• Parabaas
    Parabaas : পরবাস : বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • পরবাস | সংখ্যা ৬০ | আগস্ট ২০১৫ | প্রবন্ধ
    Share
  • ঋত্বিকের নিসর্গ নিসর্গের ঋত্বিক : সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়


    খনই প্রয়াত ঋত্বিক কুমার ঘটকের কথা ওঠে, তখনই মনে হয় সম্ভবত সময়ের নৈকট্যই তাঁকে বোঝার ক্ষেত্রে আমাদের অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আমরা তাঁকে দেখেছি এবং অধিকাংশ সময়ই ভেবেছি, সরল বিশ্বাস থেকেই ভেবেছি, যে তিনি উদ্বাস্তু-জীবনের ‘ধারাভাষ্যকার' এবং একজন প্রথাসম্মত বামপন্থী প্রতিবাদী। আজ মৃত্যুর অন্তত চল্লিশ বছর বাদে মনে হয় কী নির্বোধই আমরা ছিলাম, কি নিষ্পাপ ও জ্ঞানশূন্য, যে আমরা বুঝতে পারিনি। একবার দস্তয়েভস্কি পুশ্‌কিনের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন যে, পুশ্‌কিন তাঁর কবরে কিছু গোপনীয়তা নিয়ে গেছেন, আমাদের এখন তা উদ্ধার করতে হবে। বস্তুত ঋত্বিকের মতো প্রতিভার ক্ষেত্রে আমাদের অনেক কিছুই উদ্ধার করতে হবে।

    যেমন, ঋত্বিকের ছবির দিকে যখন তাকাই তখন এক-একটা সময় মনে পড়ে যে তিনি হয়ত আমাদের আধুনিকতা বা আমাদের সাহিত্যবোধের কিছু শিকড় ধরে নাড়া দিয়েছেন। এবং এমন কিছু প্রশ্ন তৈরি করেছেন যার নিরসন আদৌ চলচ্চিত্র-মাধ্যমে হতে পারে কিনা এ নিয়ে আমাদের সংশয় আছে। ধরা যাক ঋত্বিকের আচার্য আইজেনস্টাইনের কথা। আইজেনস্টাইন একবার তাঁর সুবিখ্যাত ‘নন-ইনডিফারেন্ট নেচার’ বইতে নিসর্গের সঙ্গীত প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে, এল গ্রেকোর আসল নিসর্গ তো আত্মপ্রতিকৃতিগুলো। 'ঋত্বিকের নিসর্গ' যখন আমরা বিবেচনা করি তাঁর ছবিতে, তখন শুধু পারিপার্শ্বিক নয়, একভাবে দেখলে এ এক অদ্ভুত সত্য যে একা ঋত্বিক, একমাত্র ঋত্বিকের ছবিতেই হয়তো নিসর্গ বা প্রকৃতি মানুষের ছদ্মবেশে কথা বলে। এই কথাটাকে ব্যাখ্যা করতে চাইলে আর একটু পিছিয়ে যাওয়া উচিত।

    বিশ শতকের একেবারে সূচনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘শকুন্তলা’ নামে একটা প্রবন্ধ লিখেছিলেন। প্রবন্ধটা বাঙালিদের কাছে অত্যন্ত বিখ্যাত, কারণ তা শুরু হয়েছে গ্যেটের করা শকুন্তলার প্রশংসার মধ্য দিয়ে। কিন্তু আমি এখন যে শকুন্তলা-প্রসঙ্গ উদ্ধার করতে চাই তার সঙ্গে গ্যেটের প্রশংসার সম্পর্ক নেই, বরং সে-প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথের একটি মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গির উদ্‌ঘাটন আছে। আসলে বঙ্কিমচন্দ্র যখন 'শকুন্তলা, মিরন্দা এবং দেস্‌দিমোনা' প্রবন্ধটি লিখেছিলেন তখন তিনি আমাদের আধুনিকদের আদিপর্বের স্বভাব অনুযায়ী মিরন্দা এবং দেস্‌দিমোনাকে পাপশূন্যতার দিক দিয়ে অনেক ওপরে স্থান দেন। শকুন্তলার প্রতি তাঁর কিছু সন্দিগ্ধ মনোভাব ছিল। এবং শকুন্তলাকে তিনি খানিকটা অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সারল্যের মূর্তি হিসেবে ব্যাখ্যা করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ কিন্তু বঙ্কিমবাবুর সূত্র ধরেই প্রায় উল্টো মেরু থেকে বলেন যে মিরান্দা, মানে শেক্সপীয়ারের টেমপেস্ট-এর নায়িকা এবং শকুন্তলার মধ্যে শকুন্তলাই শ্রেষ্ঠ। তার কারণ পূর্বোক্ত দুজন অজ্ঞানতার সঙ্গে জড়িত বলে তাদের সততা প্রশ্নাতীত নয়। এটা খুব ফান্ডামেন্টাল বক্তব্য, কিন্তু আমাদের বক্তব্য তাও নয়। রবীন্দ্রনাথ এক জায়গায় বলেন যে শকুন্তলাকে প্রকৃতির সঙ্গে আলাদা করে চিন্তাই করা যাবে না। যেমন ধরা যাক বিখ্যাত শকুন্তলার পতিগৃহে যাত্রা অংশটি। সেখানে এই যে সহকারতরু, এই যে হরিণশিশু, এই যে তৃণদল এরা শকুন্তলার চরিত্রের এক একটি সম্প্রসারণ। রবীন্দ্রনাথের বক্তব্য ছিল যে টেমপেস্টের নায়িকা মিরান্দাকে আমরা সমুদ্র ছাড়াও বিবেচনা করতে পারি। সমুদ্র এখানে উপলক্ষ্য মাত্র। খানিকটা অলংকরণ। কিন্তু সমুদ্র মিরান্দার মৌলিক উপাদান নয়। আর প্রকৃতি শকুন্তলাকে গঠন করেছে। এটা আসলে পাশ্চাত্য-সভ্যতার সঙ্গে প্রাচ্য-সভ্যতার তফাত। ঋত্বিক ঘটক সারাজীবনে কোনো রবীন্দ্রকাহিনি নিয়ে ছবি করেননি, কিন্তু এখন আমার ধারণা তাঁর সমস্ত ছবি--একেবারে প্রথম নাগরিক থেকে শেষ যুক্তি তক্কো গপ্পো পর্যন্ত--রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে একটা দীর্ঘ তর্কের বিস্তার। এবং এক ধরনের রবীন্দ্রপ্রণামও বলা যেতে পারে। বা রবীন্দ্রনাথের সম্পূরকতা।

    যখন আমরা কোমলগান্ধারে অনসূয়াকে দেখি, এই অনসূয়া সেই শকুন্তলার সখী হতেও পারে। বা অত্রি মুনির পত্নীও হতে পারে। কিন্তু মূল সমস্যা হচ্ছে বা সমস্যাপটের মধ্যে আমরা দেখতে পাই যে অনসূয়া আসলে একটা ধারণা, একটা রূপক। এই অনসূয়া যখনই কথা বলে তাকে ব্যাখ্যা করার জন্য, তাকে টীকাযুক্ত করার জন্য ঋত্বিক প্রকৃতির কাছে আশ্রয় নেন। যেমন, যেখানে বহুবিখ্যাত বাফার শট অর্থাৎ যে ট্রেনটা পূর্ববঙ্গের দিক থেকে আসত এবং যেত সেটা যেখানে বাফারে আটকে গিয়ে ইতিহাসকে ছেয়ে দেয় আর পর্দা অন্ধকার থাকে, তার আগে আমরা যেভাবে পাটক্ষেত, ধানক্ষেত, দাঁড়িপাল্লা ইত্যাদি দেখেছি তাতে মনে হয় জড়বস্তুও একধরনের চৈতন্য অর্জন করেছে। অবশ্য উদ্ভিদ জড়বস্তু নয়। কিন্তু উদ্ভিদ মানুষও নয়। মানুষের যে কথা বলার রেওয়াজ ঋত্বিক ঘটক এই নিসর্গকে দিয়ে বহুবার সেরকম অভিনয় করিয়েছেন। যেমন সুবর্ণরেখায় শেষপর্বে যা যুধিষ্ঠিরের মহাপ্রস্থান পর্ব বলে আমরা এখন বুঝতে পারি, সেখানে পাহাড়গুলোকে যেখানে টেলিফটো লেন্সে ধরা আছে। দর্শক পাহাড়গুলোকে দেখবেন--ঋত্বিক অনেক সময় চরিত্র বাদ দিয়ে নিসর্গের দিকে চলে যান। এটা সিনেমায় সাধারণত: ঘটে না। সিনেমায় আমরা যখন নিসর্গকে প্রতিষ্ঠা করি তখন মানুষের সান্নিধ্যেই তাকে প্রতিষ্ঠা করি। কিন্তু ঋত্বিকে অনেক সময় দেখা যায় ফ্রেমের মধ্যে খুব ছোটো করে মানবমূর্তি এবং তুলনায় অনেক বড়ো করে প্রকৃতি বা পরিপার্শ্ব। আর অনেক সময় তো মানুষ সেখানে থাকেই না; পরিপার্শ্ব নিজেই কথা বলে। এরকম উদাহরণ বিস্তর আছে সুবর্ণরেখায়, আছে কোমলগান্ধারে। এমনকি আছে মেঘে ঢাকা তারায়। ধরা যাক মেঘে ঢাকা তারার বিখ্যাত অন্তিম দৃশ্য যেখানে নীতা ভেঙে পড়ছে। একটা জিনিস খেয়াল করার যে নীতার মৃত্যু কিন্তু ঋত্বিক ঘটক দেখাননি বা আমরা দেখতে পাইওনি। এটা আমাদের অনুমান। তার বদলে ‘দাদা আমি বাঁচতে চেয়েছিলাম’ এই কথা বলার পরে ক্যামেরা কিন্তু মূল চরিত্র অনিল চট্টোপাধ্যায় এবং সুপ্রিয়া চৌধুরী যা অভিনয় করেছিলেন (শংকর এবং নীতা) তাদের ছেড়ে দিয়ে এক বিখ্যাত প্যান শুরু করে। পাহাড়, অরণ্য, স্রোতধারা, প্রান্তর এবং আস্তে আস্তে ক্যামেরা টিল্‌ট করে ওপরে উঠে যায় আকাশে। এই সম্পূর্ণ অবস্থান, আসলে আমরা এটাকেই সম্ভবত: বলব নন-ইনডিফারেন্ট নেচার। যে প্রকৃতি উদাসীন নয়, আসলে প্রকৃতির ভূমিকাই এক্ষত্রে নীতার বিবাদ এবং বিপর্যয়কে বর্ণনা করছে। এক্ষেত্রে কোনো সংলাপ বা ঋত্বিক ঘটক কে প্রকাশ্যে আসতে হচ্ছে না। এবং ঘটনাকে বিস্তৃতভাবে বলতেও হচ্ছে না। যদি আপনি কোমলগান্ধারের শেষ পর্বে যান যেখানে করবন্ধনে ভৃগু এবং অনসূয়া সেখানে ‘আইজ হইব সীতার বিয়া’ অর্থাৎ সেই যে মহামিলন সঙ্গীত, এই যে বিচ্ছেদের পরপারে মিলন এটা শুধু নায়ক-নায়িকাদের মিলন নয়। বস্তুত নায়ক-নায়িকা এখানে গৌণ। এই যে মিলন যেখানে সমস্ত বাংলাদেশের প্রকৃতি দেখা যাচ্ছে। পর্বতাঞ্চল, মধ্যে সমতলভূমি, রবীন্দ্রনাথের খোয়াই, শান্তিনিকেতন এবং ধানের ক্ষেত এই সমস্ত জায়গায় ক্যামেরা ঘুরে বেড়ায় এবং ঋত্বিক ঘটক প্রায় স্থাপত্যের মতন করে করবন্ধনকে রাখেন এটা আসলে প্রমাণ করার জন্য যে সমস্ত জিনিসটাই কৃত্রিম এবং একটা চিন্তার অভিক্ষেপণ। যেমন একটু আগে বাফার শট-এর কথা বলেছি। যেমন সুবর্ণরেখায় আমি বললাম যে মহাপ্রস্থান পর্ব। কিংবা ধরা যাক, আজ ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়ায় লুকোচুরির খেলা, সেখানে ধানের ক্ষেতের যে ভূমিকা এই সমস্ত কিছুই হচ্ছে মানুষের অনুভূতিগুলির প্রক্ষেপণ। এক ধরনের আত্মতা, এক ধরনের বিষয়ীর মতো চিন্তা। যখন ঋত্বিক ঘটক কোনো শালবনের কথা বলেন তখন সেই শালবন আসলে নাট্যাতিরিক্ত একটি চরিত্র হিসেবে কাজ করে। এটা সম্ভবত কোনো ভারতীয় ঐতিহ্য। এটা সম্ভবত রাবীন্দ্রিকতার অবদান।

    কিন্তু এটা আমরা আগে ভেবে দেখিনি যে ঋত্বিকের সমস্ত ছবিতে--মেঘে ঢাকা তারায়, কোমলগান্ধারে, এমনকি লক্ষ্য করলে দেখা যাবে বাড়ি থেকে পালিয়ে-তেও, যে শহরকে দেখানো হয়েছে, সেটা খুব ব্যক্তিগত স্তরে শহরের ওপরে ঋত্বিকের মন্তব্য, শহরটা নয়। যেমন তিনি যেভাবে তিনতলা চারতলা বাড়িগুলোকে লো–এঙ্গেল ক্যামেরায় দেখিয়েছেন, এটা শিশুর চোখে দেখা বাড়ি--যতটা না আসলে বড়ো, তার থেকে আরো অনেক বড় দেখায়। কিংবা যেখানে কলকাতার ভূতল বা কিছুটা ম্যাকাবার অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন সেখানে এত এক্সট্রিম লো-এঙ্গেল ক্যামেরায় বড় বড় পাইপের মধ্য দিয়ে শহরটাকে দেখা গেছে যে এই শহর আর বিশ্বাস হয় না যে কোনো উন্নয়নের বার্তা বহন করে। বরং ঋত্বিকের ছবিতে কিছুটা বিষাদ এবং কিছুটা বিষন্নতা এসে পাখা বিস্তার করে। এবং এমনটা হয় যখনই তিনি নিজে ক্যামেরায় চোখ রাখেন, যেমন অযান্ত্রিক। অযান্ত্রিকে আপনি অনেক সময় দেখবেন যে ঋত্বিকের চরিত্র বিমল, যে সত্যিকারের অর্থে গৃহস্থ নয়। যে একটা কবরখানার ভেতরে থাকে। এবং সে, যে গাড়িটাকে ভালোবাসে। আর, গাড়ির প্রতি তার ভালোবাসা প্রত্যক্ষ করে কে? এই গাড়িকে ভালোবাসার ঘটনা প্রত্যক্ষ করে ওই ছোটনাগপুর উপত্যকার পাহাড়সমূহ। যেখানে শ্যুটিং হয়েছিল। ওঁরাওরা যেখানে থাকে। আপনি দেখবেন পাহাড়ের এক একটা শট--পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে উপজাতিরা আসছে। এবং অনেক সময় বিমলকে বাদ দিয়ে নিসর্গের একধরনের অ্যান্টিসিপেশন ফুটে উঠছে সিনেমার পর্দায়। মনে হচ্ছে সে প্রত্যাশিতভাবে কথা বলতে চায়। যেমন গাড়িটাও কথা বলতে চায়। ঋত্বিক আসলে সময়ান্তরে চলে গেছেন এটা দেখানোর জন্য যে প্রায় অবিশ্বাস্য হলেও এটা সত্যি যে গাড়ি, একটা জড়--নিসর্গেরই অঙ্গীভূত হতে পারে আমাদের সভ্যতায়। তাঁর বক্তব্য নিয়ে আমাদের তর্কের অবকাশ থাকলেও থাকতে পারে। আমি সেই কথায় এই প্রসঙ্গে যাব না। কিন্তু আমি বলতে চাই যে এইটা ঋত্বিকের একটা খুব আকর্ষণীয় দিক যেটা ভারতীয় ছবিতে নেই। সেটা হচ্ছে তিনি অনেক সময় ধরে উঁচু নীচু পাহাড়, উপত্যকা এইসব দেখান। এবং এই দেখানোর ফলে আসলে তাঁর সাবজেক্টিভিটিটা ধরা পড়ে। আমার মনে পড়ে যে বোরহেস-এর একটা গল্প আছে। একজন মানুষ অনেক কিছু আঁকছিলেন--জলাশয়, জনপদ, নারী, শিশু, সুন্দর ভূদৃশ্য, আরও অনেক কিছু। কিন্তু এইসব আঁকার পরে একদম প্রান্তসীমায় এসে তিনি উপলব্ধি করলেন যে যা তিনি এঁকেছেন তা শেষপর্যন্ত তাঁর আত্মপ্রতিকৃতি। আমরা ঋত্বিক ঘটকের ছবিতে যখন প্রকৃতিকে দেখি আসলে সেই প্রকৃতি হল ঋত্বিক ঘটকের আত্মপ্রতিকৃতি। যখন শালবনের মধ্যে নকশালদের সঙ্গে পুলিশের গুলি বিনিময় হল তখন শালবনের ছবিগুলো আলাদা করে দেখলে মনে হবে তাদের কিছু বক্তব্য আছে ইতিহাসের মার্জিনে। যখন সুবর্ণরেখাতে আমরা তালগাছ দেখি। বা এমনকি শহরকে দেখি, এই নির্দয় শহরকে, তখন আমরা বুঝি যে এগুলো ঋত্বিকের মন্তব্য, এগুলো মূল আখ্যানের সঙ্গে সঙ্গে চলে যাওয়া মন্তব্য। এবং ঋত্বিক প্রকৃতি বা নিসর্গকে এমনকি শহরের যে মানচিত্র, তাকেও কখনো নিষ্প্রাণ ভাবেননি। তারা উপাদান নয়, তারা মূল জায়গায়। অর্থাৎ তারা সহকারী অভিনেতা নয়। তারা অনেক সময়ই নায়ক এবং নায়িকা। এই অর্থেই নন-ইনডিফারেন্ট নেচার-এর যে ধারণা ভারতীয় ইতিহাসে রয়ে গেছে--কুমারসম্ভবে পাহাড়ের যে ধারণা, মেঘদূতে মেঘ সম্বন্ধে যে ধারণা, প্রান্তর সম্বন্ধে যে ধারণা, রেবা নদী সম্বন্ধে যে ধারণা, দেখা যাবে ভারতীয় চলচ্চিত্রকারদের মধ্যে ঋত্বিক ঘটকই সেই ধারণার অংশীদার এবং সেই ধারণার একজন অনুসারী। নিসর্গ আমাদের জীবনে আমার সঙ্গে বেঁচে থাকে। আমার সঙ্গে কথা বলে, আমার সঙ্গেই তার আনন্দ, আমার সঙ্গেই তার উল্লাস বা অশ্রুপাত।

  • এই লেখাটি পুরোনো ফরম্যাটে দেখুন
  • মন্তব্য জমা দিন / Make a comment
  • (?)
  • মন্তব্য পড়ুন / Read comments