বিকেল
বিকেল হয়ে আসে নিখিল বরাবর
রোদের তাপ নেই, স্নিগ্ধ চরাচর
এই তো এইখানে আমার পাতাখসা
প্রথম বইগুলি শুয়ে বা হেলে বসা
এটাই মাঠ সেই তেপান্তর সম
এখন ভুলে যাব তুমুল ঘর্ষণও
এখন সয়ে যায় সকল ব্যথা কাজই
লোকের ভুল কথা, কথার কারসাজি
বিকেল হয়ে আসে নিখিল বরাবর
হেঁটে হেঁটেই যাব। পূর্ব ও অপর
সবটা ভুলে শুধু নিজের হরষিত
একলা মন নিয়ে। একলা ঝরো, প্রীত!
পুরুষদুঃখ
একটুখানিই পুরুষদুঃখ তোমাকে আমার পাঠাতে ইচ্ছে হয়
ছোট্টবেলার হাতের পাতায় রাখা যেরকম ইশকুল যেতে ভয়
বাচ্চা বাচ্চা ছেলেদের ক্লাসে বিশাল একটা হুমদো মতন বুলি
নিরিবিলি গলি ফিরেআসাপথে লাল চোখ আর ডেঞ্জার লেখা খুলি
বাসকাকুদের নির্জন হাত ভালবাসাছলে পেঁচিয়ে ধরেছে ক্ষয়
এই সব কিছু পুরুষদুঃখ তোমাকে আমার পাঠাতে ইচ্ছে হয়
কাঁদতে পার না দুঃখ এবং লিখতে পার না কারুকে মনের চিঠি
সারাদিন কাটে খবরদারিতে, বাড়িতে শুধুই বড়দের খিটিমিটি
একটা আকাশ একটা জানালা একটা ঘুড়িও জুটছে না নিষ্কৃতি
দেওয়াল মাপছ, খাতায় আঁকছ জিওমেট্রির ছোটবড় বৃত্তই
আর কিছু নয় একাকী থাকছ সলিটারি সেল খাপছাড়া টিকটিকি
খোকাবাবু শুধু পড়া করে যাও হরলিক্স গুলে মা আনবে তবু ঠিকই
চাকরি করতে হবেই তোমাকে সেটাও একটা ভাল হয় যেন কাজ
টাকা ও পয়সা উপার্জনের ভেতরে তোমাকে আটকাল কারা আজ
সে চাকরি যদি ছাড়তে চেয়েছ লোকে বলে তুমি পাগল অথবা পাজি
তোমাকে একটা বিয়ে দিয়ে দেবে বাড়ির লোকেরা, তুমিও তো নিমরাজি
তারপর সব নিয়মমতন, আনন্দ আর অভিযোগ পাশাপাশি
অপরিচিতের সঙ্গে শুয়েছে অপরিচিতরা; কপালের দোষে হাসি
হাসিতে মেলেনি, স্বপ্নে স্বপ্ন মেলেনি, হারালো সুখ
একটা কি দুটো পুরুষ দুঃখ পুষে রেখেছিল তোমার শুকনো বুক
আমোদ আরাম মুগ্ধচক্ষু সকলের তুমি ছিলে তো চোখের মণি
শুধু চিরদিন সকল প্রাপ্তি চোরাস্রোতে আনে শূন্য আঁধার খনি
তোমাকে যাহারা ভালবেসেছিল, তুমি যাহাদের ভালবেসেছিলে, বল
খাপে খাপ সব মিলে যায়? আর ওই মেয়েটিকে সাহায্য করি চলো...
দেশোদ্ধারের প্রকল্প গড়ি! কেউ বুঝল না তোমার মনের ব্যথা
এখন দু খানা বিস্কুট চায়ে; হাতে গড়া রুটি; বাধ্যতা অধীনতা
স্মৃতি স্মৃতি স্মৃতি ভীমরতি বলে সকলের মুখ হাসিহাসি বিকৃত
তোমার দুঃখ অফ টাইমের ডিসকাউন্টের তোবড়ানো জামা জুতো
তারপরো তুমি ঘাড় বেঁকিয়েছ, বলেছ ঝাঁকিয়ে মাথা
আমার দুঃখ বিমূর্ত আরো, বুঝিবে তা কোন অনন্ত নীরবতা!