• Parabaas
    Parabaas : পরবাস : বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • পরবাস | সংখ্যা ৪৩ | জুলাই ২০০৯ | গল্প
    Share
  • অসমাপ্ত ছবি : পার্থ পাল

    ক্লাস ফোরে পড়ে সুতপা । স্কুলবাস থেকে নেমেই দেখলো তপুকাকুর গাড়িটা । কখন এসেছে কে জানে । বাবার কাছে ছবি আঁকা শিখতো, ছোটবেলা থেকেই সুতপা দেখে আসছে তপুকাকু তাদের বাড়ির পার্মানেন্ট ফিক্সচারের মতো । গাড়িটা অবশ্য বেশিদিন হয়নি - তপুকাকু আর একজিবিশন করে না বাবার মতো । মা বলে তপুকাকু নাকি মস্ত বড় কর্মাশিয়াল আর্টিষ্ট হয়ে গেছে এখন ।

    মা বাথরুমে । মুখ হাত ধুয়ে মার কেটে রাখা আপেল খেতে খেতে সুতপা গল্প করছিল তপুকাকুর সঙ্গে । চানটান করে অরুণা এলো টেবিলে । মেয়ের গালে আদর করে চুমু দেবার সময় সুতপার নজরে পড়ল মা'র গলায় লকেটটা - বেশ বড়সড় একটা পাথর সেটিং করা লকেট । হার্ট শেপ লকেট এবং সেই একই শেপের ছাপ বুকের নরম চামড়ার ওপর ।

    `এটা কি হয়েছে মা ?'

    উত্তরটা এল তপুকাকুর কাছ থেকে : `ও কিছু না । গুরুপত্নী অবশেষে গ্রহণ করেছেন ভক্তের নিবেদন ।'

    ছিটকে উঠে গেল মেয়ে । মার হাত ছাড়িয়ে সোজা বাবার স্টুডিওতে । সাদা পাজামা আর গেরুয়া পাঞ্জাবি, কাঁচাপাকা লম্বা চুল আর দাড়ি সিলিং ফ্যানের হাওয়ায় উড়ছে । তুলিতে রঙ শুকিয়ে যাচ্ছে - মানুষটার কোন দিকে খেয়াল নেই । চোখ জানালার বাইরে পলাশ গাছটার দিকে । এক শিল্পী আর এক শিল্পীর সৃষ্টিতে লীন । খোলা ইজেলে অসমাপ্ত ছবিতে পলাশটা বড্ড বেশি লাল আর নদীর পাড়ে দৃষ্টিকটু ভাঙন । দরজার ফ্রেমে একাদশী কন্যার চোখে জল আর বাঁধ মানে কই ?

    (পরবাস-৪৩, জুলাই, ২০০৯)

  • এই লেখাটি পুরোনো ফরম্যাটে দেখুন
  • মন্তব্য জমা দিন / Make a comment
  • (?)