১.
যাও গো ফসল, যাও
এবার স্রষ্টার হাত ছেড়ে
ধরো ঈশ্বরের হাত ...
ধীরে অনুপ্রবেশ কর তার দেহে ...
ভাগ্যনিয়ন্ত্রক ঈশ্বরই তোমার প্রেম,
তোমার আশ্চর্য প্রদীপ
পরিণতি আর সৎকার
অবয়বে শুশ্রূষা লেপে সুদূর যাত্রার জন্য প্রস্তুত
তুমি এবং তোমার ঈশ্বর ... শরীরে বাউল ...
যাও গো ফসল যাও,
মধ্যবর্তী কাঁটাকে উৎপাটনের শিক্ষা নাও
এক অদ্ভুত ঘোর হোক তোমার
তারপর পায়ে পায়ে বাউলের মতো
একতারায় সুর ধরো ...
সম্মুখে সবুজ দেখছো তুমি, তোমার সবুজ?
২.
চৌকাঠ জানে না সিঁড়ির প্রয়াস
সিঁড়িও শেখেনি চৌকাঠের মাহাত্ম্য
... পায়ে পায়ে এরা আকাশ ছুঁয়ে ফেলে
নিষিদ্ধবাতাস জানে এদের স্পর্শপ্রবণতা
শুধু পারাপার শেষে
বিরতি চিহ্নের মতো পড়ে থাকে ...
স্মরণিকা ও ব্যর্থ স্বরলিপি।
৩.
এখনই যা চাই দেবে? বলো দেবে কি?
এরপর তুমিও শূন্য হবে আরো বেশি।
দীর্ঘ সময় যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলেছ তো অনেক।
সেনাপতির সাজ এখনো তোমার অঙ্গে,
তবু, শিরোস্ত্রাণ, বর্ম, আর ঢাল তলোয়ারে
তছনছে, খুব তছনছে ভাব এসে গেছে।
শুধু জেগে আছে তীক্ষ্ণ চাউনি, যুদ্ধমন্ত্র, ...
আর বেশ কিছু উন্মাদ সৈনিক।
তবুও বলছি, তবুও বলছি আমি তোমায়,
দেবে কি যা চাই এখনই, বলো দেবে কি?
শেষ আশ্বিনের অর্ধ জাগরিত যুদ্ধাঙ্গনে
বেলা পড়ে আসে, ব্যবধান জেগে ওঠে ...
জেগে আছি দুটি বিন্দু যেন আকাশপ্রদীপ।
আমার শিশির নেই, নেই-কোনো নোনা সম্পদও
এখনো তোমার আছে এক নদী সফরকথা
এরপর যদি শূন্য হও, কি বা দিতে পারো!
দেবে বলো? এখনি কিছু যদি চাই, দেবে?
কবি ভূমেন্দ্র গুহ স্মরণে
এইবার ঘুম নেমে এলো কোষে কোষে
মাথার খণ্ডগুলো জমি-বরাবর ঘরবাড়ি,
স্নায়ু-শিরা-উপশিরা ছিলো যত,
শাখা প্রশাখার মত ফুলেফলে ভরে ছিল।
যাও যাও শোণিতস্রোত ... বহমান নদী,
তোমার শানবাঁধানো তীরে
জীবিত পাতা-ফুল, রেণুকণা পড়ে আছে
কবিতাশরীর হয়ে স্পন্দন নিয়ে ...
তোমার খরধারা পলিহীন, উদ্দাম অবিরত।
ঘুমও নেমে এলে,
ঘরবাড়ি আর যত পুষ্পপত্রাদি ...
বেঁচে আছে অমরের মতো, স্পন্দিত হয়ে।
পূর্ণ অমৃতভাণ্ড দিয়ে গেছ
এই ভূমে ... এই করপুটে।