মা বাথরুমে । মুখ হাত ধুয়ে মার কেটে রাখা আপেল খেতে খেতে সুতপা গল্প করছিল তপুকাকুর সঙ্গে । চানটান করে অরুণা এলো টেবিলে । মেয়ের গালে আদর করে চুমু দেবার সময় সুতপার নজরে পড়ল মা'র গলায় লকেটটা - বেশ বড়সড় একটা পাথর সেটিং করা লকেট । হার্ট শেপ লকেট এবং সেই একই শেপের ছাপ বুকের নরম চামড়ার ওপর ।
`এটা কি হয়েছে মা ?'
উত্তরটা এল তপুকাকুর কাছ থেকে : `ও কিছু না । গুরুপত্নী অবশেষে গ্রহণ করেছেন ভক্তের নিবেদন ।'
ছিটকে উঠে গেল মেয়ে । মার হাত ছাড়িয়ে সোজা বাবার স্টুডিওতে । সাদা পাজামা আর গেরুয়া পাঞ্জাবি, কাঁচাপাকা লম্বা চুল আর দাড়ি সিলিং ফ্যানের হাওয়ায় উড়ছে । তুলিতে রঙ শুকিয়ে যাচ্ছে - মানুষটার কোন দিকে খেয়াল নেই । চোখ জানালার বাইরে পলাশ গাছটার দিকে । এক শিল্পী আর এক শিল্পীর সৃষ্টিতে লীন । খোলা ইজেলে অসমাপ্ত ছবিতে পলাশটা বড্ড বেশি লাল আর নদীর পাড়ে দৃষ্টিকটু ভাঙন । দরজার ফ্রেমে একাদশী কন্যার চোখে জল আর বাঁধ মানে কই ?
(পরবাস-৪৩, জুলাই, ২০০৯)