পরবাসের পুরোনো পাঠকরা নিঃসন্দেহে অনেকদিন বাদে নন্দন দত্ত ও অংকুর সাহাকে পরবাসের পাতায় দেখে আনন্দিত হবেন। সাধারণত যেমন হয়--জীবন ও জীবিকার স্রোতে, বা অন্য নানা কারণেও একইভাবে বা একই জায়গায় লেখালেখির কাজ করে যাওয়া সম্ভব হয় না। নন্দন দত্ত একসময়ে পরবাসে নিয়মিত লিখতেন নানা বিষয়ে ও ধরনে। আশা করি কর্মব্যস্ততা সত্ত্বেও এই সংখ্যাতে ভ্রমণ-কাহিনি দিয়ে শুরু করে আবার নিয়মিতভাবে লেখা দিতে পারবেন। 'নিবিড় পাঠ' শিরোনামে অংকুর সাহার তথ্যসমৃদ্ধ ও বিশ্লেষণী লেখা একদম প্রথম থেকেই পরবাসের গ্রন্থ-সমালোচনা বিভাগকে একটা বিশেষ মাত্রা দিয়েছিল। এই বিভাগটিকে আরো অনেকে সমৃদ্ধ করেছেন ও করছেন। প্রকৃতপক্ষে, গ্রন্থ-সমালোচনা গুলি পরবাসের বিশেষ সম্পদ। পরবাস-৩৫-এর দীর্ঘকাল পরে এই সংখ্যা থেকে হাসান আজিজুল হকের একটি ভ্রমণ-কাহিনির নিবিড় পাঠ দিয়ে আশা করি অংকুর তাঁর নিজস্ব ধারাটি আবার চালু করবেন।
বাংলাতে কয়েকটি ধরন বা genre-এর লেখা সংখ্যাতে একটু কম হয়। 'বড়োদের জন্য কল্প-বিজ্ঞান' বা সায়েন্স ফিকশন তার একটি। (অবশ্য ছন্দা বিউট্রার ইংরেজি অনুবাদে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের 'বনদেবী ও পাঁচটি পায়রা' পরবাসে প্রকাশিত হয়েছে।) এই সংখ্যা থেকে দেবজ্যোতি ভট্টাচার্যের একটি সম্পূর্ণ উপন্যাস 'অন্য কোনখানে' ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হবে। 'বড়োদের জন্য ভূতের গল্প' হিসেবে ভবভূতি ভট্টাচার্যের 'এক্কা-দোক্কা' গল্পটির উল্লেখও করা যেতে পারে এই সূত্রে (গৌরী দত্তর দু'টি গল্প--কঙ্কাল এবং ঘাতক অবশ্য প্রকাশিত হয়েছিল পরবাস-৫৯-এ)।
আরও কয়েকটি লেখা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হবেঃ রঞ্জন রায়ের ছত্তিশগড়ের চালচিত্র ও নিবেদিতা দত্তর আনুর গপ্পো। এ-দুটির আসল গোত্র ঠিক কি--আখ্যান?--কাহিনি?--সেটা আমার কাছে অন্তত ঠিক স্পষ্ট নয়। কিন্তু তাতে কিছু বিশেষ যায় আসে না। আপনাদের মতামত জানলে খুশি হব। এছাড়া এই সংখ্যা থেকে শুরু হচ্ছে সুরমা ঘটকের একটি সাক্ষাৎকার। এবং অজাত শব্দের কাছে নাম ও মলাটে সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়ের সদ্যোজাত ও এখনো অজাত কবিতাগুলিকে বেঁধে রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
একটু দেরি হলেও উপন্যাস, প্রবন্ধ, গ্রন্থ ও সিনেমা সমালোচনা, নাটক, কবিতা, প্রকৃতি/ভ্রমণকাহিনি, গল্প, ছোটদের বিভাগের লেখা ইত্যাদি মিলিয়ে চল্লিশের বেশি লেখার এই সম্ভারটি এই ছুটির মরশুমে আপনাদের দিতে পেরে খুশি হলাম।
জানাবেন কেমন লাগলো।