নাবাতিয়ানদের নাম হয়তো অনেকেই শোনেননি। তুর্কী, রোমান, আসিরীয়, পার্সিয়ানদের মতো এদের বিরাট কোনো সাম্রাজ্য ছিলো না। মধ্যপ্রাচ্যের ঊষর মরুভূমিতে একটু সবুজ-ছোঁয়া উপত্যকায়, জর্ডন নদীর পশ্চিমপ্রান্তে ছিলো এদের বসবাস। সে এখন অ-নেক দিন আগের কথা। যীশুখ্রিষ্টের জন্ম হতে তখনো দেড়শ' বছর বাকি। পুণ্যতোয়া হতে জর্ডন নদীর আরো কয়েক বছর।

ক্রুসেডারদের দুর্গের ভগ্নাবশেষ (৮০০-১০০০ খ্রিষ্টাব্দ)
|
মধ্যপ্রাচ্যে তখন হাতে-গোণা কয়েকটি ছোটখাট রাজ্য। মরু-অংশ কারুরই দখলে নেই। তার মধ্য দিয়ে আনাগোনা করতো সিল্ক-রুটের বণিকরা। সুদূর চীন ও ভারত থেকে তারা আনতো রেশম, মশলা ইত্যাদি; বাণিজ্য চলতো দক্ষিণ ইয়োরোপ ও উত্তর আফ্রিকার দেশ পর্যন্ত। মরুভূমিতে ভবঘুরে বেদুইনদের দল। এরা এইসব বণিকদের কেনাবেচায় সাহায্য করতো। নাবাতিয়ানরা ছিলো এইরকম একদল বেদুইন। সিল্ক-রুটের দাক্ষিণ্যে এদের হাতে জমল পয়সা। আর তার ফলে ভবঘুরে অভ্যাসটা ঘুচল। জর্ডন নদীর ধারে এক উর্বর উপত্যকায় এরা রাজত্ব শুরু করলো। এদেরই রাজধানী হলো পেট্রা। প্লিনির ইতিহাসে "লাল পাথরের নগরী" বলে এর বিবরণ আছে; বাইবেলের পাতাতেও ওইরকম রাজত্বের বর্ণনা পাওয়া যায়।
এইসব সত্ত্বেও আমরা নাবাতিয়ানদের সম্পর্কে বিশেষ কিছুই জানি না। প্রত্নতাত্ত্বিকরা খোঁড়াখুঁড়ি করে দেখেছেন যে নাবাতিয়ানরা খুব আধুনিক পদ্ধতিতে জল বয়ে এনেছিলো এবং ওইভাবে মরুভূমির ভিতরেই একটি সুন্দর মরুদ্যান তৈরি করেছিলো। সিল্করুটের বণিকদের কেনাবেচা করার প্রশস্ত সুযোগ।
কিন্তু এই সুবর্ণযুগ বেশিদিন রইলো না। প্রায় দুশ' বছরের মধ্যেই রোমানরা এদের দখল করে নিল। তাদের অধীনে আস্তে আস্তে পেট্রার অবনতির শুরু। তারপর ৩৬৩ খ্রিষ্টাব্দে এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে সব ধ্বংস হয়ে গেলো। আবার গড়ে তোলবারও কেউ রইলো না। পেট্রার নাম ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে গেলো।
পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন কিন্তু হয়নি। আশেপাশের লোকেরা পেট্রার কথা জানতো। তবে উঁচু পাহাড় ডিঙিয়ে ওখানে যাওয়া ছিলো কঠিন। ১৮১২ সালে যোহান লুডভিগ বুর্কহার্ডট (Johann Ludwig Burkhardt) একে পুনরাবিষ্কার করেন। এইখানেই পরে ১৯১৭ সালে লরেন্স ('অফ অ্যারেবিয়া') তুর্কীদের যুদ্ধে হারান। সম্প্রতি পৃথিবীর অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থান হিসেবে ইউনেস্কো দ্বারা স্বীকৃত হয়েছে পেট্রা। তারই তাগিদে জায়গাটা খুঁড়ে পরিষ্কার করে ও দর্শনার্থীদের জন্য সুগম করে তোলা হয়েছে। খোঁড়াখুঁড়ি ও গবেষণা চলছে এখনও। ১০০ বছরের গবেষণা সত্ত্বেও শোনা যায় নাকি মাত্র এক-শতাংশ খুঁড়ে বার করা হয়েছে। অর্থাৎ নাবাতিয়ানদের সম্পর্কে আমাদের এখনো অনেক কিছুই জানা বাকি।
পেট্রা জর্ডন-এর এবং সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম বিশিষ্ট দ্রষ্টব্যস্থান। রহস্যময় নাবাতিয়ানদের এই লাল পাথরের রাজধানী দেখার ইচ্ছা আমার অনেকদিনের। রাজধানী আম্মান থেকে প্রায় তিন-ঘন্টার মোটর-রাস্তা। পুণ্যতোয়া জর্ডন নদীর সঙ্গে সমান্তরাল দক্ষিণে উষর, খোলা, জনশূন্য মরুভূমির মধ্য দিয়ে দু'টি হাইওয়ে--ডেজার্ট ও কিংস। আমরা ডেজার্ট রাস্তা দিয়ে মরুভূমি দেখতে দেখতে চলেছি। কোলে রসে টুসটুসে মিষ্টি খেজুরের প্যাকেট। আমাদের গাইড জর্ডনের বাসিন্দা কিন্তু জাতিতে মুসলিম রাশিয়ান।

রাস্তার ধারে সাইনপোস্ট--গুলিতে ছিন্নভিন্ন
|
পথে পড়ে টিলার উপর ভাঙাচোরা ক্রুসেডারদের দুর্গ। কতো যে ইতিহাস লুকোনো আছে কে জানে। রাস্তার পাশে দেখি সাইনপোস্টগুলি মেশিনগানের গুলিতে ছিন্নভিন্ন। ইতিহাস থেকে হ্যাঁচকা টানে বর্তমানে ফিরে আসি।

পেট্রা--যেন চাঁদের পাহাড়ে পৌঁছে গেছি
|
ডেজার্ট হাইওয়ে থেকে পেট্রার ছোটো রাস্তায় বাঁক নিতেই মনে হলো যেন চাঁদের পাহাড়ে পৌঁছে গেছি। চারদিকে জনমানবশূন্য মরুভূমি আর ছড়ানো ছেটানো নানা আকারের কিম্ভূত-কিমাকার পাথরের টিলা। পড়ন্ত বিকেলে বৃষ্টি শুরু হলো ও তার সঙ্গে ঘন কুয়াশা। কোনো রকমে আস্তে আস্তে গাড়ি চালিয়ে হোটেলে পৌঁছতেই অন্ধকার নেমে এলো।
পরদিন ভালো করে চারদিক দেখার সুযোগ পেলাম। ট্যুরিজমের দৌলতে ছোট্ট গাঁ-টা বেশ রমরমে হয়ে উঠেছে। জায়গাটা এক উঁচু পাহাড়ের গায়ে। থাকে থাকে সাজানো নানারকমের হোটেল, ট্যুরিস্ট অফিস ও শস্তা স্যুভেনিরের দোকান। ওইসব কাটিয়ে পেট্রার প্রধান টিকেট-অফিসে পৌঁছলাম। একটি ছোটো চালাঘর। তাও নাকি এখন উন্নত হয়েছে, আগে এটা ছিলো পাহাড়ের এক গুহার মধ্যে!

পথের ধারে বিশ্রামরত বেদুইন
|
ট্যুরিস্ট-অফিস থেকে পেট্রার পাহাড়ের গুহামুখে যাবার জন্য অনেক বেদুইন তাদের ঘোড়া, গাধা বা উট নিয়ে হাজির। পাহাড়ি পথে হাঁটতে কষ্ট হলে এসাব ভাড়া করা যায়। ভারতের মতোই চেঁচামেচি, দর-দস্তুর করতে হয়। আমরা পায়ে হেঁটেই চললাম। সঙ্গে আরবী গাইড স্যামি। সে নাকি জর্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্নতত্ত্বের ছাত্র ছিলো। এই পেট্রাতেই তার ফিল্ড-ওয়র্কের হাতেখড়ি। পাশ করে কাজের অভাবে ট্যুর-গাইডের কাজে নেমেছে। আমরা তো আসল প্রত্নতত্ত্ববিদ্ গাইড পেয়ে ভীষণ খুশি। ওর কাছে পেট্রার উপর অনেক গবেষণামূলক প্রবন্ধ ও ছবি ছিলো। সারা রাস্তা আমাদের অফুরন্ত প্রশ্নের জবাব দিয়ে চললো বেচারা স্যামি।

পাহাড়ের গায়ে সারি সারি সমাধিগুহা
|
একটু পরেই বুঝলাম পেট্রা আসলে এক সমাধি-নগরী (Necropolis)। পাথুরে রাস্তার দু'দিকে পাহাড়ের গায়ে বা গুহামুখে কেটে বসানো চাঁই--ভিতরে কোনো নাবাতিয়ানের শেষ-শয্যা। তাদের সমাধির রীতিনীতি ঠিক কিরকম ছিলো তা কেউ জানে না। মৃতদেহের সঙ্গে মণিমুক্তা, দামি জিনিস, লেখা ইত্যাদি সবই অনেক বছর আগে লুঠ হয়ে গেছে।

থামের সারি, পেট্রা
|
প্রথমেই চোখে পড়ে বিরাট চৌকো মতো পাথরের এক চাঁই। চার দিকে তার থাম দেওয়া। দেয়ালে আবশা লেখা পড়া যায়--সেটা নাবাতিয়ানদের ভাষা ও গ্রীক ভাষায় লেখা সমাধিস্থর নাম ইত্যাদি। অন্যন্য কবরগুহা থেকে এটা আলাদা করে চেনা যায়।

পেট্রায় ঢোকার সরু ও উঁচু গুহাপথ
|
আরও একটু হেঁটে আমরা আসি উঁচু এক পাহাড়ের দেয়ালের সামনে। পাহাড়ে সরু একটা ফাটল। সেই গুহাপথ-এ (canyon)
ঘন্টাখানেক হেঁটে উলটোদিকে পাহাড় ভেদ করে পেট্রার আসল রাজধানীতে পৌঁছতে হয়। সহজেই বোঝা যায় -- রাজধানী রক্ষার জন্যই এইরকম গুহাপথ, এবং নিশ্চয়ই তা বেশ দুর্ভেদ্য ছিলো।

গুহাপথের পাশে দেয়ালে দেবতার কুলুঙ্গি
|
এই গুহাপথকে এরা বলে 'সিক' (Siq) বা থানিয়া (Thaniya)। লম্বায় প্রায় ১ কিলোমিটার সরু রাস্তা, দুই দিকে খাড়া কমলা-লাল রঙের পাহাড় একেবারে সোজা উঠে গেছে একশ' পঞ্চাশ মিটার উঁচুতে। উপরে এক চিলতে আকাশ দেখা যায়। দেয়ালের গায়ে গায়ে খাঁজকাটা কুলুঙ্গির মতো। সেখানে নাম-না-জানা প্রাক্-খ্রিষ্টান প্রাক্-ইসলাম আরবী ধর্মীয় দেব-দেবীর মূর্তি বসানো। কালের প্রভাবে বেশিরভাগই ক্ষয়ে গেছে। বাকিটুকু আরো রহস্যময় হয়ে উঠেছে।

গুহাপথের একধারে সরু জলের নালী
|
সিকের বাঁ-দিকে পাহাড়ের গায়ে গায়ে চলে গেছে সরু জলের নালী। এই দিয়েই বাইরের নদী থেকে পানীয় জল যেত পেট্রার অভ্যন্তরে। নালীটাও খুব বৈজ্ঞানিকভাবে তৈরি--যাতে কোথাও জল আটকে না যায় বা উপচে পড়ে নষ্ট না হয়। মাঝে মাঝে এক একটা জায়গায় পাথরের নুড়ি রাখা যাতে জলটা পরিশ্রুত হয়ে যায়। দু'হাজার বছর আগে এইসব কেরামতি সত্যিই আশ্চর্যের ব্যাপার।
গলিটার শেষমুখে সরু ফাটলের ভিতর দিয়ে সূর্যোজ্জ্বল পেট্রার ঝিলিক দেখা যায়। সিকটা শেষ হয় এক বিশাল চত্বরে। সামনেই পেট্রার সবথেকে বিখ্যাত রাজকোষ ভবন (Treasury)। পাহাড়ের গায়ে পাথর কুঁদে নানারকম কারুকার্য সমেত থাম, দরজা ও অলিন্দ তৈরি করা হয়েছে। দোতলা বাড়িটার মধ্যমণি--দরজার ঠিক মাঝখানে--এক রাজভাণ্ডার। লোকে প্রথমে ভেবেছিলো ওর ভিতর হয়তো মণিমুক্তো পাওয়া যাবে, কাজেই সেটাকে ভেঙেছিলো যথারীতি। কিন্তু কিছুই পাওয়া যায়নি। এখন সেটা ভাঙা অবস্থায় মানুষের লোভের প্রমাণ হয়ে শোভা পাচ্ছে।

সেই বিখ্যাত রাজকোষ ভবন, ভিতরে যাবার হুকুম নেই
|
রাজকোষের ভিতরে যাবার হুকুম নেই। গবেষণার জন্যে এখনো চারপাশে খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। মাটির নীচেও একতলা আবিষ্কার হয়েছে। সেই কাজটাই স্যামি শুরু করেছিলো। পাথরের গভীরে আরো কতো কি যে লুকিয়ে আছে কে জানে। এমনকী বাড়িটা সত্যিই রাজকোষ ছিলো কিংবা কারুর সমাধিস্থান তারও উত্তর জানা নেই।
হয়তো পাঠকের মনে আছে হ্যারিসন ফোর্ড ও শ্যন্ কনারির জনপ্রিয় সিনেমা 'ইণ্ডিয়ানা জোন্স অ্যাণ্ড দ্য লাস্ট ক্রুসেড' এই পেট্রাতেই তোলা হয়েছিলো। সেই সরু গুহাপথ দিয়ে ঘোড়া চালানো ও রাজকোষের ভিতরে দু'হাজার বছর আগের 'হোলি গ্রেইল' ও রোমান প্রহরীর দেখা পাওয়া--অবশ্য সবই সিনেমার গল্প। এখনো পেট্রায় সেই পবিত্র পেয়ালার নাম-গন্ধও পাওয়া যায়নি।

রাজকোষ ভবনের স্তম্ভের কারুকার্য
|
রাজকোষের সামনে অনেকগুলো উট--বেশ রংচঙে ঝালর, গয়না ইত্যাদি দিয়ে সাজানো। সঙ্গের বেদুইনরা ওই উট ভাড়া দেয় যাত্রীদের সুবিধার জন্য। রাজকোষের চারদিকে ছড়ানো ছেটানো আরও নানা টিলা ও ভিতরে মন্দির বা সমাধিস্থান--এখন সবই খালি। ভর দুপুর রোদে পাথুরে রাস্তায় হেঁটে ক্লান্ত আমি। মনে হয় একটা উট পেলে ভালো হতো।
রাজকোষ ছাড়িয়ে ডানদিকে একটু এগোলে বাঁদিকে পড়বে একটি রোমান অ্যাম্ফিথিয়েটার। সেই পরিচিত গোল হয়ে ধাপে ধাপে সিঁড়ি উঠে গেছে। মাঝখানে খোলা মাঠে খেলাধূলা, গান, অভিনয় ইত্যাদির জায়গা। একেবারে শেষ উঁচু ধাপের পিঠেই খাড়া পাহাড় ও পাথরে কোঁদা কবরস্থান। ওইখানেই পিঠ ঠেকিয়ে দর্শকরা খেলা দেখতেন।
 অ্যাম্ফিথিয়েটারের পিছনের দেয়ালেও সমাধিগুহা
|
এরপর অনেকগুলি রাস্তা এঁকেবেঁকে চলে গেছে। সব জায়গাতেই পাহাড়ের গায়ে সমাধির জন্যে গুহা খোদাই করা। বেশিরভাগই সাদামাটা, কারুকার্য বিহীন। নিশ্চয়ই সাধারণ বা গরীব প্রজাদের জন্য তৈরি। একটু এগিয়ে ডানদিকে উঁচুতে কতকগুলো গুহা। বাইরেটা অনেক যত্ন করে সাজানো, থাম ইত্যাদিতে কারুকার্য। এটা হলো রাজসমাধি--রাজার পরিবারের লোকেদের জন্য তৈরি। শ্রেণিভেদ পরিষ্কার বোঝা যায়।
 রাজসমাধির গুহাসমষ্টি
|
আরও আছে--ডজনখানেক সারিবদ্ধ থাম। উপরে হয়তো ছাদ ছিলো। ছিলো দেয়াল চারিদিকে। হয়তো বা বিরাট বাজার বসতো এখানে। গমগম করতো জনতার কন্ঠস্বরে। বন্যা, ভূমিকম্প, হাওয়া ও বালিঝড়ে এখন সেসব নিশ্চিহ্ন।
এলোমেলো ভাবে ঘুরে বড়ো রাস্তাটা একসময় একটা ছোটো পাহাড়ি ঝরনাতে শেষ হয়। উপরে ছোট্ট একটি সেতু। তার ওপাশে ক্লান্ত পর্যটকদের সেবায় একটি রেস্তোরাঁ এবং পাশেই ছোটো মিউজিয়াম। এ সবই সম্প্রতি তৈরি হয়েছে।
ফেরার পথে আমাকে দুপুর রোদে খোঁড়াতে দেখে বেদুইনদের দল ছেঁকে ধরলো। এ বলে আমার উটে চড়ো, ও বলে না, আমার দাম কম। শেষ পর্যন্ত ওদের হাত থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্যেই আমি একটা ঘোড়ায় টানা টাঙ্গায় চড়ে বসলাম। চালকও একজন বেদুইন। এদেরই পূর্বপুরুষরা সিল্ক-রুটের বণিকদের সঙ্গে ব্যবসা করে এই রাজ্য গড়ে তুলেছিলো। এখন এরা ক্লান্ত যাত্রীদের টাঙায় চড়িয়ে দু'পয়সা কামায়। মেয়েরা পুঁতির মালা ইত্যাদি বিক্রি করে রাস্তার ধারে। একসময় এরা এখানেই থাকতো ও ঘুরে বেড়াত। এদের স্থানীয় নাম "বেদুল"। এখন সরকার এদের চোখের আড়াল করেছে। একটু দূরে একটা গাঁয়ে এরা থাকে। দিনশেষে দোকান-পাট গুটিয়ে বাড়ি ফেরে।

স্যামি নাবাতিয়ান প্রহরীর অস্ত্র পরীক্ষা করছে
|
রাজকোষের সামনে ও সিক-এর প্রবেশ-মুখে দেখেছিলাম রোমান পোষাক ও বর্ম-পরিহিত রক্ষী। স্যামি তাচ্ছিল্যভরে জানালো কেউ তো জানে না নাবাতিয়ানরা কী ধরনের পোশাক পরতো। তাই ট্যুরিস্টদের মনোরঞ্জনের জন্য ওদের রোমান পোষাকই পরানো হয়েছে।
আমি ভাবলাম এই-ই যথেষ্ট। ট্যুরিস্টদের সংখ্যা বাড়াতে যেন এরা জায়গাটাকে একটা ডিজনীল্যাণ্ড না বানিয়ে ফেলে। এই মরুভূমি, গোলাপী পাহাড় ও রহস্যময় গুহা যেন এইরকমই থাকে আরো কয়েক হাজার বছর।
ব্যাস্--পেট্রা-ভ্রমণ শেষে এবার বাড়ি ফেরার পালা। বন্ধুদের ছড়া লিখে পিকচার পোস্টকার্ড পাঠাবো--
ছন্দা বিউট্রা
ঘুরে এলো পেট্রা
দেখে এলো মরু, গাধা
উট এট্-সেট্রা।

যাত্রীদের অপেক্ষায় উটের সারি
|