নিরুপম চক্রবর্তীর আরো লেখা :




For Books visit


ISSN 1563-8685




তিনটি কবিতা

১. নিভৃত রাত্রি

নিভৃত রাত্রি তার প্রশস্তি আমি
রচনা করবো: অবিরত সন্ত্রাসে
হিংস্র পাখিরা রাতের আকাশে ওড়ে
কাঁদছে বাতাস তীক্ষ্ণ আর্তস্বরে
তবু একটি কবিতা প্রতিটি বেদনা বয়ে
দাঁড়িয়ে থাকবে মৃত তারাটির পাশে।।

নিভৃত রাত্রি মুখ লুকিয়েছো ভয়ে
নিভৃত রাত্রি লাঞ্ছিত পরাজয়ে
নিভৃত রাত্রি এত যন্ত্রণা সয়ে
আজও গান গাও স্পন্দিত সমারোহে৷৷

নিভৃত রাত্রি তার প্রশস্তি আমি
রচনা করেছি ধ্রুপদী অহংকারে
হেসেছে নৃপতি মূর্খ অত্যাচারী
যুদ্ধবিমানে ধ্বংসের প্রতিহারী
প্রলয়ের মেঘে শোনিম বিন্দু ঝরে ৷৷


২. বসন্ত বালিকা

কারা যেন গৃহপ্রান্তে নিরালায় স্বর্গীয় বাগানে
অসীম রোমাঞ্চে কবে শুনেছিলো ঈশ্বরের স্বর
অবিশ্বাসে হেসে উঠে আমি আজ গ্রহপ্রান্তে এসে
পরিবর্তে খুঁজে নেবো রাতের রহস্যে ঘেরা ঝড়।
এখনও আমার কাছে পুরনো আকাশ গুলো
গুঁড়ো গুঁড়ো ঝরে পড়ে নিরাশার গাঢ় অন্ধকারে,
বয়ে নিয়ে যাবে যাকে অনুতাপহীন কিছু
শব্দ-পিপীলিকা
আজকে তোমার কাছে, রৌদ্র ঝরানো পথে
কবিতার পৃথিবীতে কে গো তুমি বসন্ত বালিকা
ছড়িয়ে দেবে যে তার প্রাণ
তার সবটুকু প্রিয় অভিমান
তার ঘুম ভাঙা প্লাবনের গান।।


৩. নিজস্ব বাতাস

প্রত্যেকেই পরে নেয় নির্বিকার পাংশুটে মুখোশ
শহুরে রাস্তায় তারা হেঁটে যাবে ইনকগনিটো
নেহাতই নগণ্য লোক: হয় রাঁধে নয় চুল বাঁধে
শহর উগরে দ্যায় একরঙা ভিড় শুধু
তবু কেউ কবিতার ফাঁদে
ধরা পড়ে গেছে ভেবে প্রবল বিলাপ ক’রে কাঁদে!

তবু কোনও বিরল দুপুরে
তবু এই নিরানন্দ মুখোশের নির্লিপ্ত শহরে
স্যাতলা বাড়ির ছাদে রামধনু উঠে দোটানায়
মুখোশের নিচে দ্যাখে প্রতিটি মুখশ্রী বেয়ে
নিজস্ব বাতাস বয়ে যায়!



(পরবাস-৫৪, জুন ২০১৩)