এ কথাটা সর্বকালে সর্বদেশে সর্বজনের জন্য অ্যাপ্লিকেবল। আমার ইয়োরোপিয়ান বন্ধুরা বেড়াতে যায় অ্যামেরিকা, ব্রাজিল, অস্ট্রেলিয়া - ঘরের পাশের ইটালি, সুইটজারল্যান্ড, জার্মানি কি স্পেন দেখার তাদের সময় হয় না। তা ছবির গল্পে এ কথা কেন? কারণ আর কিছুই না, ছবি দেখতে শুরু করার বছর দু’য়েক পরে ফাইনালি গেলাম লন্ডনের ন্যাশনাল আর্ট গ্যালারিতে, যেটা বাড়ি থেকে দশ মাইল দূরে। তা যেদিন গেলাম, শুধু দ্যাবাদেবী গেছিলাম। ছানা স্কুলে ছিল। এমন করেই প্ল্যান করেছিলাম। তা ন্যাশনাল আর্ট গ্যালারিতে যাদের কাজ প্রথমবার ভাল করে দেখেছিলাম, তাদের কথা তো বলবই, কিন্তু ভিঞ্চিবাবু কি রাফায়েলের কথা না বলে কি আর সে অবধি পৌঁছনো যায়?বহু দিন ধ’রে বহু ক্রোশ দূরে
বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে
দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা,
দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু।
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া
একটি ধানের শিষের উপরে
একটি শিশিরবিন্দু।
ভার্জিন অফ দ্য রকস। এ ছবির দুটো কপির একটা আছে লন্ডন ন্যাশনাল আর্ট গ্যালারিতে আর অন্যটা ল্যুভরে। বোদ্ধাদের হিসেবে ল্যুভরেরটা আগে আঁকা। শুধু তাই নয়, আগে ভাবা হত লন্ডনেরটা লিওনার্দোর স্টুডেন্টদের কাজ। কিন্তু পরে আরো রিসার্চ, এক্স-রে এসব করে দেখা যায় যে, লন্ডনেরটাও লিওনার্দোরই কাজ প্রাইমারিলি। তবে আমার আনাড়ি চোখে ল্যুভরেরটা অনেক লাল-হলুদ-কমলা রং ঘেঁষা আর অনুজ্জ্বল বলে মনে হয়েছে। আর লন্ডনেরটা নীল-সবুজ আর অনেক উজ্জ্বল। পরে জেনেছিলাম যে লন্ডনেরটা পরিষ্কার করা হয়েছে কিন্তু ল্যুভরেরটা পরিষ্কার করা হয় না। তাই আসলে কোনটা বেশী উজ্জ্বল ছিল তা জানার উপায় নেই। এ ছবিতে লিওনার্দোর প্রতিটা ট্রেডমার্ক প্রবলভাবে উপস্হিত। পিরামিডাল কম্পোজিশন (ট্রায়েঙ্গুলার নয় কিন্তু), ছবির লোকজন একে অন্যের দিকে তাকিয়ে আছে, ঠিক যেন তারা এই মাত্র কথা বলছিল নিজেদের মধ্যে, সামনের ফুলপাতায় অসম্ভব ডিটেলিং, আর স্ফুমাটোর ব্যবহার। স্ফুমাটো (sfumato) হল বিনা বর্ডারে এক রং থেকে অন্য রংয়ে, আলো থেকে উজ্জ্বলতায় অনায়াস গমন। লিওনার্দোই এই টেকনিকের আবিষ্কর্তা, মোনালিসা আর ভার্জিন অফ দ্য রকসে এর চূড়ান্ত ব্যবহার। প্রায় ছ’ফুট বাই চার ফুটের ছবিটার ব্যাকগ্রাউন্ডের পাথরগুলোর কিছু কিছু যেন ঝরনার জলে মসৃণ হয়ে গেছে আবার কিছু কিছু রয়ে গেছে তাদের আদি অকৃত্রিম রুক্ষতা নিয়ে। সব মিলিয়ে এক অদ্ভুত পৃথিবী - যার সমস্ত উপাদান লিওনার্দো নিয়েছেন আমাদের চেনা পৃথিবী থেকে আর তারপর তাদের সমষ্টিকে করে তুলেছেন স্বর্গীয় তাঁর আইডিয়ালিজমের সংজ্ঞা মিশিয়ে। এ ছবির সামনে একটু বেশী সময় দাঁড়িয়ে থাকলে মনে হয় আমিও ওই মিস্টিকাল ল্যান্ডস্কেপের মধ্যেই ঢুকে পড়ছি।
রাফায়েলের কথায় আমার মাত্রাজ্ঞান থাকে না এ কথা এতদিনে সবাই জেনে গেছে। কিন্তু ন্যাশনাল আর্ট গ্যালারিতে সেদিন ছবির দুনিয়ার আরেকটা দিকের সাথে পরিচয় হয়েছিল, ফ্লেমিশ পেন্টিং।
ফ্লেমিশ পেন্টিং ব্যাপারটা নিয়ে পরে যখন খোঁজপাত্তা করলাম, তখন বুঝলাম ব্যাপারটা বেশ একটু জটিল। ফ্লেমিশ কান্ট্রি বলতে আসলে বোঝায় বেলজিয়ামের উত্তরের খানিকটা অংশ যেখানকার মানুষজন ডাচ ভাষার অন্যরকম ডায়ালেক্টে কথা বলেন। ফিফটিন্থ সেঞ্চুরী থেকে পরবর্তী শ’দুয়েক বছর এ অঞ্চল পৃথিবীকে উপহার দিয়েছে পিটার ব্রুঘেল, পিটার পল রুবেনস, অ্যান্টনি ভ্যান ডাইকের মতন সব আর্টিস্ট। জর্জিও ভাসারি, যিনি রেনেসাঁর আমলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিকদের অন্যতম, তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ফ্লেমিশ আর্টিস্ট জান ভ্যান আইকই অয়েল পেন্টিংয়ের টেকনিককে সর্বোচ্চ উৎকর্ষে পৌঁছে দেন। ফ্লেমিশ পেন্টিংও লেট গথিক থেকে বারোক পিরিয়ড পর্যন্ত বিভিন্ন পরিবর্তন ও পরিশীলনের মধ্যে দিয়ে গেছে। অ্যান্টনি ভ্যান ডাইক যাকে পৃথিবী ভ্যান ডাইক বলে চেনে তিনি ছবির পাঠ পড়েছিলেন রুবেনসের কাছে। আর রুবেনস ছিলেন তিশিয়ানের একলব্য। এখানে আরো একটু না বললে কথাটা সম্পূর্ণ হবে না। বারোক পিরিয়ডে কিন্তু নর্দার্ন ইয়োরোপ আর সাদার্ন ইয়োরোপের ছবির বিষয়বস্তু বেশ আলাদা হয়ে গেছিল। সাদার্ন ইয়োরোপে তখনো ক্যাথলিক চার্চই কমিশন দেয় ছবির, আর স্বাভাবিকভাবেই সে ছবি জুড়ে থাকে বাইবেলের গল্প, যীশুর অলৌকিকতা, আর চার্চের মাহাত্ম্য। অন্যদিকে প্রোটেস্টান্ট নর্দার্ন ইয়োরোপে রইস আদমীরা ছবি আঁকার বরাত দেন, সে ছবিতে থাকে তাঁদের পোর্ট্রেট, তাঁদের শহরের দৈনন্দিনতা, রোজকার জীবনে মিশে থাকা ক্রিশ্চিয়ানিটি। কাজেই ফ্লেমিশ বারোক পেন্টিংয়ে ইটালির বারোক পেন্টিংয়ের মতনই নাটকীয়তা, আলো ছায়ার খেলা থাকলেও বিষয়বস্তু বেশিরভাগ সময়ই একদম অন্যরকম।
ন্যাশনাল আর্ট গ্যালারিতে ফিরি। শিষ্যর পরে গেলাম গুরুর কাছে, স্যামসন অ্যান্ড ডেলিয়াহ্ -রুবেনস।
এ ছবির বিষয়বস্তু বাইবেলের গল্প, স্যামসন ঘুমাচ্ছে বিশ্বাসঘাতক প্রেমিকা ডেলিয়াহর বুকে আর সেই সময়ে একজন শত্রুসৈন্য এসে স্যামসনের চুল, যা স্যামসনের শক্তির উৎস, কেটে নিচ্ছে। বাদবাকি সৈন্যরা দাঁড়িয়ে আছে দরজায়। ঘরের তাকের উপর ভেনাস আর কিউপিডের মূর্তি যেখানে কিউপিডের মুখ বাঁধা - প্রেমের অসহায়তা? ওদিকে বিশ্বাসঘাতক ডেলিয়াহ একটা হাত দিয়ে ঘিরে আছে স্যামসনকে — যাতে নির্বিঘ্নে চুল কাটা হয়ে যায় নাকি স্যামসনের ঘুম ভেঙে গেলে শত্রুসৈন্য স্যামসনের আরো বড় ক্ষতি করে যাবে সে আশঙ্কায়? ডেলিয়াহর চোখে লগ্ন হয়ে আছে উদাসী বিষন্নতা - ভালবাসার বন্ধন আলগা হয়ে যাবার অপেক্ষা। প্রেম অপ্রেম বিশ্বাসভঙ্গের টানটান নাটকীয় মুহূর্ত, বারোকের সিগনেচার। ছবি জুড়ে আলো ছায়ার তীব্রতাতেও বারোকের সিগনেচার। খালি রংয়ের উৎসবে ফিরে আসে রেঁনেসা, ভেনিসিয়ান মাস্টারদের কথা মনে পড়িয়ে দেয়।
সে যাত্রায় ফ্লেমিশ পেন্টিং পেরিয়ে যে চত্বরে পৌঁছেছিলাম সেখানে দেখি ঘরের পর ঘর, দেওয়ালের পর দেওয়াল জুড়ে সিনারি আঁকা। ততদিনে অবশ্য জেনে গেছিলাম আমাদের গোদা বাংলায় যাকে বলে সিনারি তাকে পোষাকী ভাষায় বলে ল্যান্ডস্কেপ পেন্টিং। প্রথমেই যে ছবিটার সামনে ব্রেক কষতে হল সেটা একটা পোর্ট মানে বন্দরের ছবি। সাঁঝবেলার ব্যস্ত ঘাটে নানারকম মানুষজন, একখানা জাহাজ প্রায় এসেই পড়েছে বন্দরে, জাহাজের ওপাশে একটা একলা লাইটহাউজ। আমার মতন আমজনতাকে যে ব্যাপারটা সবচেয়ে অবাক করেছিল সেটা হল, এত রকম ব্যস্ততা পার করে সমস্ত ছবিটায় জড়িয়ে আছে একটা অদ্ভুত প্রসন্নতা, একটা চরাচরব্যাপী শান্তি। কেন জানি না আচমকা ক্ষীরের পুতুল মনে পড়ে গেল। সেই যে রাজা দেশ ভ্রমণ শেষে রক্তের মত রাঙা মানিকের চুড়ি নিয়ে, আগুনবরণ সোনার মল নিয়ে, পায়রার ডিমের মতন মুক্তোর মালা নিয়ে, আকাশের মতন রং, বাতাসের মতন ফুরফুরে, জলের মতন চিকন শাড়ি নিয়ে ফিরেছিলেন জাহাজ করে? ঠিক যেন সেই মুহূর্তটা!
ঠাহর করে দেখলাম আর্টিস্টের নাম ক্লদ জোসেফ ভার্নেট। আমার সাধারণ জ্ঞানের ত্রি ছেড়ে দশ সীমানাতেই ইনি নেই। কাছেই দেখলাম এনারই আরেকটা কাজ, আ শিপরেক ইন স্টর্মী সিজ। সে ছবির বিধ্বংসী ঝড়, অশান্ত সমুদ্র, ধূসর আকাশ আর ডুবন্ত জাহাজের দিকে বেশীক্ষণ তাকিয়ে থাকা যায় না — মনে হয়ে আমাকেও বুঝি টেনে নেবে ধ্বংসের মধ্যে। সেদিন আরো কিছু ল্যান্ডস্কেপ দেখেছিলাম কিন্তু সে কথা বলার আগে ল্যান্ডস্কেপ পেন্টিং নিয়ে কিছু বলতে হবে। নইলে ল্যান্ডস্কেপ পেন্টিংয়ের গল্পের নোঙর করা হবে না।
যে সময়ের ছবি, যে অঞ্চলের ছবি দিয়ে আমার ছবি দেখা শুরু, মানে রেঁনেসা এবং ইটালি, সেই স্হানে কালে ল্যান্ডস্কেপ পেন্টিং মোটেই সম্মান পেত না। নামীদামী আর্টিস্টদের কালজয়ী সব ছবিতে প্রকৃতি এসেছে বাইবেলীয় গল্পের ব্যাকগ্রাউন্ড হিসেবে, নিতান্তই পার্শ্বচরিত্র হয়ে। প্রকৃতিকে নায়কের স্হান দেন নি কেউই। ল্যান্ডস্কেপ পেন্টিং প্রথম সম্মান পায়, জনপ্রিয় হয়, ১৫০০-১৬০০ সালের নেদারল্যান্ডসে। প্রোটেস্টান্ট নেদারল্যান্ডসের আম জনতা যীশু, মেরী, জন এদেরকে সরিয়ে ছবির নায়কের আসনে সানন্দে বরণ করে নেন প্রকৃতিকে। কিন্তু তখনও বাকি ইয়োরোপে ল্যান্ডস্কেপ পেন্টিং ছিল ব্রাত্য। সেভেন্টিন্থ, এইট্টিন্থ সেঞ্চুরীতে এসে ইয়োরোপের বিভিন্ন প্রান্তে ল্যান্ডস্কেপ পেন্টিংয়ে জোয়ার আসে। ল্যান্ডস্কেপ পেন্টিংয়ের বিবর্তনের ধাপগুলো হল নিওক্লাসিসিজম, রোমান্টিসিজম আর রিয়েলিজম। নিওক্লাসিসিজম কথাটা থেকে এটা দিব্যি পরিষ্কার যে এর সাথে ক্লাসিকের সম্পর্ক আছে। আর ইয়োরোপে ক্লাসিক মানেই গ্রেকোরোমান ব্যাপার-স্যাপার। আর নিও মানে নতুন। মানে বৃত্ত সম্পূর্ণ করে আবার সমে ফেরা আর কি। নিওক্লাসিক আর্টিস্ট তাঁর ল্যান্ডস্কেপে দর্শককে আরো একবার মনে করিয়ে দেন প্রকৃতির রাজ্যের অলঙ্ঘনীয় নিয়মের কথা, নিখুঁত ভারসাম্যের কথা, অনন্ত ব্যাপ্তির কথা। নিওক্লাসিক ল্যান্ডস্কেপের সামনে দাঁড়ালে আরো একবার মনে পড়ে যায় এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের কালচক্রের পরিপ্রক্ষিতে আমাদের অস্তিত্ব নিতান্তই অকিঞ্চিৎকর। অন্যদিকে রোমান্টিক আর্টিস্টরা প্রকৃতির ভাণ্ডারের যা কিছু অনিন্দ্যসুন্দর, যা কিছু অপার্থিব, তার সবটুকু এক জায়গায় এনে, তাদের বিনি সুতো মালায় গেঁথে, দর্শককে উপহার দেন স্বর্গের অমরাবতী। এনাদের ছবিতে স্পষ্ট শোনা যায়, “আমারই চেতনার রঙে পান্না হল সবুজ, চুনী উঠল রাঙা হয়ে।” আর রিয়েলিস্ট আর্টিস্টরা তাদের ছবিতে দর্শককে পরিচয় করিয়ে দেন আজন্মের চেনা রাস্তার ধারে নিতান্ত অযত্নে ফোটা সাদা ফুলটার সাথে। মনে করিয়ে দেন প্রকৃতি আমাদের চারপাশেই ছড়িয়ে রেখেছে হীরে-চুনী-পান্না, আমাদের জহুরীর চোখ নেই তাই আমরা সেসব খুঁজে পাইনা।
ক্লদ জোসেফ ভার্নেট আদ্যন্ত রোমান্টিক। আর তাই আ শিপরেক ইন স্টর্মী সিজে ধ্বংসের সর্বগ্রাসী ছায়া। এ ছবি যদি কোনো রিয়েলিস্ট আঁকতেন তাহলে এতে শুধু প্রলয় নয়, সৃষ্টি আর স্হিতিও একটু করে জায়গা পেত বোধহয়। এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে আচমকা দেখলাম, “জে ডাব্লু টার্নার”। আর কোনো ব্রিটিশ আর্টিস্টকে চিনি, না-চিনি, এনাকে বিলকুল চিনতাম, জেফ্রি আর্চার পড়ার দৌলতে। কিন্তু এই প্রথমবার তাঁর কাজ দেখলাম সজ্ঞানে। ছবির নাম ডিডো বিল্ডিং কার্থেজ। তখন আমি ছবিটার গল্প কিছু জানতাম না। আমার সাদা চোখে মনে হয়েছিল নদীর ধারে কিছু কনস্ট্রাকশনের কাজ হচ্ছে আর তারই মাঝে কিছু বাচ্চা নদীতে খেলনা নৌকো নিয়ে খেলছে। কিন্তু আমায় অবাক করেছিল আলো। ততদিনে হাই রেনেসাঁর প্রাকৃতিক আলো, বারোকের স্টেজ লাইটিং দেখে দেখে, ছবিতে আলোর ব্যবহারের অ আ শিখে গেছি, কিন্তু এমন আলো তো আগে দেখিনি। এ আলো ছবি পার করে দর্শকের গায়ে এসে পড়ে। এমন করে সূর্য উঠলেই বোধহয় কবি গেয়ে ওঠেন “হে নূতন, দেখা দিক আর বার, জন্মের প্রথম শুভক্ষণ”। সেদিন আরো অনেক ল্যান্ডস্কেপ পেন্টিং দেখেছিলাম। সেসব গল্প ক্রমে আসবে। বলতে গেলে সেদিনই আমার ছবিপ্রেম ইটালি আর রেঁনেসার চৌকাঠ পেরিয়েছিল প্রথমবার।
(ক্রমশ)
(পরবাস-৭২, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮)
(প্রবন্ধে ব্যবহৃত ছবিগুলি উইকিপিডিয়া থেকে নেওয়া)