অন্ধকারের মধ্যে পায়চারী করা তার স্বভাব। তার লাঠির শব্দ অন্তরঙ্গ পেঁচাদের উত্যক্ত করে, শিরীষ গাছের বহু আকাঙ্খিত ঘুম ভাঙিয়ে, তবু সে পায়চারী করে। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। হাঁপিয়ে উঠলে কিছুক্ষণ বসে থাকে, জল খায়, চোখ বুজে এলে মশার কামড়ে তৎক্ষণাৎ উঠে পড়ে। জানালার পর্দা সরিয়ে তাকিয়ে থাকে আকাশের দিকে। নক্ষত্রে ভরে যাওয়া একটা আঁকার খাতা যেন, ক্রমাগত তুলির আঁচড়ে জন্ম নেয় নতুন জ্যোতিষ্ক। সে তার মুঠোয় পুরে নিতে চায় এই দৃশ্য, এত আলো, এত মুগ্ধতা! কিন্তু তার দু’টো পা কাজ করে না।
অতএব, চোখ সরিয়ে নিতে হয়, কতকটা বাধ্য হয়েই। নইলে পায়ের মতো এই চোখ দু’টোও নষ্ট হয়ে যেতে পারে এত আলোয়! ওই চায়ের দোকানের সবাই বলে না, ‘খোঁড়ার আবার আকাশকুসুম স্বপ্ন কীসের?’
রোজের মতো নিজের নিস্তেজ বিছানাটার দিকে পাশে চুপ করে বসে থাকে সে। এবার ধীরে ধীরে একাকীত্ব চেপে ধরবে তার মাথার দু’পাশ, যন্ত্রণায় ছিঁড়ে যেতে শুরু করবে তার শিরা, ধমনী, রক্তের দুর্বোধ্য জালক। অন্ধকার, আরো, আরো কাছে এগিয়ে আসে। হাতছানি দেয়। তাই, তৎক্ষণাৎ আবার লাঠি হাতে পায়চারী। ঠক, ঠক, ঠক...সে জীবিত।
ভোরের দিকে চোখটা একটু লেগে এসেছিল। ঠান্ডা হাওয়া অহেতুক খোঁচা মারছিল অপারগ মনে। নষ্ট হয়ে যাওয়া দু’টো পায়ের আঙুলে অহেতুক জাগিয়ে তুলেছিল পায়রা হওয়ার সাধ। আচমকাই ঘুমটা ভেঙে যায় বরুণের।
‘আমার হাতটা একটু ধরুন না, কেউ শুনছেন? ঐ বেঞ্চটা অবধি এগিয়ে দিলেই হবে, আমার হাতটা একটু ধরুন না কেউ, কেউ আছেন, কেউ...’ চিৎকার করতে করতে উঠে পড়ে বরুণ, পাগলের মতো আঁকড়ে ধরতে চায় কাউকে। সামনে তখনো অস্পষ্ট অন্ধকার। তারপর হুমড়ি খেয়ে পড়ে যায় মাটিতেই। শক্ত হয়ে দাঁড়াতে পারে না। দু’চোখ ছাপিয়ে কান্না উপচে পড়ছে বরুণের। নিজের পায়ের দিকে তাকিয়েই থুতু ছিটিয়ে দেয় মেঝের ওপরে।
এতক্ষণে আলো ফুটে গেছে। এতক্ষণে প্রত্যেকটা বাড়ির উঠোনে ঝাঁট পড়ে গেছে। ঘুম চোখেই পড়া শুরু করে দিয়েছে পাশের বাড়ির ছেলেটা। চোখের পিচুটি কাটেনি, খালি ঢুলে ঢুলে পড়ছে আর বলছে, ‘এক দশ এক এগারো, এক দশ দুই বারো।’ বরুণও এতক্ষণে বেরিয়ে পড়েছে। মোটা একটা লাঠির ওপর ভর দিয়ে, আস্তে আস্তে পৌঁছে যাবে স্টেশানে।
সে বেলুন বিক্রি করে। সাথে প্লাস্টিকের খেলনা, বাংলা আর ইংরাজী বর্ণমালার বই, নামতার বই, মেয়েদের ক্লিপ, দুল ইত্যাদি ইত্যাদি। লাল, নীল রঙের বেলুনগুলো অনেকটা উঁচুতে বাঁধা থাকে। মনে হয় তাদের কাঁধে ভর দিয়ে অনায়াসে উড়ে যাওয়া যায় রূপকথার দেশে। তখন এই ঘেন্না, দুঃখ, হতাশা সব ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায় জীবনের আঁকার খাতা থেকে। কেবল সে, আর হাওয়ায় উড়তে থাকা একটা লাল বেলুন। অনেক দিনের জমে থাকা গল্প, না বলা গল্প। মনে হয়, অযথা এ বাঁধন! বরং তাদের উড়িয়ে দিলেই ভালোবাসার ইচ্ছে জন্মায়, উড়তে উড়তে একদিন ঠিক ফিরে আসবে বরুণের ঘরে। তার ভাঙা পা দু’টোর পাশে বসে বলে যাবে মহাকাশের কথা। কিংবা বরুণের ঘুমের পাশে চুপটি করে শুয়ে থেকে, কানে কানে বলবে, ‘ম্যাজিক!’
স্টেশানে পৌঁছে প্রতিদিনের মতো রাজুর দোকান থেকে বরুণ এক কাপ চা খেল। খবরের কাগজ উলটে পালটে উঠে পড়ল যুদ্ধের জন্যে। মারাত্মক ভিড় হবে ট্রেনে। প্রচুর মানুষ নামবে। প্রচুর মানুষ উঠবে। রোজগারের আদর্শ সময় এটাই। বরুণ তাই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে টিকিট কাউন্টারের দিকে হাঁটতে থাকে। একটা কোণায় বসে, বেলুন ফোলায়। প্রচুর বেলুন ফোলায়। লাল, নীল, হলুদ, সবুজ অনেক অনেক। তারপর যখন হাঁপিয়ে যায়, জল খায়, কচুরির দোকানের পটলার সাথে খানিক গল্প করে।
পটলার মায়ের শরীরটা খারাপ। কাশির সাথে ক্রমাগত রক্ত বেরোয়। ডাক্তার দেখানোর কথা মনে পড়ে বটে, কিন্তু ওষুধ কেনার টাকা কই? পটলার একার ওপর নির্ভর করে থাকে তার গোটা বাড়িটা। বরুণ একদিন বলেছিল, ‘তুলসী আর বাসক পাতা ফুটিয়ে খেতে বল মাকে। দেখবি কাশি অনেকটা কমে যাবে।’ পটলার মুখটা আজকে অনেকটা খুশি খুশি। সে বলল, ‘তোমার টোটকা কাজ করে গেছে। তুমি তো গুরু ভগবান।’ ভগবান? সত্যিই সে ভগবান! তাহলে বরুণ হাঁটতে পারে না কেন? প্রতিদিনের দুঃখ ঘুচিয়ে দেয় না কেন কেউ? চায়ের দোকানে বেশিক্ষণ বসে থাকলে সবাই বলে কেন, ‘খোঁড়াটা এখনো যায়নি?...’ বরুণের ইচ্ছে করে পালিয়ে যেতে। ইচ্ছে করে তার পাড়া, তার ভিটে, তার মায়ের ছেঁড়া শাড়ি, বাবার লাগানো জামরুল গাছ ছেড়ে অনেক দূরে চলে যেতে। ঐ লাল বেলুনটার মতো করে যদি সত্যি উড়ে যেতে পারত!
ট্রেনের হুইসেলের সাথে সাথেই স্টেশানে ভিড়ের বাড়াবাড়ি শুরু হয়ে যায়। সবাই ছুটছে। কেউ থামতে শেখেনি। দু’দণ্ড জিরিয়ে নেওয়ার সময় কারোর হাতে নেই। বরুণ স্টেশানের বেঞ্চিতে বসে বসেই চেঁচায়, উঠে দাঁড়াতে পারলে সুবিধে হত বেশি। মানুষের কাছে যাওয়া যেত আরো বেশি করে। যোগাযোগ তৈরি হত, বিক্রি হত বেশি। কোনদিন গলাটাও যদি বেঁকে বসে, তাহলে? আঁতকে ওঠে বরুণ, এটাই তার একমাত্র সম্বল।
পারফিউমের গন্ধ, মুখরোচক চানাচুরকে টেক্কা দেওয়া খবরের কাগজ, হেডফোনের জট, ওভারব্রিজে ওঠার সময়, ‘ঘুম এখনো কাটেনি মনে হচ্ছে দাদা। বাসটা মিস করলে আপনি সামাল দেবেন তো?’
বরুণ তখন ব্যস্ত ছিল চুলের ক্লিপের দরদামে। আরো কয়েকজন ভিড় জমিয়েছে তাকে ঘিরে। ‘এই রঙ ছাড়া অন্য কিছু নেই? মানে একটু ব্রাইট?’, ‘আরে কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকব, ঐ বেলুনটা দিন তো, এই যে পাঁচ টাকা’, ‘আপনাকে বললাম না এই দুলটার ঐ জায়গাটা কেমন ভাঙা ভাঙা, অন্য একটা দেখান, সেম ডিজাইন চাই কিন্তু’, আরো অনেক কথার ভিড়ে একটা আর্তনাদ এড়িয়ে যায় বরুণ।
বয়স খুব বেশি হলে দশ-বারো, ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে পা পিছলে গেছে ছেলেটার। পুরো কামরার ভিড়টা ওর পা মাড়িয়েই চলে গেছে। একবারের জন্যেও কেউ থেমে যায়নি। আসলে সবাই ছুটছে। সবার লক্ষ্য একটাই, ছুটতে হবে। কক্ষনো থেমে থাকা যাবে না। প্রয়োজনে পাশের মানুষের হাত ছেড়ে দিয়েই দৌড়তে হবে। একা, একা! একবার হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলেই — শেষ! গোটা পৃথিবী মাড়িয়ে মাড়িয়ে শেষ করে দেবে, দুটো পা, একটা মানুষ, একটা মন। ফুরিয়ে যাবে বেঁচে থাকার নেশা, তখন শুধু শূন্য। চিরস্থায়ী অমাবস্যা।
বছর দশেক আগে, বরুণকেও এমন ভাবে ভিড়ে ঠেলে দিয়েছিলেন তার বাবা। কয়েকবার ধাক্কা না খেলে এ সমাজে চলাফেরা করা ভীষণ মুশকিল যে। হয়তো ভেবেছিলেন, সামলে নেবে। আসলে উপায় ছিল না। মা মরা ছেলেটাকে নিজের মতো করে বেঁচে নিতে বলেছিলেন জীবনটাকে। তারপর সেই ভিড়ের মধ্যে উধাও হয়ে যাবেন। বরুণ জানতেও পারবে না।
বয়স অল্প হলেও চেয়েছিলেন ছেলেটা এখন থেকেই খুঁটে খেতে শিখুক, নিজের পায়ে হাঁটতে জানুক। মাস্টারির টাকায় দু’টো পেট চালানো হয়তো সহজ হতো, কিন্তু এ ছেলে যে তার নিজের মাকে মেরে জন্মেছে। দিনদিন চোখের সামনে একটা শয়তানকে বেড়ে উঠতে দেখে ক্ষেপে উঠছিলেন বরুণের বাবা। ঘুমের মধ্যে মেরে ফেললে কষ্ট কমে যেত। নতুন করে সমস্তটা শুরু করা যেত হয়তো। কিন্তু বরুণের জন্যেই আটকে ছিল জীবন। আটকে ছিল তার বাবা। শেষ করতে চেয়েই শুরু করতে পারেননি কিচ্ছু। শেষের পরে কী হয়, তারই অপেক্ষায় ছিলেন। সুতরাং, বেঁচে ছিলেন।
তাই বরুণ হাঁটতে পারে না। জন্মের দোষ তো বরুণের নয়! হয়তো সত্যিই দোষ ছিল তাই আজ সে খুঁড়িয়ে হাঁটে। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়েই সেদিন বাড়ি পৌঁছেছিল সে। বাবা চিৎকার করে বলেছিলেন, ‘তুই মরে গেলি না কেন?’
বরুণের সামনে থেকে ভিড় অনেকটা কমে গেছে। ঘেমে স্নান করে যাওয়ার মুহূর্তে বরুণের চোখে পড়ে সেই ছেলেটাকে। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে, সামান্য জলটুকুও কেউ মুখের সামনে ধরেনি। একটু আগে পটলা কি বেশ যেন বলছিল!
ভয়াবহ ঝড় ওঠে বরুণের সারা শরীরে। থরথর করে কাঁপতে থাকা বরুণের চোখের সামনে ফুটে ওঠে তার ছোটবেলা। একটা বিদঘুটে অতীত। অকর্মণ্যতার বেড়া টপকে সে ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করে বছর বারোর ছেলেটার দিকে। পারে না, হোঁচট খায়, হুমড়ি খেয়ে পড়ে যেতে যেতেও নিজেকে সামলে নিয়ে ছেলেটাকে বুকের মধ্যে জাপটে ধরে। চুমু খায়। মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। কোনোকালে বরুণকে এতটা উতলা হতে দেখেনি কেউ। জীবনের প্রতি তার যে ঘেন্না, সেটা যেন ক্রমে ক্রমে মুছে যেতে শুরু করে। অনেকদিন পরে বরুণ হাসছে। বরুণ কাঁদছে। যা খুশি তাই করছে। প্ল্যাটফর্মের অন্যান্য মানুষেরা সাহায্য করতে এলে বরুণ তৎক্ষণাৎ মানা করে দিয়ে বলল, ‘আমি পারব। আমি পারি।’
যে পায়ে চোট লেগেছে, সেই পা বাঁচিয়ে, অন্য পায়ের ওপর ভর দিয়ে কোনোরকমে ছেলেটা এসে বসে স্টেশানের বেঞ্চিতে। কাঁদতে কাঁদতে এক সময় দমবন্ধ হয়ে আসে ছেলেটার, তবু কান্না থামে না। বরুণের চোখে এক ফোঁটাও জল নেই। বরং এগিয়ে দেয় একটা রুমাল।
বরুণের এখন অনেক কাজ। পশরা গুটিয়ে নিয়ে পাশে বসে ছেলেটার। পটলার দোকান থেকে কচুরি কেনে, জল ভরে আনে স্টেশানের কল থেকে। মুগ্ধ হয়ে দেখে, বরুণের ছোটবেলা। সেদিন এমন করেই কেঁদেছিল নাকি বরুণ? কেউ এসেছিল তাকে তুলে ধরতে? মনে পড়ে না। ধুশ শালা, ওসব মনে করতে নেই। পায়ের যন্ত্রণা আরো বেড়ে যায়।
এই তো সেই অবলম্বন। যার জন্যে অনায়াসে ছুটে যাওয়া যায় ভিড়ের মধ্যে, চিনে নেওয়া যায় ফর্সা হাত, ডিঙোনো যায় আদিম পাহাড়। পড়বে, পিছিয়েও পড়বে হয়তো, কিন্তু এই ছেলেটার হাত ধরে দৌড়নোর সাহস এ দুনিয়ায় আর কার আছে? তাই এবার থেকে বরুণ চেঁচিয়ে বলতে পারবে, ‘লাল বেলুনের দাম বেড়ে গেছে। বেলুন এখন দশ টাকা, দশ টাকা।’
তারপর ভিড় ফিকে হয়ে আসে ধীরে ধীরে। যে ক’টা মানুষ বরুণের পাশে বসেছিল, তারাও একে একে উঠে যায়। হয়তো তাদের চলার পথে কোনো বাধা নেই, চড়াই নেই, উৎরাই নেই, জীবনটা কেমন বেরঙিন। বরুণের ভীষণ হাসি পায়। তার জীবনটা অনেক বেশি সংগ্রামের, তার জীবনটা অনেক বেশি ধাক্কার। সার্থক এ জন্ম! কয়েকটা মাছি উড়ে এসে বসে বরুণের কাঁধে। বরুণ বলে, ‘চল, একটা লাঠির জোগাড় করতে হবে।’
প্ল্যাটফর্মের কোণায় উঁকি মারছে অবেলার আলো। রোদের তেজ আজকে একটু বেশিই। এক হাতে বেলুনের পশরা আর অন্য হাতে অপরিচিত হাতের স্পর্শ সমেত বরুণ নেমে আসে। ছেলেটার আসলে খিদে পেয়েছিল। জীবনে প্রথমবারের জন্য বরুণ বুঝতে পেরেছে মানুষকে। বুঝতে শিখছে মানুষের অনুভূতি। ছেলেটার বোধহয় আর ভয় করছে না। বরুণের মতো সেও একা। একজন অচেনা বেলুনওয়ালার হাত ধরে হাঁটতে তার ভালোই লাগছে। ফুরফুরে হাওয়ায় শুকিয়ে গেছে তার কান্না, তার ক্লান্তি, তার ভয়। বেশ মজাই হবে, প্রতিদিন বেলুন হাতে উড়ে বেড়ানো যাবে।
হাওয়ায় মনের আনন্দে উড়ছে লাল, নীল বেলুন। ‘কাকু, কাকু, ওগুলো নেবো’, ছেলেটা বলে। বরুণ একটা একটা করে বেলুন খুলে আনে লাঠির ডগা থেকে, আর ছেলেটা প্রত্যেকটা বেলুনের ওপর চোখ বন্ধ করে মনে মনে কি যেন বিড়বিড় করে, তারপর হাওয়ায় ভাসিয়ে দেয়। একটা একটা করে বেলুন উড়ছে আকাশে, খুশির খবর ছড়িয়ে পড়ছে পুব থেকে পশ্চিমে। লাল, নীল, হলুদ, সবুজের মায়ায় ভরে উঠছে আকাশ। বরুণ ভ্যাবলার মতো তাকিয়ে থাকে ছেলেটার চোখের দিকে। উজ্জ্বল একটা রামধনুর বাসা।
স্টেশানে ট্রেন এসেছে। আবার আসবেও। সবাই ছুটবে। কেউ থেমে থাকবে না। কেউ দেখতে পাবে না বরুণকে। কারণ ততক্ষণে বরুণ জিতে গেছে। কারণ ততক্ষণে এই দুনিয়া অবাক চোখে দেখবে, পৃথিবীর বুকে, কলার তুলে হেঁটে যাচ্ছে সেই ধাক্কা খাওয়া ছেলেটা আর একটা খোঁড়া বেলুনওয়ালা...