• Parabaas
    Parabaas : পরবাস : বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • পরবাস | সংখ্যা ৮৫ | জানুয়ারি ২০২২ | গল্প
    Share
  • চেনা : রুমঝুম ভট্টাচার্য



    ঠাৎই আকাশ কালো করে বৃষ্টি নামে সাংলিতে। অসময়ের বৃষ্টিতে ধুয়ে যেতে লাগল চাপ চাপ রক্ত। বাসি রক্তের রং এমন কালচে হয় বুঝি? আঁশটে গন্ধ নাকে এসে লাগছে কুসুমের। গা গুলিয়ে উঠল তার। কাপড়ে মুখ চেপে দৌড় লাগাল সে। বুকের ভেতর কামারশালের একশো হাতুড়ির ওঠাপড়া। যদিও ভোরের আলো ঠিক করে ফোটেনি এখনও। কুসুম জানে অস্থায়ী তাঁবুগুলোতে সকাল অনেক আগেই হয়ে গেছে। কেউ দেখে ফেলার আগে তাকে পালাতে হবে এখান থেকে।

    মারাঠওয়াড়ার বিড থেকে কালো সাপের মতো লম্বা রাস্তাটা চলে গেছে বহু দূর পশ্চিম বরাবর। সেই পথ বেয়ে বড়ো ট্রাক্টরে চড়ে চলেছে সাত দম্পতি। সঙ্গে রয়েছে গোটা দশেক বাচ্চা, হাঁড়িকুড়ি, কাপড়চোপড়, তিনটে ছাগল, বালতি ঝুলছে খান চারেক। দেহাতি গান গাইতে গাইতে চলল তারা গাঁ ছেড়ে দূরের দেশে। "মাঝা গাওচে নাও উম্রাদ জাহাগির"....গাঁয়ের নাম উম্রাদ জাহাগির। রুখা-শুখা জলহাওয়ার এই গাঁয়ে খরা লেগেই আছে। সারা বছর বৃষ্টির জন্য হা-পিত্যেশ করে বসে থাকে এ গাঁয়ের ক'ঘর বাসিন্দা। জলের জন্য মাইলের পর মাইল হাঁটে ওরা। খিদে, ঘাম, রোগ, তেষ্টার এই গ্রামে, দীপাবলীর আলো নিভলে পরে মানুষ পাখির মতো ঝাঁক বেঁধে প্রায় চারশ কিলোমিটার পশ্চিমে পাড়ি দেয় রুটি-রুজির খোঁজে, আখের খেতে মজুর খাটতে। এখন থেকে পাঁচ মাস তাঁবু খাটিয়ে থাকবে ওরা। আখের খেতে উদয়াস্ত পরিশ্রম করবে স্বামী-স্ত্রী। সকাল ছ'টার থেকে সন্ধ্যা সাতটা-আটটা, কোনও কোনও দিন রাত দশটাও বেজে যাবে। মেয়েদের কাজ আরও বেশি। মাঠে যাবার আগে রান্নাবান্না, বাচ্চাকাচ্চা সামলানো আবার ফিরে এসে রান্না বাসন মাজা এসব ঘর গেরস্থালির কাজ লেগেই থাকে।

    তবু তো আখের খেত আছে বলে ওদের কাজ জুটছে। না হলে ওদের গাঁয়ের যা অবস্থা তাতে জলই জোটে না ঠিক করে। কাজের কোনও সংস্থান নেই। হাওয়ায় হিমের পরশ লাগতে না লাগতে ওরা দল বেঁধে রওনা দেয় আখের খেতে জনমজুর খাটবে বলে। আখের রস যত মিষ্টি লাগে, চাষের কাজ তত মধুর নয়। আখ চাষে প্রচুর খাটুনি। তার ওপর জল লাগে বিস্তর। তাই আখ চাষ হয় যেসব জায়গায় সেখানেও জলকষ্ট লেগেই থাকে।

    কুসুমের মাথায় ইস্কুলের পড়া ঢোকে না, খিচড়ি ইস্কুলের মাস্টার মাথায় চাপ্পড় মেরে বলে সে নাকি ভৈঁসের বুদ্ধি নিয়ে জন্মেছে। এতে বুদ্ধির কি দোষ? এক সালের মধ্যে চার মাস ইস্কুল গেলে আর আট মাস বাচ্চা সামলালে কি পড়া মনে থাকে? পড়া বলতে না পারলে কি হয় আখ চাষের বৃত্তান্ত কুসুম সব জানে। ছোটবয়স থেকে কতবার বাপ-মায়ের সঙ্গে এমন ট্রাক্টরে চড়ে পাড়ি দিয়েছে কখনও সাংলি, কখনও সাতারা। মা-বাপ যাবে খেতের কাজে এক সঙ্গে। এখানের দিনমজুরির দস্তুর তাই। মকদম মানে ঠিকাদার যে থাকে তার খাতায় নাম লেখায় বর-বউ জুটিতে। একে কয়তা কানুন বলে। এক কাস্তের হিসাব ধরা হয় জুটিতে। একজন কামাই করলে দিন মজুরির পুরো পয়সাই কাটা যায়। বাপ-মা কাজে গেলে কোলের দুটো ভাইবোনের দেখভাল করার দায়িত্ব ছিল কুসুমের। সে সময় স্কুল ছুট হয়ে যেত। ছ' মাস পরে যখন ফিরত গাঁয়ে তখন পড়া কিছু মাথায়ই ঢুকত না। আর এমন তো নয় ও একা।

    মায়ের অপারেশন হওয়ার পর থেকে আরও ঝক্কি বেড়ে গেল যেন। হামেশাই অসুস্থ হয় পড়ে মা। খেতের কাজ সেরে ফিরে কোমর, হাত পা যেন চলতেই চায় না আর। ঘরকন্নার ভার পড়ল কুসুমের ওপর। মা-বাবার সঙ্গে আখের খেতে ঘুরে ঘুরে এটুকু বুঝেছিল কুসুম, বেঁচে থাকার অনেক শর্ত আছে। সে-সব শর্তে বাঁচতে গেলে ভাল-মন্দ ঠিক-ভুল বিচার করা চলে না। ওদের জীবনে কোনও ঠিক-ভুল নেই। কোমরে দড়ি বেঁধে ইঁদারার গা বেয়ে নেমে যেতে হয় পাতালে। জীবনের বাজি রেখে তুলে আনতে হয় জল। জলের আর এক নাম নাকি জীবন! কুসুম কতবার নেমেছে পাতালে, জলের জন্য। ওর ছোট্ট অপুষ্ট শরীরটা দড়ি বেয়ে দুলতে দুলতে নেমে গেছে ইঁদারায়। প্রথম প্রথম খুব ভয় করত। যদি হাত ফস্কে পড়ে যায় নীচে? কবুতরের মতো ছোট্ট বুকটা ধুকপুক করে উঠত। আস্তে আস্তে অভ্যাস হয়ে গেল।

    শরীরে যৌবনের ছোঁয়া লাগল যখন, বুকে মাংস আর কোমরে হিল্লোল, তখন খেতমজুরের মেয়ের দিকে চোখ মকদমের। আর কুসুমকে খেতের কাজে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া যায় না। আবার গাঁয়ে একলা ছেড়ে যাওয়াও মুস্কিল। মুস্কিল আসান হল, যখন কুসুমের 'আজি' সহজ সমাধান দিয়ে গেল, সাদি। ব্যস, গেল বছর হয়ে গেল সাদি। নানা ভাউ আর কুসুম বাঁধা পড়ল এক কাস্তের বাঁধনে।

    এ বছর কুসুম বরের সাথে চলেছে গন্নার খেতে মজদুরী করতে। এক গাঁয়ের ক'ঘর মিলে ট্রাক্টরে চেপে চলেছে ওরা। পুস্পা, লছমী, কালে, ধনিয়া, রূপমতী, লীলা আর তাদের বরেরা। এদের মধ্যে কুসুমই বয়সে সবথেকে ছোট। পুস্পারা অনেকদিন হল এই কাজে লেগেছে। সবাই অন্তত কুড়ি পেরিয়েছে। কুসুম এখনও কচি। আলো আস্তে আস্তে মৃদু হচ্ছে, হাওয়ায় এখন শিরশিরানি। কুসুম নানার গা ঘেঁষে বসে। এভাবে চার-পাঁচ দিন চলে তবে পৌঁছাবে সাংলি। আকাশের গায়ে এক ফালি চাঁদ দেখা যাচ্ছে। আজ রাতের মতো কোথাও আস্তানা গাড়বে ওরা। রাঁধাবাড়া করে বিশ্রাম নেবে। ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতে আবার রওনা দেওয়া। গাঁয়ে ছেড়ে আসা নতুন গৃহকোণের কথা ভাবতে ভাবতে কুসুম কখন ঘুমিয়ে পড়েছে নিজেও জানে না।

    সাংলি এসে ইস্তক পুস্পাদির সঙ্গেই বেশি ভাব হয়েছে কুসুমের। পুস্পা কুসুমের থেকে বছর পাঁচেকের বড়ো হবে, সবে আঠারো পেরিয়ে উনিশে পা দিয়েছে হয়তো-বা। এর মধ্যেই পুস্পা দু' সন্তানের মা হয়ে গেছে। বড়োটার বয়স তিন আর ছোটটা বছর খানেকের হবে। এই বাচ্চাগুলোকে নিয়ে পুস্পাদি পরেশান হয়ে যায়। কুসুমের সবে সবে বিয়ে হয়েছে। ওসব ঝঞ্জাট নেই। মাঠ থেকে কাজ করে ফিরে দুজনের মতো কিছু ফুটিয়ে নিলেই চলে। আর যেদিন মাস-মছলি হয় সেদিন নানা নিজেই রান্না করতে বসে পড়ে তেল মশলা নিয়ে। তাই ফাঁক পেলেই পুস্পার কাছে গিয়ে বসে কুসুম। সুখদুঃখের কথা হয় দুজনে। কিছু গোপন কথাও হয়। যেসব কথা শুধু একজন মেয়েমানুষকেই বলা চলে। আখের খেতে অস্থায়ী এই তাঁবুর জীবন ভারি কষ্টদায়ক। জলের অসুবিধা প্রচুর। বিশেষ করে মাসের ওই চার-পাঁচটা দিন যেন বিভীষিকা। খাবার জলের ঠিক নেই যেখানে, সেখানে নিজেদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জল আশা করাটাই বিলাসিতা। তাই মেয়েলি রোগের উৎপাত লেগেই থাকে। পুস্পাদি সেদিন গল্প করতে করতে বলছিল আজকাল পেটে খুব ব্যথা হচ্ছে। সঙ্গে সাদা স্রাবও বেড়ে গেছে। কিন্তু এ কথা কাকেই বা বলবে। পুস্পাদির বর গণপতি ভীষণ মাথা-গরম লোক। পুস্পার কোনও কথাই শুনতে চায় না। এই তো হপ্তা দুয়েক আগে মাসিকের কারণে পুস্পা কাজে যেতে পারেনি বলে সাঁঝের বেলা খেত থেকে ফিরে কি মারটাই না মেরেছিল পুস্পাকে। পুস্পার মুখ দিয়ে একটাও আওয়াজ বার হয়নি। পরের দিন কোমরে তেল মালিশ করতে গিয়ে কালশিটের নীলচে দাগগুলো দেখে কুসুম যখন জানতে চেয়েছিল ওগুলো কি করে হল, পুস্পা উদাস গলায় বলেছিল, "বদ নসীবি কা থাপ্পড় সমঝ লো।"

    কুসুমের গা জ্বালা করে উঠেছিল। ও তো জানে এটা ওই ষাঁড়ের মতো গণপতির কাজ। এই পুরুষগুলো মেয়েদেরকে দু'টাকার সামান ভাবে। এর একটা প্রতিবাদ হওয়া দরকার। যত দেখে কুসুমের মনে তত কালো মেঘ জমা হতে থাকে। মেয়ে হয়ে জন্মেছে বলে কি ওদের কোন অধিকার নেই? খেতের বলদ যেমন লাঙলের সাথে জুতে দেয় তেমন একটা পুরুষমানুষের সাথে জুড়ে দিলেই যেন একটা মেয়ের জীবনের হিল্লে হয়ে গেল। গণপতি না হলে নানা না হলে দীনদয়াল নিজের বাপের সম্পত্তি ভেবে নেয় ওদেরকে।

    কিছুদিন হল কুসুম আর পুস্পার আলাপ হয়েছে একটা পেপারওয়ালা বহীনের। ওরা দুজন লুকিয়ে লুকিয়ে সেই দিদির সঙ্গে দেখা করেছে দু’চারবার। ভেতরের খবর সব বলেছে তাকে। গন্নার খেতে কাজ করতে এলে মেয়েদের ডাক্তারের কাছে যেতেই হবে। না চাইলেও যেতে হবে। মকদম সব ব্যবস্থা করে রাখবে, খরচখরচা যা হবে তার জন্য আগাম টাকা সেই দেবে। ডাক্তারবাবুরাও চিকিৎসা বলতে একটাই জানে। রোগ যাই হোক তার একটাই দাওয়াই বাচ্চাদানী কেটে বাদ দিয়ে দাও। মকদম মরদকে বোঝাবে, বাচ্চাকাচ্চা হওয়ার চাপ ছাড়াই বৌয়ের সঙ্গে শুতে পারবে। তাছাড়া মুহাবরীর বাহানা দিয়ে কাজ কামাই করবে না জেনানা। এতসব লাভ দেখলে কোন মরদ আর আপত্তি করবে? আসলে এতে তো মকদমেরও ঢের লাভ। যখন ইচ্ছা আখের খেতের মধ্যে টেনে নিয়ে যাওয়া যাবে মেয়েগুলোকে। তবেই না গন্না পেশাই মেশিনের মতো বারো ঘন্টা খেতের কাজ করিয়ে নেওয়া যাবে। মেয়ে মরদে মিলে জুটিতে কাজ করলে রোজের টাকা মিলবে নচেৎ নয়। কুসুম দেখেছে ওদের গাঁয়ে সব অওরতেরই এক অবস্থা। তেরোয় বিয়ে, কুড়ির মধ্যে দু-চারটা বাচ্চা আর পঁচিশ পেরোতে না পেরোতে বাচ্চাদানী কেটে ফেলে দিয়ে মুহাবরীর থেকে জন্মের মতো ছুটকারা। তারপর মকদম আর কিছু শুনতে চায় না। কাজ কামাই দেওয়ার কথা বললে চটে আগুন হয়ে যায়। অথচ কুসুম নিজের মাকে দেখেছে অপারেশনের পর কেমন করে আঠাশেই আশি বছরের বুড়ির মতো হয়ে গেল। হাতে পায়ে জোর কমে গেল, কোমরে অসহ্য ব্যথা। কলে গন্না পেশাই করে সফেদ চিনির দানা তৈরি হয় বটে কিন্তু ওই চিনিতে লেগে থাকে কুসুমদের মতো মেয়েদের ঘাম, রক্ত আর চোখের জল। এত কথা শোনার পর ওই দিদি বলেছে ওদের কোনও ভয় নেই। কিন্তু ভয় নেই বললেই তো হল না! মকদমের হাতে পয়সা আছে, পঞ্চায়েতের লোক সব ওদের হাতের মুঠোয় রাখা থাকে। কুসুম পুস্পার জন্য চিন্তিত হয়ে পড়ে। কে জানে কথাটা যদি মকদমের কানে যায় তবে তার ফল কি হবে? কুসুম, পুস্পা ওদের অবস্থা এখন খাঁচার মুরগাগুলোর মতো। সব্বাই জানে কাটা পড়বে কাকে আগে যেতে হবে আর কাকে পরে তার জন্য অপেক্ষায় বসে থাকা।

    শুধু কি তাই? বেশি প্রতিবাদ করলে তোমার মরদই এক রাতে যত্ন করে মকদমের বাড়ি পৌঁছে দেবে তোমায়। ধারদেনা থাকলে মুকুব হয়ে যাবে যে। পুস্পা যা জিদ্দি মেয়ে! কে জানে রাগের মাথায় বলে না দেয় পেপারওয়ালী দিদির কথা। বিপদের সম্ভাবনায় কুসুমের বুক জোরে ধুকপুক করতে শুরু করে। শিরদাঁড়া বেয়ে ভয়ের ঠান্ডা স্রোত নেমে আসে। নিজের অজান্তেই চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে। কেবলই মনে হয় এবার বুঝি তার পালা। গন্না কাটাইয়ের কাজ চলছে এখন। কুসুম কয়েকদিন পুস্পার কাছে যেতে পারেনি। কাজ থেকে ফিরে আজকাল খুব ক্লান্ত লাগে। ঘরে ফিরে সেই যে শুয়ে পড়ে আর ওঠে না। ভোরের দিকে স্বপ্ন দেখে কুসুম মস্ত বড় খাঁচার ভেতর পুরে পুস্পাকে ওরা নিয়ে যাচ্ছে, খাঁচার ভিতর থেকে ভেসে আসছে পুস্পার কান্নার আওয়াজ। “ভাগ কুসুম, ভাগ!” ধড়ফড় করে উঠে বসে কুসুম। ঘামে ভিজে একাকার ওর শরীর। আজ কুসুম পুস্পার কাছে যাবেই। নির্ঘাত কোনও বিপদ হয়ে হবে। না হলে ভোরে এরকম একটা স্বপ্ন কেন দেখবে সে।

    বাইরে যাওয়ার দরকার একবার। হাল্কা আলো ফুটেছে বাইরে। বেরিয়ে পড়ল খেতে যাওয়ার রাস্তা ধরে। একটু এগিয়ে গেলে ফাঁকা থাকে মাঠ। একটা দুটো শেয়াল এসে পড়ে বটে। তবে জানোয়ারে বিশেষ ভয় নেই কুসুমের। মানুষকেই ভয় বেশি। কিছুটা যেতেই আবছা অন্ধকারে ঠাহর হল কিছু একটা পড়ে আছে যেন। কুসুমের বুক ঢিপ ঢিপ করে। কাছে আরও কাছে এগিয়ে যেতেই পা কেঁপে ওঠে ওর। মকদম! মুখ থুবড়ে পড়ে আছে লোকটা। কানের কাছে চাপা গলায় কে যেন বলে ওঠে,, “ভাগ! কুসুম ভাগ!” গলাটা কুসুমের খুব চেনা। আগেও শুনেছে।



    অলংকরণ (Artwork) : অলংকরণঃ রাহুল মজুমদার
  • এই লেখাটি পুরোনো ফরম্যাটে দেখুন
  • মন্তব্য জমা দিন / Make a comment
  • (?)