এই সেই স্তব্ধতা, এই সেই মূক ও মৌনতা
এই সেই দ্বিধায় কম্পিত হাতের আঙুল
এই সেই আলোর ধারা, এই সেই বজ্র নির্ঘোষ
এই সেই সুঠাম ভঙ্গিমা -
তোমার কাছে এসে ফিরে যায় বারেবারে আর
তোমাকেই নিঃশেষ করে বলে যায়
এসকলই সার ও সুরা, এসকলই মোহ মুদ্গর
তুমি কি এতই অবোধ, এতই শিশু ও বাচাল!
বোধের ব্যাপ্তি নিয়ে বসে আছে ওই যে হিমালয়
তারই পায়ের কাছে তোমাকেও দেখি
তারই পাকদণ্ডী বেয়ে অবাধে হেঁটে যাও
তুমি তো শিশু নও, নও পাগল বা মূর্খ
এই সেই মানুষের দ্বৈত ব্যবহার
যা তোমাকে অমরত্ব দিয়েছে।
ইউটোপিয়া
এই সেই নির্মল আকাশের দ্বীপ
এখানে পায়ের তলায় শক্ত মাটি
একটাই মাত্র চওড়া, মসৃণ রাস্তা এগিয়ে দেবে অনেকটা
অবান্তর ঝোপজঙ্গল বিব্রত করবে না কোথাও
সুদৃশ্য দীর্ঘ গাছের সবুজ,
যাদের উচ্চতার সঙ্গে তুলনা করে সময় অমর হয়ে গেছে।
শাখাপ্রশাখায় শান্তির ফুল-ফল
তাদের সরলতা নিয়ে তোমাকে বুঝে ফেলবে
যত ঘন হয়েছে বন, তত বিরাট হয়েছে উপত্যকা
সন্দেহের ছায়াকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে শীতল হাওয়ার স্পর্শ
পাতার মর্মর প্রতিধ্বনি তুলে
পৃথিবীর সব রহস্যের সমাধান করে দিয়েছে।
একটি গুহার ডানদিকে মিথ্যে লুকিয়ে থাকে যার বাঁ দিকে রয়েছে
এক গভীর ও স্পষ্ট বিশ্বাসী লেক
লেকের তলদেশ থেকে সত্য এক নিঃশ্বাসে ভেসে উঠে বুদ্বুদ ছড়িয়ে দেয়।
উপত্যকার গায়ে এক বিশ্বাসের অটল পাহাড় দাঁড়িয়ে
যার চূড়া থেকে দেখা যায় সুগন্ধযুক্ত দৃশ্যের রতি
এত সৌন্দর্য নিয়েও এই দ্বীপ বাসযোগ্য হয়ে ওঠে নি
আবছা হয়ে যাওয়া কিছু পায়ের ছাপ
সমুদ্রের কাছেও গ্রহণযোগ্য হয় নি।
তোমরা এখানে থেকে যাও, এখানেই ঘুমোও
জীবনের গভীরতায় আর ফিরে যেও না।
(পরবাস-৬৮, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭)