Subscribe to Magazines



পরবাসে
ঝর্না বিশ্বাস
-এর

লেখা


ISSN 1563-8685




পাঁচটি কবিতা

‘গুলজার’

মূল হিন্দি থেকে অনুবাদ
ঝর্না বিশ্বাস





১. মুম্বই

রাত যখন মুম্বইয়ের রাস্তায়
হাতের মুঠিকে পেটের ভেতর চেপে
কালো বিড়ালের মতো ঘুমোয়
চোখের তখন পলক পড়ে না, --
শুধু একটানা ঘন ঘন নিঃশ্বাস
উড়তে থাকে শুকনো সমুদ্রতটে!


২. সেলফ্‌ পোর্ট্রেট

নাম ভাবিনি কোনো, আছে নাকি নেই
‘অমাঁ” বলে ডেকে নিল একজন
‘এই শুনছ’ বলে দ্বিতীয়
‘আরে শোন্‌’ ডাকত বন্ধুরা
যার যেভাবে যেমন মন চায়
সেভাবেই ডেকে নিল সবাই

এক কিনারায় এসে আচমকা তুমি যখন
‘গুলজার’ বলে আওয়াজ দিলে
ঝিনুক থেকে মুক্তো বেরিয়ে এল
যেন নিজের পরিচয় খুঁজে পেলাম

আহ্‌, এ নাম বড়ো ভালোলাগার
আরও একবার সে নামেই ডাকো তো!


৩. পোস্ট বক্স

চিঠির বাক্সটা আজও খালি পড়ে আছে –-
শেষ চিঠিটা এসেছিল তাও কিছু বছর হয়ে গেছে –-
এতে পিওনবাবু হাসেন
“কে তোমায় চিঠি লিখবে এখন?
মৃত্যু এলে সে পরমেশ্বরের চিঠি নিয়ে আসবে--”

যা তুমি নিজের হাতে লিখো ঠাকুর!

হেঁচকি এলে মনে হয়, এই শেষ বার্তা এলো বুঝি-–
কিন্তু চিঠি আসে না-–
প্রতি মাসে--
শুধু এক লাইটের বিল
জলের নোটিশ
যেভাবেই হোক এসে যায়...


৪. মনসুন

বর্ষা এলে জলেরও পাঁচ পা লেগে যায়,
প্রত্যেক দরজা ও দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে সে গলি ধরে বেরোয়,
আর জল ছপছপ লাফালাফি,
যেন কোনও ম্যাচ জেতা ছেলেদের মতন!

গলির ছেলেরা যেমন ম্যাচ জিতে এলে
পায়ে ক্যানভাসের জুতোয়,
বলের মতো লাফায়,
তেমনি দরজা ও দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে বেরিয়ে আসে
বৃষ্টির সমস্ত জলের ছাঁট!


৫. আখবার

সারা দিন আমি রক্তে মাখামাখি হয়ে থাকি
সারা দিন শুকিয়ে তা কালো হয়ে যায়
শুকিয়ে এক পরত জমে
নখের আঁচড়ে
চামড়া ছিঁড়তে থাকে
নাকে তখন রক্তের কাঁচা গন্ধ
আর কাপড়ে কিছু কালো গোল ছোপ ছোপ দাগ

রোজ সকালে এভাবেই খবরের কাগজ
রক্তাক্ত হয়ে আমার ঘরে আসে



(পরবাস-৮০, ১২ অক্টোবর, ২০২০)