রবিবার এলে আর সব্বার মত রাতুলেরও ভারি ভালো লাগে। ওইদিন রাতুল, সকালবেলা বাবার সাথে বাজার যায়। সারা সপ্তাহের তরিতরকারি, ফলমূল, পায়েসের জন্য একটু বেশি করে দুধ, আর বাড়ি ফেরার পথে নিতাই কাকুর দোকান থেকে গরম গরম কচুরি, আলুরদম, জিলিপি, রাবড়ি, এইসব কিনে বাড়ি ফেরে। মা—রও ওদিনটা স্কুল ছুটি থাকে, তাই ভোর ভোর স্নান সেরে মা পুজোয় বসেন, তারপর ওরা এলে সকালের জলখাবার, কাগজ পড়া, ঝুল ঝাড়া, বাগানের গাছে জল দেওয়া, সার ফেলা, মাটি কোপানো, আগাছা পরিষ্কার... এমনি করতে করতে বেলা গড়িয়ে যায়। রাতুল হোমটাস্ক করার ফাঁকে মাঝে মাঝে একবার রান্নাঘরে, আর এক আধবার বাগানে গিয়ে উঁকি দিয়ে আসে। মা আপনমনে রেডিও শুনতে শুনতে রান্না সারেন। দুধের সর, চালের সাদা ঝরঝরে ভাত, মুসুরির ডালের বড়া, নারকোল কিসমিস দেওয়া ছোলার ডাল, গোল গোল মুচমুচে আলু ভাজা, বেসনে চোবানো লম্বা লম্বা বেগুনী, পটলের দোরমা, আলু পোস্ত, কোনোকোনো দিন পুঁইশাক কুমড়ো দিয়ে চিংড়ি মাছ, কষা কষা, ঝাল ঝাল মাংস... সারা বাড়িটা মা’র রান্নার গন্ধে ম ম করতে থাকে রোববার...
রবিবারের দিনটা রাতুলের কাছে আরো একটা কারণে খুব প্রিয়। ওইদিন দুপুরবেলা ভালো—দাদু আসে। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা, এই নিয়মের নড়চড় হয় না। গায়ে হাফ ময়লা ফতুয়া, খেটো ধুতি, কাঁধে রং ওঠা ঝোলা, জং ধরা কুকুর তাড়ানোর ইয়াব্বড় আঁকশি, উস্কোখুস্কো জট—পড়া পাকা চুল, এক মুখ দাড়ি, পায়ে সেলাই করা টায়ারের চটি —— অল্প খ্যাপাটে, আধপাগলা গোছের এই মানুষটাকে রাতুল বড্ড ভালোবাসে। ভালো—দাদু রাতুলের জন্য মাঝেসাঝে তালপাতার সেপাই, ভাঁজ করা রঙচঙে হাতপাখা, তীর—ধনুক, কাগজের মুখোশ, লাট্টু, টমটম ... এইসব এনেদেয়। বাবা বারণ করেন, কিন্তু সে—কথা ভালো—দাদু কোনদিন শোনেনা! প্রত্যেক রবিবার বাড়ি এসে ভালো—দাদু বারান্দার ওই তিন ধাপ লাল সিমেন্টের সিঁড়িখানায় বসে অল্পক্ষণ ঝিমোয়... ঝিমভাব কেটে গেলে দাদু রাজা—রাণীর গল্প বলে, মেঘেদের দিকে তাকিয়ে কোন মেঘটা সিংহের মতো, কোনটা হাতির মতো, কোনটা বা হুবহু রাতুলের মত... সেই সব দেখায়, কখনো বা ইচ্ছে হলে দু’হাত আকাশের দিকে উঁচু করে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, চোখ পাকায়, বিড়বিড় করে ঝগড়া করে, কখনো আবার আপনমনে খোলা গলায় গান গায় ... রাতুল চুপটি করে পাশে দাঁড়িয়ে শোনে। ওইদিনটায় মা ভালো—দাদুর জন্য হাঁড়িতে এক মুঠো চাল বেশি নেন। বাবাকে খাবার বেড়ে মা একটা পিঁড়ি পেতে কানা—উঁচু থালায় চুড়ো করে ভাত দিয়ে ভালো—দাদুকে খেতে ডাকেন। মা বলেন, “তিনটে মানুষের সংসারে একবেলা আর একটা মানুষ চাট্টি ভাত খাবে, এ আর এমন কি!”
সেদিন জ্যৈষ্ঠ মাসের গুমোট গরম, চারদিকে লূ বইছে, এমন সময় ভালো—দাদু ধুঁকতে ধুঁকতে শেষ বেলায় এসে উপস্থিত হলেন।
— “মা জননী, এট্টু জল দেবে গা? তেষ্টায় ছাতিখান ফেটি যাচ্ছে।”
— “দাদু, তোমার আজ এত দেরি হল কেন গো? আমি সেই কখন থেকে তোমার জন্য অপেক্ষা করছি!” রাতুল মুখ ভার করে জিজ্ঞেস করল।
— “ও দাদুভাই... সে তোমার জন্যি একটা জিনিস আনতি গেসলাম গো, তাই তো দেরি হই গেল আসতি।”
— “কই? কি জিনিস? দেখতে পাচ্ছিনা তো? কোথায় রেখেছ? দেখাও?”
— “এইতো গো দাদু, এক্ষুনি দিস্সি। দাঁড়াও, দাঁড়াও... বের করি।” রাতুল ভালো-দাদুর পাশে গুছিয়ে বসল। ভালো-দাদু মা’র আনা মিছরির জল খেয়ে কবেকার রং ওঠা ঝোলা থেকে আরো একখানা ছোটো, এইটুকু পুঁটলি মতো বার করলেন।
— “এইটা কি গো দাদু?”
— “এইটে?... এইটে হোল গে বাজবরণ গাছ।”
দাঁড়াও, আগে এটারে একটা টবে দি, অনেকক্ষণ থিকে আলগা পড়ি আছে।” রাতুল অবাক হয়ে দেখল, চারকোনা গাঢ় সবুজ রঙের একটা এট্টুস কাঠির মতো গাছ, পাতা টাতা কিছু নেই, ধার গুলো দিয়ে দুটো-তিনটে করে খোঁচা খোঁচা কাঁটা কেমন গোছ করে বেরিয়ে এসেছে ---- রাতুল নাক মুখ কুঁচকে বলল, “এ আবার কেমন গাছ গো দাদু! ফুল নেই, পাতা নেই, বিচ্ছিরি!”
— ভালো-দাদু এক গাল হেসে বললেন, ও দাদু, অমন বোলোনি গো! এই গাছ যেমন তেমন গাছ নয়, এই গাছের বড় জোর, বড়গুণ। এ গাছ বাজ পড়লি আকাশের সাথে পেরানপণ যুদ্ধু করি তাকে হুউউই উপর থিকে টেনি এনি এই মাটিতে নামায় দিতি পারে! এই যে, এই খানডায় দেখতি পাচ্ছ, কেমন কাঁটা? এই কাঁটাগুলানই তো হল গে এর অস্তর। এই দিয়েই তো গাছখানা আকাশ থেকে বাজ টেনি মাটিতে নামায়। বাজের আওয়াজে তো তোমার খুব ভয়, তাই না দাদু? ... ওইজন্যি তো এইডারে তোমার কাছে নে এলাম। এ গাছখানা থাকলি, ঘরে কোনদিন বাজ পড়বেনি, বোঝছো? এই বলে ভালো-দাদু আকাশের দিকে চোখ পাকিয়ে এক হাত লম্বা ভেংচি কেটে কয়েক পাক নেচে নিল।
— “বাজ টেনে নামিয়ে আনতে পারে?” কথাটা মোটেই রাতুলের তেমন বিশ্বাস হচ্ছিল না। যাই হোক, টগর, বেল, জুঁই, লজ্জাবতী, রজনীগন্ধা, জবাফুলের টবের পাশে প্যাঁকাটিমতন ন্যাড়া-বোঁচা গাছখানা সেই থেকে বাড়িতে রয়ে গেল! দিন যায়, বাজবরণ গাছখানা একটু একটু করে বড় হতে থাকে। বাবা বলে ওটা ক্যাকটাস, শুকনো মাটিতে গজায়, জল লাগেনা বেশি, ভেঙ্গে গেলে সাদা আঠার মতো কষ বেরোয়, রাতুলের খুব অবাক লাগে।
গরমকালে রাতের বেলায়ও বেজায় কষ্ট। এক ফোঁটা হাওয়া নেই, ঘরের ভিতরে ভ্যাপসা গরম, সবকটা দরজা জানলা খুলে লাভ হয়না কিছু। পাখা চালিয়েও অস্বস্তি, ঘামে গায়ে জামা রাখা দায়। তা সেদিন রাতুল ওর তিন নম্বর স্নান সেরে টিভির সামনে এসে বসল যখন, তখন এক মুঠো ঠান্ডা হাওয়া কোত্থেকে জানি হঠাৎ করে গায়ে এসে পড়ল।
— “রাতুল, চটপট জানলাগুলো ভেজিয়ে দে বাবা, ঝড় উঠবে এক্ষুনি।” মা শোয়ার ঘর থেকে চেঁচিয়ে বলে উঠলেন। “সেকি, এই গরমে ঝড়?” তাড়াতাড়ি করে দরজা খুলে বারান্দায় ছুট্টে এসে রাতুল দেখে, সত্যি তো... চাঁদ তারা কিচ্ছুটি দেখা যাচ্ছে না, থেকে থেকে খালি মেঘের গর্জন, আকাশের বুক চিরে আঁকাবাঁকা বিদ্যুতের ঝলকানি। “আচ্ছা মা, ভালো-দাদুর দেওয়া সেই বাজবরণ গাছটা সত্যি সত্যি কেমন বাজ টানতে পারে, আজ দেখতে পাব, বল?”
— “তা’বলে তুমি একা একা বাইরে চলে যেও না, কেমন?” মা বাকি জানলা গুলো বন্ধ করে দিলেন।
রাতুল পড়ার ঘরে জানলার ফাঁক দিয়ে দেখতে লাগল, কেমন হাঁফ ধরা গরম উড়িয়ে দিয়ে দমকা ঝোড়ো হাওয়া রাস্তাঘাট, তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে গোলদিঘি, তারও পরে ঝুরি নেমে আসা সেই কবেকার বটগাছ, বাঁশ বন ছাড়িয়ে দুরে চলে যাচ্ছে। --- কড়্ কড়্ কড়াৎ!!! --- কাছেই কোথাও একটা ভয়ানক বাজ পড়ার আওয়াজে রাতুল কান বন্ধ করল। মা তাড়াতাড়ি জানলাখানা ভেজিয়ে রাতুলকে জড়িয়ে ধরলেন। রাতুলের আর বাজবরণ গাছের বাজ টেনে নেওয়া দেখা হল না!
সেইদিন সারারাত বৃষ্টি হল, বাজও পড়ল খুব। রাতুল মা’কে জড়িয়ে ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখল ভালো-দাদুর দেওয়া ওই একরত্তি বাজবরণ গাছখানা কেমন আকাশের দিকে মুখ তুলে ওই ভয়ানক বাজগুলোকে টেনে মাটিতে মিশিয়ে দিচ্ছে, চাইলেও কারো এদিক ওদিক ছুটে পালানোর যো নেই। সে কি সাংঘাতিক যুদ্ধ! পাড়ার লোকজন সবাই ধন্যি ধন্যি করে বলছে, “সত্যি বাবা, এইটুকু দেড় আঙ্গুলে গাছ, তার বুকের পাটা দেখেছ, কেমন ওই অত্তো উঁচু আকাশের সাথে সমানে পাল্লা দিয়ে লড়াই করে চলেছে! কাউকে পরোয়া করে না! কই, দেখাক দেখি কেউ এমনতর সাহস!” --- সেইদিন রাত্রে ঠান্ডা ঠান্ডা হাওয়ায় আরামে মা’র কোলের কাছে রাতুলের ঘুম এল। মনে মনে ঠিক করল, পরের দিন ভালো-দাদু এলে পরে স্বপ্নের কথাগুলো দাদুকে সব বলবে।
পরেরদিন রবিবার, সেই ভোর থেকে ঝিরঝির করে বৃষ্টি পড়ছে, গরম অনেক কম। আজ আর এই ঝড়জলে, বাজার যাওয়া, বাগানে মাটি কোপানো, সার দেওয়া, ঘরদোর পরিষ্কার... কিচ্ছুটি নেই। বাগানের গাছগুলো জলে ধুয়ে ঝকঝকে সবুজ, টগর গাছের নিচে একমুঠো ফুল পড়ে আছে...। ভালো-দাদু তাড়াতাড়ি চলে আসবে ভেবে রাতুল লুচি আর সাদা আলুর তরকারি দিয়ে জলখাবার সেরে বারান্দায় এসে বসল। সকাল থেকে দুপুর ... দুপুর গড়িয়ে বিকেল ...বিকেল গড়িয়ে আস্তে আস্তে সন্ধে নেমে এল ... কিন্তু সেদিন ভালো-দাদু আর এল না! এরপরের রবিবার, তারপরের রবিবার, তারও পরের রবিবার চলে গেল, ভালো-দাদু এল না! রাতুল বারান্দার ফাঁকা সিঁড়িটায় বসে একা একা ছবি আঁকে, গুনগুন করে গান গায়, বাগানে চড়াই, শালিখ এসে মাটির ছোটোছোটো বাটিতে রাখা জল খেয়ে যায়… মন দিয়ে সেসব দেখে। বাইরে ধুলো-ওঠা রাস্তা দিয়ে যাওয়া ভ্যানরিক্সার হর্ন, কাগজওয়ালার ডাকাডাকি, বেলুনওয়ালা, শনপাপড়িওয়ালা, পাতাকুড়ু্নি দেখতে দেখতে বাগানের গেটের দিকে বারবার চোখ চলে যায়। রাতুলদের বাড়ির পিছনে খেলার মাঠে শুকনো ধুলো পাক খায়, মাটি থেকে উঠে আসা গরম ধোঁয়া কেঁপে কেঁপে ওপর দিকে ওঠে, চেয়ে থাকতে চোখ জ্বালা করে, বিকেলগুলো কাটতেই চায় না… মনকেমন করে খুব। রাতুল মুখ ভার করে ভাবে আজ বুঝি দাদু আসবে... এই বুঝি দাদু এল... কিন্তু নাহ! মানুষটা হঠাৎ করে কোথায় জানি হারিয়ে গেল।
সেইদিন রবিবার বাবা বাজার থেকে হন্তদন্ত হয়ে বাড়ি ফিরলেন। এসেই রান্নাঘরে ঢুকে গম্ভীর মুখে চাপা গলায় মাকে ফিসফিস করে যা বললেন, রাতুল আড়ি পেতে ঠিক শুনতে পেল --- “মিত্তিরবাবুর সাথে আজ দেখা হল জান, ভদ্রলোক বাস্তবিকই আর নেই!”
—“সে কি গো! কি বলছ!”
—“আহ ... আস্তে আস্তে, রাতুল যেন শুনতে না পায়, কষ্ট পাবে।”
—“কিন্তু কি করে হল এসব? জানতে পারলে কিছু? অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, না কি? আহারে, মানুষটা...”
—“না, না, ঠিক রোগে ভুগে নয়, ওরা যা বলল, বাজ পড়ে নাকি...”
—“বাজ পড়ে! সে কি!”
—“হ্যাঁ, তাই তো শুনলাম। এমনিতে বয়স তো সত্যিই হয়েছিল, বেশি হাঁটাচলা করতে পারছিলেন না একেবারে। তো ওইদিন যখন খুব বাজ পড়ল, বিশ্ব-খ্যাপাটে মানুষ, তাই যেমন করেন ... কেউ কোথাও নেই, বাজ পড়ার সময় উনি নাকি সেই বাজ তাড়াবেন বলে “রে রে” করে ছুটে গিয়েছিলেন। হাতে লোহার আঁকশি খানা ছিল, ওতেই কাল হল... সোজা একখানা বাজ, পড়বি তো পড় ঠিক ওইটার ওপর...”
— “উফফ, মা গো!!” মা আঁচলের খুঁটে চোখ মুছলেন।
রাতুল দম বন্ধ করে কথাগুলো শুনে এক ছুট্টে বাগানে বেরিয়ে এল। বাজবরণ গাছখানার সামনে এসে হাউ হাউ করে কেঁদে বলে উঠল — “কি রকম গাছ তুমি? কেমন তুমি বাজ টেনে রাখতে পার, হ্যাঁ? আমি যাতে বাজের আওয়াজে ভয় না পাই ওইজন্যই তো দাদু তোমাকে আমার কাছে নিয়ে এসেছিল... তাহলে তুমি থাকতে ভালো-দাদু কেন চলে গেল আকাশের সাথে একা একা যুদ্ধ করতে? কিচ্ছু পার না তুমি...কিচ্ছু না।” বাগানের মাটি থেকে খাবলা ঘাস টেনে ছিঁড়ে মুঠো করে ছুঁড়ে দিতে লাগল রাতুল... “বাজে গাছ... একেবারে বাজে... পচা... বিচ্ছিরি... ফেলে দেব... টেনে ফেলে দেব...!” বাবা মা ছুটে বেরিয়ে এলেন, “কাঁদে না বাবা, ওরম করতে নেই, ছিঃ... দাদু খুব কষ্ট পাবেন তাহলে”...
রাতুল বাবাকে জড়িয়ে ধরে সেদিন অনেকক্ষণ কাঁদল। সেদিন রাতুল ভালো করে খেল না, স্নান করল না, ছবি আঁকল না, গান গাইল না, কারুর কথা না শুনে সিঁড়িতে বসে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে গেল গোটা বেলা।
বিকেল হলে আস্তে আস্তে রাতুল বাজবরণ গাছটার সামনে এসে দাঁড়াতে অবাক হয়ে গেল! দেখল, কাঠির মতো লম্বা গাছখানার দু’পাশ দিয়ে দুটো ছোট ডালের মত বেরিয়ে উপর দিকে উঠে গিয়েছে... সকালে কই খেয়াল করেনি তো! ঝলমলে সবুজ, কচি কচি দুটো ডাল। এ’দুটোয় কাঁটা নেই, বরং ধার দিয়ে কুচি কুচি অনেকগুলো চ্যাপ্টা পাতার মতো গজিয়েছে। রাতুলের চোখ দুটো ছলছল করে এল। সকালবেলা ছুঁড়ে দেওয়া ধুলো, মাটি, ঘাস, যত্ন করে সরিয়ে, ঝেড়ে পরিষ্কার করে অনেকক্ষণ একদৃষ্টে চেয়ে রইল গাছটার দিকে। চেয়ে থাকতে থাকতে মনে হল, ঢ্যাঙা, ছিরিছাঁদ নেই গাছখানার দু’দিকে ডাল বেরিয়ে ঠিক যেন মানুষের হাতের মত দেখাচ্ছে! টবটাকে তুলে ভালো করে কাছে এনে দেখল। সত্যিই তো! কোন ভুল নেই, অবিকল একটা মানুষ, তার দুটো হাত, আকাশের সঙ্গে যুদ্ধ করবে বলে মানুষটা হাত দুটো উঁচুতে তুলে কেমন স্পষ্ট বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে .......