• Parabaas
    Parabaas : পরবাস : বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • পরবাস | সংখ্যা ৭০ | মার্চ ২০১৮ | কবিতা
    Share
  • তিনটি কবিতা : অনুষ্টুপ শেঠ


    দোল

    কোন সাহসে হাতের মুঠোয় আবির নিয়ে
    খেলতে গেলাম তেপান্তরের পথ পেরিয়ে,

    রঙ মাখা মুখ, রঙ মাখা হাত, প্রগলভতা
    হেরে যাওয়ার পরেও হারের বিষণ্ণতা

    কুড়িয়ে পাওয়া একটু আদর, ইচ্ছেগুলো
    হাতছাড়া হয়, জড়িয়ে নিছক পথের ধুলো -

    দোল এসেছে? আগুন তবে লাগাও এবার
    বুড়ির ঘরে। সব ঘুচে যাক যন্ত্রণাভার;

    আগুন জ্বালায় এমন দিনে, তোমায় আমায়।
    শব্দরা তাই শরীর জুড়ে কান্না শাণায়

    রঙ দেবো না। রঙ নেবো না। তোমায় ছাড়া
    এমন কথা বললে যদি মুখর পাড়া

    তবুও হঠাৎ আসর জুড়ে শেষের পালা
    তবু, এমন আচম্বিতে দহনজ্বালা

    কেমন করে আগলে রাখি, কেমন করে!
    বুকের মাঝে নিথর করা দুঃখ ঝরে...


    বিরতি

    নিজেকে সামলে নাও, সময় দিচ্ছি।
    ভয় নেই। মুখ ফেরাব না।
    ধীর স্থির সভ্যভব্য সমন্বয়ে
    থাকবে সব অস্তিত্বচেতনা।

    ততক্ষণ, অসহায় ক্রোধে
    ঝরে যাক, পুড়ে যাক দেহ
    ততক্ষণ আত্মবিশ্লেষণে,
    মন্ত্রমুগ্ধ মিশে থাক স্নেহ।

    নিজেকে গুছিয়ে নাও। তাড়া নেই।
    সুখ কি পায়রা নাকি? তাড়ালে যাবে?
    নিজেকে সময় দাও বহ্নিশিখরে
    এক অঙ্ক বিরতিরও, অসন্তাপে।

    তারপর, অমোঘ ঋতু হৃদে রেখে
    দেখে নেব, কত মৃত্যু দিলে এঁকে।


    পর্ণমোচী

    আবার যদি দাঁড় করাই অস্তাচলে,
    আবার যদি বৃষ্টি নামার দাবি থাকে,
    কোথায় যাবে পালিয়ে তবে নিজের থেকে,
    বুকের মাঝে, সঙ্গী করে নেবে কাকে?

    হেমন্ত নয়, বসন্ত নয়, এখন তো রোদ
    জ্বালিয়ে গেছে ফসল মাঠের, নিঃশেষে।
    ভাবছ বুঝি লিখব ক্ষুধা, লজ্জাহারা?
    নাহ্‌! জ্বলছে, সে তো ভালোবেসে!

    ভালোবাসার বেশ চমক, বেশ সাহস।
    জড়াতে চায় পর্ণমোচী বৃক্ষশাখা
    ফুলের ভানে। আমরা জানি ভণ্ডামি
    কেমন পারে মোহন হতে ধুলোয় মাখা।

    ধুলো খেলার দিন তো শেষ? বর্ণময়
    অঙ্গরাগ যদিই ঝরে সংঘাতে,
    কি রাখবে, বলো তাহলে, নির্ভৃতে,
    পাতাকুড়ুনি মেয়ের চোখে, দুইহাতে?



    অলংকরণ (Artwork) : অলংকরণ - সঞ্চারী মুখার্জী
  • এই লেখাটি পুরোনো ফরম্যাটে দেখুন
  • মন্তব্য জমা দিন / Make a comment
  • (?)
  • মন্তব্য পড়ুন / Read comments