ধীরে ধীরে এই নিউ নর্মাল-এ আমরা বেশ অভ্যস্ত হয়ে উঠছি। অনলাইন ক্লাস থেকে শুরু করে ভিডিও মোডে মিটিং, মুখোশের আড়াল আর সামাজিক দূরত্ব মেনে জীবন যাপন। প্রায় চার মাস হোল, স্বাভাবিক জীবনের গতিপথ অনেকটাই বদলে গিয়েছে। প্রাথমিক ভীতি কাটিয়ে এখন বেশ আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছি, সাহস করে সেটা করছি, যেটা কদিন আগেও করতে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলাম। এমনিতেই কিছুটা সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে পুরনো ব্যাঙ্ক ছেড়ে এসে নতুন ব্যাঙ্কে জয়েন করেছি বছর দেড়েক আগে। জোনাল হেড হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে বাঁকুড়া এসেছি প্রায় তেরো মাস। এখানে জেলা জুড়ে আমাদের সাকুল্যে ছ-টা ব্রাঞ্চ। অন্যান্য প্রাইভেট ব্যাঙ্কও আছে বেশ কিছু। প্রতিযোগিতার বাজারে টিঁকে থেকে ব্যবসা বাড়িয়ে নেওয়ার ফন্দিফিকিরগুলো মোটামুটি আমার রপ্ত বলেই ম্যানেজমেন্ট-এর বিশ্বাস। বড়কর্তাদের আস্থাভাজন হতে গেলে নিজের সেরাটা দিতে হয় আর সেটা করতে গিয়ে আমাকে ইন্টেন্সিভ ট্যুর করতে হয়, সরকারি অফিসের বড়সাহেবদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে আমার ব্যাঙ্ক সব থেকে ভালো পরিষেবা দিতে সক্ষম, সেটা বোঝানোর আপ্রাণ চেষ্টা করতে হয়। ভালো পারফর্মেন্স দেখাতে পারলে উত্তরণের সম্ভাবনা যেমন আছে, তেমনি আছে কলকাতার হেড অফিসে ঢোকার সুযোগ। তবে আজন্মকাল কোলকাতায় বেড়ে ওঠা আমার বা লিপির কিন্তু বাঁকুড়া বেশ পছন্দের জায়গা হয়ে উঠেছে। শহর থেকে একটু বেরিয়ে আধঘণ্টাটাক গাড়ি ছোটালেই আশপাশের পৃথিবীটা মুহূর্তে বদলে যায়। দুপাশের শাল মহুয়ায় ঠাসাঠাসি অবিন্যস্ত বনভূমির অকৃত্রিম আদর আর লাল মাটির ধুলো চাকায় জড়িয়ে নিয়ে কতদিন যে এদিক-সেদিক চলে গিয়েছি তার হিসেব রাখিনি। শহর থেকে কিছুটা উত্তর-পশ্চিমে গেলেই শুশুনিয়া। চৈত্রের মাঝামাঝি সময় থেকেই এখানে রাস্তার দুধারে পলাশের ডালে ডালে আগুন। ফাগুনের আকাশ এখানে পলাশের লাল আর রাধাচূড়ার হলুদ মেখে রঙিন। আবার ঘণ্টা খানেক দক্ষিণে গেলেই মুকুটমনিপুর। এখানে ছবির মত বনান্তর আর বেঁধে রাখা কংসাবতীর নীল জলরাশি যে কি মায়াময় হয়ে ওঠে তা ভাষায় প্রকাশ করা দুষ্কর। যেমন ক্যামেরা শুধুমাত্র ইট-কাঠ-পাথরের ছবি ধরে রাখে, ভালো লাগার অনুভূতি হৃদয় দিয়ে আস্বাদন করতে হয়, লেন্সের কেরামতিতে ধরা যায় না, তেমনই ভাষায় এই সৌন্দর্যের বর্ণনা অসম্ভব। অকৃপণ সুন্দর প্রকৃতির প্রেমে মজে আমরা কখন যেন ভালোবেসে ফেলেছি এই লাল মাটির রুখা-শুখা বাঁকুড়াকে।
আজ আবার লকডাউন। সংক্রমণ যেমন লাগামছাড়া হয়ে উঠছে তাতে লকডাউন জরুরি! অর্থনীতির সাথে ব্যাঙ্কিং-এর যোগাযোগ বেশ নিবিড় যদিও ব্যাক্তিগতভাবে আমি অর্থনীতির খুব কিছু বুঝি না। তবে এই করোনা-কালে বিশ্ব জুড়ে যে ইকনমিক রিসেসান চলছে সেটা সবাই বোঝে। আমার ফ্ল্যাটের নীচে, রাস্তার মোড়ে একটি অল্পবয়সি ছেলে ফল বিক্রি করে। সাইকেল ভ্যানের ওপর আপেল, শশা, বেদানা, কালো আঙুরের থোকা, সিঙ্গাপুরী আর মর্তমান কলার সম্ভারে সাজানো দোকান। অফিস থেকে ফেরার সময় প্রায়ই আপেলটা-কলাটা কিনে ঘরে ঢুকি। এখন পৌরসভার নিয়মবিধি মেনে সপ্তাহে তিন দিন করে বাজার বন্ধ থাকছে, বন্ধ থাকছে সব ছোটখাট ব্যবসা। রাস্তার মোড়ে ফল বিক্রি করে সংসার চালানো ছেলেটা যে চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সেটা আন্দাজ করতে অসুবিধা হয় না। গবেষণালব্ধ সমীক্ষা বা অর্থনৈতিক প্যাকেজ, কোনটাতেই এই প্রান্তিক মানুষদের কথা বা অংশীদারিত্ব থাকে কিনা কে জানে!
নিম্নচাপের বদান্যতায় আজ সকাল থেকেই ঝরঝর মুখর বাদল দিন; দোতলার ফ্ল্যাটের জানলা দিয়ে অলসভাবে বৃষ্টি দেখছি। মোবাইল ফোনটা বেজে উঠল রিনরিনিয়ে। আলস্য কাটিয়ে জড়ানো গলায় হ্যালো বললাম। অচেনা কণ্ঠস্বরে উচ্ছাসের আভাস, “কেমন আছিস রঞ্জন? চিনতে পারছিস? আমি নির্মাল্য বলছি রে।” একটু হকচকিয়ে বললাম, “নির্মাল্য মানে সেই স্কুলের নির্মাল্য? তেলু?” নির্মাল্য আমাদের ক্লাসেই ছিল, ফাইভ থেকে টেন পর্যন্ত, মাথায় চপচপ করে তেল দিত বলে সবাই বলত তেলু। নির্মাল্যর গলায় উচ্ছ্বাস, “হ্যাঁ রে বাবা। কত দিন পর তোর সাথে কথা, তুই বিরাট চাকরি করছিস শুনলাম, খুব ভালো লাগল রে।” নির্মাল্যর সাথে সেই স্কুল ছাড়ার পর কোনদিন দেখা হয়নি, কথাও না। পড়াশোনায় একেবারেই অমনোযোগী ছিল বলে রেজাল্ট বরাবর খারাপ করত। শুনেছিলাম মাধ্যমিকের পরে নাকি আর সে ভাবে পড়াশোনা করেনি। আমার সাথে কোনদিনই সেভাবে খুব একটা বন্ধুত্বও ছিল না। হঠাৎ করে এত দিন পরে ওর ফোনে বিস্মিত হলাম বইকি। পুরনো বন্ধুরা ফোন করলে এমনিতে খুব ভালো লাগে, কিন্তু নির্মাল্যর ফোনে আলাদা কোন অনুভূতি হোল না। স্বাভাবিক ভাবে বললাম, “কেমন আছিস তুই? আমার নম্বর পেলি কোথায়?”
নির্মাল্য বলল, “অম্লানের সাথে দেখা হোল সেদিন, ওর থেকে পেলাম। তোর কথা বলছিল, ভালো পোস্টে আছিস শুনে খুব ভালো লাগল!”
বললাম, “না রে বিরাট কিছু নয়, চাকরি মানেই তো খিদমতগিরি, তার আবার ভালো খারাপ? এখন বাঁকুড়াতে আছি, বউ-মেয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছে আর কি।” ব্যাঙ্কে চাকরি করি সেটা সন্তর্পণে এড়িয়ে গেলাম, বলা যায় না, যদি লোনের কথা বলে বসে। ছোটখাট ব্যবসা করে বলেই মনে হয়। সেসব আর জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে হোল না।
“বলিস কি রে; আমি তো নেক্সট উইকেই বাঁকুড়া যাচ্ছি, একটা প্রোজেক্ট হাতে নিয়েছি, দেখা হবে নিশ্চয়।” নির্মাল্য বলল।
বাঁকুড়ায় এলে কোন অজুহাত দেখিয়ে দেখা করব না ভাবলাম। তবু কৌতূহলবশত জিজ্ঞেস করলাম, “এখন কি করছিস? সেই যে স্কুল শেষ হোল, তারপর থেকে তো আর…।”
আমাকে থামিয়ে নির্মাল্য বলল, “তারপর অনেককিছু, বাবা মারা গেলেন, বছর খানেক এদিক-সেদিক করে আবার পড়াশোনা শুরু করলাম, ঠেলেঠুলে গ্র্যাজুয়েশন করলাম ওপেন ইউনিভারসিটি থেকে। এখন ব্যবসা নিয়ে আছি। দেখা হোলে বলব সব।”
আরও কিছু বলে গেল নির্মাল্য, সব কিছু যে শুনলাম তেমন নয়, হুঁ হুঁ করে খানিকক্ষণ পর ছাড়লাম। এটা সেটা ভাবতে ভাবতেই কোলকাতা থেকে মিঃ পট্টনায়েক, আমাদের জেনারেল ম্যানেজার ফোন করলেন। ইনভেস্টমেন্ট বাড়াতে হবে বলে টার্গেটের কথা স্মরণ করালেন। লকডাউন পরিস্থিতিতে কিছুটা সমস্যা আছে বলে সময় চাইলাম কিন্তু উনি ওঁর বক্তব্যে অবিচল, কঠিনভাবে বললেন, “ইটস ইওর জব রঞ্জন, জাস্ট সি দ্যাট ইউ রিচ দা টার্গেট।” পট্টনায়েক আবার এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টারের কাছের লোক, ওকে হালকাভাবে নিলে বিপদ। ইচ্ছে করল বলি, “লোকে আপনার ব্যাঙ্কে একাউন্ট না খুলতে চাইলে আমি কি করব? এমনিতেই করোনা করোনা করে লোকে নাজেহাল, তার মধ্যে…” মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল, বাইরে অঝোর বৃষ্টি আর অন্তরে রক্তক্ষরণ।
বৃষ্টির স্কুলের প্রিন্সিপাল মাঝে মাঝে ফোন করেন ব্যাঙ্কিং-এর ব্যাপারে কিছু জানার থাকলে। ওনার স্কুলের দুটো একাউন্ট আমাদের ব্যাঙ্কেই। আজ সকালে একটা ডিমান্ড ড্রাফট নিয়ে কিছু সমস্যা হচ্ছিল বলে ফোন করেছিলেন, ব্রাঞ্চ ম্যানেজারকে বলে মিটিয়ে দিলাম। বেশ কিছুদিন লেগে থাকার পর এখানকার লায়নস ক্লাবের একটা একাউন্ট খোলাতে পেরেছি আমাদের ব্যাঙ্কে। নিজের কাজ আর টার্গেট নিয়ে এতটাই ব্যস্ত ছিলাম যে নির্মাল্যর কথা মনেও আসেনি। হঠাৎ ফোনে ওর নম্বর ভেসে ওঠাতে মনে পড়ল। এই ব্যস্ততার মধ্যে নির্মাল্যকে এন্টারটেন করার ইচ্ছে হোল না। ফোন না ধরাই বুদ্ধিমানের কাজ ভাবলাম। গোঁগোঁ করতে করতে কেটে গেল ফোন। কিন্তু ওর সেই নাছোড়বান্দা স্বভাবটা রয়ে গেছে বুঝলাম যখন মিনিট কয়েক পর আবার স্ক্রিনে ওর নম্বর ভেসে উঠল। এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই বুঝে বিরক্ত হয়ে ফোন ধরলাম, “বল, কি খবর?”
নির্মাল্য বলল, “বাঁকুড়া ঢুকে গেছি বস, কোথায় মিট করব বল।”
“কোথায় উঠেছিস?” মনে মনে ভেবে নিলাম, বাড়িতে ডাকাডাকির কথা বলা যাবে না, এমনিতেই করোনা-কালে বাড়িতে কাউকে নিয়ে আসাটা অবিবেচকের মত হবে, তাছাড়া যত তাড়াতাড়ি কাটাতে পারি ভালো, অফিসে ছাড়া আর কোথায়ই বা দেখা করব, বললাম, “অফিসে চলে আয়, লোকেশান ম্যাসেজ করছি।”
নির্মাল্য বলল, “উঠেছি সপ্তদিয়াতে, গুগুল দেখে চলে আসছি।” সপ্তদিয়া হোটেলে উঠেছে শুনে বিস্মিত হলাম, এমনিতে এটা বাঁকুড়ার সবথেকে কস্টলি হোটেল, নির্মাল্য এখানে উঠবে ঠিক ভাবিনি। কি ব্যবসা করে সেটা আর শোনা হয়নি সেদিন; তবে বুঝলাম টাকাপয়সা ভালোই করেছে। মিনিট কুড়ি পর নির্মাল্য হাজির হোল আমার অফিসে। প্রথমটা দেখে হকচকিয়ে গেলাম, একদম সেই একই রকম রয়েছে দেখলাম। আমার মাথায় এখন চুল কমে কপাল চওড়া হয়েছে, যদিও ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়নি। বয়েসের সাথে সাথে বাড়তি স্থূলতা এসেছে শরীরের আনাচকানাচে। নির্মাল্য কি কৌশলে এত সুন্দর চেহারা ধরে রেখেছে কে জানে। নির্মাল্য সোফায় বসল গুছিয়ে, বলল, “কতদিন পর তোকে দেখলাম। দারুণ অফিস রে তোর।” বোর্ডে লেখা ডেসিগনেশান দেখে বলল, “তুই জোনাল ম্যানেজার? বিরাট ব্যাপার তো রঞ্জন।”
“ওই আর কি। তোর খবর কি? বাঁকুড়াতে কি কাজ ধরেছিস? তোর বিসনেসটা কিসের?” জিজ্ঞেস করলাম।
“সেদিন বলছিলাম না, ব্যবসা করছি। আসলে সবটাই গল্পের মত, অনেক স্ট্রাগেল করে এখন মোটামুটি এস্টাব্লিশড বলতে পারিস। আপাতত গোটা দুই স্পোর্টস ইকুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট আর তিনটে কোল্ড স্টোরেজ সামলাচ্ছি। দার্জিলিঙে একটা হোটেল লিজ নিয়েছি বছর তিনেক হোল, ভালোই আছি, বুঝলি? এখানে সিমলাপালে একটা বড় পোল্ট্রির প্রোজেক্ট নিচ্ছি, সমস্ত ইনফ্রাস্ট্রাকচার তৈরি করবে আমার কোম্পানি আর চালাবে স্বনির্ভর দলের মেয়েরা। প্রফিট শেয়ারিং হবে থার্টি-সেভেন্টি। দলের মেয়েদের বেশি শেয়ার। ধাপে ধাপে প্রায় দেড় কোটি টাকা ইনভেস্টমেন্ট হবে, সেই ব্যাপারে ফাইনাল টাচ দিতেই বাঁকুড়া এলাম। আমার ম্যানেজার গত একমাসে সব চূড়ান্ত করে ফেলেছে।”
আমি কেমন বিহ্বল হয়ে পড়ছিলাম, ক্লাসের পিছনের সারিতে থাকা নির্মাল্য যে এত কিছু করে উঠতে পারে বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল। নিজের ঠুনকো স্ট্যাটাস এক ঝটকায় খসে পড়ল, মনে সমীহ নিয়ে বললাম, “তুই তো ভাই শিল্পপতি। কিভাবে এত কিছু…।” আমার ভিতরে ঘাপটি মেরে থাকা বানিয়াটা আস্তে আস্তে বেরিয়ে পড়ছে বুঝলাম। পট্টনায়েকের মুখটা মনে পড়ল, টার্গেট রিচ করতে পারলেই ধাপে ধাপে ওপরে উঠে আসার হাতছানি। ফস করে বলে বসলাম, “এতদিন পর দেখা, আমার সাথে লাঞ্চ করবি চল। কোন কথা শুনব না।”
নির্মাল্য হেসে বলল, “খুব ভালো বলেছিস, কিন্তু হোস্ট আমি, হোটেলে বলাই আছে, লাঞ্চের পর জমিয়ে আড্ডা দেব। সময় হবে তো? তুই ব্যস্ত মানুষ।”
“আরে ধুর, কিসের ব্যস্ততা, তুই এসেছিস এত দূর থেকে।” নিজেকে সংবরণ করতে পারলাম না, পাখির চোখে দেখলাম টার্গেট, বলেই ফেললাম, “বস, কোন ব্যাঙ্কে ইনভেস্ট করার ব্যাপারে কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে? আমাদের ব্যাঙ্ক কিন্তু…কোর ব্যাঙ্কিং, ডোর স্টেপ কালেকশান, সব ফ্যাসিলিটি আছে আমাদের।”
“হ্যাঁ, প্রথম ধাপেই প্রায় ফিফটি ল্যাখ ইনভেস্টমেন্ট করবে কোম্পানি। কোন রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কেই করার কথা ভাবা হয়েছে, তবে, তুই থাকতে অন্য জায়গায় যাব না, তোর ব্যাঙ্কেই একাউন্ট খুলব। আমার ম্যানেজারকে একটু গাইড করে দিস, তিন বা চারটে একাউন্ট খুলতে হবে।” আশ্বস্ত করল নির্মাল্য।
লাঞ্চের জন্য উঠলাম আমরা। নির্মাল্যর ইনোভা গাড়িতে বসে নির্দ্বিধায় বললাম, “ছোটবেলার এটাচমেন্ট চিরকালীন, এই নির্ভেজাল বন্ধুত্ব সত্যিই অতুলনীয়।”
“একদম ঠিক বলেছিস রঞ্জন,” দিলখোলা হাসি ছড়িয়ে বলল নির্মাল্য।
আমিও তাল মিলিয়ে হেসে উঠলাম, মুখোশটা টেনে ভালো করে ঢেকে নিলাম নিজের মুখাবয়ব। রিয়ার ভিউতে আমার মুখ দেখা যাচ্ছে, মুখ আর মুখোশের জড়াজড়িতে যেন এক অন্য আমি।