বৈষয়িক
১মায়ের তোরঙ্গ থেকে এক টাকার নোটের বান্ডিল।
পুরোনো, বেগুনি নোট। বাজারে সামান্য হৈ হৈ -
নতুন জিনিস দেখে উঁকি মেরে গেল ছেলেরা।
অন্যেরা কথা জুড়লেন। যাঁদের তেমন তাড়া নেই।
কথায় কথায়
কেউ টেনে আনেন নিজের মায়ের কথা
দিনকালের কথা
যখন হ্যারিকেন বিক্রি হত পাড়ার দোকানে
আলো নিভলে গোটা পাড়া নেমে আসত রাস্তায়
দড়ির খাটিয়ার ওপর ঝুঁকে পড়ত ঝকঝকে আকাশ
যখন এক টাকার নোট হাতে
মাথা উঁচু করে ঢুকে পড়া যেত চালের দোকানে
২
নোটবাতিল বাবদ অবসরে যাওয়া নোটেরাও
কাজে ফিরেছে।
গান্ধীছাপের জোয়ারের আগে যাদের চিনতাম,
অশোকস্তম্ভওলা সেই সব কুড়ি আর পঞ্চাশ
দেখা যাচ্ছে ইতিউতি। এই সব নোট গুণেগেঁথে, খামে ভরে
মাস্টারমশাইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হত। সেই থেকে
তাঁর মেয়ের মুখ মনে পড়ল, সেই মুখ ঘিরে থাকা
কোঁকড়া কোঁকড়া চুল।
এখন চিনতে পারব না
তবু ভাবতে ভালো লাগে সে বেঁচে আছে
এই আকাশের নিচেই কোথাও ছেলেমেয়ে নিয়ে সংসার করছে
আর পুরোনো নোটের দিকে তাকিয়ে সাতপাঁচ ভাবছে এখন।
দেশঘর
বড়রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি বলে অটোরিক্সা কদিন ঘুরপথ নিচ্ছে।
পাশেই একটা গলি। সেখানে ঢুকে
বাঁক ঘুরতে ঘুরতে এগোয়। ইস্কুলের ভেতরে খোলা মাঠে
ঝলমল করছে বাচ্চারা
পুরোনো বাসনওলা হেঁটে যাচ্ছে,
সাইকেল নিয়ে বঁটিতে শান দিচ্ছে লোক।
শিলের ওপর মাছ কি হাঁস এঁকে নিয়ে
যত্ন করে শিল কাটছে। কোনো বাড়ির দরজায়
হাসতে হাসতে ঢলে পড়ছে বউ-ঝিরা।
এত কাছে এসব কে জানত
বড় রাস্তা থেকে পঞ্চাশ পা ভেতরেই
দেশের বাড়ির মত বাড়িঘর। লোভ হয়
আরেকটু ভেতরে ঢুকে
পুকুরে তালগাছের ছায়া দেখে আসি।