Subscribe to Magazines





পরবাসে
পল্লববরন পালের

লেখা


ISSN 1563-8685




দু'টি কবিতা

ও একুশে - ভাষাজন্ম দাও

একটা ভাষাজন্ম শুধু - ভিক্ষা নয় - এ আমার দাবি
সরীসৃপ থেকে আমি সত্যি মেরুদণ্ডী হতে চাই
ঘষটে ঘষটে বুকে অনর্থক নীল রক্তপাত
হাঁটুভর দিয়ে ইচ্ছে মাথা তুলে আকাশে তাকাই

চাইনা বসতে আমি রাজদরবার আলো করে
রাজসূয় কাব্য লিখে জানি মেলে উপাধি খেতাব
আপেলগ্ল্যামার রঙ বিচ্ছুরায় কপালে ও গালে
মাথার পিছনে তীব্র আলোবৃত্ত বাদশা বেতাব

ও বাঙলা একটা ভাষাজন্ম দাও এবার একুশে
পৃথিবীর ইতিহাসে একমাত্র এই বাঙলাভাষা
শিখিয়েছে লড়াইয়ের বিকল্প নেই কোনোদিন
অর্জনের অন্য পথে লোভের গণিত সর্বনাশা

ফেব্রুয়ারি একুশের এই শিক্ষা সর্বত্রগামী
আবার প্রথম থেকে শুরু করতে প্রস্তুত আমি


বাঙলার মুখ আমি দেখিয়াছি

বাঙলা, তোমার মুখ আদৌ দেখেছি আমি অতীতে কখনো?
বনলতা সন্ধানে বঙ্গসাগরকূলে হেঁটেছি কি হাজার বছর?
ক্লিওপেট্রা ডেসডিমোনা ম্যাডোনা বা মাধুরী দীক্ষিত
কেমন দেখতে জানি, মুখস্থ আছে তাঁরা স্বপ্নের ভিতর
তাদের থুতনি ঠোঁট নাকের বক্রতা ভুরু চোখের চাউনি
চুল তার কবেকার অন্ধকার রাত্রি নাকি রঙিন গোধূলি
বাঙলা, নিজেকে তুমি এদের থেকেও বেশি সেক্সি মনে করো?

যদিও বাঙালি আমি, রবীন্দ্রগৌরব পুষি শোণিতে শিরায়
বছরে একটিবার – বাবা-মা-র জন্ম-মৃত্যু বিষাদ পালন
নকশাপাঞ্জাবি ধুতি লাল পাড় সাদা শাড়ি ফুলেল বিনুনি –
সেদিনও বাঙলা, স্যরি, তোমার মুখের দিকে তাকানো হয় না

যতোই ধূসর মেঘ বিল্বপত্রের মতো তিন চোখে সমবেত হোক
শঙ্খউজ্জ্বল থাকে গোটা মুখ নির্বিকার সমস্ত সন্ত্রাসে
বাঙলা, তোমার থেকে বিশ্বময় মোনালিসা হাসতে শিখেছে
তাদের সুন্দর মুখে অক্ষয় দীর্ঘজীবী আমার জননী



(পরবাস-৭৫, ৩০ জুন ২০১৯)