• Parabaas
    Parabaas : পরবাস : বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • পরবাস | সংখ্যা ৮১ | জানুয়ারি ২০২১ | গল্প
    Share
  • উৎসর্গ : তাহমিদ হোসেন


    হরতলীর শেষদিকে একটু জনমানবহীন জায়গায় দোতালা কিসমত ভিলা, ওই বাড়ির বর্তমান কর্তা আজগর আলীর পিতার কিসমতের চিহ্ন বহন করছে। তবে কুরবানীর সময়টায় দুর্ভাগ্যবশত বাসার চারপাশ একদম জলাবদ্ধ। কিছুটা বিরক্ত হয়ে আজগর আলী আর তার তিন পুত্র বহুকষ্টে তাদের লাল গরুটা ছাদে উঠান। উঁচু সরু সিঁড়ি ঠেলে এই গরু উঠানোর শ্রমে তাদের শরীর ঘেমে একাকার, চোখ মুখ লাল।

    ছাদের উপর চিৎ করে শুইয়ে রাখা গরুটার সামনের দুটো পা চেপে ধরেছে মেজো ছেলে, পিছনের দুটো ছোটোজন। বড় ছেলে একটা ছোট্ট গাছের গুঁড়িতে শেষবারের মত শান দিয়ে নেয়া ধারালো চকচকে ছুরি নিয়ে এসে পারিবারিক রেওয়াজমাফিক অনুমতি চায়। ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে আজগর আলীর গর্ব হয়, খাসা ছেলে একটা তার! বড় ছেলে গরুর গলার কাছটায় উবু হয়। লাল ঘর্মাক্ত মুখে তাকবীর দিয়ে সে যখন গরুর গলায় ছুরি চালায় আজগর আলীর তখন গরুর চোখে তাকিয়ে তার বড় ছেলের প্রথম বউ আমিনার কথা মনে পড়ে যায়।

    দীর্ঘ এগারো বছর পর কিসমত ভিলার ছাদ অনর্গল রক্তের স্বাদ পায়, যেন বৃষ্টি হচ্ছে। আজগর আলী ভাবেন তার মৃত স্ত্রী এখন থাকলে এখন এই গরুর জম্পেশ কালাভূনা হত৷ আজকালকার মেয়েরা তো রাঁধতেই পারে না ঠিকঠাক।



    অলংকরণ (Artwork) : অলংকরণঃ রাহুল মজুমদার
  • এই লেখাটি পুরোনো ফরম্যাটে দেখুন
  • মন্তব্য জমা দিন / Make a comment
  • (?)
  • মন্তব্য পড়ুন / Read comments