Subscribe to Magazines





পরবাসে সুগত মুখোপাধ্যায়র
আরো লেখা


ISSN 1563-8685




চারটি কবিতা

ভারি চেনা পথে

তর্কের ছাড় যদি পাওয়া যায় অমোচ্য পাপে,
লজ্জা কীভাবে গুটিয়ে ফেলবে চশমার খাপে,
ভাবতে ভাবতে গমের মতন ছড়িয়ে দিয়েছে
একটু সত্যি, অনেক মিথ্যে জড়িয়ে দিয়েছে;
মাঝে মুঠো মুঠো কিছু কুযুক্তি।

সর্বভুকের দলে কিছু কবুতরও, তাই অখাদ্য
হজম করবে, মাত্রা ছাড়িয়ে যতটা সাধ্য।
বাদবাকিটুকু দশচক্রের ভারী চেনা পথে
অঙ্ক মিলবে উঁচোনো মুঠির দৃপ্ত শপথে,
থাকবে না পড়ে কোনো দ্বিরুক্তি।
(১৬/১১/২০১৯; প্রসঙ্গ: গর্হিত অতীতের গুরুভার লঘু করবার অভিপ্রায়ে সমকালীন রোয়াকে অর্ধসত্য ও ছেঁদো যুক্তির দেদার ও পৌনঃপুনিক অবতারণা করা হয়ে চলেছে সেই চটজলদি শিক্ষিত শ্রোতৃকুলের উদ্দেশ্যে যারা যাচাইবিমুখ এবং বৌদ্ধিক আলস্যের সারাবছরের শিকার।)

অন্ধ এবং বধির দানব

বাকচাতুরিতে ঢাকা পড়ে গেছে
অন্ধ এবং বধির দানব,
যে থাকে একলা নাভিতে।

যাকে নিয়ে তুমি কোনোদিন আগে
বিব্রত ছিলে যারপরনাই,
গাজোয়ারি নানা দাবিতে।

এখনো তো তাকে আড়ালেই রাখো;
কখনো কদাচ খুলে দাও তালা
দেশভক্তির চাবিতে।
(১৫/১১/২০১৯; প্রসঙ্গ: ভব্যতার মলাট সরালে যে দানবের অবয়বটি নির্ভুলভাবে সামনে এসে হাজির হয়।)

পুনর্জন্ম

জনশ্রুতি বলে,
শমীবৃক্ষের ডালে
তুলে রাখা আছে
হৃদয় দোলানো শ্লোগানগুচ্ছ।

আপাতত তারা
অচল শব্দাবলী;
নজর কাড়ছে
বায়সের সাজ ময়ূরপুচ্ছ।

একদিন তাতে
উত্তাপ জন্মাবে।
তখন তোমরা
করবে না তাকে এতটা তুচ্ছ।
(১৬/১১/২০১৯; প্রসঙ্গ: শীত পেরিয়ে বসন্ত এলে আবার মাটি নবোদগত তৃণাচ্ছাদনে অন্যরকম হয়ে উঠবে।)

অভয়ারণ্য

আগে এ প্রশ্নে
বিপদ ছিল না
কোনো।
গা ঢাকা দেওয়ার
আবডাল ছিল
ঘন।

দু'চোখে চলেছে
পাতলা গলির
খোঁজ।
আর ও পারের
দ্বন্দ্ব এখন
রোজ।

এখন প্রায়শ
পাগলাঘন্টি
বাজে।
বন পুড়ে ছাই,
মালুম কথার
ভাঁজে।
(১৫/১১/২০১৯; প্রসঙ্গ: এখন উপস্থাপিত প্রশ্নগুলিতে অস্তিত্ত্বগত ঝুঁকির উদ্বেগ ভণিতার পর্দা ঠেলে সামনে এসে মনোযোগ কেড়েছে।)



(পরবাস-৮২, ১৪ এপ্রিল, ২০২১)