Parabaas Moviestore




Parabaas Musicstore




Subscribe to Magazines





পরবাসে
জয়দীপ সেনের

লেখা


ISSN 1563-8685




তিনটি কবিতা

|| অশ্বমেধের ঘোড়া ||

উল্টো-সোজা ব্যঙ্গচিত্র
বেশি কাছে যাওয়া নিষিদ্ধ
দংশাতে পারে।

যাই হোক
অনেককাল এই ভাবে বাঁচবার পর
দেখা হল পাঁচজন কবির।
কি যে প্রচণ্ড হাসি পেল ওদের
কত যে ফেনা, লবণ
কত যে আনন্দ, অশ্রু, রাগ, বিদ্বেষ
এইখানে যাত্রা বুঝি শেষ?

এখন পাতায় পাতায়
শিশির ফোঁটার মতন
টলমল করছে ওরা...
আর এক উন্মাদ পরিচালক
চিৎকার করে বলছে:
'শান্তি ভোলো, মানুষ চাইছে মাংস
ছুটতে থাকো, ছুটতে থাকো
তোমরা যে অশ্বমেধের ঘোড়া।'


|| আমি ঠিক পৌঁছে যাব ||

মনে হয় পৃথিবীর সমস্ত কবিতা জড়ো করে
নোয়া-কে ডাকি।
বলি, "নাও, এইসব যাচ্ছেতাইদের নিয়ে তরণী ভাসাও।"
দ্যাখো বাকি সব ডুবে গেল
তোমরা নিশ্চিন্তে ভেসে বেড়াও।
গভীর রাতে একে একে দেহ ধারণ করলে ওরা
নানান কাজে নিযুক্ত ক'রো
সহজে কেউ কিন্তু গতর নাড়াবে না
কঠোর হ'য়ো।
মারামারি বাধবে,
গুন্ডাগুলোকে সামলানোর জন্য
নেতৃস্থানীয় কবিতাদের প্রস্তুত রেখো।
অসুখের দিনে ভাসতে ভাসতে
ধমকে ক'জনকে মিছিমিছি আনতে পাঠিও বিশল্যকরণী।
প্রেমিকাদের চিনে নিও জ্যোৎস্না-স্নানে।
আর পারো যদি
না না পারতেই হবে
নয়ের নামতা মুখস্থ করতে দিয়ে
রেঁধে রেখো পুঁটি মাছের ঝাল।
তারপর সুনীল আকাশের নিচে
সবাই মিলে খেতে ব'সো।
আমি ঠিক পৌঁছে যাব।


|| চম্পট ||

ভাবটা এমন যেন চতুর্দিকে নারীর বিষণ্ন মুখ
এরই ভেতর কাউকে তুলে দেখলে আলোর গুণে
সমস্ত উশৃঙ্খল দাগ ফুটে ওঠে, কাঁপে, ঘামে খুব
সার্থক মিথুন! তারপর একদিন নিভৃতে, ভ্রূণে
কালের ওজন সন্তর্পণে চালান করে দেব চম্পট
বেড়ালের নবম জন্ম দেখে দেব চম্পট।

পালানোরও শেষ আছে, মুখোমুখি দাঁড়ানো
সুখের আত্মীয় যত এইবার সোল্লাসে ফেটে পড়লে
খিদের চিত্র দেখাব, দেখাব নটে গাছটি মুড়োনো
ক্ষমা চাক তারা কোন ঋত্বিক কাছে এলে
শিব সেজে মর্ত্য ভুলে স্বর্গ ছুঁয়ে দেব চম্পট
সতীর ছিন্ন টুকরো পড়ে থাক, দেব চম্পট।

বলিহারি যাই, না জন্মানো ব্যাধির জন্য কাঁদো
কখনো বা নিঃসঙ্গ হাতির দুঃখ নিয়ে ছোটো
যে যেখানে চঞ্চল তার অনুরূপ গান বাঁধো
ঘুমে ফাটে মাটি, খরা নিয়ে জেগে ওঠো
ভুল বকো, আমি তো সুযোগ বুঝে দিয়েছি চম্পট
অন্ধ শ্বাপদ লেলিয়ে দিয়ে দিয়েছি চম্পট।




(পরবাস-৭২, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮)