আগের সংখ্যায় মির্জা গালিব-এর প্রস্তাবিত গজলের jahāñ terā naqsh-e-qadam dekhte haiñ উপর মাত্র দুটি অনুবাদ এসেছে। কিন্তু 'অনুবাদের কাজ কখনো শেষ হয় না'--এই কথা মনে রেখে জানানো হচ্ছে যে এখন থেকে মাস ছয়েক পরে চাইলে আপনারা, অনুবাদকেরা, বর্তমানে প্রকাশিত অনুবাদের কিছু পরিবর্তন করে পাঠাতে পারেন। তখন সেগুলিই আমাদের স্থায়ী সূচির অন্তর্গত করা হবে।পরের সংখ্যাতে অনুবাদের জন্যে আপনাদের কাছ থেকে কবিতার সাজেশান চাইছি।
মির্জা গালিব-এর 'জহাঁ তেরা নক্শ্-এ-কদম দেখতে হাঁয়'-এর বাংলা অনুবাদ
যেখানে তোমার পায়ের চিহ্ন
অনুবাদকঃ স্বপন ভট্টাচার্য
যেখানে তোমার পায়ের চিহ্ন পৃথিবীর বুকে আঁকা
সেখানেই ফুলবাগিচায় ভরা স্বর্গের দেখা পাই
ঠোঁটের কোনায় কালো তিলে যে হৃদয় গুমরে আছে
অনস্তিত্ব ঘেরা তিলটির হৃদয়ও কালো তাই
মানুষের মত ছোট কারও কাছে তুমি যেন দেওদার
শেষের সে দিনে তার পাপও কিছু কমেছে দেখতে পাই
যখন তোমাকে নিমগ্ন দেখি হাতে ধরা আয়নায়
কিসের বাসনা কিভাবে যে বলি হৃদয়ে দেখতে পাই
বুকের গভীর কন্দর থেকে ক্ষতের বহতা ধারা
রাতপ্রহরীর পায়ের নকশা সেখানে দেখতে পাই
ফকিরের আলখাল্লা জড়িয়ে গালিব ধরেছে ভেক
মানুষ হয়েছে উদারহৃদয় এই শুধু দেখে যাই
দেখে থাকি তোমার পায়ের চিহ্ন
অনুবাদকঃ সজল কুমার মাইতি
তোমার পায়ের চিহ্ন দেখতে দেখতে যেখানে যাই
ফুল ফলে সাজানো স্বর্গ সেখানে খুঁজে পাই।
আমার ব্যথিত হৃদয়ে গভীর ক্ষত করেছে ঠাঁই
হৃদয় আঁধারে অদৃশ্য তোমায় দেখতে শুধু চাই।
আমার চোখে তোমার রূপের ছটা বিশ্বব্যাপ্তী
মৃত্যুতে ও হয় না তার ভয়ংকর পরিসমাপ্তি।
হৃদয় আমার গুমরে মরে হয়েছে রুধির সিক্ত
তস্করে করেছে সম্পদ হরণ হয়েছি নিঃস্ব রিক্ত।
ও গালিব! ফকিরের বেশে বেড়াই ঘুরে মরু থেকে প্রান্তর
চারিদিকে শুধুই ভন্ডামির বড়াই আত্মপ্রচার নিরন্তর।
[অনুবাদে ভাবার্থই প্রাধান্য পায়। এই অনুবাদে শব্দার্থ ব্যবহার প্রায় অসম্ভব। তবু যতটুকু সম্ভব হয়েছে তার কৃতিত্ব প্রাপ্তি স্বীকার অবশ্যকরণীয়। ক্রমাগত কন্সট্রাকশন ও ডিকন্সট্রাকশন চালাতে চালাতে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছনোর চেষ্টা চালিয়ে গেছি। জানিনা সঠিক তীরে তরী ভিড়াতে পেরেছি কিনা। সহকর্মী বন্ধুবর অধ্যাপক আনিস আখতার, হুগলী মহসীন কলেজের উর্দুর বিভাগীয় প্রধান, তার সহৃদয় ও তৎপর সহযোগিতার মাধ্যমে এই কাজে যারপরনাই সাহায্য করেছেন। আমি সবার কাছেই আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ।]