• Parabaas
    Parabaas : পরবাস : বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • পরবাস | সংখ্যা ৫০ | ফেব্রুয়ারি ২০১২ | কবিতা
    Share
  • দু'টি কবিতা : যশোধরা রায়চৌধুরী


    কালারফুল বিবর্ণতা

    বিবর্ণতা এত এত নিজেকে জানায়
    বিবর্ণতা এত এত প্রবণতা নিয়ে
    আসে, আর খেয়ে নেয় যাবতীয় রঙের আখ্যান
    বিবর্ণতা চলে আসে নিজস্ব নির্মাণ নিয়ে,
    এত এত ঢং নিয়ে আসে যে প্রতিটি দিন আপাত রঙিন মনে হয়
    ভেতরে ভেতরে তুমি জানো
    বিবর্ণতা বিবর্ণতা ছাড়া কিছু নয়।

    যদিও সে উত্থান জানায়
    যদিও সে প্রশ্রয় বানায়
    কালারফুল বিবর্ণতা আলুথালু ভালোবাসা উত্তেজনা দেয়
    বিবর্ণতা যা কিছু নতুন তাকে ঘাঁটে, দেখে, নেয়,
    বিবর্ণতা তারপর একটু একটু করে
    ক্লান্ত ও বিবর্ণ হতে থাকে
    অস্বস্তি বাড়ায় তার সঙ্গে সঙ্গে,
    বিবর্ণতা সঙ্গে নিয়ে রাখে
    কিছুটা অশ্লীল আর অলীক আমোদ
    ঘামহীন সঙ্গম, রতি
    অশরীরী কামকেলি, গন্ধহীন রঙিনতাবোধ

    আসলে তো, বিবর্ণতা ঝালহীন বড়ো ক্যাপসিকাম
    সুপারমার্কেট ঘেঁটে যাকে আমি, কী রঙিন, কিনে আনলাম।


    প্রথাগত কবিতা

    রাসমন্দিরের নিচে জমা অন্ধকারে
    তোমাদের প্রতিমা ভাঙে, গড়ে।
    সে মুখে করুণ আলো, সে আলো পৃথক।
    সে মাতা বিবর্ণ মাতা, শোলাসাজহীন।

    এই অপরূপ বাস্তবতা
    আমি পলায়নপর, দেখে নিই, ছলাকলাভরে
    কেঁদে নিই দুই-পালা, মিনতির দ্যুতি
    ছড়ায় দোপাটিপুষ্পে, মিটিমিটি প্রদীপবর্তিকা
    জ্বলে ওঠে, নিবে যাবে বলে।

    আমি দেখি আরো
    প্রকৃতপ্রস্তাবে কোনো ধোঁয়া নয়, কুয়াশার মতো
    পুকুরের পাড়ে পাড়ে প্রেত ঘোরে ফেরে
    কতিপয় ছেলেমেয়ে জোড়ায় জোড়ায়
    পাড়ার যুবকে, গাঢ় পুরুষালি ঘাড়ের কেশরে
    ধুকপুক বুকে হাত, মেয়েটির নত অবয়বে
    জলের ছলাৎ আলো...
    তারপর আলো ভেঙে যায়।

    ভেঙে দিই আমি সেই দ্যুতি, মায়া, মোহ।
    বাড়িখানি দুলে ওথে, পালাগান শেষ হয়ে গেলে
    রাসমন্দিরের নিচে মৃদু অন্ধকারে
    কণ্ডোমের কথা এসে পড়ে
    বাহাত্তর ঘন্টার ট্যাবলেটের কথা এসে পড়ে
    আর ব্লেড চমকানো। অ্যাসিড বাল্‌ব-এর ছলাচ্ছল।



    অলংকরণ (Artwork) : অলংকরণঃ অনন্যা দাশ
  • এই লেখাটি পুরোনো ফরম্যাটে দেখুন
  • মন্তব্য জমা দিন / Make a comment
  • (?)