ISSN 1563-8685
তিনটি কবিতা
খরাযুগ
১
ভেতরে আগুন ছিল কখনও বা
বৃষ্টিযুগ পার করে নিবে আসছে তাপ।
ক্ষীণ ধোঁয়া থেকে জেগেছে যে শিকড়ের ঘোর,
সে আমাকে আলোর সূত্রের কাছে টেনে নিয়ে
বলেছে ক্রমশ আগুন অভ্যেস কর, সামনে শীতকাল।
২
অক্ষরের কাতরতা থেকে বুঝতে পারি
আমাদের ঘরদোর ভরে উঠছে পীড়িত ভালোবাসায়।
সংসারের এক প্রান্তে চুপ করে দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রেম।
যেন কেউ শাসনে রেখেছে
যেন কোনো অপরাধে বিচারবিহীন কারাগার।
নিরক্ত হৃদয় আর শূন্য দৃষ্টিপাত
মাঝখানে অবলম্বনহীন কিছু কথা, তাতে অক্ষর ছিল না।
দিনরাত দীর্ঘনিশ্বাসের মতো হাওয়ার আঁচড়।
৩
তীব্র খরা, দু’চোখ পুড়ছে ক্রমাগত
দৃষ্টিপথে ছাই
তবে কি অন্ধদিন দরজায়?
জলের আধারে ডুবে আছে বর্ষাঋতু
শরীরে এমন খরা, সেই জলে আঙুলও ভেজে না।
বিরহ
মনমরা ছায়া মেখে অন্ধকার নামলো,
টুকরো চাঁদ জুড়ে জুড়ে মূর্তি গড়ছে রাত, নির্ঘুম।
বিষাদের বাহানা এসব,
কেননা বিকেল ফুরোনোর আগেই ‘যাই’ বলেছিল কেউ,
বাতাসে এখনও তার শূন্য অবয়ব লেগে আছে।
ভালো নেই, অন্ধকার সেও ভালো নেই।
বন্ধ চোখের নিচে আলো জ্বেলে রাতভর
আগুন নিয়েই খেলছে,
ঠান্ডা আগুন, তবু ভালো নেই,
শীত করে।...
নতুন অংক খাতা
এক – একা মধ্যরাত,
বালি মাখা ঘুম জলের গল্প লেখে বিছানায়।
দুই – দুজনেই দুইপাশে অপেক্ষায়, মাঝখানে মেঘের শূন্যতা,
বাঁশিটি তবুও চুপ।
তিন – তৃতীয় দৃষ্টির সামনে অন্যমনে ঝুঁকেছে আকাশ,
বৃষ্টি হলেও হতে পারে।
চার – চার কোণে রঙিন পাহারা, তবু মাঝখানে ছাইরঙ,
কেউ কাউকে ছোঁয়নি কখনও।
পাঁচ – পঞ্চমে বন্ধনহীন প্রেম,
ফাল্গুনের ইশারা ছাড়াই, ফাল্গুনের দাক্ষিণ্য ব্যতীত।
ছয় – ছ’রকম কাঁটাতার,
কোনটা পেরোবে আগে
ভাবতে ভাবতে জড়িয়েছে সপ্তম বন্ধনে।
সাত – অ-স্নাত দুপুর,
সাত সমুদ্রের জল চোখে, তবু বেণী ভেজাল না।
আট – অষ্টধাতুর দেবী পুজোপাঠ শেষ হলে
গোপনে চোখের জল মোছে।
নয় – নবপত্রে ঝরা পাতাদের নাম লেখা,
এরই নাম স্মৃতি, এরই নাম আধেক দহন।
দশ – দশ দিগন্তের শেষে সব দৃশ্য মুছে গেলে
জানি ইচ্ছেগুলো স্পষ্ট হবে নিজের নিয়মে।