক এমনিই
এদিক ওদিক
এলোমেলো
শবদেহের রাস্তায় খুচরো পয়সার মত ছড়িয়ে।
ওরা, দেখলেই মনে হয়,
অমন অগোছালো নয়।
মেয়েটির সালোয়ারে ইস্ত্রি, চুলে বেণী
লোকটির শার্টে বোতাম যথাযথ।
পরিপাটি নিঃশব্দ পাশে থাকা
ঘাটে জলের ঢেউ দ্রুত হচ্ছে
লঞ্চ আসছে। আওয়াজ পাওয়া যায়।
আলো। হইহই। কে দৌড়োতে গিয়ে হোঁচট খেল।
সময় বয়ে যাচ্ছে।
ঘাটের ঘুম ভেঙে জেগে ওঠার মুহূর্ত ক'টি
পেরিয়ে যাচ্ছে।
মেয়েটির নাকের পাশে বিন্দু বিন্দু... ঘাম... নাকি...
লোকটি কিচ্ছু বলছে না। বলবে না। বলে না।
শুধু মেয়েটির মুঠোর মধ্যের সিঙ্গল টিকিটটার মতো দলামোচড়া হতে থাকে।
লঞ্চটা, শেষবারের মতো ডাক দিয়ে ভেসে পড়ে, আর
একদৌড়ে অলিগলি ক্রিকেট খেলার মাঠ ময়দান ভিক্টোরিয়া
পরীক্ষার পড়া মানঅভিমান বাজারের ফর্দ
অসুখের বিনিদ্র রাত স্বপ্ন স্বপ্নভঙ্গ
সব পেরিয়ে
ওদের হাতে হাত থাকে।
(পরবাস-৮৪, ১০ অক্টোবর, ২০২১)