স্পাই থ্রিলার বলতে সাধারণভাবে বোঝায় গুপ্তচরদের নিয়ে টানটান উত্তেজনাময় গল্প যাতে থাকে একজন গ্ল্যামারাস, তুখোড় নায়ক, লাস্যময়ী নায়িকা, রুদ্ধশাস অ্যাকশন, মিঠেকড়া যৌনতা। পাঠক যাতে উত্তেজনার আঁচ পোয়াতে পোয়াতে কিছুটা অলস সময় কাটাতে পারেন সেই উদ্দেশ্যেই এই ধরনের গল্প লেখা হয়। স্বাভাবিকভাবেই এই ধরনের লেখার সাহিত্যমূল্য, আদৌ যদি থাকে, যৎসামান্য। সাহিত্যপ্রেমী পাঠক স্পাই থ্রিলারকে ধর্তব্যের মধ্যেই আনেন না। বা বলা ভালো, আনতেন না। স্পাই থ্রিলারকে অবজ্ঞার অন্ধকার থেকে সাহিত্যের জগতে মর্যাদার আসনে বসানোর পেছনে যে কয়েকজন লেখকের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তাঁদের মধ্যে একদম সামনের সারিতে ছিলেন সদ্যপ্রয়াত জন লে ক্যারে, যাঁর আসল নাম ডেভিড জন মূর কর্নওয়েল। গুপ্তচর এবং তাঁদের জীবন নিয়ে এমন লেখা যে লেখা যায় যা একইসঙ্গে শ্রেষ্ঠতম মানের থ্রিলার এবং উচ্চমানের সাহিত্য, তা দেখানোয় জন লে ক্যারের দক্ষতা এবং সাফল্য অতুলনীয়।
“হাউ টু রাইট এ থ্রিলার” নামে ১৯৬৩ সালের মে মাসে প্রকাশিত এক ছোটো প্রবন্ধে ইয়ান ফ্লেমিং সোজাসুজি লিখেছিলেন, যদিও থ্রিলার উচ্চমানের সাহিত্য নয় কিন্তু সাহিত্যগুণসম্পন্ন থ্রিলার লেখা খুবই সম্ভব। সেই লেখায় পাঁচ জন বিখ্যাত লেখকের নাম করেছিলেন যাঁরা, ফ্লেমিংয়ের ভাষায়, “থ্রিলার ডিজাইনড টু বি রেড অ্যাজ লিটারেচর” ঘরানার লেখায় সিদ্ধহস্ত--এডগার অ্যালান পো, ডেশিয়েল হ্যামেট, রেমন্ড শ্যান্ডলার, এরিক অ্যাম্বলার, এবং গ্রেহাম গ্রীন। প্রথম তিন জন আমেরিকান, শেষের দুজন ব্রিটিশ। এর মধ্যে একমাত্র গ্রেহাম গ্রীনই সরাসরি গুপ্তচরদের নিয়ে লিখতেন কিন্তু তিনি নিজেই সেই লেখাগুলোকে “নভেল” না বলে বলতেন “এন্টারটেনমেন্ট”। সেই সব বইয়ের প্রচ্ছদে বইয়ের নামের নিচে লেখা থাকত “অ্যান এন্টারটেনমেন্ট বাই গ্রেহাম গ্রীন”। এরিক অ্যাম্বলারের কিছু লেখায় গুপ্তচর এবং তাদের কাজ আর জীবন আছে, সব লেখায় নয়।
এইরকম পরিস্থিতির মধ্যে লেখক হিসেবে জন লে ক্যারের আত্মপ্রকাশ। তবে জন লে ক্যারের আবির্ভাব আকস্মিক নয়। তার আগে একটা সলতে পাকানোর পর্ব ছিল। লে ক্যারের প্রথম বই “কল ফর দ্য ডেড” প্রকাশিত হয় ১৯৬১ সালে। সেই সময় তিনি ব্রিটিশ গুপ্তচর সংস্থায় একজন অফিসার হিসেবে কাজ করতেন। স্পাইদের নিয়ে লেখা এই বই স্বাভাবিকভাবেই তিনি নিজের নামে প্রকাশ করতে পারেননি। ছদ্মনামের সাহায্য নিতে হয়, আর সেই ছদ্মনামেই তিনি পরে কিংবদন্তি হয়ে ওঠেন। প্রথম বই সাফল্য পেলেও তা যুগান্তকারী হয়ে উঠতে পারেনি। এই বইতেই লে ক্যারে নিয়ে আসেন তাঁর জগদ্বিখ্যাত চরিত্র জর্জ স্মাইলি এবং স্মাইলির বিশ্বস্ত সহকর্মী পিটার গাইলিয়মকে। পরের বছর অর্থাৎ ১৯৬২তে বেরোয় দ্বিতীয় বই “এ মার্ডার অফ কোয়ালিটি”। এতেও মূল ভূমিকায় জর্জ স্মাইলি। এই দুটো বইতেই স্পাই এবং তাদের জগৎ থাকলেও বইদুটো মূলত হত্যাকাণ্ডের তদন্ত। ১৯৬২তেই বেরোয় স্পাই সাহিত্যের আর এক কিংবদন্তি লেখক লেন ডেইটনের “দ্য ইপক্রেস ফাইল”। একেবারে অন্যরকমের এই বই হইচই ফেলে দেয় স্পাই সাহিত্যের জগতে। তার পরের বছর ১৯৬৩তে বেরোয় জন লে ক্যারের “দ্য স্পাই হু কেম ইন ফ্রম দ্য কোল্ড”। এবারে প্রায় বিস্ফোরণ ঘটে গেল স্পাই সাহিত্যের জগতে। গ্রেহাম গ্রীন এই বইকে বললেন, “দ্য বেস্ট স্পাই স্টোরি আই হ্যাভ এভার রেড”। উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করলেন অন্যান্য সমালোচকরা। এই বইতে জর্জ স্মাইলি থাকলেও দেখা দেন মাত্র দু-তিনবার। ঠান্ডাযুদ্ধের পটভূমিকায় লেখা ঠাসবুনোট এবং সর্পিল গতির এই কাহিনীর নায়ক অ্যালেক লীমাস। মধ্য-যৌবনের কাছাকাছি বয়সের লীমাস একজন সাধারণ মধ্যবিত্ত সরকারি চাকুরে। সেই সরকারি সংস্থা যেখানে লীমাস কাজ করে সেটা ব্রিটিশ গুপ্তচর সংস্থা। এই প্রথম সাহিত্যের জগতে এল এমন একজন নায়ক যে পেশাদার গুপ্তচর হয়েও সব দিক থেকে একজন সাধারণ, একলা মানুষ যার ঠান্ডা লেগে জ্বর হয়। কমিউনিস্টদের প্রতি সহানুভূতিশীল তরুণী লিজ গোল্ডের ভালোবাসার তীব্র আকর্ষণে যার পেশাদার জীবন এবং ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। বই শেষ হয় এক বিষণ্ণ ক্লাইমাক্সে। স্পাই এবং স্পাইদের জগৎ নিয়ে লেখা হলেও এই বইতে অ্যাকশন যৎসামান্য, যৌনতার নামগন্ধ নেই। সেরা উপন্যাসের বিভাগে এডগার পুরস্কার, যাকে বলা যায় ক্রাইম সাহিত্যের অস্কার, পায় এই বই। রাতারাতি খ্যাতির শিখরে পৌঁছে যান লে ক্যারে। দুবছর পরে এই বই নিয়ে সিনেমা বেরোল। অ্যালেক লীমাসের ভূমিকায় অভিনয় করলেন রিচার্ড বার্টন। বইয়ের মতোই সিনেমাও সাধারণ মানুষ এবং বিদগ্ধ সমালোচকদের অকুন্ঠ প্রশংসা পেল।
ব্রিটেনের ক্রাইম রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশন প্রতি বছর সেরা ক্রাইম উপন্যাসকে দেয় গোল্ড ড্যাগার পুরস্কার যার কৌলিন্য, অনেকের মতে, এডগার পুরস্কারের চেয়ে বেশি। ২০০৫ সালে সংস্থার ৫০ বছর উদযাপনের অংশ হিসেবে সমস্ত গোল্ড ড্যাগার জয়ী বইগুলোর মধ্যে একটা বইকে বেছে নেওয়া হয় বিশেষ “ড্যাগার অফ ড্যাগার্স” পুরস্কারের জন্য। সেই খেতাব অর্জন করে “দ্য স্পাই হু কেম ইন ফ্রম দ্য কোল্ড”, যা এখন পেঙ্গুইন প্রকাশনার মডার্ন ক্লাসিকস-এর অন্তর্গত। টাইম ম্যাগাজিনের সর্বকালের সেরা ১০০ উপন্যাসের তালিকাতেও সগর্ব উপস্থিতি এই বইয়ের।
এর পরে বেরোয় “দ্য লুকিং গ্লাস ওয়র” এবং “এ স্মল টাউন ইন জার্মানি”। ভালো লেখা হলেও এই বই দুটো “দ্য স্পাই হু কেম ইন ফ্রম দ্য কোল্ড”-এর উচ্চতায় পৌঁছতে পারেনি। এই সময়ে ব্যক্তিগত জীবনেও সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন লে ক্যারে। ১৯৭১এ বের হল “দ্য নেইভ অ্যান্ড সেন্টিমেন্টাল লাভার”। অনেক পরে লেখা আত্মজীবনী বাদ দিলে, লে ক্যারের লেখা এটাই একমাত্র বই যা স্পাই সাহিত্যের জগতের বাইরে। লে ক্যারের ব্যক্তিগত জীবনের ছায়া আছে এই বইয়ের কাহিনীতে। সেই বছরেই প্রথমা স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা শুরু হয় লে ক্যারের।
“দ্য নেইভ অ্যান্ড সেন্টিমেন্টাল লাভার” বেরোনোর পরের তিন বছরে লে ক্যারের কোনো বই নেই। লে ক্যারে ফিরে এলেন ১৯৭৪এ, তাঁর বিশ্ববন্দিত কারলা-ট্রিলজীর প্রথম পর্ব “টিঙ্কার, টেইলর, সোলজার, স্পাই” নিয়ে, যা কিম ফিলবি কাণ্ডের ছায়ায় লেখা। জর্জ স্মাইলি এবং তাঁর দুরন্ত টিম--পিটার গাইলিয়ম, টোবি এস্টারহেস, এবং কনি স্যাকসকে নিয়ে লেখা এই বই আজও স্পাই উপন্যাসের জগতে উচ্চতম বিন্দু। এই বইতেই প্রথম স্বমহিমায় দেখা গেল প্রৌঢ়, নাতিদীর্ঘ উচ্চতা এবং ঈষৎ গোলগাল চেহারার, মোটা ফ্রেমের চশমা পরা জর্জ স্মাইলিকে। সারা বইতে গুলি চলে এক আধবার, পরকীয়া প্রেম কাহিনীতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও যৌনতার লেশমাত্র নেই অথচ শুধু থ্রিলার হিসেবেও এই বই সর্বোচ্চ মানের। সারা বইতে গুরুত্বপূর্ণ নারী চরিত্র মাত্র দুটি--জর্জ স্মাইলির সুন্দরী স্ত্রী অ্যান, বিশ্বাসঘাতকতা করা সত্ত্বেও স্মাইলি যাকে পাগলের মতো ভালোবাসেন। আর, কনি স্যাকস। অসাধারণ স্মৃতিশক্তির অধিকারিণী, বয়স্কা কনি-র দিনে দু-বোতল ভালো স্কচ চাইই চাই। ঠান্ডাযুদ্ধের চরম পর্যায়ে পেশাদার স্পাইদের একাকীত্ব, মানসিক যন্ত্রণা, বিশ্বাসঘাতকতা, গুপ্তচর সংস্থার কর্তাদের নিজেদের মধ্যে খেয়োখেয়ি, সরকারি আমলাদের সঙ্গে গুপ্তচরদের স্বার্থের সংঘাত, এবং এসবকে ছাপিয়ে কিছু মানুষের নাছোড়বান্দা মানসিকতা নিয়ে চালিয়ে যাওয়া ম্যানহান্টের নিপুণ বর্ণনায় এই বই আজও অদ্বিতীয়। এই বইতেই প্রথম উল্লেখ করা হয় কেজিবি-র প্রধান কারলার, যার সঙ্গে স্মাইলির দ্বৈরথ বহু পুরনো। পরের দুটো বই “দ্য অনারেবল স্কুলবয়” এবং “স্মাইলি’স পিপল”-এ স্মাইলি-কারলা সংঘাত এগিয়ে চলে। যদিও “দ্য অনারেবল স্কুলবয়”-এর প্রধান চরিত্র জেরি ওয়েস্টারবাই। স্মাইলি এবং কারলার সঙ্গে ভারতবর্ষের একটা সূক্ষ্ম যোগ আছে। ব্রিট্রিশ গুপ্তচর সংস্থার কাছে খবর পেয়ে, তাদের অনুরোধে দিল্লী পুলিশ গ্রেফতার করে কেজিবি-র উঠতি তারকা কারলাকে। তাকে জেরা করতে দিল্লী আসেন স্মাইলি। দিল্লীর জেলে-ই কারলার সঙ্গে স্মাইলির প্রথম সাক্ষাৎ হয়।
এরপর আসে “দ্য পারফেক্ট স্পাই”, যাতে লে ক্যারের নিজের জীবনের ছায়া খুব স্পষ্ট। অনেকের মতে লে ক্যারের সেরা সাহিত্যকীর্তি এই বই। নানা বিচিত্র অভিজ্ঞতা এবং ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে ম্যাগনাস পীম নামের এক অতি সাদামাটা ছেলের বড় হয়ে ওঠা এবং নিজেকে আবিষ্কার করার এই কাহিনী কখনো কখনো চার্লস ডিকেন্সের লেখার কথা মনে পড়ায়। তবে অসাধারণ সাহিত্যগুণসম্পন্ন, কিছুটা দীর্ঘ এই বই ঠিক টানটান থ্রিলার গোত্রের লেখা নয়।
এরপর লে ক্যারের লেখায় একটা মৌলিক পরিবর্তন আসে। ঠান্ডাযুদ্ধ থেকে বেরিয়ে মধ্যপ্রাচ্য-সঙ্কটের পটভূমিকায় লিখলেন “দ্য লিটল ড্রামার গার্ল”। এই সময় থেকেই লে ক্যারের ব্যক্তিগত রাজনৈতিক বক্তব্য সোচ্চার হয়ে ফুটে উঠতে থাকে তাঁর লেখায়। পরপর বেরোয় “দ্য রাশিয়া হাউস” এবং একটু অন্যরকমের লেখা “দ্য নাইট ম্যানেজার”। এর মধ্যে “দ্য সিক্রেট পিলগ্রিম”-এ ফের দেখা দিলেন জর্জ স্মাইলি।
এরপর বিশ্বরাজনীতিতে ঘটে গেল আমূল পালাবদল। ঠান্ডাযুদ্ধ শেষ হয়ে গেল। বার্লিন প্রাচীর ভেঙে দুই জার্মানী এক হয়ে গেল। দুই বার্লিনের মধ্যে যাতায়াতের সেই বিখ্যাত “চেক পয়েন্ট চার্লি”-র আর কোনো গুরুত্ব থাকল না। যে লে ক্যারে ঠান্ডাযুদ্ধের পটভূমিকায় লিখে গেছেন তাঁর বিখ্যাত বইগুলো তিনি এবার কী করবেন?
পরিস্থিতির মোকাবিলায় লে ক্যারে বেছে নিলেন বিভিন্ন ধরনের বিষয়। চেচেন-সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে লিখলেন “আওয়ার গেম”, আফ্রিকার দেশগুলিতে ওষুধ তৈরির বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর চূড়ান্ত নীতিহীনতা এবং সর্বগ্রাসী লোভের পটভূমিকায় লিখলেন “দ্য কনস্টান্ট গার্ডেনার”। এর আগে বেরিয়েছে স্পুফ ধরনের লেখা “দ্য টেইলর অফ পানামা”, যাতে গ্রেহাম গ্রীনের “আওয়ার ম্যান ইন হাভানা”-র প্রভাব সুস্পষ্ট। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের পটভূমিকায় লিখলেন “এ মোস্ট ওয়ান্টেড ম্যান”। বেরোল আরো কিছু বই। এই শেষের দিকের বইগুলোতে লে ক্যারের নিজের রাজনৈতিক মতামত খুব স্পষ্ট। আমেরিকার দাদাগিরি, অর্থের জোরে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে চাওয়ার প্রবণতার বিরুদ্ধে সমালোচনায় সোচ্চার লে ক্যারে। ২০১৬তে লিখলেন আত্মজীবনী “দ্য পিজিয়ন টানেল- স্টোরিস ফ্রম মাই লাইফ”। পরের বছর বেরোল “এ লেগেসি অফ স্পাইস”, যাতে শেষবারের মতো দেখা দিলেন জর্জ স্মাইলি। পিটার গাইলিয়মের জবানীতে লেখা এই বইতে “দ্য স্পাই হু কেম ইন ফ্রম দ্য কোল্ড”-এর কাহিনীর আগের ও পরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সামনে আনলেন লে ক্যারে। এই বই লে ক্যারে লিখেছিলেন, তাঁর নিজের ভাষায়, “টু মেক এ কেস ফর ইউরোপ”। ব্রেক্সিটের ঘোর বিরোধী ছিলেন লে ক্যারে। ২০১৯এ বেরোয় তাঁর শেষ বই “এজেন্ট রানিং ইন দ্য ফীল্ড”। এই বইতে তীব্র ক্ষোভে ব্রেক্সিটকে বললেন, “অ্যাক্ট অফ সেলফ-ইমোলেশন”। তুলোধোনা করলেন ট্রাম্পকে (“পুতিন’স শিটহাউস ক্লীনার”)। জীবিত অবস্থায় এটাই তাঁর শেষ প্রকাশিত বই।
স্পাই সাহিত্যের পৃথিবীতে জন লে ক্যারে ছিলেন এক মহাদেশ। সাহিত্যের জগতে তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন প্রাণবন্ত সব চরিত্র সৃষ্টি, একটু উচ্চমার্গের অভিজাত ভাষা (বিষোদ্গারের অংশ বাদ দিলে), অসাধারণ সব মুহূর্ত তৈরি, এবং গুপ্তচরদের পেশাদারি ও ব্যক্তিগত জীবনের সঙ্কট, হতাশা, তাদের কর্মপদ্ধতি এবং সাফল্যের নিপুণ বিবরণের জন্য। তাঁর সৃষ্টির প্রভাব এতটাই যে, শোনা যায়, তাঁর তৈরি করা কিছু শব্দ যেমন “ল্যাম্পলাইটিং”, “বার্নিং” এগুলো পরবর্তী সময়ে বাস্তবের গুপ্তচরেরাও ব্যবহার করতেন।