আর্থিক কৌলীন্যে অ-সম দুই বাড়ির মধ্যে পরীবাগানটা ছিল রাখিবন্ধনের মতো। আমাদের বাড়ি ঘিরে রাখা উঁচু পাঁচিল ডিঙিয়ে এই বাড়িকেও ছুঁয়ে ছিল পরীবাগানের ছায়া, তার নুয়ে পড়া ডাল।
অসুস্থতার কারণে অসময়ে চাকরি থেকে রিটায়ারমেন্ট নিয়েছিলেন সুবিমলকাকু। বর হওয়ার মুখে বুঝতে পেরেছিলেন উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন শুধু বেশ খানিকটা পিতৃঋণ, আর এই পরীবাগান। সে ঋণও গুহবাড়ির কাছে। সরকারি চাকরির ফাঁকে ফাঁকে টিউশনি করতেন, সুরের। এস্রাজ শেখাতেন। বাড়িতে প্রচুর ছাত্রছাত্রী আসতো আমরা দেখেছি। তাতেও সমস্যা মিটতো না পুরোপুরি। নিজের আর্থিক অসুবিধা সামাল দিতে তাই বারবার এ বাড়ির দরজায় প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তার অন্যতম কারণ আম্মার স্নেহ। আমার বাবার সঙ্গে মাতৃস্নেহ ভাগ করে নিয়েছেন বরাবর। সুবিমলকাকুর প্রতি আম্মার এই স্নেহের মধ্যে কোথাও কৃত্রিমতা ছিল না।
প্রথমবার, ভেলোরে গিয়ে চিকিৎসার জন্যে আম্মা যেচে টাকা দিয়েছিলেন। সোমনাথ বা জয়াকাকিমা কেউই এসব কথা সবটুকু জানে না। আম্মা জানাতে নিষেধ করেছিলেন। সুবিমলকাকু দিতে চাইলেও সে টাকা আম্মা কোনোদিন ফেরত নেননি।
দ্বিতীয়বার এলেন সুমিত্রাদির বিয়ের সময়। প্রচুর পণের বিনিময়ে এক ব্যবসায়ী পরিবারে বিয়ে ঠিক করেছিলেন, করতে বাধ্য হয়েছিলেন। আম্মা নিষেধ করেছিলেন, কিন্তু সে নিষেধ মানা সম্ভব হয়নি। সুমিত্রাদি জেদ ধরে বসেছিলেন বিয়ে করলে ওখানেই করবেন।
বরুণদার সঙ্গে সুমিত্রাদির বিয়েটা সম্বন্ধ করে হয়েছিল বটে, কিন্তু প্রথম দর্শনেই নাকি দুজন দুজনের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিল। বরুণদার বাড়ি থেকে পণ নিয়ে প্রচুর টালবাহানা করেছিল, বিয়েটা ভেঙে যাওয়ার জোগাড় হয়েছিল। সুবিমলকাকুর সামর্থ ছিল না অত টাকা পণ দিয়ে মেয়ের বিয়ে দেওয়ার। সুমিত্রাদিও গোঁ ধরে বসেছিল, বরুণদাকে ছাড়া বিয়ে করবে না। সুবিমলকাকুর অনুরোধে মা একদিন ওকে ডেকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, কোনো ফল হয়নি।
সুমিত্রাদি বরাবর আমার মায়ের খুব অনুগত ছিল। মা খুব ভালোবাসতেন ওকে। বহুবার দেখেছি মা নতুন শাড়ি কেনার পর সুমিত্রাদিকে ডেকে বলেছেন, সুমি শাড়িটা দু'একদিন প’রে একটু পাট ভেঙে দে তো। অত কড়কড়ে শাড়ি পরতে আমার ভালো লাগে না। প্রত্যেকবার পুজোয় আমাদের সঙ্গে ওর জন্যেও মা শাড়ি বা সালোয়ার-কামিজ কিনতেন। সুমিত্রাদিও নিজের সব ব্যাপারে মায়ের পরামর্শ নিতে আসতো। কলেজে নাটকে অভিনয় করবে, মায়ের কাছে এসে রিহার্সাল করতো। কোথাও কোনো ফাংশানে গান গাইবে, গান বেছে দেওয়ার জন্যে মায়ের কাছে ছুটে আসত। কিন্তু বরুণদাকে বিয়ে করার প্রশ্নে মাকে ও উলটো যুক্তিতে চুপ করিয়ে দিল।
- দেখো কাকিমা, বরুণকে দেখামাত্রই আমার মনে হয়েছে, ওর জন্যেই আমি অপেক্ষা করে ছিলাম এতদিন। কম ছেলে তো আমাকে প্রোপোজ করেনি, তাদের দিকে আমি ফিরেও তাকাইনি। তুমি তো জানো সবই। সেসব তো বলেছি তোমাকে। কিন্তু বরুনের চোখে আমি এমন কিছু দেখেছি, যা আমাকে সারাজীবনের ভরসা দিয়েছে।
-সবই তো বুঝলাম, কিন্তু ওদের কিছু ব্যাপার যে আমারও ভালো লাগছে না রে সুমি।
- ভালো আমারও লাগছে না।
- কী ভালো লাগছে না তোর ?
- বাবার এই টালবাহানা আমার ভালো লাগছে না। দেখো আমি তো নিজে ওকে ডেকে আনিনি, বাবাই তো ওকে আমার সামনে এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছ। আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছি। এখন আবার তাকে বাতিল করে দিতে বলছো। এটা কি খেলা নাকি আমাকে নিয়ে!
- এমন তো নয় যে তোরা দু'জনে প্রেম করে বিয়ে করতে চাইছিস।
- প্রেম করেই তো।
- মানে! ক'দিন জানিস তুই ওকে?
- প্রেম হওয়ার জন্যে ক'দিন লাগে না, কয়েকটা মুহূর্তই যথেষ্ট। প্রেম হলে এক পলকেই হয়, না হলে সারাজীবন গা ঘেঁষাঘেষি করে থাকলেও হয় না।
- বরুণও কি তোর মতো ভাবছে ?
- ভাবছে বই কি। না হলে আমার সঙ্গে বাইরে মিট করবে কেন ?
- তোরা মিট করেছিস বাইরে!
- হ্যাঁ চার পাঁচ বার।
- সেসব নাহয় হলো। কিন্তু ওদের তো টাকার অভাব নেই, তবু পণ চাইছে, এটাই খারাপ লাগছে।
- ঘর করব আমি, আমার যদি খারাপ না লাগে তোমাদের অসুবিধে কোথায়?
- সত্যিই তোর একটুও খারাপ লাগছে না?
- না তো।
- কিন্তু তুই বল, অত টাকা সুবিমলদা দেবেন কোত্থেকে?
- কেন অত বড় পরীবাগান রয়েছে, কোন কাজে লাগে বল তো? গরীবের ঘোড়ারোগের মতো। ওর খানিকটা বিক্রি করে দিলেই তো এখন প্রচুর টাকা পাবে। বহু লোক হাঁ করে বসে আছে।
- সোমনাথের কথা ভাববি না?
- ভাববো না কেন? বিয়ে হয়ে অন্য বাড়ি চলে গেলে এ বাড়ির কিছুই তো আর আমার থাকবে না। একটা কানাকড়িও নিতে আসবো না। সবই তো ভাইএর থাকবে।
মা স্তম্ভিত ওর কথা শুনে। সুমিত্রাদির জেদের কাছে হার মানলেন সুবিমলকাকু। অসহায়ের মতো আম্মার কাছে ছুটে এসেছিলেন।
এবার আর খালি হাতে আসেননি, পরীবাগানের দলিল তুলে দিয়েছিলেন আম্মার হাতে । কিছুতেই এমনি এমনি টাকা নেবেন না। বাগান বন্ধক রাখবেন। আম্মা যেন প্রস্তুত হয়েইছিলেন। তবু প্রথমে একবার আপত্তি করলেন। বললেন, তোর টাকার দরকার, দিচ্ছি। দলিল কী হবে, ওটা দিয়ে আমি কী করবো?
সুবিমল কাকুর মুখে এক মুহূর্তের জন্যে আলো জ্বলে উঠেছিল। সেকি হারানো-প্রাপ্তির আলো? তবু পরমুহূর্তে দলিলটা আম্মার সামনে রাখলেন। একটুক্ষণ চুপ করে থেকে বললেন – বড়মা, ওটা তোমার কাছে থাকলে জানবো পরীবাগান আমারই আছে।
আম্মা সম্মত হলেন। পরীবাগান আম্মার করতলগত হলো। সেই-ই পরীবাগান হাতবদলের সূচনা। এসব কথা আমাদের বাড়ির সবারই জানা। তবু কেন যে সুমিত্রাদির ওপর কোনদিন কারো খারাপ ধারণা হয়নি, জানিনা। সময় দূরত্ব বাড়িয়েছে ঠিকই, কিন্তু এ বাড়িতে ওর সমাদর কখনও কমেনি। সে কি পরোক্ষে পরীবাগানকে আমাদের অধিকারের সীমায় ঠেলে দেওয়ার কারণে?
সুমিত্রাদি এখনো যোগাযোগ রাখে । শুনেছি মাঝেমাঝেই নাকি আসে। আমি নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকি বেশিরভাগ সময় আমার সঙ্গে দেখা হয়না। ও আমার জন্যে অপেক্ষা করে করে শেষে আক্ষেপ নিয়ে ফিরে যায়।
এই দীর্ঘদিনের মধ্যে মাসছয়েক আগে একবারই মাত্র আমার সঙ্গে দেখা হয়েছিল। সেদিন শরীরটা খারাপ ছিলো বলে আমি কোথাও বেরোইনি। ও আমার খোঁজ করতেই তোতার ছেলে রম্য উপরে এসে বললো, পিসিমনি, এক ভদ্রমহিলা তোমাকে চাইছে, ওপরে আসতে বলবো?
- ওপরে কেন আসতে বলবি! আমি কি কারো সঙ্গে আমার ঘরে মিট করি?
- না, কিন্তু এই ভদ্রমহিলা অনেক চেনা, আই মিন তোমাদের অনেক চেনা।
- আমাদের চেনা, তোর নয়!
- হ্যাঁ, এর আগেও আমি দেখেছি, কিন্তু ডিটেলস জানি না। কেউ আমাকে কখনও প্রপারলি ইন্ট্রোডিউস করে দেয়নি। তবে মা বলেছে পাশের বাড়ির কেউ।
রম্য আর আমার কথার মাঝেই সিঁড়িতে পায়ের শব্দ পেলাম। প্রথমে চিনতে পারিনি। চেহারাটা ভেঙে গেছে। আগে একটা ঢলোঢলো লক্ষ্মীশ্রী ছিল, সেটা উধাও। কথায় কথায় হেসে গড়িয়ে পড়তো, প্রাণপ্রাচুর্যে ভরা সেই মানুষটাকে খুঁজতে গিয়ে ধাক্কা খেলাম। ঘরে ঢুকেই 'রূপাই' বলে জড়িয়ে ধরলো। ও বরাবর আদর করে ওই নামেই ডাকতো আমাকে। মনে হলো অনেক দূরে আবছা সুরে কেউ কাউকে ডাকছে। এক মুহূর্তের বিহ্বলতা কাটিয়ে আলগোছে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ওকে বসালাম। ওর চোখ ভর্তি জল। মুছছে, আবার ভরে উঠছে চোখ। কাঁধে হাত রেখে বললাম,
- কি গো, তোমার সেই হাসি কই ?
- আগে কান্নাটা কাঁদতে দে।
- কেন কাঁদতে হবে কেন?
- জানিস না কেন কান্না পায়? গলা বুঁজে এলো সুমিত্রাদির। কিন্তু আমার ভেতর কোনো আবেগ সঞ্চারিত হচ্ছে না, বরং বেশ অস্বস্তি লাগছে। ওকে স্বাভাবিক করার জন্যে বললাম, বহুকাল পর দেখলাম তোমাকে। আসো না কেন?
- কোন মুখ নিয়ে আসবো ?
- কেন মুখে আবার কী হলো?
কোনো উত্তর না দিয়ে একভাবে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো। ওর চোখে মুখে খানিকটা বিস্ময় মিশ্রিত হতাশা। হতে পারে সেটা আমার শীতলতায়। বুঝতে পারছিলাম আমার সঙ্গে ওর সেই পুরোনো রূপাইকে ও মেলাতে পারছে না কিছুতেই। সুমিত্রাদি ভুলে গেছে আমাকে প্রায় কুড়ি বাইশ বছর পরে দেখছে ও।
উত্তাপহীন একটা সাহচর্যকে গ্রহণ করার জন্যে কথা চালিয়ে যাই।
- একা এসেছ?
- না ছোট ছেলেকে নিয়ে এসেছি।
- কোথায় সে?
- নিচে আম্মার সঙ্গে কথা বলছে।
- অনেক বড় হয়ে গেছে তাই না?
-অনেকগুলো বছর তো কেটে গেছে।
- কী নাম ওর?
-গৌরব। আমার বড় ছেলের নাম মনে আছে তোর?
-সৌরভ। অন্নপ্রাশনের সময় প্রদীপ জ্বালিয়ে নাম ঠিক করেছিলে। ছেলেরা কে কী করছে?
- সৌরভ সেলট্যাক্সে চাকরি করে। এই তো বছর দু'য়েক হলো চাকরি পেয়েছে। আর গৌরব তো জেদ ধরে ফাইনআর্টস নিয়ে পড়লো। গতবছর গ্রাজুয়েশান কমপ্লিট করেছে।
- বাহ, সুবিমলকাকুর উত্তরাধিকারটা পেয়েছে তাহলে?
- আর উত্তরাধিকার! পাশ টাশ করে সেইতো একটা কোম্পানিতে অ্যানিমেশানের জন্যে ছবি আঁকে। সামান্য টাকা পায়। ফাইন আর্ট পড়ে কী লাভ হলো? এখন আবার কমপিউটারে মালটিমিডিয়া কোর্স করছে। যদি কোনো আই টি কোম্পানিতে ঢুকতে পারে।
- নিজের ছবি আঁকে না?
- মাঝে মধ্যে আঁকে। সময় কোথায়? সারাক্ষণই তো দেখি কার্টুন আঁকছে। হ্যাঁরে রূপাই, তুই তো আগে ছবি আঁকতিস, এখন আর আঁকিস না?
- দুর, তুমিও যেমন। ছেলেবেলায় ওরকম সবাই এক আধটু আঁকি বুকি করে, ওই আবার ছবি আঁকা হলো!
- বাবা যে বলতেন, তোর আঁকার হাত খুব ভালো।
- সে সুবিমলকাকু আমাকে ভালোবাসতেন বলে তাঁর ওরকম মনে হতো। যেটুকু আঁকতাম, তা সুবিমলকাকুর উৎসাহ আর আগ্রহে। আসলে আমার তো রঙের লোভে তুলি ধরা। বড্ড রঙ ভালোবাসতাম যে।
- এখন আর বাসিস না বুঝি?
সুমিত্রাদি একটা দীর্ঘশ্বাস চাপলো। তখনই রঙের কথায় খেয়াল হলো ওর সিঁথি শাদা। মনে পড়লো আম্মা একবার বলেছিলেন বটে। তখন জাস্ট একটা খবর শোনার নির্লিপ্ততায় শুনেছিলাম। কোনো বিশেষ প্রতিক্রিয়া হয়নি। আজ সুমিত্রাদিকে চোখের সামনে এমন রঙবিহীন চেহারায় দেখে খুব খারাপ লাগলো। ও বরাবর খুব সেজেগুজে ঝলমলে হয়ে থাকতো। দেখে মনে হতো সারাক্ষণ যেন উৎসবের মেজাজে আছে।
- কী হয়েছিল বরুণদার?
- লাং ক্যানসার। ধরা পড়লো তো একদম শেষ সময়ে। কোনো অসুবিধে বা শরীরের কোন কষ্ট আগে কিচ্ছু বলেনি আমাকে। নিজের কথা তো গুরুত্ব দিয়ে ভাবতো না কোনোদিন। পাছে আমি দুর্ভাবনা করি, কষ্ট পাই। নিজের যন্ত্রনা নিজে একা ভোগ করেছে। যখন সহ্যের শেষ সীমায়, তখন আমি জানতে পেরেছি। এটা যে আমার কত বড় আফসোস আর যন্ত্রনার জায়গা, সেটা শুধু আমিই জানি। শেষ ক'মাস খুব কষ্ট পেয়েছে। চোখে দেখা যায় না। আমিই তখন ভগবানের কাছে ওর মৃত্যু কামনা করতাম।
সুমিত্রাদির মুখে সেই যন্ত্রণার ছাপ। খারাপ লাগছিল। ঘরের ভেতরটা ভারাক্রান্ত হয়ে উঠলো। তিন বছর আগে মারা গেছে বরুনদা। তার আগে পর্যন্ত ওদের সুখের দাম্পত্যের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লো সুমিত্রাদি। অসহায় লাগছিল। বুঝতে পারছিলাম না কীভাবে সান্ত্বনা দেব। তাই কথা ঘোরালাম,
-করি। ওই গানটুকুই আছে। বাড়িতে একটা গানের স্কুল করেছি। তুই তো এখন বড় নেত্রী হয়েছিস। লোকের কাছে কতবড় মুখ করে বলি আমি। সে জন্যে আমারও কত খাতির চেনাজানা লোকজনের কাছে।
-মোটেই নেত্রী হইনি আমি। মানুষের জন্যে কিছু কাজ করতে ইচ্ছে করে, ভালো লাগে বলেই এর মধ্যে আছি। একা একা তো আর সব কিছু করা যায় না। চলো আম্মার ঘরে যাই। তোমার ছেলেকে দেখি।
-চল, ওরা তোর কত গল্প শুনেছে আমার মুখে।
আমার কোন গল্প ওরা কতটুকু শুনেছে জানি না। ওসব নিয়ে আমার আর কোনো মাথাব্যথা নেই। কারন সে গল্প আমার নয়। কুড়ি একুশ বছর আগের সেই জীবনটা যাপন করেছে অন্য একটা মেয়ে। গল্পটাও তার।
-চলো তোমার গান শুনবো আজ। জানো তো বেশ কিছু গান আছে যা শুনলে মা বলেন, সুমি এর চেয়ে ভালো গাইতো।
-জানি। এর আগে যেদিন এসেছিলাম, অনেক গান গেয়েছিলাম।
সুমিত্রাদি সত্যিই খুব ভালো গাইতো, হয়তো এখনো গায়। সুবিমলকাকুর উৎসাহে ক্লাসিকালটা শিখেছিল খুব মন দিয়ে। ঠুংরি, দাদরা ছাড়াও অসাধারণ নজরুলগীতি গাইতো সুমিত্রাদি। সুমিত্রাদি আমার ঘরে ঢোকার পর ওর সঙ্গে কথা বলতে বলতে অজান্তেই কখন যেন খানিকটা উষ্ণতা জমলো দুজনের মাঝখানে। সেই পুরোনো মানুষটাকে অনুভব করলাম, আর সেটুকু আত্মস্থ করতে গিয়ে না চাইতেও পিছন দিকে চোখ চলে গেল।
(পরবাস-৮৪, ১০ অক্টোবর, ২০২১)