১. কিথ প্যাট্রিকের স্মৃতি
আমার কবিতা জুড়ে একটি কবন্ধ শব সারারাত জ্যোৎস্নায় ভিজেছে
আমার কবিতা জুড়ে তমিস্রায় রূঢ় বাস্তবতা
একটি বিষণ্ন স্তব তবু আজ পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে
সাগর পেরিয়ে দ্যাখো ভেসে যায় সুদূরে মাউন্ট রেনিয়ারে
সিয়াটল উপকূলে না দ্যাখা নির্জন এক সমাধিকে খুঁজে
আমার সমস্ত গান ভেসে যায় সান্তা মনিকায়
ভিজে তটভূমি বেয়ে পড়ে থাকা পদচিহ্ন ছুঁয়ে
আমার কবিতা আজ পৌঁছে যাবে ব্রাসিলের কোপাকাবানায়
আরও আরও দূরে বুঝি মন্টিসি গ্রামে ইটালীতে
বিনম্র অতীতে আজ পরিশ্রান্ত কবিতা ফিরেছে
আমার কবিতা বুঝি কোনো এক তীব্র শোকে
সারারাত সারাবিশ্বে জ্যোৎস্নায় ভিজেছে ৷৷
বিবর্ণ এলিজিগুলি এভাবেই গড়ে ওঠে
প্যাসিফিক উপকূলে পরিশ্রুত বৃষ্টির ধারায়
না দ্যাখা নির্জন এক সমাধিকে ঘিরে ভাঙে ঢেউ
আমারই সঙ্গে কেউ একদিন হেঁটেছিলো
বিশ্বজোড়া এইসব পথে
না দ্যাখা কবরে তার ভরে আছে স্মৃতি বুঝি
অজস্র ক্রিসমাস আর থ্যাঙ্কসগিভিং-এর
ফেরেনা ফেরেনা তারা
জানিনা কিসের টানে ফিরে আসে স্যামনের ঝাঁক
সিয়াটলে আজ গাঢ় রাতে
নতজানু হবে মৃত্যু হিংস্র নির্মোকটিকে খুলে
বিবর্ণ এলিজিগুলি ফিরে আসে অবশেষে
না ফেরার প্রতিশ্রুতি ভুলে ৷৷
২. শরণঙ্করশ্রী দাসের স্মৃতি
দরজা খোলাই ছিলো তা’বলে কি চলে যেতে হবে?
যেওনা যেওনা বলে দু’হাত জড়িয়ে তাকে ডাকেনি কি পুষ্পিত সকাল?
জানি ডেকেছিলো;
তবু সেই চলে যাওয়া ছাড়িয়ে জড়িয়ে ধরা হাতে
উড়ছে বিষণ্ণ ছাই বিবর্ণ এলিজি হয়ে গঙ্গার কিনারে মাঝরাতে:
তাকে যেতে হ’লো
হয়তো যাওয়ার কথা ঠিকঠাক ছিলো শুধু আমি জানিনিতো,
সে কি জেনেছিলো?
না কি কেউ জানে?
জানে কি কতটা ঘুণ ধরে থাকে রং করা পুরোনো খিলানে এই
দু’একটা যুগ অবসানে
যখন স্মৃতিরা ভাসে আকাশের নীল চাঁদোয়ায়
একই সাথে ঘটে যায় চন্দ্র আর সূর্যের গ্রহণ
রাজা ও উজীরে আড্ডা বেদম জমাটি হ’লো
দারুণ ম্যাজিক আজ হবে হবে শুরু
সবাই দাঁড়িয়ে আছি প্ল্যাটফর্ম আলো ক’রে
কোন ট্রেনে উঠে গেলি গুরু!