১
তোমার হাতের কাছে তোমার বুকের কাছে রক্তপুষ্প ফুটে ঝরে আছে
লুটনো ব্যান্ডেজ আছে, বীরশ্রেষ্ঠ, বীর,
তোমাকে আদর করে বেঁধে দিই, আঘাতে আঘাত আমি করি না কখনো
আমার পায়ের কাছে আমার অন্তর্দেশে কেটে যায়নি তবু রক্ত পড়ে
পেটব্যথা করে আর গুচ্ছ গুচ্ছ রক্তপুষ্প ঝরে থাকে গোপন কাপড়ে
মৎস্যগন্ধা হই আমি, ছি ছি, এ কী মাছের বাজার!
ভাবি আর কুঁকড়ে যাই, আড়ালে লুকোই গিয়ে অন্তরাল, আচার বিচার
সব মানি তবু আমি অপবিত্র, স্যাঁতসেঁতে, করুণ
আমাকে ছুঁয়ো না তুমি, আদর দিও না, আমি হায় হায় বীরভোগ্যা কিছুতে থাকিনা
ঠুনকো পুতুল যেন, গড়ালেই সচ্ছিদ্র, নাপাক।
--ও গো যোদ্ধা, যুদ্ধে যাও, রক্ত ঝরাও সগৌরবে
আমার রক্তের দিকে দ্যাখো না কখনো তুমি। ঔদাসীন্যে আঘাত দ্বিগুণ।
২
আমি কুয়োস্থিত ব্যাঙ, আমি মৎস্য, আমি ঘেরা জলে
স্যাঁতসেঁতে করুণ জলে বসবাস করি, আর নীরবে আঁতুড়ে
ফুটে ওঠে ফেটে যায় নরম যে রক্তের বেলুন
সে আমাকে দেয় “ওই চারদিনের” ব্রতকথা, বিষাদগম্ভীর
পালনের বিভীষিকা, অচ্ছুৎ অচ্ছুৎ আমি, নিশাচর, নিদ্রাহীন, প্রেতিনীসমান।
এইভাবে প্রতিমাসে “ওই চারদিন” আমি ভর হই,
আমি পুষি ভয়, আর সন্দেহ, ও অনেক বিকৃতকাম মানুষের লোভ।
এই সব অভ্যাসের থেকে আমি ক্রমশই চেপে যাই, চেপে চেপে থেকে থেকে থেকে
আমার হৃদয় আজ সংকীর্ণ, ক্ষুদ্র আর শিঁটিয়ে হিংসুটে।
এ আমি জঘন্য প্রাণী, কাজ করি, কাজ করি, দিনে দিনে ন্যাকড়া পুষি,
মেনি বেড়ালের মত টেনে নিই জিনিশপত্তর শুধু এ ঘরে ও ঘরে
আমার হৃদয় আজ খোলামাঠ পাবে না যে, কে যেন বলেছে! তার কারণের মূলে
আগুন ধরালো ওরা! হায় হায় কী করেছে, মাছেদের প্রাণ
জল থেকে কেন যেন ডাঙায় তুলেছে ওরা। আজ হল মৎস্যগন্ধার কী যে আনন্দপ্রয়াণ।