• Parabaas
    Parabaas : পরবাস : বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • পরবাস | Rabindranath Tagore | প্রবন্ধ
    Share
  • রবীন্দ্রনাথের গানে প্রকৃতি : পৃথা কুণ্ডু



    রবীন্দ্রনাথের গানে প্রকৃতি কি শুধুই এক পর্যায় মাত্র? প্রাজ্ঞ সমালোচকরা হয়ত 'পূজা' বা 'প্রেম'-এর তুলনায় একটু খাটো করেই দেখেন প্রকৃতিকে। কিন্তু স্রষ্টা, শিল্পী আর রসিকের কাছে প্রকৃতি কি শুধুই 'মেঘের কোলে রোদ হেসেছে' আর 'শীতের হাওয়ায় লাগল নাচন'-এর বাহ্যিক উচ্ছ্বাস না কি প্রকৃতির অন্তরে খুঁজে পাওয়া যায় সেই পরম অনুভুতিকেও, যা বিচিত্রে, স্বদেশে, প্রে্মে, পূজায় নিজেকে ছড়িয়ে দেয় সাধারণ গানপাগল শ্রোতার ভালোলাগাকে সঙ্গী করেও? সেই রহস্যের গভীরে ডুব দিতে চেয়েই এ লেখা, এক গানযাপনের কলমচারিতা--

    কজন বিশেষজ্ঞকে বলতে শুনেছিলাম, রবীন্দ্রনাথের গানের আসল ‘ইন্টেলেকচুয়াল কোর’ নিহিত আছে তাঁর পূজা আর প্রেম পর্যায়ের গানে। এটা তো আমরা, সাধারণ মানুষরাও—বুঝি বা না বুঝি—অল্পবিস্তর জানি। কিন্তু তারপরের কথাটা কানে লেগেছিল। একটু যেন তাচ্ছিল্যের সুরেই বলেছিলেন, “এই যে সব জায়গায় শিশুদের ধরে ধরে সাজিয়ে গুজিয়ে একটা ‘ঋতুরঙ্গ’ নামিয়ে দেওয়া হয় আর মনে করা হয় এতেই দারুণ রবীন্দ্রচর্চা হল, এটা আসলে নিজেদের ভাবনার দৈন্য ঢাকার একটা মধ্যমেধা-সুলভ পন্থা।” প্রকৃতি পর্যায়ের গানগুলো নাকি নেহাতই কেজো গান, ‘বর্ষামঙ্গল’, ‘বনমহোৎসব’, ‘বসন্ত উৎসব’ জাতীয় কিছু অনুষ্ঠানের জন্য লেখা, সুরে আর নৃত্য-উপযোগিতায় উতরে গেছে, তার মধ্যে ভাবের উচ্ছ্বাস কিছু থাকলেও বৌদ্ধিক চিন্তার খোরাক তেমন নেই। হ্যাঁ, বুদ্ধদেব বসু প্রকৃতি পর্যায়ের গান নিয়ে কিছু ভাল ভাল কথা লিখেছেন—সে তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। তাঁর অন্যান্য রবীন্দ্র বিষয়ক লেখায় যে শাণিত যুক্তি আর প্রজ্ঞা দেখা যায়, প্রকৃতি পর্যায়ের গান নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি তা ধরে রাখতে পারেন নি, অনেকটাই সাধারণের স্তরে নেমে এসেছেন।

    তাহলে ব্যাপারটা কী দাঁড়াল? বুদ্ধদেব বসু যখনই একটু সাধারণের ভাললাগার মত করে প্রকৃতি পর্যায়ের গানগুলো নিয়ে দুটো ভাল কথা বললেন, তখনই তিনি তাঁর বৌদ্ধিক স্বধর্ম থেকে সরে গেলেন? প্রকৃতির সুর এতই ফেলনা? কবিতার মধ্যে ইকোপোয়েটিক্স খোঁজার এত পণ্ডিতি চেষ্টা, আর গানের বেলায় সেটা হালকা খুশির ব্যাপার মাত্র, নেহাত রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন বলে তাতে একটু রুচির ছোঁয়া আছে- এইটুকুই?

    বলাই ছেলেটা অতশত বুঝত না, তার মধ্যে কিন্তু বেজেছিল ‘গাছপালার মূল সুর’। এই গাছপালার সুরটাকে যদি আরও ছড়িয়ে দেওয়া-অর্থে বিশ্বপ্রকৃতির সুর বলে ধরে নিই, খুব ভুল হয় কি? খুব চেনা, দেবব্রত বিশ্বাসের গলায় স্মরণীয় হয়ে থাকা একটা গানের কথাই ধরা যাক। ‘আকাশ ভরা সূর্য তারা’—ঘাসে ঘাসে পা ফেলার অনুভূতি, ফুলের গন্ধে ‘চমক’ লাগার আবেশ না হয় শ্রোতার পাওনা, কিন্তু সুরের চলনটা কী বলছে? “অসীম কালের/ যে হিল্লোলে/ জোয়ার ভাঁটায়/ ভুবন দোলে”—প্রতি দুই পদের শেষে দীর্ঘ মাত্রার টান, শেষ হয় ‘ধা’, ‘না’, ‘সা’ অথবা ‘পা’ তে এসে। প্রকৃতির মধ্যে, প্রাণের মধ্যে নিরন্তর যে আবর্তন, শেষ থেকে আবার শুরু, তাকেই সুরে সুরে ধরছে এই গান। আমরা নাহয় গানেই মুগ্ধ, কিন্তু গানের মধ্যে যিনি বিজ্ঞান খুঁজতে চান, তাঁর জন্যও ডালি সাজানো আছে।

    ঋতু ধরে ধরে যে গানগুলো লেখা, সেগুলোকেই আমরা প্রকৃতি পর্যায়ের গান বলে জানি। কিন্তু একটু তলিয়ে শুনলেই বোঝা যায়, কবি তাঁর ভালোবাসার প্রকৃতিকে ছড়িয়ে রেখেছেন সবখানে। স্বদেশে, বিচিত্রে, প্রেমে, পূজায়। প্রথমে পঙ্কজকুমার মল্লিক, পরে আরও অনেকের—বিশেষ করে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গায়নে অবিস্মরণীয় ‘অয়ি ভুবনমনমোহিনী’ গানটার কথা ভাবা যেতে পারে। ভাষা একটু ভারী সংস্কৃত-ঘেঁষা, সুরও খানিক স্তোত্র-উচ্চারণের মত। কিন্তু এগুলো বিদগ্ধ বোদ্ধার ভাবনার বিষয়। আমরা শুধু কথা আর সুরের মিশেল নিয়ে একটু ভাবি। গতবছর স্বাধীনতা দিবসে গানটির এক লাইভ রেকর্ডিং এসেছিল ইউটিউবে; শোনালাম পরিচিত এক কাকিমাকে। হায়ার সেকেন্ডারির পর সংসারে ঢুকে আর পড়াশোনা হয়নি, আগে একটু রেডিওতে গানটান শোনার শখ ছিল, এখন রেডিও গেছে খারাপ হয়ে, অবসর সময়ে টিভি সিরিয়াল দেখেন। গানটা শুনে বললেন, “ওরে, মা বলে ডাকটা কী অসাধারণ... সেই ছবিটা মনে পড়ে গেল।” জানতে চাইলাম, কোন ছবি? বললেন, “আরে, ছোটবেলায় মানচিত্রের বইয়ের প্রথমেই দুটো ছবি থাকত না? ভারত-প্রাকৃতিক আর ভারত-রাজনৈতিক। প্রাকৃতিক ভারতের ছবিটাই বেশি টানত—কী সুন্দর সবুজ, সাদা, খয়েরি, নীল রঙে বোঝানো থাকত বন-পাহাড়-নদী-সমুদ্র! গানটা শুনতে শুনতে সেটাই মনে পড়ল।” নীলসিন্ধুজলধৌতচরণতল, অনিলবিকম্পিত-শ্যামল-অঞ্চল, অম্বরচুম্বিতভালহিমাচল শুভ্রতুষারকিরীটিনী—শব্দগুলোর মানে আলাদা করে হয়ত বলতে পারবেন না সেই ঘরোয়া, নিতান্ত সাধারণ কাকিমা, কিন্তু গানটা শুনতে শুনতে, ‘মা’ ডাকের আবেগে মন ভিজিয়ে নিয়ে, কত সহজেই প্রকৃতির সাথে মিলিয়ে নিলেন স্বদেশের চেহারাখানা। ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে’ বা ‘ও আমার দেশের মাটি’র সুর আর কথা তো এমনিতেই অনেকটা মাটির কাছাকাছি, আর একবার শুনে মিলিয়ে নিতেই পারেন আমাদের মত সাধারণ মানুষ--প্রকৃতি কীভাবে গড়ে দিয়েছে স্বদেশ চেতনার ভিত্তি।

    আরও কয়েকটা খুব চেনা গানের কথা মনে করি। ‘গ্রাম ছাড়া ওই রাঙা মাটির পথ’। গানটা বিচিত্র পর্যায়ের, কিন্তু বাউল সুরের ওই মাদকতা উঠে আসছে প্রকৃতি থেকে, মাটির ধুলো থেকে। ‘রাঙিয়ে দিয়ে যাও যাও যাও গো এবার যাবার আগে’--সাধারণের মনে বসন্ত দোল-উৎসবের অনুষঙ্গ জেগে ওঠে এ গান শুনলেই। এ গানের পর্যায়ও বিচিত্র, কিন্তু প্রকৃতিকে বাদ দিলে সে বৈচিত্র্যের কীই বা পড়ে থাকে? ‘আঁধার নিশার বক্ষে যেমন তারা জাগে/ পাষাণ গুহার কক্ষে নিঝর ধারা জাগে/ মেঘের বুকে যেমন মেঘের মন্দ্র জাগে... তেমনি আমায় দোল দিয়ে যাও যাবার পথে আগিয়ে দিয়ে’—বিশ্বপ্রকৃতির সঙ্গে ‘আমি’কে একাকার করে দেওয়ার এমন ভাবের খেলায় আমরা না দুলে থাকি কী করে? ‘প্রাঙ্গণে মোর শিরীষশাখায়’, ‘আধেক ঘুমে নয়ন চুমে’—এমন অনেক ভালোলাগার গানে বিচিত্রের সাথে মিলেমিশে আছে প্রকৃতি।

    প্রেমের গানে আসি। ‘তুই ফেলে এসেছিস কারে, মন, মন রে আমার’। যাকে ভুলে এসেছি, ফেলে এসেছি, তাঁকে ফিরে পেতে গেলে সেই প্রকৃতির ভাষাই শুনতে হয় “নদীর জলে থাকি রে কান পেতে/ কাঁপে যে প্রাণ পাতার মর্মরেতে/ মনে হয় যে পাব খুঁজি ফুলের ভাষা যদি বুঝি রে—” পাতার মর্মর, ফুলের ভাষা থেকে চড়ায় উঠতে উঠতে যখন সন্ধ্যাতারার পারে পাড়ি জমানোর ডাক দেন শিল্পী, তখন মনে হয়, প্রকৃতি ছাড়া প্রেমের কথা বুঝতে যাওয়া অবান্তর। ‘হে নিরুপমা’, ‘আর নাই রে বেলা’, ‘ক্লান্ত বাঁশির শেষ রাগিণী’, ‘কেন আমায় পাগল করে যাস’, ‘তুমি সন্ধ্যার মেঘমালা’—উদাহরণ দিয়ে শেষ করা যাবে না—এমন সব গানে প্রকৃতির এক-এক রূপ, এক-একটি অমোঘ চিত্রকল্পকে ছুঁয়ে ফুটেছে প্রেম, বিরহ, মিলন, দুরাশা, চাওয়া-পাওয়া, সাধনা। “এ গানের বেদনাতে আঁখি তব ছলছল, এই বহু মানি”—গেয়ে যখন আশ্বাস খোঁজেন প্রেমিক-শিল্পী, সাক্ষী থেকে যায় বসন্তরাতের প্রকৃতি। আবার “এই কথাটি মনে রেখো”র আবেদনে বার বার ফিরে আসে জীর্ণ পাতা ঝরার ছবি।

    প্রকৃতি থেকেই প্রেম, সেখান থেকে পূজা। ‘পূজা’ পর্যায়ের গানে সেই মাটির মেয়েটি এক হয়ে যায় ফুলের সঙ্গে—যে ফুল দেবতার উদ্দেশে ধুলো-মাটির অর্ঘ্য—“জন্ম নিয়েছি ধূলিতে/ দয়া করে দাও ভুলিতে/ নাই ধূলি মোর অন্তরে।” আবার তার বঞ্চিত, সন্তপ্ত জীবনে প্রেমের জন্য হাহাকার বেজে ওঠে প্রকৃতি-গ্রীষ্ম পর্যায়ের গানে—“চক্ষে আমার তৃষ্ণা।” জল প্রকৃতির দান, জলের আর এক নাম জীবন, আর সেই সেই জলদানের পুণ্য তার মনে একই সাথে জাগায় পূজা আর প্রেমের বোধ। চণ্ডালিকার নামও তো প্রকৃতি, সে কথা ভুলি কেমন করে? আবার নারী-প্রকৃতি যখন রূপ নেয় পুরুষ-প্রকৃতি সম্মিলনে, নতুন জীবন সৃষ্টির আশা থেকেই ‘গান’ হয়ে জেগে ওঠে পূজার ভাব। মনে পড়ে ‘ভালবাসা ভালবাসা’ ছবির কল্যাণে অবিস্মরণীয় সেই দ্বৈতকণ্ঠের পরিবেশন—“সেথায় তরু তৃণ যত/ মাটির বাঁশি হতে ওঠে গানের মত/ আলোক সেথা দেয় গো আনি/ আকাশের আনন্দবাণী”—প্রকৃতির বাস্তবতা, সূর্যের আলো পেয়ে গাছের বেড়ে ওঠা, জীবনের গান আর বিজ্ঞান এক হয়ে যায় পূজা পর্যায়ের এই নিবেদনে। ‘লহো লহো তুলে লহো নীরব বীণাখানি’ গানটি অনেক শিল্পীই চমৎকার পরিবেশন করেছেন, তবে ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়—কীর্তনাঙ্গের এই গানে কোথাও যেন সেই পরম প্রেমিক-সাধকের ছায়াপাত ঘটে—যিনি একই অঙ্গে পুরুষ ও প্রকৃতি বলে বৈষ্ণব ভক্তের বিশ্বাস। একদিকে “পাষাণ আমার কঠিন দুখে তোমায় কেঁদে বলে”তে কাঠিন্যের গলে পড়ার কামনা, অন্যদিকে শুষ্ক, নগ্ন মরুর লজ্জা ঢাকতে “শ্যামল রসের আঁচল তাহার বক্ষে দেহো টানি”-র আর্তি—এ দুইয়ের সার্থক মিলন ঘটে এমন এক কণ্ঠে, যা প্রকৃতির ‘অর্ধনারীশ্বর’-সত্তাকে একই সাথে ধারণ করতে পারে পৌরুষে আর লাবণ্যে, পূজায় আর প্রেমে।

    পূজা আর প্রেমের একাত্মতা যদি রবীন্দ্রনাথের গানের ভাব-আরোহের শিখর, প্রকৃতি তাহলে তার ভিত্তি—বললে খুব ভুল হবে কি? প্রকৃতি তাঁর গানে শুধু বাইরের নদী-লতা-পাতা, রাঙা হয়ে আসা আকাশ আর আষাঢ়ের সন্ধ্যা নয়, প্রকৃতি তাঁর সুর-জগতের অন্তরে। সেই প্রকৃতির ওপর আঘাত এলে, সুরের খেলাও যায় থেমে। মনে পড়ে বাল্মীকিপ্রতিভার সেই দৃশ্য? দুই ব্যাধ যখন পাখি মারার জন্য এগোচ্ছে, তাদের সংলাপ রুক্ষ, প্রায় সুর ছাড়া—যেন অস্বাভাবিক, অ-প্রাকৃতিক—“আরে ঝট করে এই বার ছেড়ে দে রে বাণ”, “...করি রে সন্ধান”, “...চাইনে ওসব শাস্তর কথা” , “থাম থাম ঠাকুর, এই ছাড়ি বাণ!” পুরো গীতিনাট্যে এত খাপছাড়া, বেসুরো আর কোন জায়গা লাগে না, এমনকি দস্যুদের মাতামাতিতেও একটা আদিম উন্মাদনার সুর আছে। বাণ ছাড়া হল, একটি পাখির রক্তে লাল হল প্রকৃতি। ছন্দপতন, প্রকৃতির ওপর নিষ্ঠুর আক্রমণ! তারপর এল সেই অলৌকিক প্রতিক্রিয়া। অভিশাপ যে এমন ছন্দে গাঁথা হতে পারে, দেখিয়েছিলেন আদিকবি। আর সেই ছন্দে সুর লাগালে কেমন হতে পারে, দেখালেন কলিযুগের বাল্মীকি—যিনি দস্যু সর্দার সেজে নামলেও তাঁর অন্তর-প্রকৃতির কমনীয়তা ঢাকতে পারেন না—না চেহারায়, না গানের সুরে।

    তবে একটা কথা, স্বরবিতানে কিন্তু ‘মা নিষাদ...’-এর কোন স্বরলিপি নেই। কয়েকজন বিশেষজ্ঞকে জিজ্ঞাসা করে জানা গেল, প্রথমদিকে ঠাকুরবাড়িতে, পরে শান্তিনিকেতনের অনুষ্ঠানে এই অংশটি শ্লোক পাঠের মত করেই বলা হত। কোন কোন শিল্পী হয়ত নিজের মত একটু সুর করে শ্লোকটি গেয়ে দিতেন। তাতে তো একটু হেরফের হবেই বিভিন্ন সময়ে। তার মানে অন্য সব জায়গায় স্বরলিপির মান্যতা থাকলেও, এত গুরুত্বপূর্ণ এই শ্লোকে শিল্পীর একটু স্বাধীনতা নেবার অবকাশ রেখে দিয়েছিলেন একালের বাল্মীকি-অবতার? তাহলে এইচএমভির প্রথম স্বীকৃত রেকর্ডিং-এ যে সুরে শ্লোকটি শোনা যায়—যা পরবর্তী রেকর্ডিংগুলিতেও প্রচলিত হয়ে গেছে—সেই সুর এল কোত্থেকে? অ-সুর, বে-সুর, মৃত্যু, প্রকৃতির অবমাননা থেকে সুরে, ছন্দে, সৃষ্টিতে, প্রকৃতি-চেতনায় ফিরে আসার মুহূর্তকে ধরার জন্য বোধহয় এর চেয়ে ইঙ্গিতবহ আর কিছু হতে পারত না। তবে যে শুনি, বাল্মীকিপ্রতিভার রেকর্ডিং খুব তাড়াহুড়োয় করতে হয়েছিল, একদিনের মধ্যে এক-এক করে গান তুলে সঙ্গে সঙ্গে নাকি রেকর্ড করা! শ্লোকের সুর নিয়ে এত ভাবনাচিন্তার সময় ছিল কি? ঠিক কী ভেবে কী করা হয়েছিল, সুরটা এল কোত্থেকে, ট্রেনার না শিল্পী, কার মাথায় এসেছিল—সে প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারতেন যারা, তাঁদের কেউই আর আমাদের মধ্যে নেই। কী আর করি, সবই প্রকৃতির লীলা বলে ধরে নিই। মা সরস্বতীও তো প্রকৃতিরূপা!


  • এই লেখাটি পুরোনো ফরম্যাটে দেখুন
  • মন্তব্য জমা দিন / Make a comment
  • (?)
  • মন্তব্য পড়ুন / Read comments