আনি পাখির নাম অনেকেই হয়তো শোনেননি। বৈজ্ঞানিক নাম 'Crotophagus ani.' কুচকুচে কালো, বাংলাদেশের ফিঙে পাখির মতোই সাইজ। শুধু আমেরিকাতেই তাদের দেখা পাওয়া যায়। দু'রকমের আনি আছে। একটাকে বলা যেতে পারে 'কর্কশ-চঞ্চু' (Rough-billed), টেক্সাস ও মেক্সিকোর বাসিন্দা; অন্যটাকে 'চিক্কণ-চঞ্চু' (Smooth-billed)--ফ্লোরিডা ও ক্যারিবিয়ান দ্বীপগুলো এদের এলাকা। ইদানীং দ্বীপগুলিতে ইঁদুরের উৎপাতে এই পাখিদের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে।
বিখ্যাত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা 'আর্থ-ওয়াচ' (Earth Watch)-এর মাধ্যমে জানলাম পোর্টো রিকোয় আনিদের নিয়ে একটি গবেষণা চলছে। সেখানে স্বেচ্ছাসেবক দরকার। ব্যাস, আর কি চাই! আমিও তৎক্ষণাৎ রাজী। পোর্টো রিকো তো প্রায় আমেরিকারই অংশ, খুব কাছে এবং আবহাওয়াও সুন্দর। আফ্রিকার তুলনায় অনেক পরিচিত, তাই গুরুজনেরাও কেউ বিশেষ আপত্তি করলেন না।
জায়গাটা পোর্টো রিকো দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে কাবো রোহো ও লাগুনা কার্তাহেনা জঙ্গলের মধ্যে। নিকটস্থ এয়ারপোর্ট মায়াগুয়েজ। সেখান থেকে জীপ-এ ঘন্টা দুয়েকের রাস্তা। জঙ্গলের কোল
|
জঙ্গলের মধ্যে বলেই হয়তো বাড়িটার অবস্থা বিশেষ ভালো ছিলো না। বাতি চলে যেত যখন তখন। বেশিক্ষণ বাতি না থাকলে রান্নাঘরের ফ্রিজে রাখা খাবার নিয়ে জঙ্গলের ফরেস্ট রিজার্ভ অফিসের ফ্রিজে রেখে আসতাম। ওখানেই একটা ওয়াশিং মেশিনে কাপড় চোপড় কাচতে হতো। ইলেকট্রিসিটি থাকলেও কানেকশনগুলো ছিলো একটি অদ্ভূত রকমের। রান্নাঘরে মাইক্রোওয়েভ চালালে বাথরুমের আলো নিভে যেত।
|
চারদিক খোলা থাকার দরুন সমুদ্রের মিষ্টি হাওয়ার সঙ্গে অসংখ্য মশা, মাছি, পোকামাকড়ের অবাধ আনাগোনা ছিলো। এছাড়াও অনেক 'উন্নত' প্রাণীরা আমাদের বাড়িতে বাসা বেঁধেছিল। রান্নাঘরে ছিলো একটা ইঁদুর--নাম হটপ্লেট, কারণ সে থাকতো সেখানেই। বাথরুমে একটা বিশাল কোলাব্যাং--নাম বুফো। তাকে বাইরে ফেলে দিলেও সে ঠিক ফিরে আসতো। একটা লোমওঠা নেড়ি কুকুর--পলি--আমাদের পায়ে পায়ে ঘুরতো। শোবার ঘরে একটা মোটা গিরগিটি--নাম লিজি। বারান্দার খাঁচায় গবেষণার কাজের জন্যে দুটি পোষা আনি--নাম বার্ট ও মেসকিটা। তিন তিনটে হুলো বেড়াল তাদের ধরবার আশায় ঘুরঘুর করতো। আর বাইরে বাগানে ছিলো একটা মুরগি ও তার চারটে ছানা--তাদের কোনো নাম দেওয়া হয়নি। এতসব প্রাণী নিয়ে আমাদের বাড়িটা বেশ জমজমাট।
নীচের খোলা জায়গায় আমরা গোটা কয়েক দড়ির বিছানা (hammock) খাটিয়েছিলাম--সেখানেই শুয়ে বসে যেটুকু বিশ্রামের সময় পেতাম তো সেটা কাটাতাম।
|
|
|
পরদিন শুরু হলো তুমুল বৃষ্টি। কাজকর্ম বন্ধ, শুধু কম্পিউটারে তথ্য ঢোকানো আর তাস খেলে সময় কাটানো। সবার সঙ্গে আলাপ হলো। হ্যামকে বেশ আরামে সময় কাটানো। ভাবছিলাম ভারি মজা। কিন্তু একটু পরেই মজাটা উবে গেল। দোতলায় পায়খানার নালী বন্ধ হয়ে গেছে। সে এক বিচ্ছিরি কাণ্ড। সামনে বাগান বৃষ্টির জলে পুকুর হয়ে গেছে। যাক্ বেশিকিছু আর বলবো না--সেই বৃষ্টিতে কারিগর পাবার উপায় ছিলো না।
পরের দিন অবশ্য স্থানীয় কারিগর এসে ড্রেন পরিষ্কার, সামনের উঠোন পরিষ্কার করতে সারাদিন লাগিয়ে দিল। শুরুতেই এই। আমি তো প্রমাদ গুণলাম।
তার পরের দিন থেকে গ্রেগ উঠে পড়ে আমাদের কাজে লাগালো। আমাদের প্রধান কাজ ছিলো আনি-দের যতোটা পারি লক্ষ্য করে তথ্য জোগাড় করা। আশা, এইভাবে বোঝা যাবে ওদের সংখ্যা কেন কমে যাচ্ছে আর সেটা কী করে ঠেকানো যায়।
|
|
মাঝ-সকালে ফিরে নাস্তা--চটপট কফি, টোস্ট, ডিম ইত্যাদি--তারপর আবার জঙ্গলে। এবার বাসা-পরীক্ষার পালা। আমি যাবার আগেই গ্রেগ-এর দল প্রায় কুড়িটা গাছ দেখে রেখেছিল। সবগুলোতেই একটা করে আনির বাসা। আমাদের কাজ হলো মই লাগিয়ে, গাছে চড়ে (বেন-এর কাজ) ডিম গোনা, দেখা ডিম ফুটেছে কি না, বাচ্চা বেরোলে তাদের পায়ে ব্যাণ্ড লাগানো, ওজন করা, রক্ত পরীক্ষা করা ইত্যাদি ইত্যাদি। আর সর্বক্ষণ বাবা ও মা আনিরা মাথার ওপর চেঁচামেচি করত।
|
|
|
একটা গাছে আমরা ভিডিও ক্যামেরা লাগিয়েছিলাম--ঠিক বাসাটার ওপর। তাতে পাখিদের দৈনিক আচার আচরণ টেপ করা হতো। প্রতিদিন সেই টেপ বদলাতাম, এছাড়াও ছিল ব্যাটারি চেক করা, লেন্স পরিষ্কার ইত্যাদি ইত্যাদি।
সূর্যাস্তের সময়ে আনিরা তাদের রাত কাটানোর গাছে ফিরত। তখন আমাদের কাজ ছিল সেই গাছগুলো চিনে রাখা। পরদিন ভোরবেলা সেই গাছের কাছে জাল ছড়িয়ে রাখতাম।
|
এতসবের পর বাড়ি ফিরে বিশ্রাম, স্নান, গল্প-গুজব, কম্পিউটারে কিছু ডাটা ঢোকানো, খবর-পড়া ও ইমেল করা। প্রতিদিন এক-একেক জনের ওপর রান্নার ভার থাকত। ভাগ্যিস আমি কিছু ভারতীয় মশলাপাতি নিয়ে গিয়েছিলাম--ওদের মুরগির ঝোল, ভাত, মাছভাজা ইত্যাদি খাইয়ে অনেক প্রশংসা কুড়িয়েছি। মুশকিল হতো যেদিন থাকত গ্রেগ-এর রান্নার পালা--ওর ফরাসী রান্নার জন্যে আলাদা সামগ্রী কেনা--ঘন্টা ধরে কাটা, বাটা, সেদ্দ, রান্না, সস ইত্যাদি করতে করতে আমরা সবাই খিদেয় কাহিল আর ঘুমে ঢুলতে শুরু করতাম।
সপ্তাহান্তে আমাদের ছুটি ছিল। সেদিন বাজার করা, কাপড় কাচা, ঘর-দোর পরিষ্কার করা (পালা করে করা হতো এসব কাজ), বিকেলে গাঁইয়ে নাচের ক্লাবে যাওয়া, সমুদ্রতীরে সাঁতার, এখানে ওখানে অন্য পাখির সন্ধানে বেড়ানো এসবই চলতো।
|
পোর্টো রিকোয় সালসা ও বাচাটা নাচ খুব জনপ্রিয়। বেন, সিনডি ও জেসিকা প্রতিবেশীদের কাছে একটু আধটু শিখে নিয়েছিল। সেটাই প্র্যাকটিস করত ক্লাবে; এমনকী অজ্ঞ আমিও প্রাথমিক স্টেপগুলো শিখে নিয়েছিলাম।
সালসা নাচের আদব-কায়দাও বেশ মজার। মেয়েরা দেয়াল ঘেঁষে লাইন দিয়ে দাঁড়ায় ও ছেলেরা সামনে দাঁড়িয়ে সবাইকে চোখ দিয়ে মেপে নেয়। তারপর বাঁ-হাত বাড়িয়ে তর্জনী নাচিয়ে ডাকে একজনকে। সে-ডাকে সাড়া দিতেই হবে, না বললে চলবে না। কোনো কথাবার্তার দরকার নেই। কিন্তু ওই অজ গ্রামেও নাচিয়েরা ভীষণ দুরস্ত। তাদের তুলনায় আমরা তো একেবারেই আনাড়ি, অবশ্য অন্যান্যরা অল্পবয়সী বলেই উৎসাহিত ছিল বেশি। আমার তো লাইনে দাঁড়ালেই বুক ধুকপুক--কে ডাকবে কে জানে। অবশ্য কেউ কখনো অশালীন আচরণ করে না। এটিকেট খুব কড়া।
একবার আমরা হ্যালোউইন পার্টিও করেছিলাম। টয়লেট পেপার পেঁচিয়ে আমি ওদের মিশরীয় মমি বানিয়ে দিয়েছিলাম। সেদিন ক্লাবে ছিল কস্টিউম পার্টি। খুব জমেছিল।
|
এতসব পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলাফল যে কী তা হয়ত আপনারা জানতে চান। সেটার কথাই বলি একটু। আমি ওখানে তিন সপ্তাহ কাটিয়েছিলাম। অন্যরা ছিল কয়েকমাস থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত। তাই তথ্য সংগ্রহ করে তার বিশদ আলোচনা ওরাই করেছে। আমার কাজ শুধু কয়েক-পাতা তথ্যের সংগ্রহণ।
আনিরা পক্ষীসমাজে অন্যতম এই কারণে যে এরা ১০-১২টা পাখি একসঙ্গে বাসা বাঁধে ও এক বাসায় ১০-৪০টা পর্যন্ত ডিম পাড়ে। পাখিদের মধ্যে আনি, জে ও একর্ন কাঠঠোকরাই একমাত্র এরকম বাসা বাঁধে। আফ্রিকার অস্ট্রিচও করে বোধহয়। আর কোনো উদাহরণ আমার জানা নেই।
|
একসঙ্গে বাসা বাঁধার উপকার আছে। সবাই মিলে বাসা পাহারা দেয়। ডিম ও বাচ্চাদের দেখাশোনায় সাহায্য করে। কিন্তু এর অপকারও আছে। আনিরা জুটি বাঁধলেও জুটির বাইরে পরকীয়া প্রেম চলে খুব। তার উদাহরণ পেয়েছি বাবা, মা ও ডিম-এর ডিএনএ পরীক্ষা করে। এছাড়াও অনেকগুলো ডিম পাড়ার জন্যে পুরনো ডিমগুলো তলায় ঢাকা পড়ে যায় আর খারাপ হয়ে যায়। কখনো কখনো আনিরা নিজেদের ডিম বাঁচাতে অন্যদের ডিম বাসা থেকে ফেলে দেয়। গাছের তলায় ভাঙা ডিম আমরা অনেক দেখেছি।
নিজেদের ডিম বাঁচাতে আনিরা আরো অনেকরকমের চাতুরি করে। পাড়ার আগে ডিমের ভেতরে বেশি করে Androgen (পুং হরমোন) যোগ করে, যাতে বাচ্চারা বেশি শক্তিশালী হয় এবং অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে লড়াইয়ে জিতে যায়। পাখি ও বাচ্চাদের রক্ত পরীক্ষা করে এই হরমোন মেপে দেখেছে গ্রেগ ও তার সহকর্মীরা। এইসব তথ্যই আনি সম্বন্ধে আমাদের জ্ঞানবৃদ্ধি করে ও এদের সংরক্ষণে সাহায্য করে।
এছাড়াও গ্রেগ ও তার দল ইঁদুরকলে ধরা ইঁদুর গুণে দেখেছে কোন্ কোন্ জায়গায় তাদের উপদ্রব বেশি। সেখানে ইঁদুর তাড়াবার ব্যবস্থা করে শুধু আনিই নয় অন্যান্য পাখিদেরও বাঁচাবার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই মেঠো ও জংলী ইঁদুররা গাছে চড়ে বাসায় পাখির ডিম ও বাচ্চাদের নষ্ট করে। পোর্টো রিকোয় স্প্যানিশ নাবিকদের জাহাজে চড়ে ইঁদুররা প্রথম এই দ্বীপগুলোয় আসে। তারপর গত পাঁচশ' বছর ধরে এদের উপদ্রব বেড়েই চলেছে।
ইঁদুর ছাড়াও বাসায় অনেকসময় পোকামাকড়ের উপদ্রবে বাচ্চা (পালক না-ওঠা) পাখিরা মারা যায়। আমরা বটফ্লাই নামক মাছির ডিম ও লার্ভা দেখেছি বাচ্চা পাখির চামড়ার নিচে। আনিদের বাসায় এর উপদ্রবের এটাই বোধহয় প্রথম উদাহরণ।
একদিন পাখিদের পিছনে দৌড়তে দৌড়তে কাঁটা-তারে ক্ষতবিক্ষত হয়ে আমি দলছাড়া হয়ে পড়েছিলাম। এমনিতেই আমার দিক্জ্ঞান খুব দুর্বল। তার ওপর জঙ্গলে একলা পথ হারিয়ে ফেলে মোটেই কঠিন নয়। তবে আমার তেমন দুশ্চিন্তা হয়নি। মোটামুটি বড়ো রাস্তাটা কোনদিকে সেটা মনে ছিল। তাই আমি সেদিকে হাঁটা দিলাম। আশা ছিল রাস্তায় দাঁড়ালে আমার বন্ধুরা জিপ-এ তুলে নেবে।
শুরু হলো টিপ টিপ করে বৃষ্টি। বেলা পড়ে আসছে। আমি ছেঁড়া জামায় জলে কাদায় ভূত হয়ে দাঁড়িয়ে আছি রাস্তার ধারে। গ্রেগ-এর জিপ-এর দেখা নেই। তার বদলে আমার সামনে পুলিশের গাড়ি এসে দাঁড়াল। আমাকে দেখে মনে করেছিল দুঃস্থ ডমিনিকান রিপাবলিকের লোক, বেআইনিভাবে পোর্টো রিকোতে ঢুকেছি। অতএব গন্তব্য এখন জেল। ডমিনিকান রিপাবলিক সমুদ্রের ঠিক ওপারে বলে অনেক বেআইনি এদেশে ঢুকে পড়ে। তাই পুলিশদের কড়া নজর। আমি ভাঙা ভাঙা স্প্যানিশে বোঝাবার চেষ্টা করলাম--তাতে ওদের সন্দেহ দূর হলো না, তবে আমার স্প্যানিশ শুনে বুঝলো যে আমি ড.রি. থেকে আসিনি। তাহলে নিশ্চয়ই হেইতি থেকে এসেছি--ওরা তো ফরাসী বলে, তাই স্প্যানিশ ভালো জানে না। হেইতিও খুব কাছে। তাই ওরা ধরে নিল আমার নিশ্চয়ই কোনো বদ মতলব আছে--হয়তো ড্রাগ পাচার করছি, কিংবা হয়তো বা বেশ্যা!
হঠাৎ আমার মনে পড়লো ব্যাগের মধ্যে আছে ডিজিটাল ক্যামেরায় তোলা আমার বাড়ি, পাখি, বন্ধুরা ও যন্ত্রপাতির ছবি। আমি দেখাতে দেখাতে আবার বোঝাতে চেষ্টা করলাম। এইবারে ওদের বুদ্ধি খুলল একটু। ওদের মধ্যে একজন গ্রেগকে চিনতো। আমার ক্যামেরায় ওর ছবি দেখে সন্দেহ নিরসন হলো।
তারপরে কী অভ্যর্থনা, কতোই না প্রশংসা--কতোদূর থেকে আমি এসেছি এমন একটা ভালো কাজ করতে; কতোই না উপকার করেছি ওদের ইত্যাদি। তারপর জিপ-এ করে আমায় বাড়ি পৌঁছে দিল। রাস্তায় গ্রেগ-এর দলের সঙ্গে দেখা। ভয়ে ওদের তো মুখ শুকনো। আমার কিছু হলে পুরো দায়িত্ব ওদেরই। তাই আমায় ফিরে পেয়ে সবাই হাঁফ ছেড়ে বাঁচল। শুধু পুরো কাহিনি শুনে গ্রেগ বলল গোমড়া মুখে--"তোমায় কী করে ওরা হেইতির লোক বলল? তোমার ফ্রেঞ্চ তো স্প্যানিশের চেয়েও খারাপ!"
|
রাস্তা হারানো ও বাথরুমের গণ্ডগোল সত্ত্বেও আমার হাঁটুর বয়সী বন্ধুদের সাঙ্গে সময়টা কিন্তু খুব মজায় কেটেছিল। সেই সঙ্গে পাখি সম্বন্ধে হাতে কলমেও অনেক জ্ঞান হয়েছিল। তবু, একথাও স্বীকার করতেই হবে যে এরকম ফিল্ড ওয়র্ক কুড়ি-বাইশ বছরের ছেলে-মেয়েরাই করতে পারে। সেজন্যেই তাদের ইউনিভার্সিটিতে গ্রাজুয়েট বা পোস্ট-গ্রাজুয়েট কাজে নেওয়া হয়। আমার নিজস্ব জিনিসপত্র--ক্যামেরা, বাইনোকুলার, জলের বোতল, মশার ওষুধ, সানস্ক্রিন, পাখির গাইডবই ইত্যাদি ছাড়াও বইতে হতো মই, স্পটিং স্কোপ, রেডিও স্ক্যানার, বিরাট জাল, পাখির খাঁচা, ব্যান্ডিং কিট্, ব্যাটারি, স্পিকার ইত্যাদি ইত্যাদি। এইসব নিয়ে কাঁটা-তারের বেড়া ডিঙোনো, জলে কাদায় আছাড় খাওয়া আর্মি পিঁপড়ের কামড় সহ্য করা--আর সবার ওপর খটখটে রোদ্দুর ও গরম। নাঃ আমার শিক্ষা হয়েছে খুব। ওই নোভা, নেচার, ডিসকভারি চ্যানেলে পশুপাখির প্রোগ্রামের পিছনে কতো পোস্ট-গ্রাজুয়েটের হাড়-ভাঙা খাটুনি আছে তা এখন খুব বুঝতে পারি।
তারা সবাই আমার নমস্য।