চশমা
হাতের কাছেই ছিল
কোথায় যে যায়!
এ বাড়িতে খোঁজ রাখে না কেউ।
এদিকে ঝাপসা চোখে
চেনামুখ বড্ড অচেনা লাগে।
বয়সের ভারে ন্যুব্জ আমিকে
যদিও ওরা রেখেছে হিসেব খাতায়।
চশমায় দেখি ...বাঁধানো সংসার,
একটা ছাদের নীচে--
কত যত্ন অযত্ন মিলেমিশে আছে।
একদিন ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে
উড়ে গেছে আমার বর্ষার ছাতা
সেদিন থেকে একলা আমি
আমার একলা আকাশ।
বন্ধু বলতে বাঁচিয়ে রেখেছি
আমার চশমার কাঁচ।
প্রতিটি মধ্যরাতে ঘন্টা বাজে
ঢং ঢং ঢং ঢং
নির্জন দ্বীপ আবার সেজে ওঠে
অস্পষ্ট কালো চোখে।
তখন নীরব প্রতীক্ষায়... প্রহর গোনে
শুধু চশমার কাঁচ।
কিছু স্মৃতি
অনেকদিন পর যখন দেখা হবে
তুমি বলবে, ভালো আছি।
আমি বলব, ভালো আছি।
দুজনই অনেক হাসব।
পুরোনো স্মৃতিতে ডুব দিয়ে
কুড়িয়ে নেবো নুড়ি।
জোয়ারের টানে ভেসে যাবো বহুদূর।
কলেজের সিঁড়ি পার করে
পুরোনো অলিগলি পথ ধরে...
দেখব অনুচ্চারিত সবটুকুই
শুধু কুঁকড়ে ছিল
আবরণে মোড়া শামুকের মতো।
অস্পষ্ট জলছবি ফুটে উঠবে চোখের তারায়
আমার খোলা চুলে
তোমার সেই ছোট্ট আকাশ
থাকবে বাঁধানো ফ্রেমে
খুব যত্ন করে।
তুমি ছুঁতে চাইবে।
পারবে না।
মাঝখানের সেতু ভেঙে
দুটি পাড় ছুটে আসতে চাইবে
পারবে না।
আমরা কেউই আগের মতো হতে পারব না।
তাইতো অনেকদিন পর দেখা হলে
তুমি বলবে, আমি বলব,
ভালো আছি।
(পরবাস-৭৬, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯)