Parabaas Moviestore




Parabaas Moviestore




Subscribe to Magazines




পরবাসে
আরজুদা আঞ্জুম জয়িতা-র

লেখা


ISSN 1563-8685




পূর্ণ চাঁদ

সেই সন্ধ্যা থেকে অঝোরধারায় বৃষ্টি পড়ছে। নিজের ছোট্ট ক্লিনিক থেকে বের হয়ে বাইরে বৃষ্টির তেজ দেখে আজকে যে আর রুগী আসবে না এই ব্যাপারে মোটামুটি নিশ্চিত হলাম আমি। একে তো অজ পাড়াগাঁ তার উপর এখন বাজে প্রায় দশটা। এমন জায়গায় রাত দশটা মানেই ঢের রাত। আকাশের দিকে তাকিয়ে মনটা ভরে গেল। পূর্ণ একটা চাঁদ আকাশে। এই মেঘের ভিতরও স্পষ্ট নিজের মহত্ব জানান দিয়ে যাচ্ছে সেটা।

একটা সিগারেট জ্বালালাম আমি। এখন আপনি ভাববেন পেশায় ডাক্তার হয়ে আবার সিগারেট। কি আর বলব আমি। সেই কলেজের সময় রিনার প্রেমে ছেঁকা খেয়ে বাঁকা হয়ে যখন বসেছিলাম তখন সিগারেটই ছিল আমার একমাত্র সঙ্গী। এরপর সময়ের সাথে সাথে আমি সোজা হয়ে গেলেও আমার সঙ্গীটি আর আমাকে ছেড়ে যায়নি। সিগারেটটি নিভিয়ে ক্লিনিক বন্ধ করতে যাবো ঠিক এই সময় দূর থেকে একটা গোল আলোকবিন্দু উঠে আসতে দেখলাম। এই গাঁয়ে আমিই একমাত্র ডাক্তার। তাই গ্রামবাসীর যেকোনো বিপদে আমারই ডাক পড়ে। আর বিপদ তো আর আবহাওয়া দেখে আসে না। কে জানি কার আবার এই রাতদুপুরে আমার দরকার পড়ে গেল। ভাবতে ভাবতেই আলোটা কাছে এসে পড়ল। যা ভেবেছিলাম তাই। টর্চের আলো সেটা। আলো আঁধারীতে যতটুকু দেখলাম তাতে মনে হলো বেশ লিকলিকে স্বাস্থ্যের একজন লোক হাতে একটা কম ব্যাটারির টর্চ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। একটু একটু যেন হাঁপাচ্ছে। বোঝা গেল বেশ খানিকটা রাস্তা পেরিয়ে এসেছে এখানে। লোকটাকে আগে দেখিনি। অবশ্য আমি এই গাঁয়ে এসেছি মাত্র মাস ছয় হতে চলল। এর মধ্যে গাঁয়ের সবার সাথেই মোটামুটি দেখা হয়েছে আমার। বুঝলাম যেই গুটিকতকের সাথে দেখা হয়নি তার মধ্যে এই লোকটাও আছে।

আজ্ঞে আপনি কি ডাক্তার অনিমেষ ঘোষ? লোকটা ইতস্তত করে প্রশ্ন করলো।

একগাল হেসে বললাম, হ্যাঁ আমিই অনিমেষ ঘোষ।

লোকটা যেন বেশ অপ্রস্তুত হয়ে গেল। আমতা আমতা করে কোনোমতে বললো, আমি আসলে আপনার সাথেই দেখা করতে এসেছিলাম।

আমি আবার মুখে পেশাদার অমায়িক হাসিটা ফুটিয়ে তুলে বললাম, তা বেশ তো। ক্লিনিকে বসে কথা বলা যাক...কি বলেন?

লোকটা এবার যেন একটু হাসলো। তাকে নিয়ে ক্লিনিক নামক ছোট্ট ঘরটার ভিতর ঢুকলাম। ঘরটা মোমবাতির দোদুল্যমান আলোয় আলোকিত হয়ে আছে। একটা চেয়ার তার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে অন্যটাতে আমি বসলাম। সে চেয়ারটাতে একরকম ধপাস করেই বসে পড়লো। এইবার ভদ্রলোকের দিকে ভালোভাবে লক্ষ্য করলাম আমি। বয়স চল্লিশ থেকে পঁয়তাল্লিশের কোঠায়, শুকনো পাতলা গড়ন তবে আগের মতো লোকটাকে লিকলিকে স্বাস্থ্যের মনে হচ্ছে না। মাথার কাছটায় একটা চেরা দাগ। গায়ের লোমগুলো অস্বাভাবিক বড় আর ঘন। লোকটাকে আমার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে আমি বললাম, তা আপনার অসুখটা কি?

লোকটা একেবারেই হকচকিয়ে উঠলো কোনোমতে বললো, অ....অসুখ... আসলে...

বুঝলাম রোগী বেশ ভীত। এমন অজপাড়াগাঁয়ে মানুষ অসুখ হলে ভয় পাবে তাই স্বাভাবিক। আমি সামনের টেবিল থেকে জলভরা গ্লাস এনে তার সামনে ধরলাম। গ্লাসটা একরকম ছিনিয়েই নিলো সে। গ্লাসের পুরো পানি একেবারে শেষ করে আমার দিকে তাকালো। আমি বললাম এইবার খুলে বলুন তো মশাই আপনার সমস্যাটা। লোকটা একটা বড়সড় দম নিল। বুঝলাম রোগী এইবার বলতে শুরু করবে। কিছুক্ষনের মধ্যেই আমার কথার সত্যতা প্রমাণ করে লোকটি বলতে শুরু করলো...

আঁজ্ঞে আমার নাম শ্রীকান্ত। প্রায় তিন বছর হল এই গ্রামে থাকি। স্ত্রী গত হয়েছে তা প্রায় ছয় বছর। তাই দুই ছেলেকে নিয়েই আমার সংসার। পাশের জঙ্গলে কাঠ কেটে তা দিয়ে যা আয় হতো কোনোরকম তিন বাপ ছেলে মিলে দিন চালিয়ে যেতাম। মোটামুটি সুখের সংসারই ছিল বলা চলে। কোনো কিছু বেশি ছিল না আবার কমও ছিল না। সেইদিনের আগ পর্যন্ত...

তা আজ থেকে প্রায় তিন বছর আগের কথা। সেইদিন আমি রোজকার মত বনে কাঠ কাটতে যাই। গ্রাম থেকে আধ ঘন্টার রাস্তা পেরোলে তবে বনের দেখা মেলে। আকাশটা সকালদিকে বেশ পরিষ্কারই ছিল। বনে পৌঁছানোর কিছুক্ষনের মধ্যে আকাশ কালো হতে থাকে। তার কিছুক্ষনের মাথায় শুরু হয় ঝুম বৃষ্টি । বৃষ্টি যে হবে তা আগে বুঝিনি। তাহলে আর কষ্ট করে আজ বাসা থেকে বের হতাম না। সে যাই হোক সাথে করে একটা পলিথিন ব্যাগ নিয়ে এসেছিলাম। সবসময়ই সাথে রাখি ঐটা। বলা তো যায়না কখন কোন কাজে লেগে যায়। ব্যাগটা কোনোরকমে মাথায় দিয়ে বৃষ্টি থেকে বাঁচার বৃথা চেষ্টা করি আমি। কিন্তু সেদিন বৃষ্টিটা যেন তার সব বেগ নিয়ে নেমেছিল। যেন ধুয়ে দিতে চাইছিল এই পৃথিবী থেকে সব পঙ্কিলতা। বাসায় ফিরতে হলে প্রায় এক ঘন্টার পথ পাড়ি দিয়ে এরপর ফিরতে হবে। তাই উপায়ান্তর না দেখে বনের ভিতরই একটা আশ্রয় খুঁজতে লাগলাম। বনের একটু গভীরে যেতেই একটা কুটির দেখতে পেলাম। কোনোরকমে দাঁড়িয়ে আছে সেটা। বনের এদিকটায় কখনো আসা হয় না তাই কুটিরটা আগে চোখে পড়েনি আমার। জীর্ণ কুটিরটা যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়বে মনে হচ্ছে। আশ্চর্য এই বনে একটা কুটির আছে অথচ গ্রামের কেও জানে না? অবশ্য না জানলেও তেমন ক্ষতি নেই । আমার কোনোমতে বৃষ্টি থেকে বাঁচতে পারলেই হলো। দৌড়ে কুটিরটার সমানে গেলাম আমি। সামনের দরজাটা ভাঙা। বারকয়েক চিৎকার করলাম আমি...কেউ আছেন? কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে কুটিরটার ভিতরে প্রবেশ করলাম। দেখে কেউ থাকে বলে তো মনে হলো না। ভাঙাচোরা একটা ঘর। উপরে যাওয়ার সিঁড়িটা প্রায় অনুপযুক্তই বলা চলে। সারা ঘরে কোনো আসবাবপত্র নেই। জানালাগুলোও বেশ কয়েক জায়গা দিয়ে ভাঙা। এই জঙ্গলের মধ্যে কে বানিয়েছিল কুটিরটা? আর কেনই বা বানিয়েছিল... এইসব প্রশ্ন মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে মেঝেতে বসে পড়লাম আমি। আজকে আর কাঠ কাটা হবে না। অতঃপর দেয়ালে ঢেলান দিয়ে বসে বৃষ্টি দেখতে লাগলাম । বৃষ্টি যেন পড়ছে তো পড়ছেই। যেন অনন্তকাল ধরে ঝরে যাচ্ছে বাদলধারা। সময় যেন থমকে গেছে। দেখতে দেখতে কেমন যেন একটা তন্দ্রামত হয়েছিল । হয়তো কিছুক্ষনের জন্য ঘুমিয়েও পড়েছিলাম। চোখ খুলতেই দেখি আমার চোখের সামনে একটা মুখ...না সেটা...সেটা কোনো মানুষের মুখ নয়। এক ভয়ংকর হিংস্র লোমশ প্রাণীর মুখ সেটা। একটা নেকড়ের মুখ। চোয়ালের দাঁতগুলো হিংস্রভাবে বেরিয়ে আছে। দাঁতের ফাঁক দিয়ে লালা ঝরছে। তার গরম নিঃশাস পড়ছে আমার মুখে। আমি কোনোমতে ধড়মড়িয়ে উঠে বসলাম। সাথে সাথে তীব্র যন্ত্রণায় ককিয়ে উঠলাম। হিংস্র লোমশ দানবটার দাঁতগুলো এসে বিঁধেছে আমার পায়ে। যন্ত্রণায় চোখের সামনে অন্ধকার হয়ে আসলো আমার। শরীর এমনিতেই ক্লান্ত ছিল। যন্ত্রণার ভার আর বইতে পারলো না সে। জ্ঞান হারালাম আমি।

জ্ঞান ফিরতেই নিজেকে জঙ্গলের এক গাছের নিচে আবিষ্কার করলাম আমি। সামনে থেকে কুটিরটা উধাও। পায়ের দগদগে ঘাটা দিয়ে এখনো রক্ত ঝরছে। এরপরও উঠে দাঁড়ালাম আমি। বহু কষ্টে তন্ন তন্ন করে খুঁজলাম কুটিরটা। কিন্তু নেই; কোথাও নেই সেটা। তাহলে কি ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন দেখলাম আমি? তাই বা কি করে হয়... পায়ের দগদগে ঘা-টা চিৎকার করে জানান দিচ্ছে এটা স্বপ্ন নয়। সেইদিন কিভাবে বাড়ি ফিরে এসেছিলাম তা মনে নেই আর। এরপরের কয়েকটা দিন কাটে প্রবল জ্বরের ঘোরে।

এইটুকু বলে থেমে গেলো লোকটা। বুঝলাম ঘটনা গুছিয়ে নিতে সময় নিচ্ছে সে। আমি আর কোনো কথা জিজ্ঞেস করলাম না তাকে। রোগীকে কথা গুছাতে সময় দিলাম।

লোকটা নিজে থেকেই আবার বলা শুরু করলো। ...এরপর থেকেই আমার অসুখটা শুরু ডাক্তারবাবু। সারাদিন গায়ে জ্বর থাকে। রাত হলেই গা ঠান্ডা। রাতে যেন শরীরের শক্তি বেড়ে দ্বিগুন হয়ে যায়। কোনোকিছু খেতে পারি না। শুধু ইচ্ছা করে তাজা লাল রক্ত খেতে। তরল গরম নোনতা রক্ত। রক্তের সোঁদা গন্ধটা নাকে গেলেই আমি পাগল হয়ে যাই যেন। বিশেষ করে... বিশেষ করে কোনো কোনো রাতে। চাঁদের সাথে সাথে আমার অস্থিরতাও বাড়তে থাকে। যখন চাঁদ পূর্ণ হয় আমি নিজেকে ধরে রাখতে পারিনা... কিছু একটা হয়ে যায় আমার... আমি আর মানুষ থাকি না তখন...আহহ রক্ত।

লোকটা কথা শেষ করে আমার দিকে তাকালো। আমি পেশাদারি হাসিটা হেসে বললাম... আপনার যা হয়েছে তা হল হ্যালুসিনেশন। আসলে আপনার একজন ভালো মানসিক ডাক্তার প্রয়োজন। আপনি বরং এক কাজ করুন... শহরে গিয়ে ডাক্তার দেখান। আমার একজন বন্ধু আছেন খুব ভালো মানসিক ডাক্তার। আমি নামটা লিখে দিচ্ছি, আপনি...

এটা মানসিক সমস্যা নয় ডাক্তারবাবু। বাঁকা হাসি খেলে গেল লোকটার মুখে। তার দৃষ্টি অনুসরণ করে বাইরে তাকালাম।

জানালা দিয়ে বাইরে তাকাতেই প্রায় পূর্ণ চাঁদটা চোখে পড়লো আমার। হঠাৎ মাথায় একটা ভাবনা খেলে গেল আমার... আজকে তাহলে পূর্ণিমা... ভাবতে ভাবতেই আবার লোকটার দিকে তাকালাম।

তাকাতেই চমকে উঠলাম আমি। শিরদাঁড়া দিয়ে একটা শীতল স্রোত বয়ে গেল। এতক্ষন লোকটা যেখানে দাঁড়িয়ে ছিল এখন সেখানে নেই সে। তার জায়গায় একটা লোমশ শ্বাপদ দাঁড়িয়ে। চোয়ালের দাঁতগুলো বেরিয়ে হিংস্রতার জানান দিচ্ছে। মুখ দিয়ে লালা ঝরছে। আমার দিকে তাকিয়ে গর্জন করে উঠলো শ্বাপদটা। সাথে সাথে মাথায় চিন্তাটা খেলে গেল আমার। দ্রুত হাতে ড্রয়ার খুলে পিস্তলটা বের করে ফেললাম আমি। এই অজপাড়াগাঁয়ে নানা ধরনের বিপদ হতে পারে ভেবে পিস্তলটা সাথে রেখেছিলাম আমি। এই পিস্তলটা এইভাবে কাজে লাগবে তা কখনো ভাবিনি। পিস্তলটা উঠিয়ে গুলি করতে যাবো এমন সময় শ্বাপদটা ঝাঁপিয়ে পড়লো আমার উপর। দানবটার নখের আঁচড়ে হাতের বেশ খানিকটা জায়গা চিরে গেল । তীব্র যন্ত্রণা সহ্য করেও একটা গুলি করলাম দানবটাকে লক্ষ্য করে। তার কাঁধে লাগলো গুলিটা। সাথে সাথেই আমার উপর থেকে সরে গেল সে। দরজার দিকে ছুট লাগাতেই তাকে আরো বার দুয়েক গুলি করলাম আমি। একটা গুলি লাগলো শ্বাপদটার পায়ে। যেতে যেতেও আমার দিকে তাকিয়ে হিংস্র গর্জন করে উঠলো সেটা। প্রায় সাথে সাথেই জ্ঞান হারালাম আমি।

গ্রামের মানুষ নাকি সেইদিন গুলির শব্দ পেয়ে ছুটে এসেছিল ক্লিনিকে। তারাই উদ্ধার করে আমাকে। এরপর প্রায় এক সপ্তাহ ভয়াবহ জ্বরের ঘোরে প্রলাপ বকতাম আমি। সুস্থ হওয়ার পর জানতে পারি সেইদিন আমার গুলির শব্দে মানুষজন এসেছিল বটে কিন্তু তারা কেউই নাকি নেকড়েটার গর্জন শুনতে পায়নি। খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারলাম গ্রামের পাশের বনে নেকড়ে তো দূরের কথা কোনো বড় জাতের কুকুরও নেই। তাহলে সেদিন কি এসেছিল আমার কাছে? কেনই বা আমার কাছে এসেছিল প্রাণীটা? তবে কি স্বপ্ন দেখেছিলাম আমি? না তা হয় না... হাতের চেরা দাগটা তার প্রমাণ। বিশ্বাস করুন, ব্যাপারটা নিয়ে ভাবার বেশি সময় পাইনি আমি। এর আগেই নিজের মধ্যে আরো কিছু পরিবর্তন লক্ষ করি....

সারাদিনই গায়ে জ্বর থাকে আমার। ক্লান্ত লাগে নিজেকে। রাত হলেই কিন্তু শরীরের শক্তি হয়ে যায় দ্বিগুন। খাওয়াদাওয়ার রুচি কমতে থাকে। কোনো প্রাণী দেখলেই মনে হয় তার গলায় দাঁত বসিয়ে শুষে নেই সব রক্ত। তরল নোনতা রক্ত। চাঁদের সাথে সাথে অস্থিরতাটাও পূর্ণতা পেতে থাকে আমার। কিছু একটা যেন ঘটে যায় শরীরে। উফফ যন্ত্রণা...

কথাগুলো বলে থামলো ডাক্তার অনিমেষ ঘোষ। তার দিকে তাকিয়ে পেশাদার হাসিটা হেসে বললাম..ও কিছুনা...তোর যা হয়েছে তা স্রেফ একটা হ্যালুসিনেশন। কিন্তু তোর মত একজন ডাক্তারের এমন সমস্যা হবে তা ভাবতে পারিনি। অবশ্য অমন পাড়াগাঁয়ে থাকলে এমন হওয়াটাই স্বাভাবিক। এইবার তোর বদলিটা অন্য কোনো জায়গায় করা, বুঝলি। আর আমি যে ওষুধগুলো লিখে দিচ্ছি... সময়মতো খেয়ে নিবি। আচ্ছা আমাকে একটা কথা বল, সেইদিনের পর কখনো গ্রামে হিংস্র কোনো প্রাণী দেখা গেছে?

ক্লান্তভাবে মাথা দোলাল অনিমেষ। একগাল হেসে বললাম আমি স্রেফ হ্যালুসিনেশন। একা একা থেকে তোর মাথাটা গেছে। মস্তিস্ক একজন সঙ্গী চায়। তাই এইসব আবোলতাবোল ভেবে নিচ্ছে। বলি কি এইবার বিয়েটা করেই ফেল। মুচকি হাসি খেলে গেল ডাক্তার অনিমেষ ঘোষের মুখে। টেনে টেনে অনেকটা নাটকীয় সুরে তিনি বলে উঠলেন ....এটা কোনো মানসিক রোগ নয় প্রীতম .... অনিমেষের দৃষ্টি অনুসরণ করে ক্লিনিকের জানালা দিয়ে তাকাতেই পূর্ণ চাঁদটাকে দেখতে পেলাম আমি....



(পরবাস-৭৫, ৩০ জুন ২০১৯)



অলংকরণঃ আবোল-তাবোল থেকে