সাঁওতালদের মধ্যে অনেকে শ’তিনেক বছর আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে, ঠিক যেমন অনেকে তার পরে খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষা নেয়। সংখ্যায় যদিও এরা খুব বেশি নয়, অন্ততঃ আমাদের সাঁওতাল পরগনার দিকে, তাও এদের অবস্থা একটু ভালো। নবাবী আমলে বোধ হয় এরা কিছু জায়গা জিরেত পেয়েছিলো। এদের বলা হতো তুরুক - হয়তো তুর্কী কথাটা থেকে। আমি নিজে খুব বেশি দেখিনি, তবে এরকম একজনের সঙ্গে আলাপ ছিল এককালে। তারও কথা আজকে লিখবো।
সুকান্ত-সলিল-হেমন্ত-র বিখ্যাত গান “রানার” কে না শুনেছেন? যতদূর জানি এই রানার প্রথা চল্লিশের দশকে উঠে যায়। বোধ হয় সাইকেল-টাইকেল চালু হয়ে যায়। অফিশিয়ালি রানার আমি দেখিনি - তাই কি?
“ডাক” সিরিজের যে ডাকটিকিটগুলি ছিল ইংরেজ আমলের, সেগুলিতে ছবি ছিল রানার, গরুর গাড়ি, টাঙ্গা, বাস, উট, জাহাজ, ট্রেন, উড়োজাহাজ - যদ্দুর মনে পড়ছে। ঘোড়া ছিল কিনা মনে পড়ছে না, যদিও বহুকাল আগে শুনেছি শের শাহ ঘোড়ার ডাকের প্রচলন করেছিলেন, আর তার আগে ঘোড়ারা নাকি ডাকতো না। দু’আনার কমলা রঙের টিকিট-টি বোধ হয় রানার-এর ছবি দেওয়া। তাতে দেখা যেত একজন পাগড়ী পরা লোক। তার ঘাড়ে একটা ঝোলা, হাতে বল্লম, বল্লমে ঝুমঝুমি, পায়ে ঘুঙুর। সে দৌড়োচ্ছে।
পরে ২০০৪ সালে আবার ওই টাইপের টিকিট বেরোয় - বলা বাহুল্য অনেক বাজে ছবি দিয়ে।
আমি যাদের দেখেছি তাদের কাঁধে থাকতো একটা বর্শা, সেটার মাথা থেকে একটা নোংরা মতন পুঁটলি ঝুলতো, সেই সঙ্গে ঝুলতো একটা ছোট হ্যারিকেন লণ্ঠন আর একটা মন্দিরের দরজায় যেরকম থাকে তার থেকে একটু ছোট একটা ঘন্টা। পায়ে ঘুঙুর পরতে আমি তাদের দেখি নি। তাদের কাছে টাকা পয়সা থাকতো বটে কিন্তু ডাকাতির কোনো ভয় ছিল না। কারণ শুনেছি খুব সহজ, ইংরেজ আমলে রানার-এর ওপর ডাকাতি করে ধরা পড়লে থানা অবধি যাওয়ার সৌভাগ্য হতো না ডাকাতদের। সেরকম-ই হুকুম নাকি ছিল পুলিশের ওপর। মাঠ, ঘাট, খাল, বিল, মেঠো রাস্তা, পাকা রাস্তা, কাঁচা রাস্তা, এমন কি কাঁচামিঠে রাস্তা দিয়ে রানার-রা ছুটতো ডাক, পোস্টমাস্টার-এর বন্ধুর শাশুড়ির তৈরি মোয়া ইত্যাদি নিয়ে।
ওই নোংরা ক্যাম্বিসের পুঁটলিটায় থাকতো ডাক। প্লাস রুটি, আচার, পেয়াঁজ। বাংলাদেশ হলে চিঁড়ে। রাত্তিরের প্রয়োজনে লণ্ঠনটি, যেটি প্রায়-ই থাকতো না। আর বাঘ ছাড়া অন্য সব জন্তু আর চোর-ডাকাতদের সাবধান করে দেওয়ার জন্য ওই টুং-টুং ঘন্টাটি। বাঘে প্রায়ই রানার খেতো। আবার বাঘে-রানারে লড়াই-এর গল্পও শোনা যেত। বাঘ-সংকুল এলাকাতে না কি তাই ঘন্টাটি বেঁধেছেঁদে সাইলেন্ট করে নেওয়া হতো। অনেকটা সেই পঙ্কজ মল্লিকের “পিয়া মিলন কো যানা”-র মতো আর কি! অবিশ্যি ওসব বাঘ-টাঘের গল্প বহু আগের, আমি ওসব কিসুই দেখিনি।
রানার ব্যবস্থা সরকারিভাবে উঠে গিয়েছিলো বটে কিন্তু অনেক ভেতরের গ্রামের লোকেরা নিজেরা প্রাইভেট রানার লাগাতেন। আমার সময়ে আমাদের কাছাকাছি দুটি গ্রামের নিজস্ব রানার ছিল। দুজন লোক, একজন দেহাতী, মানে হিন্দু, আর অন্যজন ওই যে বলছিলাম, তুরুক। প্রথম জন আসতো পাথরোল গ্রামের ওপার থেকে, আর যে তুরুক সে আসতো লেড়োয়া বলে একটা গ্রাম থেকে ।
আমি ডাকঘরের গাছতলায় বসে নানা লোকের নানা রকম উপকার করতাম। চিঠিচাপাটি, মনি অর্ডার লিখে পড়ে দেওয়া ইত্যাদি। তা ওই রানার দুজন-ও মাঝে মাঝে আমার কাছে বসে পড়িয়ে নিতো কোন চিঠি কার, মনি অর্ডারে কোনো ভালো খবর আছে কিনা, এইসব ব্যাপার ।
তুরুকটির নাম ছিল আদিল। দেহাতি রানারটির আমি নাম ভুলে গেছি। পছন্দ মতন একটা ইনোভেটিভ নাম দেওয়া যাক - রামু, কেমন?
আদিল-এর ছিল সাইকেল। কিন্তু সেটা আমি কখনো দেখিনি। গুজব শুনেছি যে ও সেটা বিক্কিরি করে দিয়েছিলো। হতেও পারে - পয়সাকড়ির মুখ বেচারিরা বিশেষ দেখতে পেতো না তো। আবার অনেকে বলতো টায়ার বাঁচাবার জন্য ও নাকি সাইকেলটা চালাতোই না। যেমন আমি ভিজে যাওয়ার ভয়ে বৃষ্টিতে নতুন ছাতা নিয়ে বেরোতাম না।
যাক যা বলছিলাম। শীত নেই, গ্রীষ্ম নেই, ওরা দুজন সপ্তাহে অন্ততঃ চার পাঁচ দিন নিজেদের গ্রাম থেকে প্রায় কোনো কিছু না নিয়েই আসতো। কিন্তু শহর, মানে মধুপুর থেকে নানা জিনিস নিয়ে যেত, মানে ডাক ছাড়াও ছোটোখাটো জিনিস। মোমবাতি, সাবান, টর্চের ব্যাটারী, বাঙালি মিষ্টি। এইসব আর কি। প্রসঙ্গতঃ বলি, গ্রামের প্যাঁড়া সব সময়ে শহরের প্যাঁড়ার চেয়ে ভালো হতো।
আরেকটা লজ্জার কথা বলবো? আমি নিজে দেখেছি সেই যুগে গ্রামের খদ্দেরদের শহরের দোকানে পুরোনো মরা ব্যাটারী চালিয়ে দেওয়া হতো ভালো ব্যাটারীর সঙ্গে মিশিয়ে ।
একবার আদিলকে দেখেছিলাম একটা তালা নিয়ে এসে স্টেশন রোড-এ বুড়ো মুসলমান চাবিওলার কাছে বসে চাবি তৈরি করাতে। চাবিওলা টর্চও সারাতো; তার আবার ডাকনাম ছিল ঝমাঝম, সে যখন পাড়া বেপাড়ায় যেত ঐরকম আওয়াজ করতো, তাই; আমরা খেপাতাম “ঝমাআঝম, নমাজ কম” এই বলে। ঝমাঝমের আবার অন্য সব ফ্যাচাং ছিল - নিজের জন্তুকে নিজে কোরবানি দিলে তবেই সে মাংস খাবে, নইলে নয়। বলেছিলো ওদের ধর্মে নাকি ওইরকম বলা আছে। কে জানে বাবা। প্রায় নিরামিষাশী ছিল লোকটা। যাক, আমাদের আদিল একবার লেড়োয়ার দিক থেকে একটা জংলী মোরগ এনে ওকে এক টাকায় বেচে, ঝমাঝম পাক্কা আধ ঘন্টা ধরে ছুরি শানায়, তারপর দুজনে মিলে সেটাকে রেঁধে খায় ।
আরেকবার আদিলকে একটা ভালো খবর মনি অর্ডার থেকে পড়ে দিয়েছিলাম, তার জোরে ও প্রাপকের কাছ থেকে মোটা বকশিশ আদায় করে এবং কয়েকদিন পর আমাকে এক ভাঁড় ভালো দেহাতি ঘি উপহার দেয়।
আদিলের লেড়োয়া গ্রামে যাতায়াত ছিল আমাদের বাড়ির সামনে দিয়ে, কয়েকবার আমারই সাইকেলে আমাকেই ডবলক্যারি করে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে। রামুর রাস্তা ছিল লালগড় হয়ে, পাথরোল কালীবাড়ির পাশ দিয়ে। রামুর ছিল সত্যিকারের সব রোমহর্ষক গল্প - ও নাকি সারা বছর ভর দুপুরে কালীবাড়ির পাশ দিয়ে ছুটতে ছুটতে বলির মোষ আর বলির পাঁঠার ডাক শুনতে পেতো ইত্যাদি। ওই বাংলা গোলাপকালী (গুল-এ-বকাওয়ালি) গোছের, মনে হয়। তবে ওর একটা এডভেঞ্চার গল্প ছিল, সেটা বলি।
আপ মোগলসরাই প্যাসেঞ্জার দেরি করেছে একবার। ঘন্টা পাঁচেক। ছোট জায়গার ডাক ওই গাড়িটাই কলকাতার দিক থেকে নিয়ে আসতো। তা রামু তো হাতে ডাক পেয়েছে সেই বিকেলে। তাই বেরিয়েছে ও, যদিও রানারদের রাত্তিরে থাকার জন্যে চৌকি দাঁড় করানো থাকতো পোস্ট অফিসের পেছনের বারান্দায়। একাদশীর চড়া আলো ছিলো, দিব্যি যেতে যেতে রামু দেখে রাস্তায় দুটো কালো ফুটবল জোরে গড়িয়ে চলেছে। ও প্রথমেই ভেবেছে ভুতুড়ে কিছু বুঝি, একটু দূর দিয়ে ঘুরে যেতে গেছে। তখন দেখে দুটো ভাল্লুকের ছানা। যাঁরা বন জঙ্গল ঘুরেছেন তাঁরাই জানেন বাঘ-ভাল্লুকের ছানা কি ভয়াবহ জিনিস। শহরের লোকে যা দেখলে বলে “আহা কি সুঈট” তা আসলে ভীষণ ভয়ের - মা যদি কাছাকাছি থাকে? শয়তান-ঝাড়ে (ছাতিম গাছ রে বাবা, ছাতিম গাছ - বিহারের গ্রাম্য লোকের বিশ্বাস স্বয়ং শয়তান ওই গাছে বাস করে) উঠে বর্শা বাগিয়ে ছানাদের মাকে তাড়াতে হয় রামুকে। শেষ পর্যন্ত অবিশ্যি অক্ষত অবস্থায় বাড়ি ফেরে। তারপর থেকে রামু বর্শার সামনের দিকে একটা আড়াআড়ি কাঠ লাগিয়ে নেয়, যীশুখ্রীষ্টের ক্রসের মতো, তাতে নাকি ভালুক জাতীয় বুনো জানোয়ার আটকানো সহজ হয় ।
এই প্রসঙ্গে বলি, মাঝিদের (সাঁওতাল মাতব্বরদের আমরা মাঝি বলতাম) কাছে শুনেছিলাম যে বুনো মোষ বাঘকে তাড়া করে গুঁতিয়ে মারে, কিন্তু বাঘের বাচ্চা দেখলে পালায় - এতো ভয় ওরা মা বাঘিনীকে পায়।
নাঃ, ভেবে দেখলাম আদিলের আরেকটা গল্প বলেই ফেলি। একটু কাটছাঁট করেই বলছি, ওর বিয়ের গল্পটা।
আমাদের এদিক ওদিক যে-সব বনজঙ্গল ছিল তাতে কোথায় কি গাছ আছে তা আমাদের সকলেরই প্রায় জানা ছিল। পুব দিকের টাঁড় পেরিয়ে জঙ্গলের মধ্যে একটা জায়গায় একটা সজনে ডাঁটার বন ছিল। কাছেই ছিল ফলসা বলে আরেকটা ছোট্ট ফলের জঙ্গল। বড়ো আমলকি দেখেছেন? আপেলের থেকে একটু ছোট? তারও কয়েকটা গাছ ওখানে ছিল। সবই সরকারি জঙ্গল। প্রায়ই সোম আর শুক্রবারে ওখান থেকে ভালো জিনিস নিয়ে এসে সাঁওতাল আর মুন্ডা মেয়েরা আমাদের হাটে বেচতো। অনেক গ্রামের লোকেরা গাছে দাগ দিয়ে রাখতো - সেটা “তাদের” গাছ বলে। ওই জঙ্গলের থেকে মাংস খাওয়ার জন্য তিতির, গোসাপ, খরগোশও আসতো আমাদের হাটে। সব ভোঁতা তীরে শিকার করা। সাধারণ ছুঁচোলো তীরে শিকার করা সজারুও কোনো কোনো হাটে আসতো।
আমাদের আদিল কখনো কখনো ফেরার সময়ে একটু ঘুরে এটা সেটা তুলে বাড়ি নিয়ে যেতো। অবশ্য সোম শুক্রবার ছাড়া। কিছুটা ছায়াও পেতো নিশ্চয়। একদিন ভর দুপুরে দেখে ফলের জঙ্গলের মধ্যে একজন মাটিতে পড়ে আছে - মৃতপ্রায়। একটি মুন্ডা মেয়ে। আদিল সঙ্গের জলের ঝাপ্টা মেরে মেয়েটির জ্ঞান ফেরায়। মেয়েটি হাঁউমাঁউ শুরু করে দেয় ভয় পেয়ে। অতি কষ্টে আদিল ওকে বোঝায় যে ও একজন ডাক হরকরা, কোনো ক্ষতি ও মেয়েটির করবে না ।
জানতে পারা যায় যে মেয়েটিকে আগের দিন সন্ধেবেলা জঙ্গলে একলা পেয়ে ভিন গাঁয়ের অচেনা কিছু দুষ্টু লোক ধরে অত্যাচার করে। সকাল বেলা মারধোর করে ফেলে রেখে দিয়ে চলে যায়। হয়তো ভেবেছিলো মরে গেছে।
পরের দিন দারোগা সোলেমান বেগ এসে দাদুর কাছে অনেক উপদেশ-টুপদেশ নিয়ে চলে গেলেন।
মধুপুরে রেলের খালাসি মহল্লায়, ঈদগাহ আর কসাইখানার কাছে থাকতেন মৌলবী, কাজী এনারা। তাঁদের কাছে পরের দিন হাজির আদিল, সঙ্গে মেয়েটি। কলমা পড়ে মেয়েটি ইসলাম নেয় আর আদিলকে বিয়ে করে। কি রকম বিয়ে, শাদী না নিকে, তা জিজ্ঞেস করবেন না, বুঝি না!
আমি এসব শুনেছি বহু পরে। আদিলকে ধমকে জিজ্ঞেস করে দেখেছি, পাজিটা ফিক ফিক হাসতো!
আদিলের বৌকে দেখিনি। মুন্ডা তো। দেখতে শুনতে নিশ্চয় পরিষ্কার ।
আমরা তো রানার বলেই খালাস - কিন্তু মানুষগুলো কি রকম “রান” করতো? দেখেছি। সেই ছোট্ট গল্পটি বলে আজকের মতো আমিও থামবো।
মাষ্টারমশাই বাঙালি। তারবাবু-ও বাঙালি, এবং তরুণ, অনভিজ্ঞ। একটা উর্দু মেসেজ এলো একদিন। মর্স কোড তখন শুধু ইংরেজিতেই চলতো। দুজনে মিলে ধ্বস্তাধস্তি করে হাল ছেড়ে দিলেন - মানে যাকে বলে রোমান উর্দু তাই লিখে মাথা চুলকোনো শুরু করলেন। এদিকে সূর্য নামছে। দুজন রানার, সব পিওন, এমনকি তার-পিওন মোদো-মাতাল কার্তিক পর্যন্ত বেরিয়ে গেছে। আমি শিডিউল পাল্টে একেবারে অমৃতবাজারটা নিয়ে ফিরবো কিনা ভাবছি, মাস্টারমশাইয়ের মাথায় এলো - ওই বাবুয়াকে জিজ্ঞেস করা যাক। তা যাক, আমি তো ভালো করে দেখে বললাম কাল রামুকে দেবেন, পাথরোল-এর তার। তবে কার্তিকটা ফিরলে আজ পাঠালেই ভালো হয়। এখন কাৰ্তিক, যার গল্প আরেকদিন বলবো, সেদিন আর ফেরার কথা নয়। তার-বাবু আমাকে রিকোয়েস্ট করলেন, “বাবুয়া তোমার সাইকেলটা একটু দেবে, আমি এগিয়ে গিয়ে রামুটাকে ধরার চেষ্টা করি তাহলে?” আমি বললুম, “আপনি নতুন এসেছেন, রাস্তা চিনবেন না, আমি যাচ্ছি। আপনারা শুধু অমৃতবাজারটা দাদুকে পৌঁছে দিন আর দিদাকে বলে দেবেন যে আমি শিগগিরই আসছি।”
পাইলট কলম আর বাকি কয়েকটা কোরা পোস্ট কার্ড পকেটে গুঁজে আমি তো রামুর পেছনে ধাওয়া। হু হু করে লালগড়ের রাস্তা পেরিয়ে গেলো, সরকারি (রেল কোম্পানির) শাল জঙ্গল পাশ কাটিয়ে ঝড়ের মতো যাচ্ছি, কোথায় রামু? প্রায় পাথরোল পৌঁছে দেখি দূরে সামনে দুলকি চালে ছুটছে হতভাগা। রাস্তা নয়, কদো ঘাসের (যেটার বীজ গরীবে ভাত করে খায়) মাঠের ওপর দিয়ে। চেঁচিয়ে দাঁড় করিয়ে ওকে তার-টা বুঝিয়ে দিচ্ছি, হঠাৎ খেয়াল হলো জিগ্যেস করি তো --
“কোথা দিয়ে এলি তুই?”
“আরে রাজা তুমি তো রাস্তা দিয়ে আসছো, সাঁকো পেরিয়ে অত ঘুরে, আমাদের কি অত সময় থাকে গো? পাথর পাথর লাফিয়ে ওই ওদিকে নদী পেরিয়ে কখন চলে আসি আমি!”
“তোর গা তো শুকনো!”
“ছুটছি তো, তাই।”
“ডাক ভিজলে?”
“আরে বাবা, ক্যাম্বিস আছে না?”
জ্ঞানচক্ষু উন্মীলিত হলো!
আরো নানা ঘটনা এই প্রসঙ্গে মনে পড়ছে, কিন্তু ঠিক বলবার মতো নয়। আজ উঠি।
(পরের পাঁচালি)