১) বার্ধক্য
সেই সব শব্দ নিয়ে হাজার বছর তীর্থস্নান।
শুষে নেওয়া লবণাক্ত ঝিনুকের রস।
বহু বর্ষ অরণ্যে রোদন,
বহু শবরীর বক্ষে এঁকেছো স্বস্তিকা,
সমুদ্র শঙ্খের ছবি, স্রোতে ভাসা রূপার কলস।
যৌবন মিলিয়ে গেছে, জরা আসে গেরুয়া বসনে,
হেমন্তে রঙিন হওয়া ম্যাপল পাতার মতো,
বেলা যায় অসহ্য উল্লাসে।
তারা আসে, চলে যায়, শুষে নিয়ে চৈত্রের বাসনা।
কতো মিথ্যে প্রতিশ্রতি, অলীক স্বপ্নের বেচাকেনা।
শুধু খেলা, শুধু ফাঁকি, সব মন্থনের শেষে অধীর আকুতি।
কোথায় অমৃত কুম্ভ? বিষের আস্বাদ কিনারায়।
সেই শব্দগুলো কই? কোথায় নির্বাণ?
প্রতারক!
কবি হাসে,
নির্বিকার ক্যানভাসে জমা হয় খ্যাতির আঁচড়।
তার পরে একদিন শিথিলতা,
তার পরে ছেঁড়া মণিহার,
গাছেরা ঝরায় পাতা আগামী জন্মের অপেক্ষায়।
২) সহধর্মিণী
তুমি রেখেছিলে স্নিগ্ধ বটের মায়া।
কিছু কানাকড়ি,
কিছু কথা আলোছায়া,
সহজ আমন্ত্রণে।
অমাবস্যায় তুমি প্রদীপের শিখা।
চোখের আঙিনা,
পুরনো কাজলরেখা,
অনামী অশ্রুজলে।
ঝড় বয়ে গেছে, আলোকস্তম্ভে একা,
তুমি জেগে আছো।
এলোমেলো তটরেখা,
একাকী সুরক্ষায়।
তবু উন্মাদ ফিরে আসে বারবার।
পথের কাদায়,
খুঁজে ফেরে মণিহার।
তোমার জন্মদিনে।
৩) খেলাঘর
আজ সকালে ভাসিয়ে দিলাম
তুলোয় ভরা ভালুকছানা,
রাংতা মোড়া সেই চকোলেট।
যেথায় তোমার মণিমহল,
পাশেই নদী,
হাওয়ায় ভাসে আমার কথা.
কথা প্রচুর, ছন্দে গাঁথা,
আবোলতাবোল, অদ্ভুতুড়ে।
তোমার কথা?
ওরা সবাই আসছে ফিরে।
রাত্রে কোথায় সূর্য ওঠে?
শুধিয়েছিল ফকিরবাবা।
আমার তখন দহনবেলা
মধ্যরাতে, অবোধ ঘুমে,
উটপাখিরা বালিতে মুখ,
অন্ধ খোঁজে প্রলয় ধাঁধা।
ভেবেছিলাম ভেসেই যাবো,
দিক হারিয়ে ভাঁটির টানে,
তুমি আমার নোঙর হলে?
আজ সকালে।
তোমার হাতে দিতেই হবে,
বৃষ্টিধোয়া মনের কথা।