এসো।
বলো কতযুগ আমরা একসাথে ফিরিনি,
মৃতদেহ সৎকার শেষে, অনুভব করিনি উত্তাপ,
যাইনি নিভৃত মৌসুমীহাওয়ার দেশে, ছড়াইনি নক্ষত্রকুচি এলোচুলে
নদীর কিনারে যাইনি কতদিন তৃষ্ণা সংগ্রহে পুনর্বার
আছি শুধু, এই পুরাণপ্রতিম দেশে কৃতিত্ব গৌরব চ্যুত
ভীষ্মের মতো একা।
মৃত্যু কেবলই বৃদ্ধ করে আর বিদ্ধ করে জ্ঞান—
এসো। অন্তত একবার অনুভব করি,
বেঁচে থাকাটুকু, পরস্পর।
|| ২ ||
আর তো কিছুই নেই
দেখো সব ফুরিয়ে এসেছে
আমি কেবল নিরালম্ব সময় দেখি সমুখে
দেখি বিষবৎ ফণা, যেমন উগরে ছিলেন বলরাম
আর দেখি নৈঃশব্দ দেখি কান্না
দেখি আশ্চর্য বিন্যাস এই ক্রীড়াসমূহ
খেলিছে এ বিশ্ব ল’য়ে
সেই তাবৎ দেবতাদের পায়ে গড় ঠুকে আমি
ফিরে ফিরে আসি আশ্চর্য কান্নায়
খেলা থেমে গেলে শিশু,
নিয়ত পড়েই থাকে অব্যক্ত ক্ষুধিত তৃষায়...
|| ৩ ||
আর কতবার বেদনায় তমোগুণ আচ্ছন্ন হবে
কাম ও মোক্ষের হে তুমি দেবতা
নগ্ন দাঁড়াও এসে, তোমাকে প্রত্যক্ষ করি
কী তুমি অনাবিল রহস্য রেখেছ আড়ালে
কী তুমি এতকাল ফুটিয়ে তুলছ বারবার,
আর ঝরে পড়ছে সেসব অনন্ত নির্মিতি
স্মৃতিকাল হতে আমাদের, আর কতদিন
এবারে সামনে এসো
নয়তো ফিরিয়ে নাও, এইসব কৃতঘ্ন উপহার।
(পরবাস-৬৯, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭)