![]() |
!---
---
যে প্রশ্নগুলির উত্তর এখন জানা নেই কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে সমাধানের আশা আছে তার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করা, আকস্মিক ও অপ্রত্যাশিত আবিষ্কারের উদ্দীপনা ও বিস্ময়বোধ অল্পবয়েসীদের তো বটেই, জিজ্ঞাসু প্রাপ্তবয়স্কদের দৃষ্টিভঙ্গিও পালটে দিতে পারে । আলোচ্য বইটির দ্বিতীয়ার্ধে এই গুণগুলির কয়েকটা দেখে তৃপ্ত হলাম ।
পলাশ বরণ পাল সম্পাদিত বিজ্ঞান গ্রন্থমালার অন্তর্গত ড. সুকন্যা সিংহের `মহাকর্ষের কথা' বইটিতে এই বিষয়ে প্রাচীন ও আধুনিক গবেষণার সুন্দর বিবরণ রয়েছে । প্রাচীন গ্রীসের বিশুদ্ধ চিন্তা ও যুক্তি নির্ভর `ন্যাচারাল ফিলজফি'র সীমাবদ্ধতা থেকে কোপার্নিকাসের বৈপ্লবিক সৌরকেন্দ্রিক ধারণা একটি বিশাল পদক্ষেপ । তারপর কেপ্লারের আবিষ্কৃত গ্রহদের পথ চলার নিয়ম ও গালিলিওর পরীক্ষামূলক গতিতত্ত্ব, নিউটনীয় মহাকর্ষের জয়যাত্রার চমত্কার বর্ণনা, জোয়ার ভাঁটার রহস্য, নেপচুন আবিষ্কারের চমকপ্রদ কাহিনি রয়েছে এই বইতে । নিউটনই দেখান যে পৃথিবীতে আমাদের অভিজ্ঞতায় মহকার্ষের যে নিয়ম, সেই নিয়মই চাঁদ, গ্রহ ও ধূমকেতুদের চলাফেরা নির্ণয় করে । এই
Universal বা মহাজাগতিক নিয়মের ধারণা অভিনব । আরিস্টটলীয় অভিমত ছিল যে পার্থিব এবং নক্ষত্রলোকের নিয়ম কানুন আলাদা । এমনকি নক্ষত্র জগতের মৌলিক পদার্থ পার্থিব চারটি মৌলিক পদার্থের (জল, হাওয়া, মাটি ও আগুন) থেকে পৃথক, তিনি যার নাম দিয়েছিলেন quint essence (পঞ্চম বস্তু) । নিউটনের এই `terrestrial and celestial unification' -এর ধারা আধুনিক বিজ্ঞানেও চলেছে । উনিশ শতাব্দীর মাঝামাঝি স্কটিশ বৈজ্ঞানিক ম্যাক্সওয়েল দেখান যে বিদ্যুত্, চুম্বক ও আলো মূলত: একই শক্তি । আইনস্টাইনের স্বপ্ন ছিল মহাকর্ষ ও ম্যাক্সওয়েল তত্ত্বকে এক সুতোয় বেঁধে ফেলা । সফল হয়নি বহু বছর ব্যাপী সেই চেষ্টা । তবে আজ থেকে বছর চল্লিশেক আগে প্রমাণিত হল যে পরমাণুকেন্দ্রের মধ্যেকার `লঘু শক্তি' (Weak interaction) বিদ্যুত্-চুম্বকের পরিবারভুক্ত । পরমাণুকেন্দ্রের Strong interaction (`গুরু শক্তি'??) এবং মহাকর্ষকেও এদের সঙ্গে মেলানো, বহুর মধ্যে একের সন্ধান, গত পঁচিশ বছরের তাত্ত্বিক গবেষণার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ।আদিকাল থেকে মনে করা হত স্থান
(space) ও কাল (time) -এর মাপ দ্রষ্টা-নিরপেক্ষ । উনিশ শতাব্দীর শেষদিকে ম্যাক্সওয়েল তত্ত্ব ও নিউটনীয় গতিতত্ত্বের মধ্যে অসংগতি লক্ষ করা হয় । এই সমস্যার সমাধান করেন অল্পবয়সী আইনস্টাইন । তাঁর `বিশেষ আপেক্ষিক তত্ত্ব' (Special Theory of Relativity) এই অসংগতি দূর করলো বটে কিন্তু স্থান ও কালের দ্রষ্টা নিরপেক্ষতাকে বিদায় নিতে হল । সুকন্যা এই বিষয়টি এবং এর পরবর্তী বিরাট পদক্ষেপ, মহাকর্ষকে আপেক্ষিক তত্ত্বের সঙ্গে মেলানো, যা আইনস্টাইনের অনন্য কীর্তি, সহজ ও সুন্দরভাবে বুঝিয়েছেন । স্থান ও কাল ভারি বস্তুর কাছাকাছি বক্ররূপ ধারণ করে ; এই বিকৃতিই মহাকর্ষ !আইনস্টাইনের মহাকর্ষতত্ত্ব বা সাধারণ আপেক্ষিকতার
(General Relativity) পরীক্ষা করা সহজ নয়, কারণ যে মহাকর্ষের সঙ্গে আমাদের সচরাচর বোঝাপড়া করতে হয় সেখানে এবং সাধারণ গ্রহ-তারাদের জগতেও নিউটনের ও আইনস্টাইনের তত্ত্বের পার্থক্য অতি অল্প, যদিও তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল কাঠামো একেবারেই আলাদা । যেখানে মহাকর্ষ প্রবল সেখানে এদের পার্থক্যও অনেক । অত্যন্ত ভারি এবং ঘন পদার্থের কাছাকাছি সাধারণ আপেক্ষিকতার রাজত্ব । এই বিষয়ে আলোচনা-প্রসঙ্গে সুকন্যা `কৃষ্ণ বিবর' বা Black Hole এবং নিউট্রন তারা বা `পালসার' (Pulsar) দের অনেক আশ্চর্যজনক কীর্তিকলাপের কথা সহজ কিন্তু অতি-সরলীকৃত নয়, এমনিভাবে ব্যাখ্যা করেছেন । এর পরে আছে নক্ষত্রদের জীবনকাহিনি, অল্পবয়েসী চন্দ্রশেখরের (এ-বছর তাঁর জন্মশতবার্ষিকী) কাজের মূল্যায়ন । কেমব্রিজের খ্যাতনামা বিজ্ঞানী এডিংটন ও অন্যান্যদের এই কাজের কঠোর বিরোধিতার ফলে ভারি তারাদের নাটকীয় শেষ জীবনের আলোচনা বহু বছর পিছিয়ে যায় । এই বিষয়ের বিস্তারিত খবর আছে K. C. Wali -র `Chandra' -বইটিতে ।আইনস্টাইনের মৃত্যুর পরে, ষাটের দশকে, আপেক্ষিকতাবাদের নবজাগরণ ঘটে । এর পর আছে কোয়ান্টাম তত্ত্ব ও হকিং-বিকীরণ, তাপগতিবিদ্যা
(Thermodynamics) ও কৃষ্ণ বিবরের নিবিড় যোগসূত্র ইত্যাদির পরিষ্কার ও কৌতুহলোদ্দীপক আলোচনা । বোঝা যায় সুকন্যা এই বিষয়টি কত ভালোবাসেন ।শুধু তত্ত্বকথা নেই বইটিতে । কিভাবে যুগ্মতারাদের পর্যবেক্ষণ থেকে কৃষ্ণ বিবরের অস্তিত্ব প্রমাণিত হল, কোয়েজারদের
(Quasars) স্বরূপ কি, বহু গ্যালাক্সির, এমনকি আমাদের বাসস্থান ছায়াপথ বা Milky Way র কেন্দ্রে সম্ভবত অতি বিশাল (Super massive) কৃষ্ণবিবরের বাস, এইসব চাঞ্চল্যকর খবর জানাতে ভোলেননি লেখিকা ।ম্যাক্সওয়েল-এর বিদ্যুত্-চুম্বকীয় তত্ত্বে তরঙ্গের উপস্থিতি লক্ষণীয় । গবেষণাগারে এই ঢেউ-এর দেখা মিলেছিল উনিশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে । জগদীশচন্দ্র বসু এদের স্বরূপ নিয়ে মূল্যবান কাজ করেন । রেডিও ও মাইক্রোওয়েভ, অবলোহিত, দৃশ্য আলো,
X -রশ্মি ইত্যাদি এদেরই বিচিত্র রূপ । আইনস্টাইন তাঁর সমীকরণগুলি থেকে দেখালেন যে মহাকর্ষের ক্ষেত্রেও তরঙ্গ সৃষ্টি হতে পারে যা আলোর গতিতে প্রবাহিত হবে । একটি নিউট্রনতারা-জুটির ব্যবহার থেকে এই তরঙ্গের অস্তিত্ব প্রমাণ হলো ১৯৮০ নাগাদ । কিন্তু তাতেই সন্তুষ্ট না থেকে এদের হাতে নাতে ধরার জন্য বিজ্ঞানীরা উঠে পড়ে লেগেছেন । নানা দেশের পরীক্ষাগারে এবং কয়েকটি মহাকাশযানের সাহায্যে বিশাল interferometer -এর ফাঁদে এই মহাকর্ষ-ঢেউ ধরার চেষ্টা চলবে । ২০১৮ সালের মধ্যেই এই ঢেউ সন্দেহাতীতভাবে ধরা যাবে এমনি আশা করা যাচ্ছে । ভবিষ্যতে এই ঢেউ একটি নতুন জানালা খুলে দেবে বিশ্বকে নতুন `আলো'তে দেখার জন্য । গত অর্ধ-শতাব্দীতে রেডিও, মাইক্রোওয়েভ, অবলোহিত, অতি-বেগনী ও X -রশ্মির সাহায্যে বিশ্বজগত সম্বন্ধে আমাদের ধারণা বহু এগিয়ে গেছে । যে-সব ঘটনা বিদ্যুত্-চুম্বকীয় তরঙ্গের নাগালের বাইরে তাদের `দেখা' যাবে মহাকর্ষ-ঢেউএর মাধ্যমে । গ্যালাক্সি কেন্দ্রের লুকোনো খবর, সুপারনোভা-দের ব্যাপার স্যাপার, অতি দূরবর্তী গামা-রশ্মি বিস্ফোরণের রহস্য, এমন কি বিগ ব্যাং-এর নাড়ি-নক্ষত্রের খবর হয়তো মহাকর্ষীয় দূরবীণে ধরা পড়বে একদিন ।সাধারণ আপেক্ষিকতার সীমাবদ্ধতা ধরা পড়ে কৃষ্ণ বিবরের কেন্দ্রে বা বি.গ ব্যাং-এর জন্মমুহূর্তে । মহাকর্ষ ও কোয়ান্টাম-তত্ত্ব মিশ খায় না । অনুমাত্র স্থান ও কণামাত্র সময়ের ঘটনাবলী বুঝতে হলে কোয়ান্টাম তত্ত্ব অপরিহার্য । এখনও মহাকর্ষের জন্য কোনো ভদ্রগোছের কোয়ান্টাম ক্ষেত্রতত্ত্ব তৈরি করা যায়নি । উপরোক্ত সীমাবদ্ধতার এইটাই কারণ । দুটি আশাজনক পথ আছে মনে হয় : স্ট্রিং থিওরি ও কোয়ান্টাম জ্যামিতি । কিন্তু এ-পথের শেষে কি আছে অথবা আদৌ কিছু আছে কি না এখনও কেউ তা জানেন না । শেষ পরিচ্ছেদে পাঠককে "জানা অজানার সীমায়" পৌঁছিয়ে সুকন্যা বইটি শেষ করছেন ।
বইটার পরবর্তী সংস্করণের জন্যে আমার কয়েকটি অনুরোধ আছে । ৮২ পৃষ্ঠায়, যেখানে মহাকর্ষীয় সময় প্রসারণের কথা আলোচিত হয়েছে, সেখানে সাদা বামন
(white dwarf) জাতীয় তারাদের, যাদের মহাকর্ষ প্রবল, বর্ণালী লাল-প্রান্তের দিকে সরে আসার কথা, তা' উল্লেখযোগ্য । ১৯২০-র দশকে Adams নামে এক জ্যোতির্বিদ ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্ট উইলসন মানমন্দিরে Sirius B , অর্থাৎ লুব্ধক নক্ষত্রের সাদা বামন সঙ্গীটির বর্ণালী পরীক্ষা করে এই সরে আসা দেখতে পান যা আইনস্টাইনের হিসেবের সঙ্গে মেলে । হাবল্ টেলিস্কোপের সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে এই পরীক্ষার আরো জোরালো প্রমাণ রয়েছে । নিউট্রন তারার ক্ষেত্রে এই সরে আসার পরিমাণ অনেক বেশি -- প্রায় ২০ % । সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণগুলি আপেক্ষিকতাবাদকে আবারও সমর্থন করছে ।অনেকে মনে করেন যে বিশেষ ও সাধারণ আপেক্ষিকতার প্রভাব আমাদের জীবনে অবান্তর । অনেকেই জানেন না যে
Global Positioning System (GPS) , যার সাহায্যে এরোপ্লেন ও জাহাজ চালানো হয় এবং সেলফোন ও গাড়িতে যাদের সাহায্যে কোনো ঠিকানা, দোকান, রেস্তোরাঁ ইত্যাদি খুঁজে পাওয়া খুব সহজ, তারা আপেক্ষিকতার সাহায্য ছাড়া অচল । একটু বুঝিয়ে বলা যাক্ । অনেকগুলি আনবিক ঘড়িযুক্ত কৃত্রিম উপগ্রহ ২০,০০০ কিংই. উচ্চতায় থেকে ঘন্টায় ১৪,০০০ কি.ংইম. বেগে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে । পৃথিবীর যে-কোনো বিন্দু থেকে অন্তত চারটি উপগ্রহ দেখা যায় যে-কোনো সময়ে । জিপিএস গ্রাহকযন্ত্র এদের থেকে সময় সংকেত পেয়ে মাত্র ৫ থেকে ১০ মিটারের মধ্যে নিজের অবস্থান জানতে পারে । এর জন্য সময় সংকেতগুলির অনিশ্চয়তা বিশ-ত্রিশ ন্যানো-সেকেণ্ডের কম হতে হবে । আলো এক ন্যানোসেকেণ্ডে চলে এক ফুট ।যেহেতু উপগ্রহগুলি ভূপৃষ্ঠ থেকে অনেক উপরে আছে, যেখানে মহাকর্ষ কম, সাধারণ আপেক্ষিকতা বলে সেখানের ঘড়ি পৃথিবীর ঘড়ির তুলনায় তাড়াতাড়ি চলবে ---- এক্ষেত্রে দিনে ৪৫ মাইক্রোসেকেণ্ড এগিয়ে যাবে । আবার বিশেষ আপেক্ষিহকতা বলে উপগ্রহদের ঘড়ি দিনে সাত মাইক্রোসেকেণ্ড পেছিয়ে যাবে পৃথিবীর ঘড়ির তুলনায় তাদের আপেক্ষিক গতির জন্যে । তাই এই আপেক্ষিক সময় প্রবাহের হিসেব নিলে উপগ্রহের ঘড়ি আমাদের ঘড়ির চেয়ে দৈনিক ৩৮ মাইক্রোসেকেণ্ড এগিয়ে থাকবে । তাই আপেক্ষিকতাকে উপেক্ষা করলে ভুলের পরিমাণ ৩৮,০০০ ন্যানোসেকেণ্ড, যার ফলে অবস্থানের ভুল হবে দৈনিক প্রায় ১২ কি. মি. ! অর্থাৎ আপেক্ষিকতার সংশোধন বিনা জিপিএস অচল এবং সাধারণ আপেক্ষিহকতার ওজনই এখানে বেশি । প্রতিবার সাফল্যের সঙ্গে জিপিএস ব্যবহারই আপেক্ষিকতার নিত্যনৈমিত্তিক প্রমাণ ।
এই সূত্রে সঠিক সময় মাপার সাহায্যে প্রথম কিভাবে ভূপৃষ্ঠে অবস্থান নির্ণয় করা হয়, অষ্টাদশ শতাব্দীর ইংরেজ ঘড়ি নির্মাতার সেই চমকপ্রদ গল্প কৌতূহলী পাঠক
Dava Sobel -এর Longitude বইটিতে পাবেন ।১৬২ পাতায় বিশ্বের প্রসারণ ত্বরান্বিত হবার এবং অদৃশ্য শক্তির বিকর্ষক বল যোগানোর কথা খুব সংক্ষেপে বলা হয়েছে । যেহেতু ১৯৯৮-এর এই অপ্রত্যাশিত ও বিখ্যাত আবিষ্কার গত দশ বছরে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং আধুনিক বিশ্বতত্ত্বের একটি প্রধান অঙ্গ হয়ে উঠেছে
(Lambda - CDM model) তাই একটু বিশদভাবে বিষয়টির আলোচনা দরকার । বিশেষ করে বিভিন্ন দূরত্বে Type 1a সুপারনোভা (উজ্জ্বলতম "standard candles" )-দের আপাত উজ্জ্বলতা থেকে কি ভাবে বিশ্বের প্রসারণের ইতিহাস উদ্ঘাটিত হয়েছে (ত্বরাণ্বিত প্রসারণের শুরু ৫ বিলিয়ন বছর আগে) একটু বিস্তারিত ভাবে বুঝিয়ে বললে পাঠকদের সাম্প্রতিক এমন কি ভবিষ্যতের নতুন আবিষ্কারের তাত্পর্য বুঝতে সুবিধে হবে বলে মনে করি ।বইএর শেষে বাছাই করা কয়েকটি বই এবং কিছু ভালো সহজবোধ্য প্রবন্ধ ও
web links -এর (মন্তব্যসহ) উল্লেখ থাকলে উত্সাহী পাঠকেরা উপকৃত হবেন ।এবারে কয়েকটি ত্রুটি ও মুদ্রণপ্রমাদের কথা তুলছি । ২০ পাতায় মহাকর্ষসূত্রের প্রথম প্রকাশ ১৬৮৫ সালে । ক্যালকুলাসের আবিষ্কারে লাইব্নিট্স্-এর উল্লেখ প্রয়োজন । ২৪ পাতায় ১ নং ছবি হবে ৩ নং ছবি । জোয়ারের ৫ নং ছবির বর্ণনায় `বেশি ও কম' কে উল্টে লিখলে ছবির সঙ্গে মিলবে । ৮৬ পাতায় শেষ বাক্যটি দু'বার ছাপা হয়েছে । ১৩৪ পাতার দ্বিতীয় প্যারাগ্রাফে "কেন্দ্রের কাছে ... গ্যালাক্সির" অংশটিও দু'বার ছাপা হয়েছে । ৯৪ পাতায় `পঞ্চাশ লক্ষ' হবে পাঁচশ' কোটি অথবা ৫ বিলিয়ন, কারণ সূর্যের হাইড্রোজেন থেকে হিলিয়ম তৈরি পর্বের
(Main Sequence) আয়ু প্রায় দশ বিলিয়ন বছর । সূর্য জন্মেছিল প্রায় ৫ বিলিয়ন বছর আগে । ১০২ পাতায় "হিলিয়ম কেন্দ্রকে একটি প্রোটন ও একটি নিউট্রন"-এর জায়গায় "...দুটি ... দুটি.." হবে । ২৭ নং ছবিতে আয়না দুটির নাম বদল করে নিলে ১৪৭ পাতার বর্ণনার সঙ্গে মিলবে । আরও কয়েকটি মুদ্রণপ্রমাদ চোখে পড়লো কিন্তু সেগুলো গৌণ ।উপসংহারে বলি বইটি খুব ভালো হয়েছে । নিউটন পরবর্তী মহাকর্ষ বোঝা কঠিন । এই দুরূহ বিষয়ের নানা দিক সহজভাবে বোঝানো মোটেই সহজ নয়, বিশেষত বিজ্ঞানের পরিভাষা ও অংক বাদ দিয়ে । এই কাজে সুকন্যা কৃতকার্য হয়েছেন । তিনি বাংলায় বিজ্ঞানপাঠকদের কাছে ধন্যবাদার্হ হবেন ।
(পরবাস-৪৫, এপ্রিল, ২০১০)